আধ্যাত্মিক জীবন গঠনের মূল বিষয় বা নিয়মগুলির যে কয়েকটি আমাদের সাধারণ জীবনযাপনকে নিয়ন্ত্রিত করে তার মধ্যে একটি হল—সত্যের ধারণা ও পালন। যা কিছুকেই মানুষ সত্য বলে গ্রহণ করে। তাই তার সমগ্র সত্তা, চিন্তারাশি, অনুভূতি এবং তার আকাঙ্ক্ষাকে আকর্ষণ করে।
অনন্ত এক পথ পরিক্রমা
পর্ব-৭৯: নারদীয় ভক্তির স্বরূপ কামনাহীন প্রেম, শুধু নিজেকে উৎসর্গ করা
নারদীয় ভক্তির প্রকাশ হল ভক্তি প্রার্থনার মধ্যেই নিজেকে কৃত-কৃতার্থ অনুভব করা। ঈশ্বরীয় সুখে লীন হয়ে যাওয়া। এগোপিনীদের দুঃখ প্রকাশ না চির সুখের অনুভব!
পর্ব-৭৮: ব্রহ্ম ও মায়া মূলত এক ও অভেদ
বেদের মায়া ও তন্ত্রের মহামায়া সমার্থক না হলেও ব্রহ্ম ও মহামায়া মূলত এক। ঈশ্বর ও প্রকৃতি শক্তি যেমন অভেদ। সৃষ্টির আদিতে ব্রহ্মই একমাত্র ছিল। শক্তিকে আশ্রয় করে সৃষ্টি শুরু হলে এই জীবজগৎ প্রকাশ করে তার মধ্যে চৈতন্য রূপে প্রকাশিত হতে থাকল। বেদ ও তন্ত্রের পার্থক্য এই যে, বেদ সিদ্ধান্ত শাস্ত্র আর তন্ত্র সাধন শাস্ত্র। বেদ প্রাচীন অপৌরুষেয় হলেও শক্তিপুজোর উল্লেখ রয়েছে।
পর্ব-৭৭: নির্জনতা মনকে শান্ত করে
আধ্যাত্মিক জীবনে নির্জনতার প্রয়োজনীয়তা আছে। অনেকে নির্জন স্থানে গিয়ে হাঁপিয়ে যান একাকিত্বের জন্য। আবার কারও জন্য একাকিত্বের গুরুত্ব অপরিসীম। জীবনে কখনও কখনও একাকিত্ব গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষকের কাজ করে।
পর্ব-৭৬: ঈশ্বর যেমন জীব ছাড়া থাকেন না, তেমনই ভক্তও প্রভুকে ছাড়া থাকতে পারেন না
জীবনের সুখ-দুঃখ উভয়কে শান্তভাবে নিজের ভালো-মন্দ কাজের ফল বলে মনে করে। ও নিজে যতটা সম্ভব ভালোভাবে জীবনযাপন করার চেষ্টা করে। অপর কেউ কেউ, সব ঈশ্বরের দান মনে করে যথাসম্ভব অনাসক্ত এবং সন্তুষ্ট থাকতে চেষ্টা করে। অন্য কেউ কেউ সুখ-দুঃখকে সংসারের অবিচ্ছেদ কর্মফল অনুযায়ী পুরস্কার হিসেবে গ্রহণ করে।
পর্ব-৭৫: শুদ্ধা-ভক্তিতে কামনা-বাসনা থাকবে না: শ্রীরামকৃষ্ণদেব
ঠাকুর বলতেন, “ঈশ্বরীকর্তা আমি অকর্তা” জেনে কাজ করা। “ভক্তি তার কিরূপ প্রিয়। খোল দিয়ে যাব যেমন গরুর প্রিয়, গপ গপ করে খায়।” ভক্ত রাগভক্তি, শুদ্ধা ভক্তি, অহেতুক ভক্তি চায় কেবল। কিছুই চায় না। কোনও কামনা নাই, তাঁকে ভালোবাসা আর, মত্ত হয়ে যাওয়া।
পর্ব-৭৪: সত্য এক ও অদ্বিতীয়
সত্য এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর প্রকাশ ভিন্ন ভিন্ন ভাবে হতে পারে। নাম ও রূপের পার্থক্য মাত্র। এক সেই চৈতন্য। এক সমুদ্রের জল ভিন্ন ভিন্ন পাত্রে ঢালার পর যেমন বালতির জল, কলসির জল, ঘটির জল নামে ডাকা হয়।
পর্ব-৭৩: শরীরের প্রতি যেমন বেশি যত্নের দরকার নেই, তেমন অযত্ন করাও উচিত নয়
