রবিবার ২৪ নভেম্বর, ২০২৪


পৃথিবীতে সর্ব শক্তির উৎস হল সূর্য। সূর্য ছাড়া পৃথিবীতে কোনও জীবন সম্ভব নয়। তাই সূর্যকে শ্রদ্ধা জানিয়ে কিংবা সূর্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে যদি দিন শুরু করা যায় সে ক্ষেত্রে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পজেটিভ শক্তি অর্জন করা যায়, এর ফলে শরীর সুস্থ থাকে এবং রোগব্যাধি থেকে দূরে থাকা যায়।

সূর্যপ্রণামের উপকারিতা
গবেষণায় দেখা গেছে যে, ডায়াবেটিস রোগীরা যদি নিয়মিত সূর্য নমস্কার করেন, তাহলেতাঁদের রক্তে চিনির মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করবে। তদুপরি এই যোগ কৌশলটি শরীরের ‘অক্সিডেটিভ স্ট্রেস’কে হ্রাস করে, যা ইনসুলিন প্রতিরোধের জন্য অত্যাবশ্যকারী ভূমিকা পালন করে।

মেদ ঝরাতে
সূর্য প্রণাম আমাদের মানব শরীরের অনেকটা ক্যালোরি ক্ষয় করতে সহায়তা করে। প্রতিদিন যাঁরা সূর্য প্রণাম করেন তাঁরা এটি শুরু করার দিন পনেরোর মধ্যেই শরীরের তফাতটা বুঝতে পারবেন। কেননা সূর্য প্রণাম শরীরের বাড়তি ওজন কমানোর পাশাপাশি এটি শরীরের বিভিন্ন অংশকে নমনীয় করে তোলে, মেরুদণ্ড নমনীয় হয়ে ওঠে, যা আমাদের শরীরের কাঠামোকে সুদৃঢ় রাখতে সহায়তা করে।

কীভাবে সূর্যপ্রণামটি করব
এই ব্যায়ামটি করার জন্য বারোটি ধাপ পরপর অনুসরণ করতে হবে। প্রতিটি আসনে নির্দিষ্ট কোনও বাঁধাধরা সময় নেই যে কঠোরভাবে করতেই হবে। কিন্তু প্রতিটি আসনে কমপক্ষে ৩০ সেকেন্ড সময় দেওয়ার চেষ্টা করবেন।

প্রণাম আসন
এই আসনটি করার সময় একটি মাদুরের ওপর দাঁড়িয়ে সূর্যের দিকে তাকিয়ে হাতজোড় করে দুই পা একসঙ্গে রেখে নমস্কার করুন। আস্তে আস্তে নিঃশ্বাস নিন এবং নিঃশ্বাস ছাড়ুন। হাত দুটো জোড়া করে বুকের সামনে রাখুন।

হস্ত উত্তাসন
এই আসনে নিঃশ্বাস নিতে নিতে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আপনার হাত দুটো জোড় করে মাথার ওপর দিয়ে পিছন দিকে নিয়ে যান। যতটা সম্ভব শরীরটাকে পিছন দিকে প্রসারিত করুন।

পাদহস্তাসন
নিঃশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে সামনে ঝুঁকে নিজের পায়ের পাতাকে ছোঁয়ার চেষ্টা করুন।

অশ্বসঞ্চলাসন
নিঃশ্বাস নিতে নিতে আপনি আপনার ডান পা’কে পিছনে রাখুন। এরপর হাত দুটি দু’ পাশে মাটিতে রেখে সামনের দিকে তাকান।

পর্বতাসন বা আধো মুখ স্বনাসন
এটি করার সময় আস্তে আস্তে নিঃশ্বাস ছাড়ুন। এ ক্ষেত্রে ডান পা বাঁ পায়ের পাশে রেখে শরীরের ভর সামনের দিকে রাখুন এবং কোমরটাকে পর্বতের মতো উঁচু করে রাখুন। যাতে শরীরটা দেখতে পর্বতের মতন হয়।

অষ্টাঙ্গাসন
নিঃশ্বাস নিতে নিতে উপুড় হয়ে মেঝেতে শুয়ে পড়তে হবে। পেয়ের পাতা, হাঁটু, বুক ও থুতনি যেন মেঝেতে ছুঁয়ে থাকে। আর কোমর থাকে উঁচু অবস্থায়।

ভুজঙ্গাসন
এই আসনকে কোবরা পোজও বলা হয়ে থাকে। কেননা এটি করার সময় শরীরটা সাপের মতো হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে নিঃশ্বাস নিতে নিতে মেঝেতে শুয়ে হাতের ওপর ভর দিয়ে মাথা থেকে কোমর পর্যন্ত অংশকে তুলে ধরতে হবে।

পর্বতাসন
শরীরকে ভুজঙ্গাসন-এর পর আস্তে আস্তে হাতের উপর ভর দিয়ে শরীরটাকে পর্বতের মতো করে কোমরটাকে উঁচু করে ধরবেন এবং আস্তে আস্তে নিঃশ্বাস ছাড়বেন।

অশ্বসঞ্চলাসন
এই ধাপে নিঃশ্বাস নিয়ে নিতে ডান হাঁটুকে এগিয়ে নিয়ে এসে হাঁটুর ওপর শরীরের ভর রাখতে হবে। ডান হাঁটুর দুই পাশে হাত দিয়ে শরীরের ভর রাখতে হবে এবং সোজা তাকাতে হবে।
পাদহস্তাসন
এই ধাপে নিঃশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে মাথা নিচু করে পায়ের পাতা ছুঁতে হবে।

হস্ত উত্থানাসন
নিঃশ্বাস নিতে নিতে হাত দুটোকে সোজা করে কানের দুই পাশ দিয়ে যতটা সম্ভব মাথার পিছনে নিয়ে যেতে হবে। কোমরকে আস্তে আস্তে যতটা সম্ভব পিছনে হেলিয়ে দিতে হবে।
এই ভাবেই সূর্যপ্রণাম সম্পূর্ণ হবে।

ছবি : লেখিকা

যোগাযোগ : ৮০১৭৬৩২১৬১

Skip to content