ভাষা: বাংলা (ইংরিজি সাবটাইটেল)
প্রযোজনা: অ্যামি ঘোষ, অটের ফিল্মস, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত প্রোডাকশন
কাহিনি চিত্রনাট্য সংলাপ ও নির্দেশনা: বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত
অভিনয়ে: চন্দন রায় স্যন্যাল পার্ণো মিত্র প্রমুখ
সময়সীমা: ৮২ মিনিট
দেখা যাবে: ইউটিউবে
প্রথমে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্যামসুন্দর কলেজে, পরে কলকাতার সিটি কলেজে অর্থনীতির অধ্যাপক হয়েছিলেন। ১৯৭৬ নাগাদ উপলব্ধি হল যে অর্থশাস্ত্রের যে তত্ত্বকথা তিনি ক্লাসে পড়ান তার সঙ্গে আমাদের আর্থসামাজিক অবস্থার প্রচুর ফারাক। এই ফারাকটাই তাঁকে তাঁর নিজের কথা বলবার জন্য চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আসছে বাধ্য করল। তিনি ভারতের অন্যতম প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। ক্যালকাটা ফিল্ম সোসাইটির একজন সদস্য হিসেবে চার্লি চ্যাপলিন, বার্গম্যান, কুরোসাওয়া, ডি সিকা, রোসোলিনি বা অ্যান্তোনিওনির বিশ্বখ্যাত ছবি প্রায় নিয়মিত দেখতেন।
এখানে উল্লেখ্য যে, সাম্প্রতিক জীবনীমূলক উচ্চ প্রশংসিত বাংলা কাহিনিচিত্র ‘অপরাজিত’-এর একটি দৃশ্যে এই ক্যালকাটা ফিল্ম সোসাইটির সলতে পাকানোর ইতিহাসকে স্পর্শ করা হয়েছে। সত্যজিত রায়, চিদানন্দ দাশগুপ্ত, আরপি গুপ্ত, হরিসাধন দাশগুপ্ত, বংশী চন্দ্রগুপ্ত প্রমুখের উদ্যোগে কলকাতায় ন্যু ওয়েভ সিনেমার আঁতুড়ঘর গড়ে উঠেছিল। খুব অল্প সময়ের জন্য ভারতীয় তথ্যচিত্রের দিকদর্শক স্বনামধন্য হরিসাধন দাশগুপ্তের সান্নিধ্যে আসার সুবাদে স্বয়ং তাঁর কাছেই সে সময়ের অনেক কথা শুনেছি।
এখানে উল্লেখ্য যে, সাম্প্রতিক জীবনীমূলক উচ্চ প্রশংসিত বাংলা কাহিনিচিত্র ‘অপরাজিত’-এর একটি দৃশ্যে এই ক্যালকাটা ফিল্ম সোসাইটির সলতে পাকানোর ইতিহাসকে স্পর্শ করা হয়েছে। সত্যজিত রায়, চিদানন্দ দাশগুপ্ত, আরপি গুপ্ত, হরিসাধন দাশগুপ্ত, বংশী চন্দ্রগুপ্ত প্রমুখের উদ্যোগে কলকাতায় ন্যু ওয়েভ সিনেমার আঁতুড়ঘর গড়ে উঠেছিল। খুব অল্প সময়ের জন্য ভারতীয় তথ্যচিত্রের দিকদর্শক স্বনামধন্য হরিসাধন দাশগুপ্তের সান্নিধ্যে আসার সুবাদে স্বয়ং তাঁর কাছেই সে সময়ের অনেক কথা শুনেছি।
বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত ১৯৬৮ সালে ‘কন্টিনেন্ট অফ লাভ’ ও ‘সময়ের কাছে’ নামে ১০ মিনিটের দুটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছিলেন। এরপর ১৯৭৮ সালে প্রথম কাহিনিচিত্র ‘দূরত্ব’। বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত কবি। তাই বোধহয় তাঁর ছবিতে কাব্যময়তার এত প্রভাব। শুরুর দিকের ছবিতে সত্যজিতের রিয়ালিস্টিক ন্যারেটিভের প্রভাব ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে ক্রমশ বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর নিজস্ব চিত্রভাষা তৈরি হল।
