শনিবার ২৩ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী, সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে।

রাজ্যের মানুষের চিকিৎসার কথা চিন্তা করে রাজ্য সরকার নিয়ে এসেছে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড। এই কার্ডের মাধ্যমে সরকারি হাসপাতাল ও কিছু বেসরকারি হাসপাতালে মিলবে সম্পূর্ণ নিখরচায় চিকিৎসা। এই কার্ডের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করতে হবে। কীভাবে করা যাবে আবেদন, কী কী সুবিধা পেতে পারেন তা জেনে নিন।

স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে আবেদন করতে গেলে কী কী নথি থাকা বাধ্যতামূলক?
আবেদনকারী যে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা, তা প্রমাণ করার শংসাপত্র।
পরিচয়পত্রের প্রুফ যেমন ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড ও আধার কার্ডের প্রতিলিপি।
রাজ্যের দারিদ্রসীমার নীচে বাস করেন, বিপিএল বা বিলো পভার্টি লাইন শংসাপত্র।
কোনও মেডিকেল সংস্থার সঙ্গে যুক্ত তার শংসাপত্র।

স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের জন্য অনলাইনে কীভাবে আবেদন করবেন?
লগ ইন তৈরি করার জন্য প্রথমে স্বাস্থ্য সাথীর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে।
আপনি যদি চান গুগুল ক্রোমে গিয়ে সরাসরি স্বাস্থ্য লিখলেই সরকারি ওয়েবসাইটটি চলে আসবে।
ওয়েবসাইটে ঢুকে লগ ইন করার পদ্ধতির মাধ্যমে রেজিস্টারের প্রথম ধাপ।
ওয়েবসাইটের ডান দিকে লগ ইন-এ ক্লিক করে আইডি আর পাসওয়ার্ড দিতে হবে।
নিজের ইউজার নেম আর পাসওয়ার্ড ক্রিয়েট করলেই রেজিস্ট্রেশন সফল হবে।

কী কী সুবিধা পেতে পারেন এই কার্ডের মাধ্যমে?
এই কার্ডের নিয়ম অনুযায়ী প্রতি পরিবার ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত প্রাথমিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা পাবেন।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রত্যেক পরিবার স্বাস্থ্য বিমার আওতায় থাকার সুযোগ পাবেন।
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় থাকা কোনও ব্যক্তিকে যদি জটিল কোনও রোগের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়, তাহলে আরও কিছু সুবিধা পাওয়া যাবে। হাসপাতালে ভর্তির আগে এবং ছুটি পাওয়ার পরে পাঁচদিন রুগির ওষুধ বিনামূল্যে পাওয়া যাবে। হাসপাতালে যাওয়া ও বাড়ি ফেরার যাতায়াত খরচও পাওয়া যাবে। (অতিরিক্ত ২০০ টাকা)
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের অধীনে থাকা পরিবারের কোনও ব্যক্তি যদি কোনও জটিল রোগে আক্রান্ত হন, তাহলে সরকারের তরফ থেকে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষা পাওয়া যাবে।
অসুস্থতার সময়ে বিনামূল্যে ওষুধ, খাবার, পরীক্ষা করা, হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।

