রবিবার ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী, সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে।

তোমাদের মাধ্যমিক পরীক্ষা এসে গেল। মার্চ মাসের ৭ তারিখ থেকে তোমাদের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আর অঙ্ক পরীক্ষা আছে ১৪ মার্চ। তোমরা নিশ্চয়ই ইতিমধ্যে প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছ, তবু শেষ মুহূর্তে অঙ্কের সিলেবাস ভিত্তিক কতকগুলো বিষয় তোমাদের মাথায় রাখতে বলব। এবারে মাধ্যমিকের সিলেবাসে সদৃশতা চ্যাপ্টার পর্যন্ত আছে।

দ্বিঘাত সমীকরণ
একচলবিশিষ্ট দ্বিঘাত সমীকরণের ক্ষেত্রে শ্রীধর আচার্যের ফর্মুলাটা খুব ভালো করে মনে রাখবে, দ্বিঘাত সমীকরণ সমাধানের পদ্ধতি অভ্যেস করবে। বীজদ্বয় দেওয়া থাকলে তা থেকে সমীকরণ গঠন অভ্যাস করবে, বীজের প্রকৃতি সম্বন্ধে সম্যক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। কষে দেখি ১.৫ খুব ভালো করে অভ্যেস করবে।

সরল সুদ ও চক্রবৃদ্ধি সুদ
সরল সুদ এবং চক্রবৃদ্ধি সুদের ক্ষেত্রে সূত্রগুলো মনে রাখা খুবই দরকার। অঙ্কের শুরুতেই ফর্মুলাটি লিখে অজানা রাশিগুলির মান প্রশ্ন থেকে দেখে বসিয়ে দিতে হবে অর্থাৎ অজানা রাশিগুলিকে সংজ্ঞায়িত করে নিতে হবে তাহলে অঙ্কটি করা সহজ হবে। যদি সম্পূর্ণ অঙ্কটা ঠিক নাও হয় তাও সঠিক সূত্রের প্রয়োগ এবং সূত্রে সঠিক মান বসানোর জন্য কিছু নম্বর পাওয়া যায়।
চক্রবৃদ্ধি সুদের ক্ষেত্রে ষাণ্মাসিক বা দুটি পর্ব অথবা ত্রৈমাসিক বা চারটি পর্বের সুদের অঙ্কগুলির ফর্মুলা ভালো করে তৈরি রাখবে এবং তার প্রয়োগগুলি অভ্যাস করবে। যেমন ৩ মাস অন্তর দেয় বার্ষিক ৮% চক্রবৃদ্ধি হার সুদে ২০০০০ টাকার ৯ মাসের চক্রবৃদ্ধি সুদ হিসাব করে লেখ।

পরিমিতি
পরিমিতির ক্ষেত্রে তোমাদের সিলেবাসে আছে আয়তঘন, লম্ব বৃত্তাকার চোঙ, গোলক এবং লম্ব বৃত্তাকার শঙ্কু। পরিমিতির অঙ্ক করার জন্য সূত্রগুলো খুব ভালো করে তৈরি রাখতে হবে। পরিমিতির অঙ্কে সূত্রের যথাযথ প্রয়োগ এবং সূত্রে প্রদত্ত মান সঠিকভাবে বসানোর জন্য তোমরা নম্বর পাবে, যদি অঙ্কের ক্যালকুলেশনে কিছু ভুল থাকে তাহলেও। পরিমিতির অঙ্কগুলি করার ক্ষেত্রে তোমরা যদি কোনও চিত্র এঁকে নাও তাহলে সমস্যাগুলো বুঝতে সুবিধে হবে।

দ্বিঘাত করণী
দ্বিঘাত করণী অধ্যায়টির জন্য সদৃশ করণী, অসদৃশ করণী, দুটি করণীর যোগ, বিয়োগ গুণ এগুলি সম্বন্ধে ধারণা থাকতে হবে। করণী নিরসক উৎপাদক এবং অনুবন্ধী করণী নির্ণয়ের পদ্ধতি জানতে হবে। কষে দেখি ৯.৩ খুব ভালো করে অভ্যেস করবে।