দূরত্বের পর ‘নিম অন্নপূর্ণা’, ‘গৃহযুদ্ধ’, ‘আন্ধি গলি’, ‘ফেরা’, ‘বাঘ বাহাদুর’, ‘তাহাদের কথা’, ‘চরাচর’, ‘লাল দরজা’, ‘উত্তরা’, ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’, ‘স্বপ্নের দিন’, ‘আমি ইয়াসিন আর আমার মধুবালা’, ‘কালপুরুষ’, ‘জানালা’, ‘মুক্তি’। টেলিভিশনের জন্য ছবি ‘চোলি কে পিছে’, ‘অর্জুন’, ‘দ্য স্টেশন’। এরপর হিন্দিতে ‘আনোয়ার কা আজব কিসসা’, ‘টোপ’ এবং শেষ ছবি ‘উড়োজাহাজ’। এছাড়াও বহু উল্লেখযোগ্য তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। কবি বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলির মধ্যে অন্যতম ‘গভীর আড়ালে’, ‘কফিন’ কিংবা সুটকেস’, ‘হিমযোগ’, ‘ছাতা কাহিনি’, ‘রোবটের গান’, ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’, ‘ভোম্বলের আশ্চর্য কাহিনি’ ও অন্যান্য কবিতা।
দূরত্বের পর ‘নিম অন্নপূর্ণা’, ‘গৃহযুদ্ধ’, ‘আন্ধি গলি’, ‘ফেরা’, ‘বাঘ বাহাদুর’, ‘তাহাদের কথা’, ‘চরাচর’, ‘লাল দরজা’, ‘উত্তরা’, ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’, ‘স্বপ্নের দিন’, ‘আমি ইয়াসিন আর আমার মধুবালা’, ‘কালপুরুষ’, ‘জানালা’, ‘মুক্তি’। টেলিভিশনের জন্য ছবি ‘চোলি কে পিছে’, ‘অর্জুন’, ‘দ্য স্টেশন’। এরপর হিন্দিতে ‘আনোয়ার কা আজব কিসসা’, ‘টোপ’ এবং শেষ ছবি ‘উড়োজাহাজ’। এছাড়াও বহু উল্লেখযোগ্য তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। কবি বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলির মধ্যে অন্যতম ‘গভীর আড়ালে’, ‘কফিন’ কিংবা সুটকেস’, ‘হিমযোগ’, ‘ছাতা কাহিনি’, ‘রোবটের গান’, ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’, ‘ভোম্বলের আশ্চর্য কাহিনি’ ও অন্যান্য কবিতা।
আরও পড়ুন:
মুভি রিভিউ: চারজন সাহসী নারীর গল্প—ধক ধক
আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-২৭: তীর্থদর্শন
পেয়েছেন বহু পুরস্কার। লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন স্পেনের মাদ্রিদে। গোল্ডেন অ্যাথেনা অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন এথেন্স বিশ্ব চলচ্চিত্র উৎসবে। ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে ১৯৮২-তে গৃহযুদ্ধ ছবিটির জন্য পেয়েছেন ফিপ্রেসি পুরস্কার ও গোল্ডেন ল্যায়ন। ২০০০ সালে উত্তরা ছবির জন্য সেরা নির্দেশকের পুরস্কার সিলভার লায়ন এবং সেরা ছবির পুরস্কার গোল্ডেন লায়ন। বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে ১৯৮৮ সালে সেরা ছবির জন্য এবং ১৯৯৪ সালে চরাচর ছবিটির জন্য গোল্ডেন বিযর পুরস্কার পান। লোকার্নো চলচ্চিত্র উৎসবে দূরত্ব ছবির জন্য ক্রিটিক আওয়ার্ড এবং নিম অন্নপূর্ণা ছবিটির জন্য স্পেশাল জুরি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। জানালা ছবিটি এশিয়া প্যাসিফিক চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ ছবি হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে। নিম অন্নপূর্ণা কারলোভি ভ্যারি চলচ্চিত্র উৎসবে স্পেশাল জুরি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। দামাস্কাস বিশ্ব চলচ্চিত্র উৎসবে স্বর্ণপদক পেয়েছিল নিম অন্নপূর্ণা। মন্দ মেয়ের উপাখ্যান ছবিটি ব্যাংকক বিশ্ব চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ এশিয়ান ছবি হিসেবে পুরস্কৃত হয় ২০০৩ সালে।
প্লেন নিয়ে স্বপ্ন দেখা গ্রাম্য এক মোটর মেকানিক বাচ্চু মণ্ডলের জীবনে হঠাৎ একটা আস্ত প্লেন ঢুকে পড়ল। হঠাৎই একদিন একটা ভুতুড়ে জঙ্গলের অনেকটা ভিতরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একটা জং ধরা ভাঙাচোরা জাপানি প্লেন সে আবিষ্কার করে ফেলে। তারপরে নাওয়া-খাওয়া ভুলে সে সেই প্লেনটাকে ঘষে-মেজে রং করে চালু করার চেষ্টা করে। নানা জনের কাছে প্লেনের ইঞ্জিনের খোঁজ করে। বাড়ি ফেরে না, গ্যারেজে কাজে যায় না। তার মনপ্রাণ পড়ে আছে সেই প্লেনে। যুদ্ধবিমান জঙ্গলের মধ্যে ঘুরে ফিরে খবর পৌঁছল পুলিশের কানে। ব্যাস অতিরিক্ত সাবধানে পুলিশ তাকে দেশের শত্রু বানিয়ে ফেলল। ব্যক্তি আর রাষ্ট্রের মধ্যে অসম দ্বন্দ্ব নিয়ে এক নিদারুণ স্যাটায়ার ‘উড়োজাহাজ’।
প্লেন নিয়ে স্বপ্ন দেখা গ্রাম্য এক মোটর মেকানিক বাচ্চু মণ্ডলের জীবনে হঠাৎ একটা আস্ত প্লেন ঢুকে পড়ল। হঠাৎই একদিন একটা ভুতুড়ে জঙ্গলের অনেকটা ভিতরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একটা জং ধরা ভাঙাচোরা জাপানি প্লেন সে আবিষ্কার করে ফেলে। তারপরে নাওয়া-খাওয়া ভুলে সে সেই প্লেনটাকে ঘষে-মেজে রং করে চালু করার চেষ্টা করে। নানা জনের কাছে প্লেনের ইঞ্জিনের খোঁজ করে। বাড়ি ফেরে না, গ্যারেজে কাজে যায় না। তার মনপ্রাণ পড়ে আছে সেই প্লেনে। যুদ্ধবিমান জঙ্গলের মধ্যে ঘুরে ফিরে খবর পৌঁছল পুলিশের কানে। ব্যাস অতিরিক্ত সাবধানে পুলিশ তাকে দেশের শত্রু বানিয়ে ফেলল। ব্যক্তি আর রাষ্ট্রের মধ্যে অসম দ্বন্দ্ব নিয়ে এক নিদারুণ স্যাটায়ার ‘উড়োজাহাজ’।
আরও পড়ুন:
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৫৮: কোন অজানায় ‘পথে হল দেরী’
এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-২৯: সুন্দরবনের জনপ্রিয়তম পীর—পীর গোরাচাঁদ
নিতান্ত সাধারণ গ্রামের খেটে খাওয়া বউ বাচ্চা নিয়ে সুখে থাকা একটা মানুষ নিজের অজান্তেই স্বপ্ন দেখতে গিয়ে দেশ-বিদেশের সীমারেখা জাতীয় সুরক্ষা এসব জটিল বিষয়ে জড়িয়ে পড়ে। নিজের স্বপ্ন নিয়ে মশগুল থাকা মানুষটার জীবন-সংসার সব ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের মতো গুণী পরিচালকের চিত্রভাবনায় এরকম একটা স্বপ্ন পরাবাস্তব মিলেমিশে থাকা গল্প ম্যাজিক দেখাতে পারে। গোটা ছবিতে সেই ম্যাজিকই দেখিয়েছেন বুদ্ধদেব।
