ছবি প্রতীকী, সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে
শুধু প্রবীণেরাই নয় আমরা প্রত্যেকেই চাই নিজের বাড়িতে সুখে, শান্তিতে, আনন্দে, সুস্থভাবে এবং নিরাপদে থাকতে। আর তার জন্য দরকার উপযুক্ত পরিবেশ। আর অবশ্যই ভালো বাসা আর ভালোবাসা। কথাতেই আছে: “The magic thing about home is that it feels good to leave, and it feels even better to come back.” কথায় আছে ‘Home is not a place… It’s a feeling’। আমাদের সকলের কাছেই নিজের বাড়িটাই হল সবচেয়ে শান্তির ও সুরক্ষিত জায়গা। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই কি তাই? এই প্রশ্নের অবতারণা একটাই কারণে, সুরক্ষিত বলতে আমরা কি আমাদের সঙ্গে বাস-করা বাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠদের কথা বিবেচনা করি? সবক্ষেত্রে বোধহয় নয়। আমাদের সকলের যে একদিন বয়স হবে সেটা আমরা ভাবতে চাই না। কিন্তু আমার বাড়ি সেটা আমার বয়সকালের জন্যও উপযোগী কি না বা আমার বাড়িটি আমার সঙ্গে থাকা প্রবীণ মানুষগুলোর জন্য সুরক্ষিত কি না সেদিকে খেয়াল রাখা ভীষণভাবে জরুরি। তাই প্রবীণ মানুষদের জন্য উপযোগী গৃহনির্মাণ বা গৃহসজ্জার ক্ষেত্রে কোন দিক বা বিষয়গুলি আমাদের বিবেচনায় রাখা জরুরি আসুন জেনে নেওয়া যাক।
যে যে বিষয়ে বিশেষভাবে খেয়াল রাখবেন
১. প্রবীণদের জন্য নির্ধারিত ঘরটি যেন অবশ্যই খোলামেলা হয়। দেখা গিয়েছে শুধুমাত্র জায়গার অভাবে চলাফেরার পথে ধাক্কা লাগার কারণে বহু পড়ে যাওয়া ও তার থেকে অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটেছে। তাই ন্যূনতম প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ব্যতীত আর কোনও জিনিসপত্র যেন প্রবীণদের ঘরটিতে না থাকে।
২. প্রবীণদের ঘরটি যেন উপযুক্ত বাতাসময় হয়। নতুবা স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ থেকে বহু ধরনের রোগ যেমন শ্বাসকষ্টজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। COPD যাঁদের রয়েছে তাঁদের আক্রান্ত হবার প্রবণতা বাড়ে। এমনকী এই পরিবেশ অবসাদগ্রস্ত হবার প্রবণতাকেও বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।
৩. প্রবীণদের ঘরটিতে যেন উপযুক্ত আলো থাকে। খেয়াল রাখবেন ঘরটিতে যেন দিনের বেলায় সূর্যালোক পড়ে। সূর্যালোকে বহু জীবাণু নষ্ট হয়। আলো সবসময় মনকে চাঙা রাখতে সাহায্য করে। তাই অন্ধকারময় পরিবেশে অবসাদগ্রস্ত হবার প্রবণতাও বহুগুণ বেড়ে যায়। রাত্রিবেলাতেও ঘরে যথোপযুক্ত আলো থাকার দরকার এবং বাথরুম যাবার রাস্তায়। কারণ বয়সজনিত কারণে প্রবীণ মানুষদের বহুবার মূত্রত্যাগের জন্য ওঠার প্রয়োজন হয় এবং দৃষ্টিশক্তিও ক্ষীণ হয়। তাই আলোর অভাবে সঠিক দেখতে না পাওয়ার জন্য পড়ে যাওয়ার ঘটনা প্রায়ই শুনতে পাওয়া যায়। যা একেবারেই অনভিপ্রেত।