ভেদ
ভেদের জন্য যৌগিক ভেদের উপপাদ্যটি ভালো করে তৈরি রাখবে। ভেদের অঙ্ক করার ক্ষেত্রে অশূন্য ভেদ ধ্রুবক-এর উল্লেখ করতে যেন ভুল না হয়। বিভিন্ন বাস্তব সমস্যাকে ভেদের আকারে প্রকাশ করার ধারণা থাকা দরকার।

অংশীদারি কারবার
অংশীদারি কারবার এর অঙ্কগুলি করার জন্য প্রতিটি স্টেপ খুব ভালো করে লিখে বিশ্লেষণ করে করতে হবে। কত টাকা কত মাসের জন্য খাটছে সেটা পরিষ্কার করে উল্লেখ করতে হবে।

অনুপাত সমানুপাত
অনুপাত সমানুপাত-এর অঙ্কের ক্ষেত্রে অবশ্যই ধ্রুবকের মান অশূন্য এটা উল্লেখ করতে হবে। ক্রমিক সমানুপাতি অঙ্কগুলো বেশি করে অভ্যাস করবে।

উপপাদ্য
তোমাদের এবারের সিলেবাসের অনেকটা অংশ জুড়ে রয়েছে উপপাদ্য। তাই উপপাদ্যের ব্যাপারে একটু বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। উপপাদ্যের ক্ষেত্রে অঙ্কনটি সঠিক হওয়া প্রয়োজন। ভুল অঙ্কনের জন্য অথবা অঙ্কন ছাড়া উপপাদ্য করলে সে ক্ষেত্রে নম্বর পাবে না। যদি কেউ সঠিক চিত্র এঁকে প্রদত্ত এবং কী প্রমাণ করতে হবে এইটুকু লিখে দাও তাহলে দু’ নম্বর পাবে, প্রমাণের জন্য তিন নম্বর বরাদ্দ থাকে।

সম্পাদ্য
সম্পাদ্যের ক্ষেত্রে প্রত্যেকটা স্টেপে নম্বর থাকে কাজেই তোমরা যতটুকু আঁকবে সঠিকভাবে আঁকবে এবং আঁকাটা যেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়।

মাধ্যমিক পরীক্ষার খাতায় যে ভুলগুলো চোখে পড়ে
মানসিক পদ্ধতিতে করা যায় না এমন অঙ্কের ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রয়োজনীয় রাফ করে দেখাতে হবে, না হলে নম্বর দেওয়ার নিয়ম নেই। তাই তোমরা অবশ্যই খাতার ডানদিকে নির্দিষ্ট জায়গাতে পরিষ্কার করে অঙ্কের রাফ ওয়ার্ক করবে।
সমাধানের ক্ষেত্রে অথবা/ বা লিখতে ভুলবে না, যে সমস্ত অঙ্কের ক্ষেত্রে সমান চিহ্ন (=) লিখতে হয় সেক্ষেত্রে প্রত্যেকটা স্টেপে = চিহ্ন লিখতে হবে অন্যথায় এক নম্বর কাটা হবে সম্পূর্ণ অঙ্কটা ঠিক হলেও।
উপপাদ্য সব সময় খাতার বামপৃষ্ঠা থেকে শুরু করবে যাতে দুটো পাতার মধ্যে উপপাদ্য কমপ্লিট হয়ে যায় তাতে তোমাদের সুবিধা হবে।
সম্পাদ্যর ক্ষেত্রে প্রদত্ত মান দেওয়া থাকলে সেই মান অনুযায়ী চিত্রাঙ্কন প্রয়োজন।
উপপাদ্য এবং সম্পাদ্যের ক্ষেত্রে অবশ্যই চিত্রের প্রতিটি অংশের নাম দেবে।
তোমাদের গণিত বইয়ের প্রতিটি চ্যাপ্টারের শেষে যে সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন, সত্যমিথ্যা, শূন্যস্থান পূরণ, বহু বিকল্পীয় প্রশ্ন এগুলো খুব ভালো করে অভ্যাস করবে।
বীজগাণিতিক ফর্মুলাগুলো বারবার লিখে অভ্যাস করবে।
সময় ধরে অঙ্কগুলো অভ্যেস করবে।

সবশেষে বলব চিন্তা কোরো না, মন দিয়ে পড়াশোনা করো, সাফল্য পাবেই। পরীক্ষার জন্যে আগাম শুভেচ্ছা জানালাম তোমাদের সবাইকে।

Skip to content