শনিবার ৯ নভেম্বর, ২০২৪


অরিজিৎ সিং

তাঁর কণ্ঠের জাদুতে মুগ্ধ আপামর জন সাধারণ। কিন্তু অরিজিৎ সিংহের খ্যাতি যতই আকাশচুম্বি হোক না কেন, মায়ানগরী মুম্বইয়ের চাকচিক্য তাঁকে ছুঁতে পারেনি। এখনও তিনি মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জবাসীর কাছে ‘ঘরের ছেলে, কাছের ছেলে’। যাঁকে আকছারই দেখা যায় আটপৌরে হাফ প্যান্ট ও টি-শার্ট পরে পাড়ায় হেঁটে যেতে। কখনও বা কমদামি স্কুটিতে এলাকা চষে বেড়ান। গত মঙ্গলবার এ হেন অরিজিৎ হঠাৎ হাজির ছোটবেলার বন্ধু শঙ্কর মণ্ডলের নার্সিং কলেজে। তার পর জানা গেল তাঁর নতুন উদ্যোগের কথা।
শুধু সঙ্গীতের মাঝে নিজেকে সীমাবদ্ধ না রেখে বৃহত্তর মানবসেবায় মন মজেছে তাঁর। তাই জন্মভূমি জিয়াগঞ্জকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ইংরেজি শেখার জন্য কোচিং সেন্টার অরিজিৎ খুলতে চান। যেখানে পড়তে গেলে কোনও ফি লাগবে না। কিন্তু এর জন্য মোট আটটি বড় ঘরের প্রয়োজন গায়কের। তাই তাঁর ভরসা ছোটবেলার বন্ধু শঙ্করের উপর। জিয়াগঞ্জ থানার কাছেই রয়েছে একটি নার্সিং কলেজ শঙ্করের। সেখানেই অরিজিৎ কোচিং সেন্টার খুলছেন।
অরিজিতের ওই কলেজে আসা নিয়ে শঙ্কর বলেন, ‘ভিডিয়ো মনিটরের সুবিধাযুক্ত বড় মাপের ঘর পছন্দ করেছেন অরিজিৎ। তাই ওখানেই কোচিং সেন্টার খুলতে চান উনি।’ অন্য দিকে, মঙ্গলবার দুপুর একটা নাগাদ অত্যন্ত সাদামাটা ভঙ্গিতে নার্সিং কলেজে যান অরিজিৎ। কিন্তু গায়কের আগমনের খবর মুহূর্তের মধ্যে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তার পর হস্টেলে ভিড় জমতে শুরু করে।
অরিজিতের এই উদ্যোগের কথা জানতে পেরে পরিচিত এবং এলাকাবাসীরা অত্যন্ত খুশি। তবে তাঁরা কেউ অবাক হননি। কারণ, তাঁরা তো তাঁদের ঘরের ছেলে অরিজিতকে চেনেন এ ভাবেই। মাস তিনেক আগে নিজের ছোটবেলার স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। তার পর থেকে স্কুলের পরিকাঠামোর উন্নয়নে একাধিক উদ্যোগ নিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া, ‘অরিজিৎ স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর স্কুলে যেন প্রাণ ফিরে এসেছে। মাস খানেক আগে তো সবাইকে চমকে দিয়ে ইংরেজির দিদিমণির সঙ্গে বাধ্য ছাত্রের মতো গল্প করেছেন অরিজিৎ। আসলে বলিউডের এত বড় একজন গায়ক হলেও অরিজিতের এই সাধারণ স্বভাবই তাঁকে অসাধারণত্ব চরম সীমায় উন্নীত করে তুলেছে।’

Skip to content