সোমবার ২৫ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী।

বসন্তের আবহাওয়ায় ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস বাতাসের মধ্যে অনায়াসেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাই ঠান্ডা লাগা, সর্দি, কাশি, জ্বরে অনেকেই কাবু। যদিও কাশি এই আবহাওয়ায় খুব সাধারণ একটা ব্যাপার। তবুও ভয় ধরাচ্ছে অ্যাডিনোভাইরাস। যে কারণে শুধু কাশি নয়, আরও অনেক ধরনের শারীরিক সমস্যা তৈরি করছে।
 

কিছু ঘরোয়া টোটকা রয়েছে যেগুলো মেনে চললে কাশি থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। সেগুলো কী কী?

 

মধু

মধুতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, আন্টিইনফ্লেমেটরি সর্দি, কাশির জন্য খুবই উপকারী। একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সর্দি, কাশি নিরাময়ে ওষুধের চেয়ে মধু ভালো কাজ করে। কখনও কখনও কফ কমাতেও মধু ভীষণ সাহায্য করে। তবে এক বছরের নিচের শিশুদের মধু খাওয়ানো উচিত নয়।
এক কাপ গরম জলে হাফ চামচ মধু মিশিয়ে শিশুদের খাওয়ানো যেতে পারে। আবার, রাতে ঘুমোনোর আগে গরম দুধের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খাওয়ালেও কাশির উপশম হবে খুব সহজে।

 

আদা

সর্দি, কাশি দূর করতে আদার জুড়ি মেলা ভার। আদা কুচি করে গরম জলে বা চায়ে দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ফুটিয়ে সেই জল বা চা খেলে কাশির সমস্যা অনেকটাই কমে যায়। আবার কালো মরিচের সঙ্গে আদার রস মিশিয়ে খেলেও উপকার পাওয়া যায়। তবে বেশি আদা চা খাওয়া ভালো নয়। কারণ এতে পাকস্থলীতে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
 

তুলসীপাতা

তুলসীপাতা কাশি দূর করার পাশাপাশি গলা ব্যথা থেকে মুক্তি দেয়। এছাড়াও শ্লেষ্মা কমাতেও সাহায্য করে। আসলে তুলসীপাতায় মেন্থল নামে একটি যৌগ থাকে, যা কাশি দূর করতে সাহায্য করে।

আরও পড়ুন:

হেলদি ডায়েট: অ্যাডিনোভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে শিশুদের মধ্যে! ভাইরাস এড়াতে খুদের পাতে কী কী রাখবেন?

ডায়েট ফটাফট: ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়েছে? কোন কোন খাবারে বশে থাকে এই সমস্যা? জেনে নিন কী খাবেন, কী নয়

খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা ও ট্রাইগ্লিসারাইড বেশি? জেনে নিন আপনার কী করণীয়

 

বাসকপাতা

বাসকপাতার নাম আমরা কমবেশি সবাই শুনেছি। এই পাতা সেদ্ধ করে সেই জল হালকা গরম অবস্থায় খেলে কাশিতে কষ্ট কমে। প্রতিদিন সকালে এই জল খাওয়া যেতে পারে। আবার সন্ধাবেলাতেও খাওয়া যায়। বাসকপাতা হালকা তেতো ভাব থাকে, স্বাদ আনার জন্য এর সঙ্গে সামান্য যষ্টিমধু বা মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
 

ইউক্যালিপটাস তেল

ইউক্যালিপটাসের তেল কফ দূর করতে সাহায্য করে। বলা হয়, শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিক রাখতে এই তেলের কোনও বিকল্প নেই। আবার নারকেল তেল বা অলিভ অয়েলের সঙ্গে কয়েক ফোটা ইউক্যালিপটাস তেল মিশিয়ে বুকে ও গলায় মালিশ করলে বা সামান্য গরম জলে এই তেল মিশিয়ে ভাপ নিলে শ্বাস-প্রশ্বাস ভালো ভাবে নেওয়া যায়। দূর হবে কাশিও।

আরও পড়ুন:

চেনা দেশ অচেনা পথ, পর্ব-৮: শ্রীপুরার কাহিনি

শম্ভু, শম্ভু, শিব মহাদেব শম্ভু, খুদার ইবাদত যাঁর গলায় তাঁর আর কাকে ভয়?

স্বাদে-আহ্লাদে: চিকেন প্রিয়? তাহলে এমন হায়দরাবাদি চিকেনে জমিয়ে দিন দুপুর

 

হলুদ

অ্যান্টিভাইরাস ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান থাকায় হলুদে সহজে সংক্রমণ রোধে সাহায্য করে। এক গ্লাস গরম দুধের সঙ্গে এক চামচ হলুদগুঁড়ো মিশিয়ে সেই দুধ পান করলে সর্দি, কাশির কষ্ট থেকে সহজেই রক্ষা পাওয়া যায়। আবার হলুদ মেশানো দুধও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
 

রসুন

রসুন অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। তাছাড়াও এতে আন্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিভাইরাল, আন্টিফাঙ্গালের মতো উপাদান রয়েছে। ফলে সর্দি, কাশির মোকাবিলায় বিশেষভাবে সাহায্য করে রসুন। কোয়া রসুন গরম ঘিয়ে হালকা নেড়ে তা রোজ খেলে অনেকটা আরাম পাওয়া যায়। আবার ঘিয়ে ভাজা রসুন বিভিন্ন ধরনের ভেজিটেবল স্যুপ বা চিকেন স্যুপের সঙ্গে মিশিয়েও খাওয়া যেতে পারে। এতে যেমন সর্দি কাশির সমস্যা দূর হয়, তেমনই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে।

আরও পড়ুন:

বাঙালির মৎস্যপুরাণ, পর্ব-৪৪: সুন্দরবনের সুন্দর কাঁকড়া

বৈষম্যের বিরোধ-জবানি, পর্ব-৯: অষ্টবক্র শরীর— পুরুষের সমাজে পুরুষ শরীর

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-২৫: আঁধার ভূবনে আবার কে তুমি জ্বেলেছ ‘সাঁঝের প্রদীপ’ খানি

 

পরিবর্তন আনুন জীবনযাত্রাতেও

দিনে বার বার ঈষদুষ্ণ জলে লবণ মিশিয়ে গার্গল করুন।
ঈষদুষ্ণ জলে স্নান করতে হবে।
গলাকে কিছুটা বিশ্রাম দিন। দরকার হলে কম কথা বলতে হবে।
গরম জলের ভেপার নেওয়া যেতে পারে।
প্রয়োজনে গলায় হালকা সুতির কাপড় জড়িয়ে নিন, যাতে সহজে ঠান্ডা না লেগে যায়।

তবে মনে রাখতে হবে, অতিরিক্ত কাশি হলে এবং এই সব ঘরোয়া উপায় মেনেও যদি না কমে তাহলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

* হেলদি ডায়েট (Healthy Diet): সুতনুকা পাল (Sutanuka Paul), পুষ্টিবিদ, ডায়েট-টু-ফাইট।

Skip to content