বুধবার ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪


নতুন বছর। নতুন সময়। সতেজ ও স্নেহময়। তোমাদের নতুন ক্লাস হল। যে পঞ্চম শ্রেণিতে ছিলে সে এবার ষষ্ঠ শ্রেণিতে বসবে। তোমাদের এখন অনেক আনন্দ। নতুন বই। তার অফুরন্ত রূপ। মলাট থেকে ভেতরের পাতা ছবি লেখা সবই কত সুন্দর। একাদশের ছাত্র-ছাত্রীরা বার্ষিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হচ্ছো। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্রছাত্রীরা খেলতে যাচ্ছ বিশ্বকাপ। পরীক্ষায় যে যার সাধ্য মতো ভালো ফল করবে। তোমার রেজাল্ট তোমার, তোমার পরিবার, প্রতিবেশী আর বিদ্যালয়ের জন্য সোনার বিশ্বকাপ।
নতুন বছরের ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের কাজ কীভাবে আরও ভালো করে করবে তা ভাববে। কয়েকটি কথা আমিও বলছি। তোমাদের মা-বাবা আর শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ তোমাদের বলে থাকেন এই গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো।

প্রথমত: তোমাকে হাসিমুখে পড়তে হবে। যে অবস্থায় থাকো না কেন হাসি খুশি থাকার চেষ্টা করবে। তাহলে মনের পুরো শক্তি তুমি তোমার কাজে ব্যবহার করতে পারবে।

দ্বিতীয়ত: নিজের উপর বিশ্বাস রাখবে। তোমার মধ্যে সব ক্ষমতা আছে। আর তুমি অনেক গুণ অর্জনের জন্য সক্ষম। তুমি পারো। তুমি পারবে। নিজের মূল্য নিজে বুঝে নাও। আত্মবিশ্বাস সবচেয়ে দামি সম্পদ। ভুলবে না কখনও।
তৃতীয়ত: তোমার জীবনের লক্ষ্য থাকতে হবে। কি লক্ষ্য? ডাক্তার, উকিল, ইঞ্জিনিয়ার, অফিসার হওয়া? না। আমি এই লক্ষ্যের কথা বলছি না। তুমি নতুন লক্ষ্য স্থির করে নাও। প্রিয় হবে। কার প্রিয়? কাদের প্রিয়? বাবা-মার প্রিয়। শিক্ষক-শিক্ষিকাগণের প্রিয়। সমাজের প্রিয়। একটা কথা বলছি। ভেবে দেখো তোমাদের মধ্যে কাউকে দেখবে তাদের শুধু বন্ধুদের প্রিয় হতেই যত ইচ্ছে আর আগ্রহ। তার জন্য পোশাক চুলের ছাট আর মোবাইলই যথেষ্ট আর দরকার বনবন করে ঘুরে বেড়ানো এদিক-ওদিক। এতে মুখ ভর্তি হাসি ফুটবে। কিন্তু তা দু’ দিনের। পতঙ্গের ডানার মতো। পাখির মতো ওড়ার ক্ষমতা ওই ডানায় নেই। তাই আসল হাসির সন্ধানে উদ্যমী হবে। পরিশ্রমী হবে। বন্ধু দরকার। আনন্দ দরকার। কোনটি সঠিক বন্ধুত্ব আর কোনটি সঠিক আনন্দের উৎস তা চিনতে শেখো। আমাদের ছোট্ট বন্ধুরা পরিবারের মানুষদের সাথে অনেকটা সময় কাটাবে। বাড়িতেই পেয়ে যাবে চমৎকার আনন্দ- স্নেহের, যত্নের আর ভালোবাসার।
আরও পড়ুন:

ক্লাসরুম: ইংরেজিতে ভালো নম্বরের জন্য Writing Skill Development-এ গুরুত্ব দিতে হবে

অনন্ত এক পথ পরিক্রমা, পর্ব-১: অমৃতের সন্ধানে…

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৪৭: পুরীতে বাড়ি— রবীন্দ্রনাথের, গগনেন্দ্রনাথ-অবনীন্দ্রনাথের

ক্লাসে খুব মনোযোগ দিয়ে পড়া শুনবে, যা পড়ানো হবে তা আগে এক দুবার পড়ে তারপর ক্লাসে যাবে। দেখবে ম্যাজিকের মতো সব পড়া ক্লাসেই মুখস্ত হয়ে যাবে। বিদ্যা অর্জনের এর থেকে ভালো পথ আর নেই। সবচেয়ে সহজ পথ-শুনেই শিখে ফেলা।
পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য দরকার সব অধ্যায় সম্পূর্ণ ভালো করে বোঝা। তারপর শেখা। তিন-চার বার রিভিসন করতে হবেই, না হলে স্মৃতিতে থাকবে না। লিখতে হবেই। তারপর লাল কালির কলম দিয়ে ‘সেলফ কারেকশন’ করতে হবে। পরীক্ষার আগে ‘মডেল কোয়েসচেন’ আর সব আগের বছরের প্রশ্নপত্রগুলিকে ‘সলভ’ করতে হবে। ‘মক টেস্ট’ দেবে। নিজেই নিজের পরীক্ষার আয়োজন করতে পারো। নিজেই খাতা দেখতে পারো যদি প্রয়োজন হয়।
আরও পড়ুন:

মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা সহজে শিখে নাও Transformation of Sentences by changing the DEGREES of Adjectives

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-১: স্নানের আগে রোজ সর্ষের তেল মাখেন?

চেনা দেশ অচেনা পথ, পর্ব-১: ছুটি ও ছোটা ছুটি

আর কী চাই? আর কী হলে ভালো হয় জীবন?

গল্পের বই পড়বে। ম্যাগাজিন পড়বে। বাংলা ও ইংরেজি দুটোই। খেলবে। সঠিক খাবার খাবে। আবৃত্তি, নাচ, গান, আঁকা, সাঁতার শিখবে। খুব দরকার এগুলো। স্কুলে অনুষ্ঠান করবে। বিতর্ক বক্তৃতা করবে। খেলতে শিখবে। ঘরের ভিতরে খেলবে স্পঞ্জের বল দিয়ে। খেললে শরীর বাচবে। মন তাজা থাকবে। মাঝে মাঝে দীন, দরিদ্র, দুস্থ মানুষদের জন্য সেবামূলক কাজ করবে। বিরাট আনন্দ পাবে এতে। মানুষ হিসেবে বড় মানুষ হয়ে উঠবে তোমরা।

ভালো থেকো। তোমাদের জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা আর ভালোবাসা থাকবে আমাদের।
* ক্লাসরুম (Classroom): উৎপল ভৌমিক (Utpal Bhaumik), ইংরেজির শিক্ষক, রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন বালকাশ্রম উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

Skip to content