ছবি প্রতীকী, সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে।
করোনা আবহে বিগত দুবছর আমাদের প্রিয় শিক্ষার্থীরা সঠিক ও যথাযথ ক্লাসরুমের পঠন-পাঠন থেকে অনেকটাই বঞ্চিত হয়েছিল, একথা অনস্বীকার্য। এরই মধ্যে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা চলে এল। আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকটা দিন। শেষ মুহূর্তে তোমাদের সাহায্য করার জন্য ও তোমাদের মানসিক বল তথা আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। উচ্চমাধ্যমিকের প্রথম ভাষা বাংলা বিষয়ে তোমাদের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে তোলার জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আজকে আমি আলোচনা করব।
শুরুর কথা
প্রথমেই বলি, মনে কোনও রকমের চাপ না নিয়ে পরীক্ষা দিতে যাও। পরীক্ষা তোমাদের ভালো হবেই। এতদিনে তোমরা জেনেই গেছো যে, ‘সাহিত্যচর্চা’ গ্রন্থ থেকে ‘কে বাঁচায় কে বাঁচে’ নামক ছোটগল্প এবং ‘শিকার’ কবিতাটি এ বছর তোমাদের সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ভাষা-সাহিত্য থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে শব্দার্থতত্ত্ব এবং পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ ‘আমার বাংলা’ থেকে ‘কলের কলকাতা’ নামক রচনাটি। এ বছর সিলেবাসে নেই। বাঙালির শিল্প ও সংস্কৃতি থেকে ‘বাংলা গানের ধারা’ নামক অধ্যায়টিও এ বছর বাদ আছে। মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় তোমরা যেমন এম.সি.কিউ ও এস.এ.কিউ’র উত্তর মূল উত্তরপত্রে লিখতে, উচ্চমাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কিন্তু মনে রাখতে হবে যে ‘বিভাগ খ’ অংশে এম.সি.কিউ ও এস.এ.কিউ প্রশ্নগুলি থাকবে এবং সেগুলোর উত্তর প্রদত্ত প্রশ্নপত্রের মধ্যেই লিখতে হবে। কাজেই ওই নির্দিষ্ট স্থানের মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমাণ শব্দে উত্তর লেখার জন্য অবশ্যই যত্নবান হতে হবে। আমি জানি তোমরা বিগত কয়েক মাস ধরে বেশ যত্নের সাথে নিজেরা এই শব্দসংখ্যা ধরে উত্তর লেখা অভ্যাস করেছ। তবুও তোমাদের পাঠ্যক্রমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রশ্নের কথা আজ তোমাদের জানাব। যেসব প্রশ্ন এতদিন পড়ে প্রস্তুত করেছ তার সঙ্গে এই প্রশ্নগুলোও পড়ে যাবে।
শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
গল্প থেকে পাঁচ নম্বরের যে প্রশ্নগুলি প্রস্তুত করে যাবে সেগুলো নীচে দেওয়া হল
● ‘সেই সময় এল এক বুড়ি।’—লেখক বুড়ির সম্পর্কে যে বর্ণনা দিয়েছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।
● ‘এ সংসারে সবকিছুই চলে বড় পিসিমার নিয়মে।’—বড় পিসিমা কে? গল্পে তার চরিত্রের কী পরিচয় পাওয়া যায়? (১+৪=৫)
● ‘বাদার ভাত খেলে তবে তো সে আসল বাদাটার খোঁজ পেয়ে যাবে একদিন।’—বাদা কাকে বলে? উদ্দিষ্ট ব্যক্তির এরকম মনে হয়েছিল কেন? (১+৪=৫)
● ‘শেষ রোদের আলোয় সে দূরের দিকে ক্রমশ আবছা হয়ে গেল।’—কার কথা বলা হয়েছে? এরকম বলা হয়েছে কেন? (১+৪=৫)
● ‘সকাল হতেই বোঝা গিয়েছিল সর্বনাশের বহরখানা।’—কোন সর্বনাশের কথা বলা হয়েছে? এই সর্বনাশ কার জীবনে কী পরিণতি ডেকে এনেছিল তা ভাত গল্প অবলম্বনে লেখো। (৩+২=৫)
