শনিবার ২৩ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।

থাইরয়েড নামটির সঙ্গে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। এখন থাইরয়েডের সমস্যা প্রায় ঘরে ঘরে। থাইরয়েড দেহের গুরুত্বপূর্ণ একটি গ্রন্থি। গলা এবং ঘাড়ের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত। এই গ্রন্থিটি বিভিন্ন ধরনের হরমোন নিঃসরণ করে এবং দেহের প্রায় সব ধরনের বিপাক প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা থেকে গলগন্ড থেকে ক্যানসার, হতে পারে নানা রকম রোগ। তাই আট থেকে আশি সবারই থাইরয়েড গ্রন্থির যত্ন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এই প্রতিবেদনে রইল এমন কিছু খাদ্যের হদিশ যা থাইরয়েড গ্রন্থির স্বাস্থ্যরক্ষায় কাজে আসতে পারে।
 

কোন কোন খাবার পাতে রাখবেন?

আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার

আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন সামুদ্রিক মাছ, ডিম, দুধ ইত্যাদি খাবার আমাদের শরীরে আয়োডিনের ঘাটতি সহজেই মেটায়। শরীরে এই হরমোন তৈরির মূল উপাদানই হল আয়োডিন। তবে মনে রাখতে হবে, অতিরিক্ত আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত নয়। কারণ এর ফলে শরীরে থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে।
 

সেলেনিয়াম সমৃদ্ধ খাবার

সেলিনিয়াম‌ সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম, টুনা মাছ, বাদাম ইত্যাদি থাইরয়েড হরমোনকে সক্রিয় করে তোলে। এছাড়াও এই সব খাবারে আন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে।

আরও পড়ুন:

হেলদি ডায়েট: ত্বকের জেল্লা ধরে রাখে কোলাজেন! কোন খাবারে কোলাজেনের ঘাটতি মিটবে?

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-২৮: সাইনাস নাকি কখনওই সারে না?

 

জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার

জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার যেমন, চিংড়ি, মাংস, কাঁকড়া, ঝিনুক ইত্যাদি থাইরয়েড হরমোনকে সক্রিয় রাখে। বিশেষত টিএসএইচ (TSH) হরমোনের নিঃসরণকে প্রভাবিত করে।
 

জাঙ্কফুড নয়

মূলত জাঙ্ক ফুডে নুন, কার্বনেট ফ্যাট ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করা হয়। তাই এই সব খাবার স্বাস্থ্যের পক্ষে যেমন ক্ষতিকর, তেমনি এগুলো নিয়মিত খেলে শরীরে থাইরয়েড হরমোনের অভাবও দেখা দিতে পারে।

আরও পড়ুন:

রিভিউ: ‘কফস’ হল আমাদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার সেই ভয়ঙ্কর খাঁচা

ইতিহাস কথা কও, কোচবিহারের রাজকাহিনি, পর্ব-১: রাজবাড়ির ইতিকথা—ইতিহাসের অন্তরে ইতিহাস

 

কোন কোন খাবার এড়িয়ে চলবেন?

বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকোলি, ছোলা জাতীয় খবার থাইরয়েড বাড়ায়। এ ছাড়াও সর্ষে, মুলো, রাঙা আলু, চিনে বাদাম এড়িয়ে চলাই ভালো। থাইরয়েড বেড়ে গেলে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার যেমন পনির, চিজ ডায়েট থেকে বাদ দিন। চিনি, রান্না করা গাজর, পাকা কলা, শুকনো ফল, মধু, ময়দার রুটি, সাদা ভাত, আলু, সাদা পোস্ত, মিষ্টি শরীরে কার্বহাইড্রেটের মাত্রা বাড়ায়। থায়রয়েড থাকলে এগুলোও কম খান। চা, কফি, চকোলেট, সফট ড্রিঙ্ক যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।

কিছু কিছু খাবার থাইরয়েড হরমোনের স্বাভাবিক কার্যক্রমকে ব্যাহত করে। এগুলোকে বলা হয় গয়ট্রোজেনিকফুড। এই উপাদান ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকলি, সয়া জাতীয় খাদ্য, মিষ্টি আলু, কাসাভা, স্ট্রবেরি, পিচ ফল, নাশপাতি, চিনাবাদামে থাকে। তবে রান্না করলে গয়ট্রোজেন নষ্ট হয়ে যায়। তখন এগুলো খেতে সমস্যা নেই।

আরও পড়ুন:

হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-৫: আরও একটু বেশি হলে ক্ষতি কী?

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-২: মেয়েটি যেন গৃহলক্ষ্মী

 

আর যা যা করতে হবে

নিয়মিত শরীরচর্চা ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন

এক্ষেত্রে নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। সেই সঙ্গে প্রয়োজন নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন। এতে শরীরের অতিরিক্ত ক্যালরি যেমন কমবে, তেমনি আমাদের থাইরয়েড গ্ল্যান্ডও সুস্থ থাকবে।
 

খাবার ভালো করে চিবিয়ে খান

খাওয়ার সময় তাড়াহুড়ো না করে খাবার ভালো করে চিবিয়ে খান। ভালো করে চিবিয়ে খেলে যেমন মনোযোগ বাড়ে, তেমনি থাইরয়েড হরমোনের স্বাস্থ্যও ভালো থাকে। শরীরের বিপাকক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে থাইরয়েড গ্রন্থি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই খাবার ভালো করে চিবিয়ে খেলে বিপাকক্রিয়াও ঠিক মতো হয়।

যোগাযোগ: ৯৮৩০৭৬৮১৫২

* হেলদি ডায়েট (Healthy Diet): সুতনুকা পাল (Sutanuka Paul), পুষ্টিবিদ, ডায়েট-টু-ফাইট।

Skip to content