সোমবার ৮ জুলাই, ২০২৪


প্রচণ্ড গরমে নাজেহাল অবস্থা। প্রখর রোদ থেকে বাঁচার জন্য আমরা সকলেই কমবেশি সানস্ক্রিন ব্যবহার করি। এতে ত্বকের ক্ষতি কিছুটা কমানো গেলেও, চুল কিন্তু ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্বাস্থ্যজ্জ্বল ঝলমলে চুল আমরা সবাই চাই। সে-কারণে চুলের পরিচর্যা করার জন্য বিভিন্ন রকম শ্যাম্পু, মাস্ক, তেল ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু মনে রাখতে হবে, শুধু বাহ্যিক পরিচর্যার মাদ্যমে চুল সুন্দর রাখা সম্ভব নয়। এর সঙ্গে প্রয়োজন পুষ্টিকর খাবার। চুল যদি শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি না পায় তাহলে শুধু তেল মেখে, শ্যাম্পু করে বা মাস্ক ব্যবহার করে চুল ভালো রাখার সম্ভবই নয়। তাই এই দহন দিনে চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে আপনার খাদ্য তালিকাতেও বদল আনুন।
 

চুলে যত্নে খাদ্যতালিকায় কী কী বদল আনা জরুরি

 

জল

ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য যেমন জল প্রয়োজনীয়, তেমনি চুলের স্বাস্থ্যের জন্যও জল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জল ত্বকের ডিহাইড্রেশন সহজেই দূর করে। এতে আমাদের চুলের গোড়ার স্বাস্থ্য ও চুল দুটোই ভালো থাকে। প্রতিদিন যথাযথ পরিমাণের জল যেমন চুলকে স্বাস্থ্যজ্জল রাখবে, তেমনি মাথার ত্বককে হাইড্রেট রাখবে। ফলে খুশকি ও চুলকানির মতো সমস্যা সহজেই দূর হবে।
 

ডিম

ডিম দু’ ভাবে কাজ করে। চুলে মাখলে যেমন পুষ্টি পাওয়া যায়। তেমনি ডিম খেলেও শরীর প্রচুর পুষ্টি পায়। প্রোটিনের উৎকৃষ্ট উৎস হল ডিম। তাছাড়াও ডিমে জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, সালফার, আয়রন রয়েছে। ডিমে উপস্থিত আয়রন চুলের গোড়ায় রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ করতে সাহায্য করে। অ্যানিমিয়ার কারণে বেশিরভাগ মহিলাদের চুল পড়ে যায়। তাই ডিমের আয়রন এক্ষেত্রে অনেকটাই সাহায্য করে। কুসুম-সহ পুরো ডিম শরীরের পুষ্টির চাহিদা মেটানোর জন্য চুলও ভালো থাকে।

আরও পড়ুন:

হেলদি ডায়েট: হাঁসফাঁস গরমে মুখে রুচি নেই, কোন কোন টক জাতীয় খাবারে স্বাদ ফিরে পাবেন?

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৩৩: হৃদয়পুরের লক্ষ্যপূরণ ‘কঙ্কাবতীর ঘাট’

পরিবারে কেউ ডায়াবিটিসে ভুগছেন? সুস্থ থাকতে কতটা বদল আনবেন খাদ্যাভ্যাসে

 

বাদাম

বাদামে আছে বায়োটিন যা দ্রুত চুলের বৃদ্ধি ঘটায় ও চুলকে গোড়া মজবুত করে। চিনা বাদাম, কাজুবাদাম, কাঠবাদাম, পেস্তা, আখরোট, আমন্ড সবই ভীষণ উপকারী। এগুলো প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অল্প পরিমাণে রাখতে হবে। এতে যেমন হৃদপিণ্ড ভালো থাকে, তেমনি চুলের স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে।
 

ওটস

ব্রেকফাস্টে খুব ভালো এক খাবার হল ওটস। ওটস প্রোটিনের খুব ভালো উৎস। তা ছাড়াও এতে ভিটামিন বি, তামা, জিঙ্ক পাওয়া যায়। নিয়মিত খাদ্য তালিকা ওটস রাখলে চুলের স্বাস্থ্য যেমন ভালো হয় তেমনি চুল বাড়েও।
 