● ‘মারতে মারতে ওরা উচ্ছবকে থানায় নিয়ে যায়।’—কারা উচ্ছবকে মারতে মারতে থানায় নিয়ে গিয়েছিল? তারা কখন এবং কেন এ কাজ করেছিল লেখো। (১+৪=৫)
কবিতা থেকে যে প্রশ্নগুলি ভালো করে দেখে রাখবে
● ‘সে কখনো করে না বঞ্চনা।’—কে কখন বঞ্চনা করে না? কবি কীভাবে এই ভাবনায় উপনীত হলেন? (১+৪=৫)
● ‘রূপনারানের কূলে জেগে উঠিলাম।’—কে জেগে উঠলেন? এই জেগে ওঠার আসল অর্থ কবিতাটির মধ্যে কীভাবে প্রকাশিত হয়েছে লেখো। (১+৪=৫)
● ‘আমার ক্লান্তির উপর ঝরুক মহুয়া ফুল/ নামুক মহুয়ার গন্ধ।’—বক্তা কে? তিনি এরকম কামনা করেছেন কেন? (১+৪=৫)
● ‘আরোগ্যের জন্য ওই সবুজের ভীষণ দরকার।’—ওই সবুজ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? সেই সবুজকে পাওয়ার জন্য তিনি কী নির্দেশ দিয়েছেন? (২+৩=৫)
● ‘আমি তা পারি না।’—কবি কী পারেন না? কবি কী পারেন তা লেখো। (২+৩=৫)
নাটক থেকে নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলি ভালো করে দেখে যাবে
● ‘বিভাব’ নাটকে অভাবের চিত্র কীভাবে ফুটে উঠেছে লেখো। (৫)
● বিভাব কথাটির অর্থ কী?এই নাটকের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো। (১+৪=৫)
● ‘জীবন কোথায়?’—কে কাকে বলেছেন? বক্তা জীবনকে কোথায় খুঁজে পাওয়া যাবে বলে মনে করেছেন? (২+৩=৫)
● আইজেনস্টাইন কে ছিলেন? তিনি কাদের অভিনয় দেখে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন? সেই অভিনয় দেখে তিনি কী লিখেছিলেন? (১+১+৩=৫)
● একাঙ্ক নাটক হিসেবে ‘নানা রঙের দিন’ নাটকটি কতখানি সার্থক হয়েছে লেখো। (৫)
● ‘নানা রঙের দিন’ নাটক অবলম্বনে রজনী চাটুজ্জের চরিত্র বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো। (৫)
আন্তর্জাতিক কবিতা থেকে নীচের এই কয়েকটি প্রশ্ন করে রাখলে ভালো
● ‘ভারত জয় করেছিল তরুণ আলেকজান্ডার/ একলাই নাকি?’—
আলেকজান্ডার কে ছিলেন? কবি একথা বলেছেন কেন?(১+৪=৫)
● ‘কে আবার গড়ে তুলল এতবার?’—কী গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে? এই প্রশ্নের মাধ্যমে কবি কী বুঝিয়েছেন? (১+৪=৫)
● ‘বইয়ে লেখে রাজার নাম/ রাজারা কি পাথর ঘাড়ে করে আনত?’—কারা কেন পাথর ঘাড়ে করে এনেছিল লেখো। (১+৪=৫)
ভারতীয় গল্প
● ‘ঝড়ের বেগে ছুটে আসা ট্রেন থামানো গেল। পাথরের চাঁই থামানো যাবে না কেন?’— ট্রেন থামানো হয়েছিল কেন? কীভাবে ট্রেন থামানো হয়েছিল? (২+৩=৫)
● ‘চোখের জলটা তাদের জন্য।’—বক্তা কাদের জন্য চোখের জল ফেলেছেন? যে ঘটনায় বক্তার চোখে জল এসেছিল তা সংক্ষেপে লেখো। (১+৪=৫)
● ‘অলৌকিক’ গল্পে ছেলেবেলায় হাত দিয়ে পাথরের চাঁই থামানোর ঘটনা বিশ্বাস করেননি কেন? পরে সেই ঘটনা তার কাছে কীভাবে বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠেছিল? (২+৩=৫)
আমার বাংলা
● ‘জেলখানাটা পাহাড়ের তিনতলা সমান একটা হাঁটুর উপর।’— কোন্ জেলখানার কথা বলা হয়েছে? সেখানে
কয়েদিদের উপর কেমন অত্যাচার করা হত?(১+৪=৫)
● ‘ছিল জোতদার আর তালুকদারের নিরঙ্কুশ শাসন।’—লেখক কীভাবে এই বর্ণনা দিয়েছেন তা নিজের ভাষায় লেখো। (৫)
● ‘নতুন ছাতি মাথায় দিয়ে মহাফুর্তিতে বাড়ির দিকে চলল সে।’—কার কথা বলা হয়েছে? সে কীভাবে নতুন ছাতি পেয়েছিল? শেষে তার কী হয়েছিল? (১+২+২=৫)
