শনিবার ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫


পল্লবী দে-র অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় নয়া মোড়। অভিনেত্রীর এই মৃত্যুর ঘটনায় খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত পল্লবীর লিভ-ইন সঙ্গী সাগ্নিককে জেরা করেছে। কলকাতা পুলিশের এক ডেপুটি কমিশনার গড়ফা থানায় জেরার সময় উপস্থিত ছিলেন বলে বিশেষ সূত্রে খবর। জেরায় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্যও চাওয়া হয়েছে সাগ্নিককের কাছ থেকে। পাশাপাশি সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ না কি এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তদন্ত করে উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছে পুলিশ।
ইতিমধ্যেই পল্লবীর পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, অন্য একজন তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কারণে পল্লবীকে খুন করেছেন সাগ্নিক। এখানেই শেষ নয়, লিভ-ইন সঙ্গী পল্লবীর অর্থ হাতানোরও চেষ্টা করছিলেন তিনি বলে পরিবারের অভিযোগ। গতকাল সোমবার পল্লবীর পরিবারের মূলত দুই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এতে সাগ্নিক চক্রবর্তী এবং পল্লবীর এক বান্ধবী ঐন্দ্রিলা মুখোপাধ্যায়ের নাম রয়েছে। সব মিলিয়ে পল্লবী দে-র মৃত্যুকে নিয়ে ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য।
পল্লবীর বাবা নীলুবাবুর বক্তব্য, পল্লবী সাগ্নিককে খুব ভালবাসত, তাই তাঁকে দামি উপহার দিতেন পল্লবী। সাগ্নিকের জন্মদিনে দেড় লাখ টাকার ল্যাপটপ, লাখ টাকা দিয়ে মোবাইলও কিনে দিয়েছিলেন পল্লবী। এখানেই শেষ নয়, সাগ্নিকে ২২ লাখ টাকা দামের একটি অডি গাড়িও কিনে দিয়েছিল মেয়ে। পল্লবী এবং সাগ্নিকের তিনটি জয়েন্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছিল বলেও জানিয়েছেন পল্লবীর বাবা। নীলুবাবু এও বলেন, ঐন্দ্রিলা নামে এক বান্ধবীর সঙ্গে সাগ্নিক গোপনে সম্পর্ক রেখে চলত। এটা আমার মেয়ে মেনে নিতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে প্রায়ই মেয়ে ও সাগ্নিকের মধ্যে অশান্তি হতো। ঐন্দ্রিলাকে ভালবাসতো পল্লবী। মেয়ের ফ্ল্যাটেও ঐন্দ্রিলা যেতেন। দুঃখের বিষয় সাগ্নিক ও ঐন্দ্রিলাই পল্লবীকে খুন করে ফেলল, এমনটা মত পল্লবীর বাবার। নীলুবাবু চান ঠিকভাবে তদন্ত হোক। শাস্তি হোক দোষীদের।
অন্যদিকে, পল্লবীর বান্ধবী ঐন্দ্রিলা মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগ মিথ্যে। পল্লবী ও তিনি একই পাড়ায় বড় হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনা হতে পারে তিনি ভাবতেই পারেননি। তাঁর কথায়, তিনি পল্লবীর সঙ্গে ফোনের মাধ্যমে মাঝেমধ্যে যোগাযোগ করতেন। সাগ্নিকের সঙ্গেও তাঁর আলাপ পল্লবীর মাধ্যমেই। পল্লবীর ওই গড়ফার ফ্ল্যাটে ঐন্দ্রিলার ‘নিয়মিত যাতায়াত’-এর যে অভিযোগ পল্লবীর পরিবারের পক্ষ থেকে করা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন ঐন্দ্রিলা। তাঁর কোথায়, তিনি কোনও দিনই পল্লবীর ওই গড়ফার ফ্ল্যাটে যাননি। যদিও আগে ঐন্দ্রিলা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, তিনি গড়ফার ওই ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন কেবল এক দিনই।

Skip to content