শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


কে কে।

ইউনিভার্সিটির ক্লাস কেটে ‘রকফোর্ড’ নামে একটি সিনেমা দেখতে গিয়েছিলাম। নাগেশ কুকুনুরের পরিচালনা, বোর্ডিং স্কুলের কৈশোর বয়ঃসন্ধির গল্প। সেই প্রথম আমার কে কে-র গানের সঙ্গে পরিচয়— ‘ইয়ারো দোস্তি বড়ি হি হসিন হ্যায়…’ বন্ধুত্ব উদযাপনের ‘অ্যান্থেম’ হয়ে গিয়েছিল গানটা। তখন এত মোবাইল আর ইউটিউব-এর অবাধ প্রবেশ ছিল না ছাপোষা মধ্যবিত্ত জীবনে। ক্যাসেটই ছিল অবলম্বন, সিডি সবে আসতে শুরু করেছে। বাবাকে জপিয়ে জাপিয়ে কিনলাম একটা প্যানাসনিক ডিস্কম্যান! তারপরই পাড়ার ক্যাসেটের দোকানের দাদাকে অতিষ্ঠ করে তুললাম কে কে-র গানের সিডি তৈরি করে দেওয়ার জন্য।
প্রথম গানটাই ছিল ‘তড়প তড়প কে ইস দিল সে আহ নিকালতি রহি…লুট গায়ে হাম তেরি মোহাব্বত মে’— কারও ভালোবাসায় যে সত্যিই সর্বশান্ত হওয়া যায়, কে কে-র সেই মন নিংড়ে নেওয়া আর্তি আমাকে হয়তো প্রথম বার সেটা অনুভব করিয়েছিল।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কে কে-র গান তো আর সেই ছোট্ট সিডিতে সীমাবদ্ধ ছিল না। ‘লাবো কো লাবো পে সজা দো’ বা ‘খুদা জানে’ আমার প্লেলিস্টে পাকাপোক্ত জায়গা করে নিয়েছে সেই কবে থেকে।
‘জিন্দেগি দো পল কি’ গানে কে কে-র কণ্ঠ হৃতিকের উষ্ণতা আরও বেশি বাড়িয়ে দিয়েছিল কি? না কি ‘সচ কেহ রাহা হ্যায় দিওয়ানা, দিল না কিসি সে লাগানা’ গানে মাধবন এর যন্ত্রণা যে ভাষা পেয়েছিল, তা চিরন্তন ভগ্নহৃদয়ের আকুতি?
অদ্ভুত একটা প্যাশন ছিল কে কে-র সব গানে! তা সে ‘দিলনাশি’ হোক বা ‘জারা সা আপনা লে বানা’ কিংবা ‘দশ বাহানে’ বা ‘দিল ইবাদত’!
কালকেও যে মানুষটা লাইভ পারফরম্যান্স নিয়ে এই শহরকে সুরের স্রোতে উত্তাল করেছে, আজ সাদা চাদরে মোড়া তাঁর নিথর দেহটা কি সত্যিই নিষ্প্রাণ হয়ে গিয়েছে? না। এখনও কান পাতলে শোনা যাচ্ছে ” পল, রহে ইয়া না রহে কল/ পল, ইয়াদ আয়েঙ্গে ইয়ে পল…।

Skip to content