● ‘কিন্তু হাতি বেগার আর চলল না।’—হাতি বেগার আইন কী? তা চলল না কেন? (২+৩=৫)
● ‘তোমরা হাত বাড়াও। তাকে সাহায্য করো।’—লেখক কাকে, কীভাবে, কেন সাহায্য করতে বলেছেন লেখো। (১+২+২=৫)
ভাষার ইতিহাস
● গঠনগত দিক থেকে বাক্য কয় প্রকার? যেকোনও এক প্রকারের বাক্য উদাহরণ সহ আলোচনা করো। (১+৪=৫)
● উদাহরণসহ গুচ্ছধ্বনি ও যুক্তধ্বনির পরিচয় দাও। (৫)
● মুণ্ডমাল শব্দ কাকে বলে? উদাহরণ সহযোগে বুঝিয়ে দাও। (৫)
● অবিভাজ্য ধ্বনি কাকে বলে? দুটি অবিভাজ্য ধ্বনি সম্পর্কে আলোচনা করো। (২+৩=৫)
● ফলিত ভাষাবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখাগুলি উল্লেখ করে যেকোনও একটি শাখা সম্পর্কে আলোচনা করো। (২+৩=৫)
● প্রত্যয় কাকে বলে? ব্যবহারিক প্রয়োগের অবস্থান অনুযায়ী প্রত্যয়কে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী? প্রতিটি বিভাগের একটি করে উদাহরণ দাও। (১+১+৩=৫)
বাঙালির শিল্প ও সংস্কৃতি
● চিত্রকলার ইতিহাসে রামকিঙ্কর বেইজের অবদান আলোচনা করো। (৫)
● বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সত্যজিৎ রায়ের অবদান আলোচনা করো। (৫)
● বাঙালির চিত্রকলার ধারায় নন্দলাল বসু/ অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান আলোচনা করো। (৫)
● বাঙালির বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়/ জগদীশচন্দ্র বসুর ভূমিকা আলোচনা করো। (৫)
● বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ঋত্বিক ঘটক/ মৃণাল সেনের অবদান আলোচনা করো। (৫)
● চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিধানচন্দ্র রায়ের অবদান আলোচনা করো। (৫)
● বাঙালির বিজ্ঞান সাধনায় ইতিহাসে জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির অবদান আলোচনা করো। (৫)
● চিকিৎসা বিজ্ঞানে কাদম্বিনী বসু গঙ্গোপাধ্যায়ের ভূমিকা সংক্ষেপে লেখো। (৫)
মনে রাখবে এই প্রশ্নগুলির উত্তর কমবেশি ১৫০টি শব্দের মধ্যে লিখতে হবে। তবে ১০% শব্দ সংখ্যা কম বা বেশি এক্ষেত্রে মার্জনীয়। পাঁচ নম্বরের প্রশ্নে একাধিক ভাঙা অংশ থাকলে অবশ্যই প্রতিটি অংশের জন্য পৃথক পৃথক অনুচ্ছেদ ব্যবহার করবে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা
পরীক্ষার প্রথম দিন নিজের স্কুলে নির্ধারিত সময়ের অন্তত ৪৫ মিনিট পূর্বে উপস্থিত হবে। কেননা কোন জায়গায় তোমার সিট্ পড়েছে এবং লেখার বেঞ্চ্ ঠিকঠাক আছে কি না তা ভালো করে যাচাই করে নিয়ে অসুবিধা থাকলে প্রধান শিক্ষক মহাশয়কে জানাবে। পরীক্ষার উত্তরপত্র হাতে পেয়ে প্রথমেই স্পষ্ট অক্ষরে নিজের নাম, রোল নম্বর রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখবে। উত্তরপত্রের খাতার উপরের দিকে এবং বাঁদিকে কমপক্ষে এক ইঞ্চি মাপের জায়গা মার্জিন হিসেবে রাখবে। খাতার ডানদিকে এবং নীচের দিকে আধ ইঞ্চি পরিমাণ জায়গা মার্জিন রাখলেই হবে। এই মার্জিনটুকু পেনসিল দিয়ে দাগ কেটে নিতে পারো অথবা তাড়া থাকলে ভাঁজ করেই মার্জিন দিতে পারো। