বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।

‘শিক্ষক’ শব্দটির মধ্যে দিয়ে বোঝানো হয় আমাদের সকলের জীবনের অতি গুরুত্বপূর্ণ একজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিকে। আমাদের বাবা-মায়ের মতোই শিক্ষক হচ্ছেন আমাদের জীবনের একজন বড় শুভাকাঙ্ক্ষী। যিনি চিরকালই নিজের মূল্যবান নির্দেশনা দ্বারা আমাদের জীবনে সঠিক পথে চালনা করে থাকেন।

শিক্ষক দিবস বলতে এক বিশেষ দিনকে বোঝানো হলেও প্রাচীন ভারতে ব্রহ্মচর্য শিক্ষাব্যবস্থায় ছাত্ররা প্রতিদিনই গুরু সেবার মাধ্যমে যথার্থ অর্থেই শিক্ষক দিবস পালন করতেন। তাই কেবল ৫ সেপ্টেম্বরই শিক্ষক দিবস নয়, বছরের প্রতিটি দিনই আমাদের কাছে শিক্ষক দিবস। ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণকে সম্মান জ্ঞাপনের জন্যই দেশে ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস পালন করা হয়।
একেবারে ছোটবেলায় আমার শিক্ষক দিবস পালনের বিশেষ অভিজ্ঞতা না থাকলেও আমি যখন আমাদের বিদ্যালয় তথা ‘রামকৃষ্ণ মিশন বয়েজ হোম’-এ ভর্তি হলাম, তখন থেকেই অনেক কিছু শিখতে পারলাম। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমাদের শিক্ষকতা করার এক নতুন অভিজ্ঞতা। প্রতিবছরই এই দিনটায় আমাদের স্কুলে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্ররা অন্যান্য ছোট ক্লাসগুলোতে শিক্ষকতা করার দায়িত্ব পায়। এর মাধ্যমে আমরা যথার্থই বুঝতে পারি, শিক্ষকতা করা কতটা কঠিন ও ধৈর্যের কাজ।
আরও পড়ুন:

শিক্ষক দিবসে উজ্জ্বল হোক ছাত্রছাত্রীরা

শিক্ষক দিবস আসলে ভাবার দিন, ভাবতে শেখানোর দিন

শিক্ষকরা সারাদিন ধরে কীভাবে এই কাজ করেন সে-বিষয়ে আমরা বিস্মিত হই। এও বুঝতে পারি, একটা ক্লাস নিয়ন্ত্রণ করা কতটা কঠিন। এ বছরেও আমাদের মধ্যে অনেকেই শিক্ষকতার দায়িত্ব লাভ করেছি। পাশাপাশি আমাদের ক্লাসেও দাদারা পড়াতে আসেন এবং এর মাধ্যমে আমরা বহু জ্ঞান অর্জন করতে পারি। এছাড়াও এমন দিনে আমাদের স্কুলে ফুটবল খেলা আয়োজন করা হয়। এর মাধ্যমে আমরা অনাবিল আনন্দের সঙ্গেই দিনটি উপভোগ করি।
আরও পড়ুন:

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৩৪: কবি যখন শিক্ষক

হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-১৩: মালিকা পরিলে গলে/ প্রতি ফুলে কে-বা মনে রাখে?…

“গুরুব্রহ্মা গুরুরবিষ্ণুঃ গুরুরদেব মহেশ্বরঃ” অর্থাৎ, “গুরুই ব্রহ্মা, গুরুই বিষ্ণু,গুরুই মহেশ্বর”। গুরু হচ্ছেন ছাত্র জীবনের ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর তথা ছাত্রজীবনের মূল স্তম্ভ গুরুভক্তি। শিক্ষকরা শুধু আমাদের শেখান না, আমাদের দায়িত্বশীল গড়ে তোলেন, যাতে আমরা জীবনে কখনও পিছিয়ে না পরি, বরং সর্বদা উন্নতি করতে থাকি ক্রমাগত। জীবনে প্রতিটি পর্যায়ে আমরা যে সব সমস্যার সম্মুখীন হই, তার সঙ্গে লড়াই করার শক্তি যোগান শিক্ষকরা। পাশাপাশি কোনও বিষয় সম্পর্কে আগ্রহ তৈরি করতে শিক্ষকরা সাহায্য করেন। তাঁদের তৈরি এই আগ্রহই আমাদের জীবনে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন:

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৯: ঠাকুরের ঘরণী সারদার গার্হস্থ্য জীবন

অমর শিল্পী তুমি, পর্ব-৫: সফল হোগি তেরি আরাধনা

আমার মতে, বিদ্যালয়ে আরও যদি নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার করা যায়, তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শতগুণ উন্নত করা সম্ভব হবে। বিভিন্ন মডেল দ্বারা যদি আমাদের বিজ্ঞান বিষয়ের ধারণা দেওয়া হয়, তাহলে আমাদের সেই ধারণায় আরো সুদৃঢ়তা ও স্বচ্ছতা আসবে। আর এই ধারণাগত স্বচ্ছতা ও সুদৃঢ়তাই আমাদের পরবর্তীকালে জীবনে নানাভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করে। স্মার্ট ক্লাসরুমের ব্যবস্থা করে যদি কম্পিউটার এর মাধ্যমে নানা উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষাদান করা যায়, তাহলে সময় ও শ্রম যেমন সাশ্রয় হবে তেমনি অনেক বেশি তথ্যসমৃদ্ধ পড়াশোনা করা সম্ভব হবে। ফলে আমরা অনেক এগিয়ে যেতে পারব। সেই সঙ্গে শিক্ষকরা আমাদের ভবিষ্যতের দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করেন।
* সপ্তর্ষি পাল, দশম শ্রেণির ছাত্র, রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন বালকাশ্রম উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

Skip to content