শনিবার ২৩ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী

পিসিওএস সমস্যায় ভুগলে খাদ্যতালিকায় কী কী থাকবে, আর কী কী এড়াতে হবে সে বিষয়ে অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা নেই। এ বিষয়ে জরুরি পরামর্শ দিয়েছেন পিয়ারলেস হাসপাতাল -এর সিনিয়র ডায়েটিশিয়ান সুবর্ণিতা মুখোপাধ্যায়

এখন অনেকেই বাড়ির থেকে বাইরের খাবার বেশি পছন্দ করেন। শুধু তাই নয়, আমাদের জীবনযাত্রাতেও আমূল পরিবর্তন এসেছে। ফলে পিসিওএস-এর মতো রোগ একটু বেশিই মাথাচাড়া দিচ্ছে—এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের। পিসিওএস-এর পুরো নাম ‘পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম’। সাধারণত মেয়েদের অনিয়মিত ঋতুস্রাব এই রোগের লক্ষণ। এই সময় ডিম্বাশয়ের চারপাশে ছোট ছোট সিস্ট তৈরি হয়, যা পিসিওএস নামে পরিচিত। পিসিওএসের কারণে শরীরে ক্রমশ মেদ বাড়তে থাকে। ফলস্বরূপ দ্রুত ওজন বাড়তে থাকে, শরীরে অবাঞ্ছিত লোম গজায়, অনিয়মিত ঋতুস্রাব হয়, মাথার চুল দ্রুত ঝরে পড়া, ব্রণ, ত্বকের সমস্যা সহ অনেক ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়। এই সমস্যার সমাধান কেবল ওষুধেই সম্ভব নয়। এর জন্য রোজকার জীবনযাত্রাতেও বদল আনতে হবে তবেই পিসিওএসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। লাইফস্টাইল যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই খাদ্যাভ্যাসেও বদল আনা জরুরি। তাই পিসিওএস সমস্যায় ভুগলে ডায়েটচার্টে কী কী রাখতে হবে আর কোন কোন খাবারই বা এড়িয়ে চলতে হবে সেটা জানা জরুরি।

খাদ্যতালিকায় থাকলে ভালো
মহিলাদের হরমোন লেভেলের তারতম্যের জন্য পিসিওএসের মতো সমস্যা হয়ে থাকে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে ‘লো-কার্ব’ ডায়েট মেনে চলতে হবে। ফাইবারযুক্ত খাবার যেমন বিভিন্ন ধরনের মরশুমি শাক-সবজি, ফলমূল বেশি করে খেতে হবে। ফলের রসের চেয়ে গোটা ফল খাওয়াই শ্রেয়। আর ভাত বা রুটির পরিমাণটা কমিয়ে যদি শাক-সবজি একটু বেশি খাওয়া যায় তাহলে খুবই উপকার হবে। তবে কোনও কিছুই অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়া ভালো নয়। সব সময় শরীর বুঝে খেতে হবে। ‘ফ্যাট’ নেই এমন দুধ খাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। এক্ষেত্রে ডবল টোনড দুধ খাওয়া যেতে পারে। ছানা, টকদই রাখুন খাদ্যতালিকায়। চিকেনও খাওয়া যেতে পারে, তবে বেশি তেলমশলা দিয়ে রান্না না করলেই ভালো। একটু স্বাদ বদল করতে মাঝেমধ্যে ‘ডার্ক চকোলেট’ খাওয়া যেতে পারে। এসবের পাশাপাশি অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খেতে হবে।

কী কী এড়াতে হবে
পিসিওএসের জন্য ডায়েটচার্ট থেকে কী কী বাদ দিতে হবে? এর থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রথমেই জাঙ্ক ফুড বাদ দিতে হবে। তেলেভাজা অর্থাৎ ভাজাভুজি খাওয়া একেবারেই বন্ধ করতে হবে। কমাতে হবে মিষ্টি খাওয়ার পরিমাণ। ডার্ক চকোলেট ছাড়া অন্যকোনও চকোলেট না খাওয়াই ভালো। আর চেষ্টা করুন খাদ্যতালিকা থেকে যতটা সম্ভব মাটন, চিজ, বাটার, ঘি, বাদাম জাতীয় খাবার বাদ দেওয়ার। আগেই উল্লেখ করেছি, প্রসেস ফুড, ফাস্ট ফুডকে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। খাওয়া যাবে না ঠান্ডা পানীয়। পাশাপাশি ময়দার তৈরি যেকোনও খাবার থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়। তবে মাসে অল্পস্বল্প এক-আধবার ময়দার তৈরি খাবার খাওয়া যেতেই পারে। খেয়াল রাখতে হবে সেটা যেন প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় না থাকে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা হল, এই সমস্যায় যতটা সম্ভব বাড়ির তৈরি রান্না খাওয়া দরকার। সব শেষে, অবশ্যই রোজ নিয়ম মেনে শরীরচর্চা করতেই হবে। তবেই পিসিওএস থেকে মিলবে মুক্তি৷

যোগাযোগ: ৯৪৩৩৯৯১৭১৫

 


Skip to content