ছবি প্রতীকী
বিয়ের মরসুমে ত্বক ও চুলের অতিরিক্ত পরিচর্যার জন্য স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে চলা অবশ্যই প্রয়োজন। ডায়েটে অবশ্যই প্রোটিন ও ফ্যাট অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি খাদ্য তালিকায় কিছু জরুরি পরিবর্তনও করতে হবে। তাহলেই ফল পাবেন হাতে-নাতে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে কিছু বিশেষ খাবার
জল
শীতকালে এমনিতেই আমরা কম জল খাই। কিন্তু এই সময় ত্বক ও চুলকে স্বাস্থ্যকর রাখার জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস জলপান করতে হবে।
ডিম
ডিমের উপকারিতা যত বলব, ততই কম মনে হবে। চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ডিমের মতো উপকারী জিনিস দ্বিতীয় আর কিছু নেই। বিশেষ কোনও শারীরিক সমস্যা না থাকলে প্রতিদিনের ডায়েটে একটা করে ডিম থাকা আবশ্যক। কারণ, ডিমে আছে বায়োটিন এবং ভিটামিন-বি। চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে, চুল পড়া কমাতে ডিমের বিভিন্ন উপাদান দারুণ কাজ করে।
দুধ
দুধকে আদর্শ খাদ্য বলা হয়। কারণ, এর মধ্যে প্রায় সমস্ত খাদ্যগুণ উপস্থিত। দুধের প্রোটিন ত্বকের কোলাজেন বুস্টার হিসেবে বিশেষ ভূমিকা পালন করে, যা অকালে বয়সের ছাপ রোধ করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা দুধ রাখা আবশ্যক। দুধের ল্যাকটিক অ্যাসিড উপস্থিত ‘ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে।
দুধকে আরও বেশি পুষ্টিকর করার জন্য সামান্য মধু যোগ করে খাওয়া যেতে পারে। এক চামচ হলুদগুঁড়ো যোগ করেও খেতে পারেন। আবার কলা, আম বা পেপে ইত্যাদি দুধের সঙ্গে মিশিয়ে মিল্ক শেক বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে। তবে যাঁদের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স আছে অর্থাৎ দুধে অ্যালার্জি আছে, তাঁদের দুধ না নাখাওয়াই ভালো।
ইয়োগার্ট বা টকদই
টকদই প্রোবায়োটিকসের খুব ভালো একটা উদাহরণ। অন্ত্রের যেকোনও রকম ছোটখাট সমস্যায় টকদই বিশেষ ভাবে সাহায্য করে। ত্বককে উজ্জ্বল এবং লাবণ্যময় করতে টকদই বিশেষ গুরুত্ব রাখে। চুলের বিভিন্ন রকম সমস্যায় টকদইয়ের কোনও বিকল্প নেই। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা বাড়িতে পাতানো টকদই অবশ্যই রাখতে হবে। শুধু টকদই খেতে ভালো না থাকলে বিভিন্ন রকম ফল দিয়ে তৈরি করে খেলে যেমন স্বাদে পরিবর্তন হবে, তেমনি খাবারও বৈচিত্র আসবে। তবে সবার টকদই সহ্য নাও হতে পারে, এটা খেয়াল রাখতে হবে।
গাজর
এখন সারা বছর ধরে কমবেশি গাজর পাওয়া যায়। গাজরে উপস্থিত ভিটামিন-এ বা বিটা ক্যারোটিন ত্বক ও চুলের জন্য খুবই ভালো। ভিটামিন-এ ‘স্কিনের আউটার লেয়ার’-এ কোষের বৃদ্ধি করে এবং ত্বককে কোমল রাখে।
স্যালাড হিসেবে গাজর খেতে পারেন। আবার গাজরের বিভিন্ন তরকারি করেও খাওয়া যায়। চুলের হারিয়ে যাওয়া আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত গাজর খাওয়া কখনওই ভালো না। কারণ, অতিরিক্ত গাজর খেলে ক্যারোটেনেমিয়া নামক একটি বিরল রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থেকে। এই সমস্যায় ত্বকের রং কমলা রঙের মতো হয়ে যায়।
সবুজ শাক-সবজি
এখনকার যা আবহাওয়া এবং পরিস্থিতি তাতে প্রত্যেকেরই কমবেশি চুল পড়ছে। তাই আপনাকে একটু সতর্ক হতেই হবে। এক্ষেত্রে আপনার ডায়েটের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। রোজ সবুজ শাকসবজি যেমন পালংশাক, লেটুস, ব্রকলি ইত্যাদি খাদ্য তালিকা রাখতে হবে। এগুলো ভিটামিন-সি এবং এ-এর উৎকৃষ্ট উৎস। এই সবজি চুলের আর্দ্রতা যেমন ধরে রাখে তেমন চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
