শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী

হেঁচকি বা হিক্কার সঙ্গে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। জীবনে কখনও হেঁচকি হয়নি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। এটা একটা কষ্টকর ও বিরক্তিকর অভিজ্ঞতা। বেশির ভাগ সময় হেঁচকি উঠে কিছুক্ষণ পর এমনিতেই চলে যায়। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে হেঁচকি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। বিশেষ করে কিছু কিছু রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য এটা একটা সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে। কিন্তু কেন হয় হেঁচকি? এটি থামানোর উপায়ই-বা কী?
 

যে কারণে হেঁচকি ওঠে

বুক ও পেটের মধ্যে যে বক্ষচ্ছদা বা ডায়াফ্রাম আছে, তাতে সমস্যা হলে হিক্কা হয়। বক্ষচ্ছদানিয়ন্ত্রক ফ্রেনিক নার্ভ বা ভ্যাগাস নার্ভে কোনও সমস্যা হলে হিক্কা উঠতে পারে। শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারীদের হতে পারে বেশি। সাধারণত খাদ্যাভ্যাসে কিছু অসতর্কতা হলে হেঁচকি ওঠে। যেমন তাড়াহুড়া করে খাওয়া, দ্রুত ঢকঢক করে জল পান, খাওয়ার সময় কথা বলা বা অন্যদিকে মনোযোগ, অ্যালকোহল সেবন। তা ছাড়া জোরে হাসা, হঠাৎ ভয় পাওয়া, আবেগ, উত্তেজনা ইত্যাদি কারণেও হেঁচকি উঠতে পারে। কিছু অসুখের কারণেও এটা হতে পারে। যেমন পাকস্থলী বা খাদ্যনালির কোনও প্রদাহ, ফুসফুসের আবরণীতে প্রদাহ, কিডনি সমস্যা, যকৃৎ বা প্যানক্রিয়াসের কোনো রোগ।

 

কী করবেন

বেশির ভাগ সময় কিছু উপায়ে হেঁচকি বন্ধ করা যায়। যেমন—
জোরে শ্বাস নিয়ে যতক্ষণ পারা যায় বন্ধ রেখে ধীরে ধীরে ছাড়ুন। বেশ কয়েকবার এটা করতে হবে। বিরতি দিয়ে বারবার করতে হবে।
দু’হাতের আঙুল দিয়ে কান বন্ধ করে রাখুন। এবার একটি গ্লাসে জল নিয়ে স্ট্র দিয়ে আস্তে আস্তে জল খান।
একটা কাগজের ব্যাগে নাক–মুখ ঢেকে জোরে শ্বাস নিতে হবে এবং ওই ব্যাগের মধ্যেই ছাড়তে হবে। বেশ কয়েকবার করুন। তবে সাবধান, পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহার করবেন না।
মুখে হাত চাপা দিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখুন। এসে অসুবিধা হলে বুক ভরে শ্বাস নেওয়ার পর কিছু ক্ষণ ধরে রেখে তারপর ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এতেও শরীরে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বাড়বে। কমবে হেঁচকি।

আরও পড়ুন:

সুখী দাম্পত্যের চাবিকাঠি পরকীয়া! বিস্ময়কর তথ্য উঠে এল সমীক্ষায়

ত্বকে কালো দাগ-ছোপ দেখা দিচ্ছে? অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন

শারদীয়ার গল্প-৩: আলোকসংশ্লেষ

চশমা পরে নাকের দু’পাশে পড়ে যাচ্ছে কালো দাগ? ঘরোয়া উপায়ে মিলতে পারে মুক্তি

নাক–মুখ বন্ধ রেখে জোর করে নিশ্বাস ফেলতে চেষ্টা করুন, দুই কর্ণকুহরে চাপ পড়বে। এটাকে বলে ‘ভালসালভা ম্যানুভার’। কয়েকবার করুন। উপকার পাবেন।
২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড দু’হাতের আঙুল দিয়ে কিছুক্ষণ কান বন্ধ রাখলেও উপকার মিলবে।
ঠান্ডা জল খেতে পারেন। অথবা গরম দুধ। এক চামচ চিনি জিভে নিয়ে সামান্য সময় পর গিলে খাওয়ার চেষ্টা করুন। নাক চেপে ধরে জল খেতে পারেন।
বোতল থেকে জল খাবেন না। গ্লাসে জল নিয়ে কয়েক বার ছোট ছোট চুমুক দিন।
গরম জল দিয়ে কুলকুচি করে ফেলুন।
কিছুক্ষণ জিভ বার করে রাখুন। শ্বাসপ্রশ্বাস চালাচলে সুবিধা হবে, কমবে হেঁচকিও।
দু’ দিনের মধ্যে হেঁচকি ভালো না হলে একজন পরিপাকতন্ত্র ও লিভার–বিশেষজ্ঞ অথবা মেডিসিন–বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

Skip to content