শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


মা, বাবা, দাদুর সঙ্গে মেহেলি।

আইএসসি পরীক্ষায় দেশের মধ্যে তৃতীয় হয়েছে শ্রীরামপুরের মেহেলি। বাবা বন্ধ কারখানার শ্রমিক। মা আর পাঁচজনের মতোই একজন সাধারণ গৃহবধূ। তবুও নিজের মেধা আর পড়াশোনা করার অদম্য ইচ্ছাকে হাতিয়ার করে আজ সাফল্যের চূড়ায় মেহেলি। রবিবার প্রকাশিত হয়েছে আইএসসি দ্বাদশ শ্রেণির ফলাফল। শ্রীরামপুর হোলি হোম স্কুলের ছাত্রী মেহেলি ঘোষ ৯৯.২৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে দেশের মধ্যে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন। ভবিষ্যতে ডাক্তার হয়ে গরিব, প্রান্তিক মানুষের পাশে দাঁড়ানোকেই জীবনধর্ম করতে চায় মেহেলি।
জানা গিয়েছে, ডানকুনির ভাদুয়ার বাসিন্দা অজিত ও দীপা ঘোষের একমাত্র মেয়ে মেহেলি। অজিতবাবু ডানকুনির একটি ব্যাটারি কারখানায় কাজ করতেন। মা আর পাঁচজনের মতোই একজন সাধারণ গৃহবধূ। কিন্তু এক বছর আগে আগুন লেগে দুর্ঘটনার জন্য বন্ধ সেই কারখানা। অজিতবাবু জানান, অল্প কিছু চাষের জমি আছে, কখনও গুদামে মজুরি করে কোনওভাবে চলে। তবে মেয়ে যেহেতু ছোট থেকেই মেধাবী। তাই অভাবের কোনও ছায়া তিনি মেয়ের উপর পড়তে দেননি। শুধু সাহস আর অনুপ্রেরণা দিয়ে গিয়েছেন। আজ মেয়ের এই সাফল্যে খুব খুশি গোটা পরিবার।
এবছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় এক লক্ষ। তার মধ্যে ১৮ জন প্রথম, ৫৮ জন দ্বিতীয় এবং ৭৮ জন তৃতীয় স্থানে রয়েছে। সেখানে ৯৯.২৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে গোটা দেশে তৃতীয় হয়েছেন মেহেলি। শুধু পড়াশোনাই নয়, বহু ক্ষেত্রেই পারদর্শী মেহেলি। বই পড়া, ছবি আঁকা, বাগান পরিচর্যা করা তাঁর সখ। ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, বায়োলজি এবং অঙ্ক ছিল তাঁর বিষয়। মেহেলি জানান, বাবা- মা, পরিবারের অনুপ্রেরণা আর স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের সবসময় পাশে থাকাই এতটা এগিয়ে দিয়েছে তাকে। তিনি বলেন, ‘মেডিক্যাল পড়তে চাই। কলকাতার কোনও সরকারি মেডিকেল কলেজে থেকে এমবিবিএস করাই আমার ইচ্ছে।’ মেহেলি চান চিকিৎসক হয়ে গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াতে।

Skip to content