পালংশাক

পালং শাকে আছে ওমেগা থ্রি ফাটি অ্যাসিড। এ ছাড়াও ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম ও আয়রন প্রচুর পরিমাণে উপস্থিত। এক কথায় বলা যায় পালংশাক ভিটামিন ও খনিজ লবণের উৎকৃষ্ট উৎস। হালকা সিদ্ধ করে সামান্য নুন দিয়ে খাওয়া যেতে পারে। তাছাড়া পালংশাক দিয়ে বিভিন্ন তরকারি খাওয়া যেতে পারে। পালংশাক চুলের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো।

আরও পড়ুন:

পর্দার আড়ালে, পর্ব-৩২: মঞ্জু ও অনুভা এসে বললেন, ‘আসুন বিকাশবাবু চু-কিত-কিত খেলি’

পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-৯: ‘মেরা কুছ সামান…’ গানে সুর দেওয়ার প্রস্তাবে গুলজারকে পত্রপাঠ বিদায় জানান পঞ্চম

গা ছমছমে ভৌতিক উপন্যাস: মিস মোহিনীর মায়া, পর্ব-১: জলের তলায় তার শরীরের কোনও অস্তিত্ব নেই!

 

গাজর

গাজর ক্যারোটিনের উৎকৃষ্ট উৎস, যা চুলের বৃদ্ধির জন্য ভীষণ উপকারী। গাজোরে উপস্থিত কেরোটিন বা ভিটামিন-এ ত্বকে শিবাম উৎপন্ন করে, যা একটি তৈলাক্ত রাসায়নিক উপাদান। এটি চুলের গোড়ার শুষ্কতা প্রতিরোধ করে। পাশাপাশি কাঁচা গাজর স্যালড হিসেবে খেলেও উপকার পাওয়া যায়।
 

মিষ্টি আলু

মিষ্টি আলুতে উপস্থিত ভিটামিন-এ। মাথার ত্বকের চুলকানি এবং খুশকির মতো সমস্যা সহজেই দূর করে দিতে পারে। তাই মিষ্টি আলু মাথার ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় একটি খাবার।
 

ডাল

ডালে উপস্থিত উদ্ভিজ্জ প্রোটিন আমাদের দেহের কোষের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এমনকি, চুলের কোষ বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। সঠিক পরিমাণের ডাল চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। পাশাপাশি চুলের বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ডাল রাখা প্রয়োজনীয়।
 

লেবু

ভিটামিন সি চুলের জন্য একটি প্রয়োজনীয় উপাদান। আর লেবু ভিটামিন সি-এর উৎকৃষ্ট উৎস। হালকা গরম জলে লেবু ও মধু সহযোগে খেলে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। তাই বিভিন্ন লেবু জাতীয় ফল যেমন কমলা লেবু, পাতি লেবু, মুসাম্বি লেবু প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন:

চেনা দেশ অচেনা পথ, পর্ব-১৭: কোরবা হয়ে সাতরেঙ্গা

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৬১: চাষাবাদ নিয়েও রবীন্দ্রনাথ ভেবেছে

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-১৮: শুঁটকি মাছে কি আদৌ কোনও পুষ্টিগুণ আছে?

 

আরও যা মাথায় রাখতে হবে

চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য খাদ্য তালিকার এই পরিবর্তনগুলির পাশাপাশি প্রতিদিনের জীবনযাপনেও বেশকিছু পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। যেমন:
প্রচণ্ড রোদে বেরোনোর সময় হালকা সুতির পোশাক পরুন।
চুলে যেন সরাসরি রোদ না লাগে। তাই চুল ঢেকে রাখা প্রয়োজন।
একদিন অন্তর মাথা ধুতে হবে, যাতে চুলের গোড়ায় ঘাম না জমে।
মাথার ত্বক শুকনো রাখতে হবে।
চুলকে বেঁধে রাখতে হবে, যাতে খুব বেশি রোদে চুল ক্ষতিগ্রস্ত না হয়ে যায়।
আর অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করতে হবে, যাতে রোদ থেকে সহজেই বাঁচা যায়।

যোগাযোগ: ৯৮৩০৭৬৮১৫২

* হেলদি ডায়েট (Healthy Diet): সুতনুকা পাল (Sutanuka Paul), পুষ্টিবিদ, ডায়েট-টু-ফাইট।

Skip to content