শনিবার ২৩ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী, সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে

বাঙালির জীবনে যতই বিভিন্ন ও বিচিত্র পুরাণগাথা থাকুক না কেন, একটি পুরাণ ছাড়া কিন্তু বাঙালিজীবন এক্কেবারে অচল, আর সেটি হল বাঙালির মৎস্যপুরাণ। এই একটি পুরাণই দেশ-বিদেশে বাঙালির মাহাত্ম্য প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট। আমাদের মৎস্যপুরাণে মাছের যাবতীয় পুরাণগাথা নিয়ে ধারাবাহিকভাবে থাকবেন বিশিষ্ট মৎস্যবিজ্ঞানী ড. প্রতাপ মুখোপাধ্যায়

পর্ব -৫

বাঙালির মৎস্যপ্রীতির ইতিহাস এক ঐতিহ্যপ্রাচীন ব্যাপার। কাব্য থেকে মহাকাব্য—সমস্তক্ষেত্রেই বাঙালির খাদ্যতালিকায় মাছের সম্ভার কিন্তু লক্ষণীয়৷ তবে যে কোনও কারণেই হোক বাঙালির খাদ্যতালিকায় মাছের বিশেষ বৈচিত্র কিন্তু মোটেই দেখা যায় না। হতে পারে পুরাণকারদের দান করা আভিজাত্যের নির্দিষ্ট ধারণা মাফিক চলতে গিয়েই মাছের হাতে গোনা রুই, কাতলা, ট্যাংরা, পারশে বা নিদেনপক্ষে চিংড়ি অথবা ইলিশ এর বাইরে বাঙালি আর বেরোতে পারে না৷ চিরদিনই রসনাতৃপ্তির যোগ্য এবং দর্শনধারী মৎস্য বাবাজিদেরই বেশি কদর বাঙালির কাছে। দুর্ভাগ্যবশত বাঙালির এই নির্দিষ্ট তালিকাভুক্ত সমস্ত মাছই কিন্তু মিষ্টি জলের মাছ। ভারতবর্ষের মতো এরকম বৃহত্তর উপকূলবর্তী দেশে যেখানে হরেক রকমের সামুদ্রিক মাছ পাওয়া সম্ভব সেখানে অধিকাংশ বাঙালিই মিষ্টি জলের মাছ খেয়েই দিনপাত করছেন। আজ মূলত আমার কথা বলার বিষয়ই হল সামুদ্রিক জলের মাছ কেন খাবেন? এর উপকারিতাই বা কী?
আপনি কি হৃদরোগে ভুগছেন বা ইদানীং মনে হচ্ছে চট করেই যেন অসুস্থ হয়ে পড়ছেন সামান্য ধকলেই? তাহলে জেনে রাখুন আপনার শরীরের দরকার পর্যাপ্ত প্রোটিন এবং কিছু জরুরি ফ্যাটি অ্যাসিড যা আপনি পেতে পারেন সামুদ্রিক মাছ থেকে। সার্ডিন, ম্যাকারেল, সিলভার পমফ্রেট বা লোটে মাছের মতো সামুদ্রিক মাছগুলিতে থাকে পর্যাপ্ত প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড এবং প্রোটিন যা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে এবং আপনার হৃদযন্ত্রকেও রাখে সুস্থ ও সবল। পাশাপাশি অন্যান্য স্বাদু জলের মাছের তুলনায় কিন্তু এই মাছ তুলনামূলকভাবে অনেকটাই সস্তা৷
সুতরাং রসনাতৃপ্তির পাশাপাশি যত্নে রাখুন আপনার স্বাস্থ্যটিকেও, আর তার জন্য অভিনব কিছু সামুদ্রিক জলের মাছ রাখুন আপনার খাদ্যতালিকায়। স্বাদ বদলান, সঙ্গে হাল ধরুন স্বাস্থ্যেরও, সাশ্রয়ের সঙ্গে সুস্থ জীবনযাপন করুন৷

* বাঙালির মৎস্যপুরাণ (Bangalir Matsya Purana – Fish) : ড. প্রতাপ মুখোপাধ্যায় (Pratap Mukhopadhyay) অবসরপ্রাপ্ত প্রধান মৎস্যবিজ্ঞানী, ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদ, ভারত সরকার।
 

অনুলিখন: সুমন্ত দাস


Skip to content