বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী, সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে।

প্রথম পর্বে ওষুধ সেবনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। আজকের পর্বে আলোচনা করছি আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে।

নির্বিচারে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া উলটে বিপদ ডেকে আনছে না তো?
আজকাল একটা প্রবণতা ভীষণভাবে লক্ষ করা যাচ্ছে যে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই মানুষ নিজে বা বন্ধুবান্ধব বা নেট দেখে এমনকী ওষুধের দোকানদারের পরামর্শে বিনা কারণে সামান্য সর্দিকাশি বা পেট খারাপের জন্য নির্বিচারে অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে নিচ্ছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোর্স পুরোপুরি সম্পূর্ণ করছেন না। ফলে নিজেরাই নিজেদেরকে বিপদে ফেলছেন। এর ফলে তৈরি হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্স। ফলস্বরূপ সত্যিকারের প্রয়োজনের সময় কোনও অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করছে না। অথবা খুবই উচ্চতাসম্পন্ন বা দামি অ্যান্টিবায়োটিক দেবার দরকার হচ্ছে। এটা শুধু আর্থিক দিক থেকেই নয় শারীরিক দিক থেকেও। বিশেষ করে প্রবীণদের ক্ষেত্রে এই কথাটি আরও বেশি করে প্ৰযোজ্য। আর এই প্রবণতা বাড়তে থাকলে সংক্রমণজনিত চিকিৎসায় চিকিৎসকদের প্রচুর সীমাবদ্ধতা চলে আসবে যা কখনওই কাম্য নয়। মনে রাখতে হবে অ্যান্টিবায়োটিক শুধুমাত্র কার্যকরী ব্যাকটেরিয়া জনিত সংক্রমণের ক্ষেত্রে আর কোনও সংক্রমণে নয়। আর কোন ধরনের সংক্রমণ সেটা নির্ধারণ করতে পারেন একমাত্র চিকিৎসকেরাই। তাই তাঁদের উপর ভরসা রাখুন।
ইচ্ছে মতো ওষুধ পালটাবেন না
অনেক সময়ই দেখা যায় ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই কেউ কেউ ওষুধ পালটে ফেলেন বিশেষ করে প্রেশারের ও ডায়াবেটিসের ওষুধ। সেটা হিতে বিপরীত হতে পারে। কারণ এই ধরনের রোগের বহুবিধ ওষুধ থাকে এবং চিকিৎসক রোগীর পরিস্থিতি ও অন্যান্য রোগের উপিস্থিতি প্রভৃতি বিবেচনা করে ওষুধ নির্বাচন করেন। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত কখনওই ওষুধ বা ওষুধের ডোজ পরিবর্তন করবেন না।

পারলে পিল বক্স-এ ওষুধ রাখুন
প্রবীণদের ক্ষেত্রে ওষুধ খেতে ভুলে যাওয়া একটা বিরাট সমস্যা। এই ক্ষেত্রে বাড়ির লোকের দায়িত্বশীল ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। যদি পরিচর্যাকারী থাকেন তাঁদেরকেও সতর্ক থাকতে হবে। পারলে প্রবীণদের জন্য পিল বক্স কিনে সেখানে ওষুধ রাখতে হবে। এতে খুব সহজে ওষুধ সকাল, দুপুর, রাত্রি এইভাবে সাজিয়ে রাখা যায়। সেখানে ওষুধ ভুলে যাওয়া বা মিস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে অনেক কম।

প্রবীণদের ক্ষেত্রে বাড়ির লোকের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ
প্রবীণদের বেশিরভাগই অন্যের উপর নির্ভর করেন বিশেষ করে আশি ঊর্ধ্বের বয়সের মানুষজন৷ যাঁরা ডিমেনশিয়া অ্যালঝাইমার্স-এর রোগী বা যাঁরা শয্যাশায়ী তাঁদের ক্ষেত্রে ওষুধের সঠিক গ্রহণ ও প্রয়োগ নির্ভর করে বাড়ির বা পরিবারের লোকজন বা তাঁদের পরিচর্যায় যে সমস্ত কেয়ার গিভার যুক্ত তাঁদের উপরে। তাই এই ক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা ও সচেতনতা একান্তভাবে জরুরি৷৷৷

ছবি : লেখক
লেখক: কর্ণধার ‘বাঁচবো’, সহ সম্পাদক জেরিয়াট্রিক সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া, পশ্চিমবঙ্গ শাখা৷ উপদেষ্টা, প্রোটেক্ট দ্যা ওয়ারিয়ার্স। যোগাযোগ : ‘বাঁচবো’, ফোন : ৯৯০৩৩৮৮৫৫৬

Skip to content