এই মৃত প্লেনটাকে ঘিরে সেই জঙ্গলে থাকে সশরীরে কিছু অশরীরী মানুষ। সমাজের বিচারে তারা মৃত কিন্তু তাদের অস্তিত্ব থেকে গিয়েছে। ঠিক এই প্লেনটার মতো। যন্ত্রের হিসেবে সে অকেজো। সে আর উড়োজাহাজ নেই। তবু বাচ্চু স্বপ্ন দেখে। ওড়ার স্বপ্ন। তার গ্রাম্য বউকে নিয়ে এই গ্রাম ছাড়িয়ে বহু বহু দূরে উড়ে যাওয়ার স্বপ্ন। এই প্লেনটা তার সেই স্বপ্ন কি পূর্ণ করবে? বাচ্চু ছবি আঁকতে পারে। যে প্লেনটা একসময় বহু মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়েছিল তাকে রং তুলি দিয়ে বাচ্চু বদলে দিচ্ছে জীবনের নকশায়। ছবিতে নানা ধরনের সারিয়েল বা পরাবাস্তব চিত্রমুহূর্ত নিয়ে এসেছেন কবি পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। পরিচালকের অভূতপূর্ব দৃশ্য ভাবনাকে অসাধারণ সাফল্যের সঙ্গে চিত্রায়িত করেছেন বাংলার গুণী ক্যামেরাম্যান অসীম বসু।
চন্দন রায় সান্যাল তার জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। চন্দন অত্যন্ত গুণী অভিনেতা, কিন্তু দুর্ভাগ্য চন্দনের মাপের শিল্পীদের যথার্থ ব্যবহার করার যোগ্য পরিচালকের ক্রমশ অভাব ঘটছে। কারও কৃতিত্বকে আঘাত না করেই বলছি, বলতে বাধ্য হচ্ছি হাতেগরম টেকনোলজির সুবাদে আর অকারণ দর্শক-আকর্ষণী চমক বা ভিসুয়াল গিমিকের মোহে তুলনামূলকভাবে এখন চিত্রনির্দেশকদের ভাবনার ব্যাপ্তিতে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।
এই মৃত প্লেনটাকে ঘিরে সেই জঙ্গলে থাকে সশরীরে কিছু অশরীরী মানুষ। সমাজের বিচারে তারা মৃত কিন্তু তাদের অস্তিত্ব থেকে গিয়েছে। ঠিক এই প্লেনটার মতো। যন্ত্রের হিসেবে সে অকেজো। সে আর উড়োজাহাজ নেই। তবু বাচ্চু স্বপ্ন দেখে। ওড়ার স্বপ্ন। তার গ্রাম্য বউকে নিয়ে এই গ্রাম ছাড়িয়ে বহু বহু দূরে উড়ে যাওয়ার স্বপ্ন। এই প্লেনটা তার সেই স্বপ্ন কি পূর্ণ করবে? বাচ্চু ছবি আঁকতে পারে। যে প্লেনটা একসময় বহু মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়েছিল তাকে রং তুলি দিয়ে বাচ্চু বদলে দিচ্ছে জীবনের নকশায়। ছবিতে নানা ধরনের সারিয়েল বা পরাবাস্তব চিত্রমুহূর্ত নিয়ে এসেছেন কবি পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। পরিচালকের অভূতপূর্ব দৃশ্য ভাবনাকে অসাধারণ সাফল্যের সঙ্গে চিত্রায়িত করেছেন বাংলার গুণী ক্যামেরাম্যান অসীম বসু।
চন্দন রায় সান্যাল তার জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। চন্দন অত্যন্ত গুণী অভিনেতা, কিন্তু দুর্ভাগ্য চন্দনের মাপের শিল্পীদের যথার্থ ব্যবহার করার যোগ্য পরিচালকের ক্রমশ অভাব ঘটছে। কারও কৃতিত্বকে আঘাত না করেই বলছি, বলতে বাধ্য হচ্ছি হাতেগরম টেকনোলজির সুবাদে আর অকারণ দর্শক-আকর্ষণী চমক বা ভিসুয়াল গিমিকের মোহে তুলনামূলকভাবে এখন চিত্রনির্দেশকদের ভাবনার ব্যাপ্তিতে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।
