বৃহস্পতিবার ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫


ছবি: প্রতীকী।

তেজপাতার ভেষজ গুণ শুধু খাবারের স্বাদ বাড়ায় না, স্বাস্থ্য সুরক্ষাতেও বিভিন্নভাবে সাহায্য করে। এর অনেক গুণ রয়েছে। এ জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তেজপাতারকদর বেশ কদর। স্যুপ, পায়েস, পোলাও, যেকোনও সেদ্ধ জাতীয় খাবারে সুগন্ধ যোগ করতে এর জুড়ি মেলা ভার। তেজপাতায় আছে ভিটামিন ই এবং সি। আছে ফলিক অ্যাসিডও। সেই সঙ্গে এতে থাকা একাধিক গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে।
 

তেজপাতার গুণাগুণ

 

হজমে সাহায্য করে

হজমশক্তি বাড়াতে তেজপাতার জুড়ি মেলা ভার। এটি শরীর থেকে অতিরিক্ত টক্সিন বের করে দেহকে আরও ভালোভাবে কাজ করতে সহায়তা করে। অতিরিক্ত প্রস্রাবের সমস্যা কমায় ও হজম রস তৈরিতে এটি উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। তেজপাতায় রয়েছে এমন জৈব যৌগ, যা পেটের অসুখ সারাতে সাহায্য করে। ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (আইবিএস) বা অন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যকারিতার ত্রুটিজনিত সমস্যায় তেজপাতা খুব কার্যকর।
 

চুলের বৃদ্ধি ও খুশকি তাড়ায়

চুলের যত্নে তেজপাতায় রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কয়েকটি তেজপাতা গরম জলে সিদ্ধ করেসেই জল দিয়ে চুল ও স্কাল্প ধুলে উপকার পাবেন।

আরও পড়ুন:

হেলদি ডায়েট: সস্তার কচুশাক আসলে দামি, নিয়মিত খেলে এড়ানো সম্ভব অনেক রোগ

পরিযায়ী মন, পর্ব-১৭: পাপাঙ্গুলের যাত্রা

 

ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দিনে অন্তত দু’বার তেজপাতা গ্রহণ করলে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে। তেজপাতায় থাকা উপাদান ইনসুলিনের মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে নিয়ন্ত্রণে রাখে। যাঁদের টাইপ-২ ডায়াবিটিসের ঝুঁকি আছে তাঁদের জন্যও তেজপাতা বেশ উপকারী।
 

হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে

তেজপাতায় রয়েছে রুটিন ও ক্যাফেকঅ্যাসিড, যা হার্টের দেওয়ালকে মজবুত করে। সেই সঙ্গে কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমিয়ে দেয়। উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই তেজপাতা ব্যবহার করলে ভালো।

আরও পড়ুন:

মুভি রিভিউ: সুধীর মিশ্রের ‘আফওয়া’ নতুন প্রজন্মকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে সাহস জোগাবে

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৩২: সরকারবাড়ির ছেলেদের সঙ্গে শ্রীমার বুড়ি-বুড়ি খেলা

 

ব্যথা উপশম করে

তেজপাতা প্রদাহের বিরুদ্ধে কাজ করে। এটি যেকোনও ধরনের মাথা ব্যথা, জয়েন্টের ব্যথা এমনকি বাতের ব্যথা উপশমে কার্যকরী। তেজপাতায় রয়েছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট উপাদান, যা প্রদাহ দূর করে। ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে তেজপাতার এসেনশিয়াল ওয়েল উপকারী।
 

ক্ষত নিরাময় করে

তেজপাতায় অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও মাইক্রোব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকায় এটি ক্ষত সারাতে দারুণভাবে কাজ করে।
 

ক্যানসার প্রতিরোধী

গবেষণায় দেখা গিয়েছে, তেজপাতা ক্যানসারের কোষকে ধ্বংস করে দেয়। এতে ফাইটোনিউট্রিয়ান্স ও ক্যাটচিন উপাদান থাকায় এটি ক্যানসার কোষকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। গবেষণা বলছে, তেজপাতা ব্রেস্ট ক্যানসারের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে।

আরও পড়ুন:

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৩৪: সুন্দরবনের মৃত ও মৃতপ্রায় নদী

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৪৬: বুকে ব্যথা মানেই কি গ্যাসের ব্যথা? হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ না কি গ্যাসের ব্যথা, বুঝবেন কী ভাবে?

 

গলা খুশখুশ ও কাশি

ঠান্ডা লেগে কাশির সমস্যায় ভুগলে ব্যাকটেরিয়া তাড়াতে তেজপাতা চমৎকারভাবে সাহায্য করবে। ৪-৫টি তেজপাতা গরম জলে সেদ্ধ করে সেই জলে একটা শুকনো পরিষ্কার কাপড়ভিজিয়ে বারবার সেঁক নিলে উপকার মিলবে।
 

কিডনির পাথর

গবেষণা অনুযায়ী, তেজপাতা শরীরে ইউরিয়ার পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।
 

উদ্বিগ্নতা বা মানসিকচাপ কমাতে

যদি দিনের শেষে আপনার মনমেজাজ ভালো না লাগে তাহলে এক কাপ তেজপাতার চা খেয়ে দেখতে পারেন। এটি আপনার স্নায়ুকে তো শান্ত করেই সেই সঙ্গে উদ্বিগ্নতা কমায়। এমনকি, ঘুমও ভালো হয়।
 

মনে রাখা প্রয়োজন

তেজপাতা গর্ভবতী মা ও সদ্য মায়েদের প্রস্রাবে সঙ্ক্রমণ ঘটাতে পারে। এছাড়া সার্জারি রোগীদের ক্ষেত্রে অন্তত দুই সপ্তাহ তেজপাতা খেতে নিষেধ করা হয়। কারণ এটি স্নায়ুতন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

যোগাযোগ: ৯৮৩০৭৬৮১৫২

* হেলদি ডায়েট (Healthy Diet): সুতনুকা পাল (Sutanuka Paul), পুষ্টিবিদ, ডায়েট-টু-ফাইট।

Skip to content