পালংশাক
পালংশাকে উপস্থিত লিউটিন ও জ্যানথিন ত্বকের জন্য খুবই ভালো। পালংশাক ভিটামিন-এ, ই, কে-এর উৎকৃষ্ট উৎস। পালংশাকের পুষ্টিকর উপাদানগুলি ত্বককে স্বাস্থ্যজ্জ্বল রাখে। পাশাপাশি ত্বকের তারুণ্য বজায় রাখে।
উচ্চ তাপমাত্রায় যে কোনও শাকসবজির পুষ্টিকর উপাদান নষ্ট হয়ে যায়। তাই বেশি তাপে রান্নার না করে হালকা সিদ্ধ করে বা স্যালাড হিসেবে পালংশাক খাওয়া যেতে পারে।
শসা
শসাতে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন-সি এবং ভিটামিন-কে রয়েছে, যা ত্বককে হেলদি ও উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে। শসা বলিরেখা এবং বয়সের ছাপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। এক কথায় বলা যায়, শসা ত্বককে হাইড্রেট করে। এতে এক বিশেষ ‘কুলিং এফেক্ট’ আছে, যা ত্বককে ভালো রাখে।
শসা ত্বকের সুরক্ষায় কীভাবে সাহায্য করে এটা জানলে চোখের সামনে সেই ছবি ভেসে ওঠে, যাতে একজন তার চোখে শসা স্লাইস লাগিয়ে মুখে ফেসপ্যাক লাগিয়ে বসে আছেন। তাই প্রত্যেকেই কমবেশি জানেন যে শসা আমাদের চোখের জন্য এবং ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। শসা মূলত স্যালাড হিসেবেই আমরা খাই।
মাছ
মাছে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড চুলের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়াও প্রোটিন এবং ভিটামিন-ডি এর উৎকৃষ্ট উৎস হল মাছ। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় মাছ রাখা অত্যন্ত জরুরি।
গ্রিন-টি
গ্রিন-টি’তে উপস্থিত পলিফেনাল স্ক্যাল্পের স্বাস্থ্য বিশেষভাবে উন্নতি করে। গ্রিন-টি’তে থাকা ভিটামিন-সি এবং ন্যাচারাল আন্টিঅক্সিডেন্ট চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ভীষণ উপকারী। গ্রিন-টি দিয়ে চুল ধুলে যেমন খুশকি সমস্যা দূর হবে, তেমন চুলের স্বাস্থ্য উন্নত হবে।
গ্রিনটির ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট ত্বকের ক্ষতিকর ‘ফ্রি রেডিক্যাল’ দূর করে। ‘ডার্ক স্পট’ কমায়। তাছাড়া অকাল বার্ধক্য প্রতিরোধ করে। গ্রিন-টি’তে উপস্থিত আন্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে সুস্থ রাখে এবং উজ্জ্বলতা বাড়ায়। তাই সকাল ও সন্ধেবেলায় এককাপ গ্রিন-টি খাওয়াই যেতে পারে। এতে অল্প লেবুর রস এবং মধু মিশিয়ে খেলে আরও ভালো।
লেবুজাতীয় ফল
লেবু কমলা, মুসাম্বি, মাল্টা ইত্যাদি ভিটামিন-সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এগুলি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে ভীষণভাবে কার্যকরী। ত্বককে হাইড্রেট করে এবং ত্বককে প্রাকৃতিক ভাবে উজ্জ্বল করে। হজমের সমস্যা থেকে ত্বকে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে লেবুর জল পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে ত্বককে সুস্থ রাখে।
লেবুর জুস খাওয়ার জন্য প্যাকেটজাত জুস না কিনে বাড়িতে বানানোর ফ্রেশ জুস বা শরবত খেলে তা অনেক বেশি উপকারী। প্যাকেটজাত জুসে প্রিজারভেটিভ ও বেশি পরিমাণ চিনিও থাকে, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। তাই বাড়িতে ফলের জুস বানিয়ে খেলে তা অনেক বেশি উপকার দেবে।
স্বাস্থ্যকর অথচ সুস্বাদু, খুদের টিফিনে কী দেবেন ভেবেই মাথায় হাত? সন্তানকে টিফিনে এমন খাবার দিতে পারেন
ডায়েট টিপস: সামনেই বিয়ে? হাতে আর সময় নেই? রইল হবু কনের এক মাসের ডায়েট চার্ট
ইংলিশ টিংলিশ: সবাই যদি বলে ‘very beautiful’, তুমি বলে দ্যাখো ‘ravishing’ বা ‘magnificent’!