পার্নো মিত্রের ছবি নির্বাচন প্রশংসনীয়। পার্নো যে ক’টি ছবিতে অভিনয় করেছেন তার প্রতিটির মধ্যেই সিনেমাটিক গুণাগুণ লক্ষ্য করা যায়। এর আগে ইরফান খানের সঙ্গে অভিনীত ডুব ছবিটি দেখেছিলাম। ছোট হলেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন পার্নো।
প্রতিবেদন শেষ করার আগে আরও একটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে চাই। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের ‘দেখা হবে’ শীর্ষক একটি হৃদয়স্পর্শী ছোটগল্প রয়েছে। সে গল্পের মূল বিষয়বস্তু হল ঘনিষ্ঠ মানুষের মৃত্যু। চেনাপরিচিতদের ছেড়ে চিরটাকালের জন্যে তাঁর চলে যাওয়া। তবু আমরা ভাবি, কখনও কোনওভাবে তিনি ফিরবেন। আবার হয়তো বা দেখা হবে। এই ‘দেখা হবে’-র সূত্র ধরেই আমার শ্রদ্ধেয় পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। এই ছোট গল্পটি আমি দু’ একটি অনুষ্ঠানে পড়েছিলাম। তার কোনও একটি অনুষ্ঠানে শ্রদ্ধেয় কবি প্রণবকুমার মুখোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন। এর কিছুদিন পর বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের মাতৃবিয়োগ ঘটে। কবি প্রণবকুমার মুখোপাধ্যায়ের মাধ্যমে আমি চিত্রপরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের মায়ের শ্রাদ্ধবাসরে সেই গল্পটি পাঠ করার আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম।
প্রতিবেদন শেষ করার আগে আরও একটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে চাই। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের ‘দেখা হবে’ শীর্ষক একটি হৃদয়স্পর্শী ছোটগল্প রয়েছে। সে গল্পের মূল বিষয়বস্তু হল ঘনিষ্ঠ মানুষের মৃত্যু। চেনাপরিচিতদের ছেড়ে চিরটাকালের জন্যে তাঁর চলে যাওয়া। তবু আমরা ভাবি, কখনও কোনওভাবে তিনি ফিরবেন। আবার হয়তো বা দেখা হবে। এই ‘দেখা হবে’-র সূত্র ধরেই আমার শ্রদ্ধেয় পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। এই ছোট গল্পটি আমি দু’ একটি অনুষ্ঠানে পড়েছিলাম। তার কোনও একটি অনুষ্ঠানে শ্রদ্ধেয় কবি প্রণবকুমার মুখোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন। এর কিছুদিন পর বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের মাতৃবিয়োগ ঘটে। কবি প্রণবকুমার মুখোপাধ্যায়ের মাধ্যমে আমি চিত্রপরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের মায়ের শ্রাদ্ধবাসরে সেই গল্পটি পাঠ করার আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম।
আরও পড়ুন:
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৪৭: পুরীতে বাড়ি— রবীন্দ্রনাথের, গগনেন্দ্রনাথ-অবনীন্দ্রনাথের
সেদিন ‘খণ্ডরে’র পুনঃপ্রদর্শন আনন্দ দিয়েছিল বিশ্বের তাবড় সিনেমাপ্রেমী থেকে বরেণ্য সেই পরিচালককে