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর লেখা শেষ হয়ে গেলে অন্তত দুই ইঞ্চি জায়গা ফাঁক রেখে পরের উত্তরটা লিখবে। যে প্রশ্নের উত্তর লিখবে প্রশ্নপত্র অনুসারে চিহ্নিত সেই প্রশ্ন সংখ্যাটি লিখে তারপর উত্তর লেখা শুরু করবে। মনে রাখবে উত্তর যদি অনেক বড় হয় এবং একই প্রশ্নের উত্তর পরের পাতাতেও লেখার প্রয়োজন হয়, তবে আর প্রশ্ন সংখ্যাটি লেখার প্রয়োজন নেই। কারণ এতে পরীক্ষকেরা বিভ্রান্ত হতে পারেন। কোনও প্রশ্নের উত্তর লেখার পূর্বেই ভালো করে ভেবে নিয়ে তারপর উত্তর লেখা আরম্ভ করবে। লেখার পর আর সে বিষয়ে না ভাবাই উচিত। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট আগে যে সতর্কীকরণ ঘণ্টা বাজানো হয়, তা শুনে নিজের একটা পরিকল্পনা করে নিও। এই সময়ের পর অন্তত পাঁচ মিনিট পুরো উত্তরপত্রে চোখ বুলিয়ে নেবে। যদি অতিরিক্ত পাতা নেওয়ার প্রয়োজন হয় তবে সেই পাতাগুলি পরপর সংখ্যার দ্বারা চিহ্নিত করবে এবং সেলাই করার সময় সেই নম্বরগুলি দেখে সাজিয়ে তারপর সেলাই করবে। পরীক্ষা দিতে গিয়ে যদি মনে হয় কলমের কালি পরিবর্তন করা জরুরি তবে নজরদারিতে থাকা শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে জানিয়ে মার্জিনে একটা সই করিয়ে নেবে। সবশেষে উত্তরপত্র জমা দিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্র ত্যাগ করার পূর্বে নিজের সমস্ত কাগজপত্র ঠিকমতো বুঝে নিও। আবার বলি যারা মূল টেক্সট খুঁটিয়ে পড়বে তাদের কোনও কারণেই খারাপ পরীক্ষা হবে না। অতএব মনে কোনও দুশ্চিন্তা আনার কোনও প্রয়োজন নেই। নিশ্চিন্ত মনে পরীক্ষা দিতে যাও। তোমাদের সাফল্য আসবেই। তোমাদের জন্য আমার অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা রইল।
প্রথমেই বলি, মনে কোনও রকমের চাপ না নিয়ে পরীক্ষা দিতে যাও। পরীক্ষা তোমাদের ভালো হবেই। এতদিনে তোমরা জেনেই গেছো যে, ‘সাহিত্যচর্চা’ গ্রন্থ থেকে ‘কে বাঁচায় কে বাঁচে’ নামক ছোটগল্প এবং ‘শিকার’ কবিতাটি এ বছর তোমাদের সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ভাষা-সাহিত্য থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে শব্দার্থতত্ত্ব এবং পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ ‘আমার বাংলা’ থেকে ‘কলের কলকাতা’ নামক রচনাটি। এ বছর সিলেবাসে নেই। বাঙালির শিল্প ও সংস্কৃতি থেকে ‘বাংলা গানের ধারা’ নামক অধ্যায়টিও এ বছর বাদ আছে। মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় তোমরা যেমন এম.সি.কিউ ও এস.এ.কিউ’র উত্তর মূল উত্তরপত্রে লিখতে, উচ্চমাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কিন্তু মনে রাখতে হবে যে ‘বিভাগ খ’ অংশে এম.সি.কিউ ও এস.এ.কিউ প্রশ্নগুলি থাকবে এবং সেগুলোর উত্তর প্রদত্ত প্রশ্নপত্রের মধ্যেই লিখতে হবে। কাজেই ওই নির্দিষ্ট স্থানের মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমাণ শব্দে উত্তর লেখার জন্য অবশ্যই যত্নবান হতে হবে। আমি জানি তোমরা বিগত কয়েক মাস ধরে বেশ যত্নের সাথে নিজেরা এই শব্দসংখ্যা ধরে উত্তর লেখা অভ্যাস করেছ। তবুও তোমাদের পাঠ্যক্রমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রশ্নের কথা আজ তোমাদের জানাব। যেসব প্রশ্ন এতদিন পড়ে প্রস্তুত করেছ তার সঙ্গে এই প্রশ্নগুলোও পড়ে যাবে।
আলেকজান্ডার কে ছিলেন? কবি একথা বলেছেন কেন?