ডাক্তারের ডায়েরি, পর্ব-২৯: সাফল্যে মাথা ঘোরেনি পরান বাড়ুজ্যের
কাঠবাদাম, আমন্ড
আমন্ড ভিটামিন-ই এর খুব ভালো উৎস, যা শরীর থেকে ‘ফ্রি র্যা ডিকেল ‘বার করতে বিশেষ সাহায্য করে। এছাড়াও স্মৃতিবর্ধক খাওয়ার হিসেবেও আমন্ড বিশেষ পরিচিত। আমন্ড বা বাদামে থাকা ‘এসেন্সিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিড’ বা ‘লেনোলেয়িক অ্যাসিড’ ত্বকের ড্রাইনেস কমাতে সাহায্য করে। আমন্ড বা বাদাম হালকা করে ভেজে গুড়ো করে দুধে, মিষ্টিতে বা লাড্ডুতে মিশিয়ে খেলেও উপকার পাওয়া যাবে।
আপেল
আপেল ভিটামিন-এ সি এবং বি কমপ্লেক্সের উৎকৃষ্ট উৎস, যা ত্বককে ভালো রাখে। উজ্জ্বলতা বাড়ায়। ত্বকের ‘আন ইভেন টোন রিপেয়ার’ করে। এক কথায় ত্বককে দীপ্তিময় রাখে। খোসা-সহ আপেল খাওয়াই ভালো। কারণ, এতে পুষ্টিগুণ বেশি।
ডার্কচকলেট
ডার্ক চকলেটে ‘ফ্লেভানল’ নামক এক প্রকার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ত্বককে সুন্দর ও মসৃণ রাখে। ডার্ক চকলেট অকাল বার্ধক্য প্রতিরোধ করে। সেই সঙ্গে হার্টও ভালো থাকে। তাই শাকসবজি ও ফলমূলের লিস্টে ডার্ক চকলেট রাখলে ভালো। তবে খেয়াল রাখতে হবে মিল্ক চকলেট নয়, ডার্ক চকলেটই খেতে হবে। কারণ, ডার্ক চকলেটে কোকোর পরিমাণ বেশি থাকায় তা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো।
শাশ্বতী রামায়ণী, পর্ব-৫: মাটির পথ — জীবন রথ
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-২৬: ঠাকুরবাড়ির বাঙালিয়ানা
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-১১: ভাগ্যের ফেরে হাস্যকর ‘লাখ টাকা’ [১০/০৭/১৯৫৩]
ফল কালারের রূপ-মাধুরী, পর্ব-৬: গাড়ির সান রুফ খুলে চালিয়ে দিলাম ‘সুহানা সফর হ্যায় ইয়ে মৌসম হাসি, হামে ডর হ্যায় কে…’
খাদ্যতালিকা এমন কিছু পরিবর্তন আনুন যা আপনার ত্বক ও চুলের বাড়তি জেল্লা বাড়াবে
ত্বক ও চুলের জন্য কিছু ক্ষতিকর খাবার
যোগাযোগ: ৯৮৩০৭৬৮১৫২