চৈতন্যের না আছে জাত বিচার, না আছে উচ্চ নিচ। পশু-কীট-পতঙ্গ সবাই সমানভাবে তাতে সমাহিত হয়ে রয়েছে। আধ্যাত্মিক জীবন যাপনে মানে ঈশ্বর ও জগৎ সম্বন্ধে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। এমনকি নিজের শরীরের প্রতি যেমন অত্যাধিক যত্নের প্রয়োজন নেই, তেমন আবার অযত্ন করাও উচিত নয়।
পর্ব-৭২: শ্রীমা অবিরাম তৃষিত হৃদয়ে স্বর্গীয় আলো সঞ্চার করে চলেছেন
স্বামীজি বলতেন, যে জ্ঞানে গুরু উড়ে যায়, সে জ্ঞান জ্ঞান নয়, অজ্ঞান। বিচার করে কূলকিনারা পাওয়া যায় না। তত্ত্ব জ্ঞান যে জগতে প্রতিটি জীবের উপর এমনভাবে প্রয়োগ করা যায়, মাকে না দেখলে বোঝা যায় না। সবার উপর সমান মাতৃত্ববোধ এমনকি, শ্রীরামকৃষ্ণের উপর…
পর্ব-৭১: হৃদয়ে প্রভুর দর্শন করলে যেমন মনে সংশয় থাকে না, তেমন অপ্রাপ্তিও থাকে না
ধর্ম চেতনা এবং সংশয়—চিরকালীন। সাধারণ থেকে সাধক প্রত্যেকেই এই সংশয় প্রকাশ করেছেন। ধর্মলাভ করা সম্ভব? যদি যায়, কোনও পথে? কীভাবে? ধর্মলাভ হলে তার লক্ষণ বা কী?
পর্ব-৭০: নরেন একদিন জগতের পীড়িত মানুষের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠবে: রামকৃষ্ণদেব
একবার ঠাকুর যেন কোন দূর দেশ হতে এসে ভাবের ঘোরে মায়ের দিকে তাকিয়ে বললেন, “দেখো! কলকাতার লোকগুলো যেন অন্ধকারে পোকার মতো কিলবিল করছে। তুমি তাদের দেখো।”
পর্ব-৬৯: অমৃতের সন্ধানে মাস্টারমশাই /৫
আধ্যাত্মিক জীবন, শুধু খাদ্য-পানীয়ের নিরিখে বিচার যোগ্য নয়। তার থেকেও অধিকতর বড় বিষয় হল মানসিক শুদ্ধতা। সাধকের ক্ষেত্রে, অনেক সময় সাধন অপেক্ষা এ বিচার অধিকতর অর্থবহ হয়ে পড়ে যে কী গ্রহণযোগ্য বা গ্রহণযোগ্য নয়, তা সাধন পথে একপ্রকার বিঘ্ন।
পর্ব-৬৮: অমৃতের সন্ধানে মাস্টারমশাই /৪
উপনিষদের ব্রহ্মজ্ঞানের পার্বত্য পাদদেশে, যেখানে ভক্তির পরাকাষ্ঠা প্রেম নদী বিধৌত করে একে অপরকে। শ্রীরামকৃষ্ণ বলছেন, “এক চৈতন্য অভেদ, বিষ্ঠা, মুত্র, অন্ন, ব্যঞ্জন সবপ্রকার খাবার জিনিস পড়ে রয়েছে, তাঁর (শ্রীরামকৃষ্ণ) ভিতর থেকে জীবাত্মা বেরিয়ে সবকিছুকে স্পর্শ করে গেল।”
পর্ব-৬৭: অমৃতের সন্ধানে মাস্টারমশাই /৩
শ্রীরামকৃষ্ণ ভাবাবিষ্ট হয়ে রাখালকে বলছেন, “এখানকার শ্রাবণ মাসের জল নয়। খুব হুড় হুড় করে আসে, আবার বেরিয়ে যায়। এখানে পাতাল ফোঁড়া শিব, বসানো শিব নয়।”
পর্ব-৬৬: অমৃতের সন্ধানে মাস্টারমশাই /২
শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে ভক্তেরা অবতার তত্ত্ব শুনছেন, আর ভাবছেন বেদ উক্ত অখণ্ড সচিদানন্দ, যা বাক্য মনের অতীত তিনি শ্রীরামকৃষ্ণ রূপ ধারণে তাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। আর তা যদি না হতো তাহলে কী রূপে তিনি রাম, রাম উচ্চারণ করতে করতে সমাধিস্থ হতেন! তিনি নিশ্চয়ই হৃদ পদ্মে রাম রূপ দর্শনে মথিত হচ্ছেন।