কয়েদিদের উপর কেমন অত্যাচার করা হত?
মনে রাখবে এই প্রশ্নগুলির উত্তর কমবেশি ১৫০টি শব্দের মধ্যে লিখতে হবে। তবে ১০% শব্দ সংখ্যা কম বা বেশি এক্ষেত্রে মার্জনীয়। পাঁচ নম্বরের প্রশ্নে একাধিক ভাঙা অংশ থাকলে অবশ্যই প্রতিটি অংশের জন্য পৃথক পৃথক অনুচ্ছেদ ব্যবহার করবে।
পরীক্ষার প্রথম দিন নিজের স্কুলে নির্ধারিত সময়ের অন্তত ৪৫ মিনিট পূর্বে উপস্থিত হবে। কেননা কোন জায়গায় তোমার সিট্ পড়েছে এবং লেখার বেঞ্চ্ ঠিকঠাক আছে কি না তা ভালো করে যাচাই করে নিয়ে অসুবিধা থাকলে প্রধান শিক্ষক মহাশয়কে জানাবে। পরীক্ষার উত্তরপত্র হাতে পেয়ে প্রথমেই স্পষ্ট অক্ষরে নিজের নাম, রোল নম্বর রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখবে। উত্তরপত্রের খাতার উপরের দিকে এবং বাঁদিকে কমপক্ষে এক ইঞ্চি মাপের জায়গা মার্জিন হিসেবে রাখবে। খাতার ডানদিকে এবং নীচের দিকে আধ ইঞ্চি পরিমাণ জায়গা মার্জিন রাখলেই হবে। এই মার্জিনটুকু পেনসিল দিয়ে দাগ কেটে নিতে পারো অথবা তাড়া থাকলে ভাঁজ করেই মার্জিন দিতে পারো। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর লেখা শেষ হয়ে গেলে অন্তত দুই ইঞ্চি জায়গা ফাঁক রেখে পরের উত্তরটা লিখবে। যে প্রশ্নের উত্তর লিখবে প্রশ্নপত্র অনুসারে চিহ্নিত সেই প্রশ্ন সংখ্যাটি লিখে তারপর উত্তর লেখা শুরু করবে। মনে রাখবে উত্তর যদি অনেক বড় হয় এবং একই প্রশ্নের উত্তর পরের পাতাতেও লেখার প্রয়োজন হয়, তবে আর প্রশ্ন সংখ্যাটি লেখার প্রয়োজন নেই। কারণ এতে পরীক্ষকেরা বিভ্রান্ত হতে পারেন। কোনও প্রশ্নের উত্তর লেখার পূর্বেই ভালো করে ভেবে নিয়ে তারপর উত্তর লেখা আরম্ভ করবে। লেখার পর আর সে বিষয়ে না ভাবাই উচিত। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট আগে যে সতর্কীকরণ ঘণ্টা বাজানো হয়, তা শুনে নিজের একটা পরিকল্পনা করে নিও। এই সময়ের পর অন্তত পাঁচ মিনিট পুরো উত্তরপত্রে চোখ বুলিয়ে নেবে। যদি অতিরিক্ত পাতা নেওয়ার প্রয়োজন হয় তবে সেই পাতাগুলি পরপর সংখ্যার দ্বারা চিহ্নিত করবে এবং সেলাই করার সময় সেই নম্বরগুলি দেখে সাজিয়ে তারপর সেলাই করবে। পরীক্ষা দিতে গিয়ে যদি মনে হয় কলমের কালি পরিবর্তন করা জরুরি তবে নজরদারিতে থাকা শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে জানিয়ে মার্জিনে একটা সই করিয়ে নেবে। সবশেষে উত্তরপত্র জমা দিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্র ত্যাগ করার পূর্বে নিজের সমস্ত কাগজপত্র ঠিকমতো বুঝে নিও। আবার বলি যারা মূল টেক্সট খুঁটিয়ে পড়বে তাদের কোনও কারণেই খারাপ পরীক্ষা হবে না। অতএব মনে কোনও দুশ্চিন্তা আনার কোনও প্রয়োজন নেই। নিশ্চিন্ত মনে পরীক্ষা দিতে যাও। তোমাদের সাফল্য আসবেই। তোমাদের জন্য আমার অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা রইল।