৪. বাড়ির মেঝে, বাথরুম ও পায়খানার মেঝে যেন কোনও ভাবেই পিচ্ছিল না হয়। বাড়িকে আধুনিক রূপ দিতে গিয়ে আমরা প্রায়শই মেঝে মার্বেলের করি। যা বয়স্কদের জন্য খুবই বিপদসংকুল। কারণ তাঁদের শরীরের ভারসাম্যজনিত বহু সমস্যা এবং পায়ের গ্রিপিং ক্ষমতাও কমে যাওয়ার দরুন অনেক ক্ষেত্রেই পড়ে যাওয়া এবং তার থেকে সেরিব্রাল অ্যাটাক পর্যন্ত ঘটতে দেখা যায়। তাছাড়াও মেঝেতে কার্পেট না রাখাটাই বাঞ্ছনীয়, কারণ এর থেকে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাওয়ার ঘটনাও অনেক ক্ষেত্রেই ঘটে।
৫. ঘরের জানলা ও দরজার পর্দা, বিছানার চাদর ও বালিশের কভার নিয়মিত ব্যবধানে ধোয়া বাঞ্ছনীয়। কারণ এসব কিছুতে জমে থাকা ধুলো এবং ঝুল ও ঘরের ঝুল থেকে বিভিন্ন অ্যালার্জি, হাঁচি, কাশি প্রভৃতি সহজেই প্রবীণদের আক্রান্ত করে। এমনকী এর থেকে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা বিশেষত COPD রোগীদের দেখা যায়।
৬. প্রবীণদের জন্য (সব বয়সের ক্ষেত্রেই) কমোড সিস্টেম ভীষণভাবে আবশ্যক। নতুবা হাঁটুর উপর অসম্ভব চাপ পড়ে যার দরুন ব্যথা, ফুলে যাওয়া এবং অস্টিওআর্থ্রাইটিস জনিত সমস্যা হবার এবং থাকলে তা আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়। একেবারে নিরুপায় হলে কমোডের পরিবর্তে আজকাল পোর্টেবেল কমোড বা কমোডের মতন চেয়ার পাওয়া যায়। কমোডের দুপাশে ধরার জন্য রড রাখা ভীষণভাবে জরুরি। বিশেষভাবে যে সমস্ত বয়স্ক মানুষ কোষ্ঠকাঠিন্যতে ভোগেন তাঁদের ক্ষেত্রে অনেকক্ষণ বসে থাকার পর উঠতে গেলে হঠাৎ কোমরে বা হাঁটুতে ব্যথার দরুন অসুবিধা হয় আবার অনেক সময় মাথা ঘুরে যায়, সেই সব ক্ষেত্রে দুপাশে ধরার জন্য হাতল ভীষণভাবে সাহায্য করে শুধু নয় অনেক বিপদের হাত থেকে রক্ষা করে।
৭. বাথরুমে স্নান করার সময় যাঁরা বেশিক্ষণ দাঁড়াতে পারেন না তাঁদের জন্য বসতে পারার ব্যবস্থা থাকা জরুরি। শাওয়ার যাঁরা ব্যবহার করেন না তাঁদের জন্য স্নানের সময় জলের বালতি কোমর উঁচু জায়গায় রাখার ব্যবস্থা যেমন টুল বা ওই জাতীয় জিনিস অবশ্যই রাখতে হবে। কোনও অবস্থাতেই যেন মাটিতে ঝুঁকে জল নিতে না হয়। নতুবা তার থেকে কোমরে চাপ পড়ে কুঁজো হয়ে যাওয়া বা কাইফোসিস এমনকী মেরুদণ্ডের হাড় পর্যন্ত সরে যেতে পারে। তার থেকে স্পাইনাল কর্ডে প্রেশার এবং পরবর্তীতে পায়ের স্নায়ুবিক দুর্বলতা দেখা দিতে পারে।
