শুক্রবার ৪ অক্টোবর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী।

শীতকালে সংক্রমণের আশঙ্কা অনেকটাই বেড়ে যাওয়া। এ সময় সর্দি কাশিও লেগেই থাকে। সারাদিন ক্লান্তি ভাব থাকায় কাজকর্মে প্রচণ্ড অনীহা দেখা যায়। তাই এই সময় শরীরের বাড়তি যত্ন নেওয়া জরুরি। শীতে শরীরকে গরম রাখা প্রয়োজন। তাই বাড়তি দেখভালের জন্য করলা উপর বিশেষ ভরসা করা যেতে পারে। করলা ঠান্ডায় শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে। স্বাদে তেতো হওয়ায় এটি প্রায় প্রত্যেকেরই অপছন্দ তালিকায় থাকে। কিন্তু অনেকেরই হয়তো জানা নেই, করলাতে রয়েছে নানান পুষ্টিগুণ। এটি যেমন সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে, তেমনি ওজন কমায়, ক্যানসার প্রতিরোধেও সাহায্য করে।
 

করলাতে কেন ভরসা রাখবেন?

ভিটামিন— যেমন বিটা ক্যারোটিন, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, ভিটামিন-সি, ডায়েটারি ফাইবার প্রভৃতিতে ভরপুর উৎস হল এই করলা। এই সমস্ত ভিটামিন ও মিনারেল শরীরে প্রবেশ করে ধীরে ধীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। ফলে ছোট-বড় বিভিন্ন রকমের রোগই আর শরীরে বাসা বাঁধার সুযোগ পায় না।

 

রোজ পাতে করলা থাকলে কী কী সমস্যা এড়ানো যায়?

করলা হজমশক্তি বাড়ায়। ফলে খাবার ইচ্ছে বেড়ে যায়।
শীতকালে সাধারণত যে সব রোগ মাথাচাড়া দেয়, করলা আমাদের শরীরকে সেই সব রোগের হাত থেকে রক্ষা করে।
করলায় থাকা ফসফরাস কফ নিরাময়ে সাহায্য করে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করেন, নিয়মিত করলা খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। শীতকালে আমাদের মিষ্টি, পিঠে, পায়েস খাওয়া হয়েই থাকে। তাই এই সময় যদি রোজ পাতে করোলা খাওয়া যায়, তবে তা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখবে।
করলা সব্জি-মশলা ছাড়া খেলে তা হাঁপানির সমস্যা কমে।

আরও পড়ুন:

হেলদি ডায়েট: আরও বেশি সুন্দর ও তরতাজা থাকতে নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই এই নিয়মগুলো মেনে চলুন

চেনা দেশ অচেনা পথ, পর্ব-১: ছুটি ও ছোটা ছুটি

করলা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন- সি সমৃদ্ধ। তাই করলা ত্বকের বলিরেখা দূর করে ত্বক টানটান রাখে। ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ে।
অ্যানিমিয়া এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগের চিকিৎসায় করলা ভীষণভাবে সাহায্য করে।
ক্যানসার প্রতিরোধেও করলার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা ‘ক্যানসার সেল’ যাতে তৈরি না হতে পারে সে দিকে নজর রাখে।
লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়াতে করলা সাহায্য করে। এতে উপস্থিত মোমরোডিকা লিভার ফেলিওর এর সম্ভাবনা কমায়।
করলাতে ‘ব্লাড পিউরিফাইং এজেন্ট’ উপস্থিতি রক্তকে পরিশুদ্ধ করে শরীরকে বিষমুক্ত রাখে।
কাঁচা করলার রস পাইলসের যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি করলা গাছের মূল বেটে খেলে বা এর পেস্ট পাইলসের ওপর লাগালে কষ্ট অনেকটাই কমে।
করলাতে যেহেতু বিটা ক্যারোটিন রয়েছে, তাই দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতেও সাহায্য করে।
আরও পড়ুন:

বিশ্বসেরাদের প্রথম গোল, পর্ব-১: চায়ের দোকান থেকে বিশ্বজয়

যোগা-প্রাণায়াম: রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চান? তাহলে যোগাসন হতে পারে সেরা অস্ত্র

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা দূর করতে রোজ পাতে করলা রাখতে হবে।
করলা রক্তে ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএল-এর মাত্রা বাড়ায়। ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমে যায়
করলার রস অ্যাজমা, ব্রংকাইটিস, গলার প্রদাহ, শ্বাসকষ্টের জন্য উপকারী।
গলব্লাডার স্টোনের সমস্যা থেকে উপকার পেতে করলার রস রোজ খাওয়া যেতে পারে।
পক্ষাঘাতগ্রস্থ রোগীদের জন্য করলা খুব উপকারী।
বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া বা কলেরার সমস্যাতে করলার রস খুব কাজে আসে।
ব্রণ দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল করে।
এছাড়াও একাধিক উপকারিতা রয়েছে এই করলার। তাই বিশেষ এ রকম একটি সব্জিকে রোজ পাতে রাখাই যায়।
আরও পড়ুন:

অনন্ত এক পথ পরিক্রমা, পর্ব-১: অমৃতের সন্ধানে…

বৈষম্যের বিরোধ-জবানি, পর্ব-১: নারী কি আলাদা? তাঁরা পুরুষদের সঙ্গে বসতে ভয় পান? তাহলে কি এত আয়োজন শুধু তাঁদের ভয় দেখাতে…

 

করলার রস বানাবেন কী করে?

করলা ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। তার পর বীজ ছাড়িয়ে নিন। এ বার করলা ব্লেন্ডারে দিয়ে দিন। তাতে এক কাপ জল দিয়ে দিন। সঙ্গে দিন এক চিমটি বিট নুন, গোলমরিচ, হলুদ, আদাবাটা দিন। খাওয়ার আগে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে নিন। ব্যাস, এবার করলার রস তৈরি।

যোগাযোগ: ৯৮৩০৭৬৮১৫২

* হেলদি ডায়েট (Healthy Diet): সুতনুকা পাল (Sutanuka Paul), পুষ্টিবিদ, ডায়েট-টু-ফাইট।

Skip to content