ছবি প্রতীকী
হাঁপানি কেন হয়?
হাঁপানি সাধারণত বংশগত রোগ। অবশ্য বংশগত হাঁপানির ইতিহাস না থাকলেও হতে পারে। তাছাড়া অ্যালার্জি বা একজিমার একটা পারিবারিক ইতিহাস থাকতে পারে। আর হাঁপানির প্রত্যেকবার আক্রমণের পিছনে একটা উদ্ভাবক (ট্রিগারিং ফ্যাক্টর) থাকবেই। আবহাওয়া পরিবর্তন জল-বৃষ্টিতে ভেজা, ঠান্ডা লাগা, বিশেষ কিছু খাদ্য গ্রহণ করা যেটাতে শিশুর এলার্জি রয়েছে, এগুলি ট্রিগারিং ফ্যাক্টর। তাছাড়া শিল্প কলকারখানার ধোঁয়া, নির্গত রাসায়নিক, বাতাসের ধুলো ময়লা, ফুলের রেনু, পাখির পালক, গৃহপালিত প্রাণীর লোম, লোমস খেলনা— এসবই শিশুদের হাঁপানির প্রিসিপিটেটিং ফ্যাক্টর। ভালো ভাবে বিশ্লেষণ করলে কোনও না কোনও একটা এলার্জির ইতিহাস খুঁজে পাওয়া যাবেই।
হাঁপানি রোগে শিশুদের ফুসফুসে কী পরিবর্তন হয়
এই রোগে অন্য রোগ সংক্রমণ খুব সাধারণ ব্যাপার। এর ফলে শ্বাসনালীর ভিতরের স্তরে প্রদাহ হওয়ায় শ্বাসনালীর ভেতরের মাংসপেশি সংকুচিত হয়। তাছাড়া কিছু উত্তেজক পদার্থের প্রভাবে শ্বাসনালীর গ্রন্থি থেকে প্রচুর মিউকাস জাতীয় আঠালো কফ নিঃসৃত হয়ে শ্বাসনালীতে জমা হয়, যা শ্বাস-প্রশ্বাসের বাতাস চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। যার ফলে শিশুর শ্বাস প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। নবজাতকের ক্ষেত্রে শ্বাসনালীটি তুলনামূলক বড় বাচ্চাদের তুলনায় সরু। যেখানে ভাইরাস বা ছত্রাক সংক্রমণ হলে শ্লেষ্মা দ্বারা শ্বাসনালী অবরুদ্ধ হয়ে বেশি সমস্যার সৃষ্টি করে।
শিশুদের অ্যাজমার লক্ষণ কী কী?
প্রাথমিক গৃহ চিকিৎসা
সবথেকে আশ্চর্যের ব্যাপার শিশুদের অ্যাজমা রোগ অনেক সময়ই ঠান্ডা, সর্দি- কাশি, ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া ইত্যাদি বলে অবজ্ঞা করা হয়, তাতে কিন্তু চিকিৎসা বিভ্রাট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
যে সমস্ত শিশুর হাঁপানি রোগ রয়েছে, তাদের একটু সর্দি কাশি হলেই বাড়াবাড়ি হওয়ার আগেই চিকিৎসা শুরু করতে হবে। কাশির সঙ্গে শ্বাসকষ্ট হলে ব্রঙ্কোডাইলেটর সিরাপ বা ট্যাবলেট (বড় বাচ্চার জন্য) যেমন অ্যাস্থালিন আট ঘণ্টা অন্তর কোনও ডাক্তার দেখানোর আগেই বাড়িতে শুরু করা যায়। সর্দিতে নাক বন্ধ হলে অক্সিমেটাজলিন নাকের ড্রপ বা মোমেটাজোন নাকের স্প্রে ব্যবহার করা যায়।
এই সব ওষুধের ডোজ সাধারণত মা-বাবা তাঁদের পারিবারিক বা নিয়মিত চিকিৎসকের কাছ থেকে আগেই জেনে যায়। কোনও শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক শুরু করতে নেই। নাকের ড্রপ প্রত্যেক নাকে দু’ ফোঁটা করে রোজ চারবার এবং নাকের স্প্রে প্রত্যেক নাকে একবার করে রোজ তিনবার লাগালে আস্তে আস্তে শ্বাসকষ্ট কমে। এটা করে উল্লেখযোগ্য ভাবে শ্বাসকষ্ট না কমলে শিশুকে লিভোসালবিউটামল ও বুডেসোনাইট ইনহেলার দিতে হবে। ইনহেলারের ব্যবহার মা-বাবাকে যেমন শিখতে হবে, তেমনি বড় শিশুরা যাতে নিজে নিতে পারে — সেটা তাদের শেখাতে হবে। লিভোসালবিউটামল ইনহেলার প্রথম দিকে দিনে চারবার এবং বুডেসোনাইট ইনহেলার দিনে দু’ বার নিতে হয়। শিশুর শ্বাসকষ্ট কমার সঙ্গে সঙ্গে এগুলো দেওয়ার ফ্রিকোয়েন্সি কমাতে হয়।
ডিভাইস ব্যবহারের নিয়ম
শ্বাসকষ্ট কমানোর জন্য কোন বয়সে কী ডিভাইস ব্যবহার করা উচিত তার একটা নির্দিষ্ট নিয়ম আছে।
এছাড়া একটা অ্যালার্জির ওষুধ যেমন মন্টেলুকাস্ট অথবা মন্টেলুকাস্ট ও লিভোসেট্রিজিন কম্বিনেশন- দু থেকে তিন সপ্তাহ বা আরও বেশি দিন খাওয়ানো নিয়ম। তবে এসবের ডোজ কোনও শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো নির্ধারণ করা উচিত। অন্তত দুজন সাহায্যকারী ছাড়া শিশুদের নেবুলাইজার দেওয়া যায় না। মা শিশুকে ঠিকভাবে ধরে রাখলে অন্য আর একজন ফেস মাস্ক শিশুর নাকে মুখে ঠিকভাবে ধরতে পারে। বাড়িতে কোনও শিশুর অ্যাজমা রোগ থাকলে এ সমস্ত ডিভাইজ গুলোর যোগান বাড়িতেই রাখতে হবে।
কখন চিকিৎসকের কাছে বা হাসপাতালে নিয়ে যাবেন?
প্রতিরোধ
ছবি: সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে
যোগাযোগ: ৯৮৩০২৯৪৯৩২