সোনালি ফোগট।
যত দিন যাচ্ছে ততই ঘনীভূত হচ্ছে বিজেপি নেত্রী তথা অভিনেত্রী সোনালী ফোগটের মৃত্যু রহস্য। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর তত্ত্ব মানতে আগেই নারাজ ছিল পরিবার। এবার পোস্টমর্টেম রিপোর্টেও মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য। বৃহস্পতিবার ময়না তদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, সোনালিকে ভোঁতা কোনও অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। গোটা ময়নাতদন্তের রেকর্ডিংও করা হয় প্রমাণের জন্য। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেহে আঘাতের হদিশের পর সিসিটিভি ফুটেজেও মিলল চাঞ্চল্যকর ফুটেজ। এনআই সূত্রে খবর, গোয়া পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল জসপাল সিং জানিয়েছেন, সিসিটিভি ফুটেজ ঘেঁটে প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে তাঁর পানীয়তে কিছু একটা মেশানো হয়েছিল।
এদিকে, তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই সোনালির পিএ সুধীর সাঙ্গওয়ান ও বন্ধু সুখবিন্দর সিংকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশি জেরায় তাঁরা স্বীকার করেছে যে, সোমবার রাতে অঞ্জুনা সৈকতের কার্লিস রেস্তরাঁ ও নাইটক্লাবে পার্টি করছিলেন তাঁরা। সেখানেই অভিনেত্রীর পানীয়ের মধ্যে তাঁরা এক ধরনের মাদক মিশিয়ে দিয়েছিলেন। সেই পানীয় পান করার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন সোনালি। ওই হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজও এবার প্রকাশ্যে এসেছে। দেখা গিয়েছে, মাদক মেশানো পানীয় পান করার পর হাঁটতে পারছিলেন না অভিনেত্রী। সহযোগীরা তাঁকে কোনওভাবে নিয়ে যাচ্ছেন।
চলতি সপ্তাহের সোমবারই সহকারী ও বন্ধুদের নিয়ে গোয়ায় সফরে গিয়েছিলেন হরিয়ানার বিজেপি নেত্রী তথা প্রাক্তন বিগ বস তারকা সোনালি। সারাদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন পোস্ট করতেও দেখা যায় ওই টিকটক তারকাকে। বিকেলে শেষবার তাঁর সঙ্গে পরিবারের কথা হয়। এরপরই রাতে তিনি অসুস্থ বোধ করায় গোয়ার সেন্ট অ্যান্টনি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার ভোরে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রাথমিক সূত্রে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সোনালির মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হলেও, তাঁর পরিবারের দাবি ছিল যে, সোনালিরই আপ্ত-সহায়ক এবং ওই আপ্ত-সহায়কের এক বন্ধু সেনালিকে ধর্ষণ করে খুন করেছেন।
সোনালি ফোগটের ভাই রিঙ্কু জানান, সোনালি জানিয়েছিলেন শ্যুটিংয়ের জন্য বাইরে যাচ্ছেন। শ্যুটিং হওয়ার কথা ২৪ অগস্ট। ফিরে আসবেন ২৭ অগস্ট। কিন্তু ২২ অগস্ট হঠাৎই ফোন করে বাড়িতে জানান, খাবার খেয়ে অস্বস্তি বোধ করছেন। একই সঙ্গে শ্যুটিং ২৪ অগস্ট হলেও কেনও হোটেলের রুম ২১ এবং ২২ অগস্ট বুক করা হয়েছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন রিঙ্কু। তিনি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে জানিয়েছেন, তিন বছর আগে সোনালিকে ধর্ষণ করেছিল সুধীর ও সুখবিন্দর। প্রায়শই তাঁরা ধর্ষণের ভিডিয়ো ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করত। তিনি আরও বলেন, শেষবার যখন সোনালির সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল, তখন তিনি খাবারে কিছু মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। মা ও বোনের সঙ্গে কথা বলার সময়ও সোনালি নাকি সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছিলেন তাঁর খাবারে কিছু একটা মেশানো হয়েছে।
