সোমবার ৮ জুলাই, ২০২৪


আর গৃহশিক্ষকতা করতে পারবেন না সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা। শুধু গৃহশিক্ষকতাই নয়, কোনও ভাবেই কোচিং সেন্টারের সঙ্গেও যুক্ত থাকতে পারবেন না। শিক্ষা দফতর নির্দেশিকা জারি করে এ কথা জানিয়ে দিয়েছে। নির্দেশে এও বলা হয়েছে, রাজ্য সরকারের অধীন স্কুলে কর্মরত শিক্ষক কোচিং সেন্টার এবং গৃহশিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না। এখানেই শেষ নয়, শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের বিনা পারিশ্রমিকে পড়াতেও পারবেন না। স্কুল শিক্ষা এই বিজ্ঞপ্তি জারির পাশাপাশি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অধীনস্থ জেলার আধিকারিকদের মাধ্যমে স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের কাছেও পাঠানো হয়েছে সেই নির্দেশ। শিক্ষা দফতর সূত্র খবর, স্কুল শিক্ষকতা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্তরের যে নির্দেশিকা আছে, সেখানে এই বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে।
জেলা স্তরের স্কুল ইন্সপেক্টরদের জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, জুনিয়র হাই স্কুল, হাই স্কুল বা মাদ্রাসার শিক্ষকদের গৃহশিক্ষকতা করা যাবে না। সেই সঙ্গে যুক্ত থাকা যাবে না কোনওরকম শিক্ষকতার সঙ্গেও। ‘রাইট অব চিল্ড্রেন টু ফ্রি এন্ড কম্পালসারি এডুকেশন অ্যাক্ট ২০০৯-এর অধীন জারি করা এই নির্দেশিকা জেলা স্তরের বিজ্ঞপ্তিতেও জানান হয়েছে। সম্প্রতি গৃহশিক্ষকতা এবং কোচিং সেন্টারের পড়ানোর জন্য স্কুল শিক্ষা দফতরের কাছে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ আসছিল। সেই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখার পরে স্কুল শিক্ষা দফতর সরকারি স্কুল শিক্ষকদের সতর্ক করতে গত ২৭ এবং ২৯ জুন দুটি পৃথক নির্দেশিকা জারি করে।
উল্লেখ্য, গৃহশিক্ষকতা করার জন্য উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, বীরভূম, কোচবিহার ও পুরুলিয়ার ৬১ জন প্রাথমিক শিক্ষককে তদন্তের মুখে পড়তে হয়। জানা গিয়েছে, গৃহশিক্ষকতা করা নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ নিয়ে স্কুলশিক্ষার ডেপুটি ডিরেক্টর প্রাথমিক শিক্ষায় ডিআইদের চিঠিও দিয়েছেন। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হল ডিআইদের তা তাড়াতাড়ি সবিস্তারে জানতে হবে বিকাশ ভবনকে। সূত্রের খবর, প্রথমে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে দেখা হবে। এই তদন্তে স্থানীয় থানাও যুক্ত থাকবে। শিক্ষকদের দ্রুত গৃহশিক্ষকতা ছাড়ার পরামর্শ দেওয়া হবে। এরপরও তাঁরা নিয়ম না মানলে অভিযুক্তদের সাসপেন্ডও করা হতে পারে। পাশাপাশি তাঁদের মুচলেকাও দিতে হবে।
উল্লেখ্য, রাজ্য সরকার স্কুলে কর্মরত শিক্ষকদের গৃহশিক্ষকতা না করার আর্জি জানিয়েছিল বারবার। তা সত্তেও কাজ না হওয়ায় এভাবে শিক্ষকদের তালিকা তুলে ধরা হল বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা। শিক্ষা দফতরের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষকদের একাংশ। উল্লেখ্য, এই ৪৭ জনের মধ্যে বেশিরভাগই রয়েছেন হাসনাবাদ, বসিরহাট, বাদুড়িয়া, গাইঘাটা, স্বরূপনগর, দেগঙ্গা, দমদম ও মধ্যমগ্রামে। এছাড়াও নদিয়া জেলায় চারজন, তিনজন কোচবিহারে, দু’জন বীরভূমে এবং পাঁচজন পুরুলিয়ার।

Skip to content