সেদিন সেই সন্ধ্যেবেলা অর্ঘ্য সেন-সহ কয়েকজন গুণীশিল্পী সংগীত পরিবেশন করেছিলেন। আর আমি শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের দেখা হবে গল্পটি পাঠ করেছিলাম। সম্ভবত আমার পড়ার গুণে নয়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের কাহিনি বৈচিত্রের কারণেই শ্রদ্ধেয় পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত খুব আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে জানিয়েছিলেন যে, কখনও ছবিতে প্রয়োজন হলে তিনি আমার কণ্ঠস্বর ব্যবহার করবেন। এর কিছুদিন পর আমাকে চাকরির প্রয়োজনে দক্ষিণ ভারতে বদলি হতে হল। এরপর আর পরিচালকের সঙ্গে কোন যোগাযোগ হয়নি।
কিন্তু প্রিয় পরিচালক পরিচিতি থাক বা না থাক আত্মার আত্মীয় হয়ে ওঠেন তাঁর ছবির ভাষার জন্য। ঠিক এ ভাবেই সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, ঋত্বিক ঘটক, হরিসাধন দাশগুপ্ত, পূর্ণেন্দু পত্রী, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, গৌতম ঘোষ, অপর্ণা সেন বা ঋতুপর্ণ ঘোষ বা এমন আরও অনেক গুণী চিত্রপরিচালক তাঁদের ছবির ভাষার জন্য আমাদের আত্মায় মিশে আছেন।
এটা সত্যি যে চলচ্চিত্রের ভাষা চিরায়ত। হিন্দি, মারাঠি, তেলেগু, গুজরাতি, মালায়ালাম, চাইনিজ, কোরিয়ান, জাপানি সব ভাষা ছাপিয়ে প্রাণে পৌঁছে হৃদয়ের দরজায় কড়া নাড়ে সিনেমার নিজস্ব চিত্রভাষা। তবে সেই চিত্রভাষা আর মাতৃভাষা যখন মিলেমিশে এক হয়ে যায় তখন তার আকর্ষণটা এড়ানো বড্ড কঠিন। তাই এই সব অসাধারণ নির্দেশকদের পুরোনো বাংলা সিনেমা এখনও সুযোগ পেলেই দেখি। বার বার দেখি।
কিন্তু প্রিয় পরিচালক পরিচিতি থাক বা না থাক আত্মার আত্মীয় হয়ে ওঠেন তাঁর ছবির ভাষার জন্য। ঠিক এ ভাবেই সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, ঋত্বিক ঘটক, হরিসাধন দাশগুপ্ত, পূর্ণেন্দু পত্রী, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, গৌতম ঘোষ, অপর্ণা সেন বা ঋতুপর্ণ ঘোষ বা এমন আরও অনেক গুণী চিত্রপরিচালক তাঁদের ছবির ভাষার জন্য আমাদের আত্মায় মিশে আছেন।
এটা সত্যি যে চলচ্চিত্রের ভাষা চিরায়ত। হিন্দি, মারাঠি, তেলেগু, গুজরাতি, মালায়ালাম, চাইনিজ, কোরিয়ান, জাপানি সব ভাষা ছাপিয়ে প্রাণে পৌঁছে হৃদয়ের দরজায় কড়া নাড়ে সিনেমার নিজস্ব চিত্রভাষা। তবে সেই চিত্রভাষা আর মাতৃভাষা যখন মিলেমিশে এক হয়ে যায় তখন তার আকর্ষণটা এড়ানো বড্ড কঠিন। তাই এই সব অসাধারণ নির্দেশকদের পুরোনো বাংলা সিনেমা এখনও সুযোগ পেলেই দেখি। বার বার দেখি।
* ফিল্ম রিভিউ: জিৎ সত্রাগ্নি (Jeet Satragni) বাংলা শিল্প-সংস্কৃতি জগতে এক পরিচিত নাম। দূরদর্শন সংবাদপাঠক, ভাষ্যকার, কাহিনিকার, টেলিভিশন ধারাবাহিক, টেলিছবি ও ফিচার ফিল্মের চিত্রনাট্যকার, নাট্যকার। উপন্যাস লেখার আগে জিৎ রেডিয়ো নাটক এবং মঞ্চনাটক লিখেছেন। প্রকাশিত হয়েছে ‘জিৎ সত্রাগ্নি’র নাট্য সংকলন’, উপন্যাস ‘পূর্বা আসছে’ ও ‘বসুন্ধরা এবং…(১ম খণ্ড)’। দ্বিতীয় খণ্ড লিখেছেন।