CCTV footage just before Sonali Phogat's death surfaced.#SonaliPhogatDeath #SonaliPhogatDeathMystery #SonaliPhoghat pic.twitter.com/xa0xB4GprQ
— Ruchi tiwari (@Ruchi0495) August 26, 2022
সোনালি ফোগটের ভাই রিঙ্কু জানান, সোনালি জানিয়েছিলেন শ্যুটিংয়ের জন্য বাইরে যাচ্ছেন। শ্যুটিং হওয়ার কথা ২৪ অগস্ট। ফিরে আসবেন ২৭ অগস্ট। কিন্তু ২২ অগস্ট হঠাৎই ফোন করে বাড়িতে জানান, খাবার খেয়ে অস্বস্তি বোধ করছেন। একই সঙ্গে শ্যুটিং ২৪ অগস্ট হলেও কেনও হোটেলের রুম ২১ এবং ২২ অগস্ট বুক করা হয়েছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন রিঙ্কু। তিনি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে জানিয়েছেন, তিন বছর আগে সোনালিকে ধর্ষণ করেছিল সুধীর ও সুখবিন্দর। প্রায়শই তাঁরা ধর্ষণের ভিডিয়ো ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করত। তিনি আরও বলেন, শেষবার যখন সোনালির সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল, তখন তিনি খাবারে কিছু মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। মা ও বোনের সঙ্গে কথা বলার সময়ও সোনালি নাকি সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছিলেন তাঁর খাবারে কিছু একটা মেশানো হয়েছে।
এই ঘটনায় কার্যত ভেঙে পড়েছেন সোনালীর বছর ১৫র মেয়ে যশোধরা। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে মাত্র ৪২ বছর বয়সে খামারবাড়িতে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয়েছিল সোনালির স্বামী সঞ্জয় ফোগটের। বাবার মৃত্যুর পর মায়েরও এভাবে চলে যাওয়া কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না যশোধরা। মায়ের বিচার চেয়ে তাঁর এক ভিডিয়োও ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
গোয়ার উচ্চপদস্থ এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, সোনালিকে খুন করা হয়েছে আর্থিক কারণের জন্যই। এই ঘটনায় অভিযুক্ত সুধীর এবং সুখবিন্দ্র প্রমাণ নষ্ট করতে পারেন, তাই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। গোয়া পুলিশ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, জেরায় অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন সুধীর। জানিয়েছেন, সোমবার গোয়ায় পৌঁছনোর পর পার্টি করার জন্য সোনালিকে কার্লিস রেস্তরাঁয় নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন সুখবিন্দ্র। অভিযোগ, ওই রেস্তরাঁতেই বসে সোনালির জলে রাসায়নিক মিশিয়ে দেন সুধীর। এর পর তাঁকে সেই জল খেতে বাধ্য করেন। জল খাওয়ার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন সোনালি। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, টলোমলো পায়ে রেস্তরাঁ থেকে বেরোচ্ছেন সোনালি।
গোয়ার উচ্চপদস্থ এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, সোনালিকে খুন করা হয়েছে আর্থিক কারণের জন্যই। এই ঘটনায় অভিযুক্তরা যেতে প্রমাণ না নষ্ট করতে পারেন, তাই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। রেস্তরাঁয় ফরেনসিক দলও গিয়েছিল। তদন্তকারী আধিকারীকরা নমুনা সংগ্রহ করেছেন। রেস্তরাঁর মহিলাদের শৌচালয় সিল করে দেওয়া হয়েছে। তদন্তকারী দল জানিয়েছে, সোমবার রাতে ওই শৌচালয়ে সোনালি এবং তাঁর দুই সঙ্গী প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে ছিলেন। সেই প্রশ্নের উত্তরও খুঁজছে তদন্তকারী দল।