স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের খুঁটিনাটি
স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মেয়াদ ১ বছর এবং প্রতি বছর নবীকরণ করানোর যোগ্য।
হাসপাতালে থাকাকালীন রুগির সমস্ত প্রয়োজনীয় পরীক্ষা এবং ওষুধ বিনামূল্যে পাওয়া যাবে।
এই পরিষেবার অন্তর্গত পরিবারের সদস্য এবং ওই পরিবারের সঙ্গে যুক্ত নির্ভরশীল সন্তান সদস্যের সংখ্যা এবং বয়সের ক্ষেত্রে কোনও সীমাবদ্ধতা নেই।
এই কার্ডের আওতায় প্রত্যেক বছর ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা পাবে প্রত্যেক পরিবার।
এই পরিষেবার সুযোগ পাওয়া যাবে নথিভুক্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে।
এই প্রকল্পের আওতায় স্বাস্থ্য সাথী স্মার্ট কার্ডটি পাওয়া যাবে সংশ্লিষ্ট গ্রামপঞ্চায়েতে বা ব্লক বা মিউনিসিপ্যাল অফিসে।
হাসপাতালের চিকিৎসার খরচ সরাসরি হাসপাতালকে বিমা কোম্পানি দেবে; পূর্ব নির্ধারিত ব্যয়ের হার অনুযায়ী।
হাসপাতাল থেকে ছুটির সময়ে রুগির গাড়ি ভাড়া বাবদ ২০০ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হবে। সরকারি হাসপাতালের ক্ষেত্রে তা ৫০০ টাকা পর্যন্ত ধার্য করা হয়েছে।
ইউআরএন নম্বর দ্বারা নিজের কার্ডের ব্যালেন্স ও ট্রানজ্যাকশন সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া যাবে।
চিকিৎসা পাওয়ার জন্য স্মার্ট কার্ডটি নিয়ে নথিভুক্ত হাসপাতালে হেল্প ডেস্কে যোগাযোগ করতে হবে।
স্বাস্থ্য সাথী মোবাইল অ্যাপ বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দেখে নেওয়া যাবে নিকটবর্তী হাসপাতালের তালিকা।
কোনও অবস্থাতেই স্মার্ট কার্ডটি পরিবারের নথিভুক্ত সদস্য ছাড়া অন্য কোনও ব্যক্তিকে হস্তান্তর করা উচিত নয়।
রুগি ভর্তি থাকা অবস্থায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর কাছে স্মার্ট কার্ডটি জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময়ে নিজের মোবাইল নম্বর অবশ্যই নথিভুক্ত করতে হবে। ছুটির সময় যাতায়াত বাবদ নগদ টাকা হাসপাতাল থেকে নিতে হবে সংশ্লিষ্ট ভাউচার বা রেজিস্টার খাতায় সই করতে হবে।
হাসপাতাল থেকে রুগির ছুটির সময়ে স্মার্ট কার্ডটি সংগ্রহ করতে ভুলবেন না।

এই প্রকল্প ঠিক কাদের জন্য বা কারা পাবেন এই প্রকল্পের সুবিধা?
স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে সরকারি স্বাস্থ্য বিমার জন্য আবেদন করতে পারবেন সকলেই। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড পাওয়ার জন্য আলাদা করে উপার্জন সংক্রান্ত বিশেষ কোনও শর্ত বা বাধ্যবাধকতা থাকছে না।
আবেদনকারী ব্যক্তি নিরাপত্তা কর্মী, আইসিডিএস কর্মী ও সহকারী হতে পারেন। এক্ষেত্রে গ্রিন ভলেনটিয়ার্স, সিভিক ভলেনটিয়ার্স, ভিলেজ ভলেনটিয়ার্স ইত্যাদি ক্ষেত্রের কর্মী হতে পারেন আবেদনকারী।
এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে গেলে আবেদনকারী ব্যক্তি ও তার পরিবারকে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হতে হবে। সেক্ষেত্রে সে ধনী না গরিব নাকি মধ্যবিত্ত বা তার মাসিক আয় কত তা দেখা হবে না।
যেকোনও পরিবারের স্বামী, স্ত্রী, বাবা, মা, শ্বশুর, শাশুড়ি, আঠারো বছর পর্যন্ত ছেলে ও মেয়ে এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সমস্ত সদস্য ও তাঁদের পরিবার, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আংশিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী করতে পারেন স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের জন্য আবেদন।
আবেদনকারী শ্রমিক অথবা দিনমজুর, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের স্বনির্ভর গোষ্ঠীভুক্ত, পুরসভা এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীভুক্ত, আশা কর্মী কিংবা সম্মাননীয় স্বাস্থ্য কর্মী হতে পারেন।

তথ্যসূত্র: www.swasthyasathi.gov.in

Skip to content