১. প্রবীণদের জন্য নির্ধারিত ঘরটি যেন অবশ্যই খোলামেলা হয়। দেখা গিয়েছে শুধুমাত্র জায়গার অভাবে চলাফেরার পথে ধাক্কা লাগার কারণে বহু পড়ে যাওয়া ও তার থেকে অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটেছে। তাই ন্যূনতম প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ব্যতীত আর কোনও জিনিসপত্র যেন প্রবীণদের ঘরটিতে না থাকে।
২. প্রবীণদের ঘরটি যেন উপযুক্ত বাতাসময় হয়। নতুবা স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ থেকে বহু ধরনের রোগ যেমন শ্বাসকষ্টজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। COPD যাঁদের রয়েছে তাঁদের আক্রান্ত হবার প্রবণতা বাড়ে। এমনকী এই পরিবেশ অবসাদগ্রস্ত হবার প্রবণতাকেও বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।
৩. প্রবীণদের ঘরটিতে যেন উপযুক্ত আলো থাকে। খেয়াল রাখবেন ঘরটিতে যেন দিনের বেলায় সূর্যালোক পড়ে। সূর্যালোকে বহু জীবাণু নষ্ট হয়। আলো সবসময় মনকে চাঙা রাখতে সাহায্য করে। তাই অন্ধকারময় পরিবেশে অবসাদগ্রস্ত হবার প্রবণতাও বহুগুণ বেড়ে যায়। রাত্রিবেলাতেও ঘরে যথোপযুক্ত আলো থাকার দরকার এবং বাথরুম যাবার রাস্তায়। কারণ বয়সজনিত কারণে প্রবীণ মানুষদের বহুবার মূত্রত্যাগের জন্য ওঠার প্রয়োজন হয় এবং দৃষ্টিশক্তিও ক্ষীণ হয়। তাই আলোর অভাবে সঠিক দেখতে না পাওয়ার জন্য পড়ে যাওয়ার ঘটনা প্রায়ই শুনতে পাওয়া যায়। যা একেবারেই অনভিপ্রেত।
৪. বাড়ির মেঝে, বাথরুম ও পায়খানার মেঝে যেন কোনও ভাবেই পিচ্ছিল না হয়। বাড়িকে আধুনিক রূপ দিতে গিয়ে আমরা প্রায়শই মেঝে মার্বেলের করি। যা বয়স্কদের জন্য খুবই বিপদসংকুল। কারণ তাঁদের শরীরের ভারসাম্যজনিত বহু সমস্যা এবং পায়ের গ্রিপিং ক্ষমতাও কমে যাওয়ার দরুন অনেক ক্ষেত্রেই পড়ে যাওয়া এবং তার থেকে সেরিব্রাল অ্যাটাক পর্যন্ত ঘটতে দেখা যায়। তাছাড়াও মেঝেতে কার্পেট না রাখাটাই বাঞ্ছনীয়, কারণ এর থেকে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাওয়ার ঘটনাও অনেক ক্ষেত্রেই ঘটে।
৫. ঘরের জানলা ও দরজার পর্দা, বিছানার চাদর ও বালিশের কভার নিয়মিত ব্যবধানে ধোয়া বাঞ্ছনীয়। কারণ এসব কিছুতে জমে থাকা ধুলো এবং ঝুল ও ঘরের ঝুল থেকে বিভিন্ন অ্যালার্জি, হাঁচি, কাশি প্রভৃতি সহজেই প্রবীণদের আক্রান্ত করে। এমনকী এর থেকে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা বিশেষত COPD রোগীদের দেখা যায়।
৬. প্রবীণদের জন্য (সব বয়সের ক্ষেত্রেই) কমোড সিস্টেম ভীষণভাবে আবশ্যক। নতুবা হাঁটুর উপর অসম্ভব চাপ পড়ে যার দরুন ব্যথা, ফুলে যাওয়া এবং অস্টিওআর্থ্রাইটিস জনিত সমস্যা হবার এবং থাকলে তা আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়। একেবারে নিরুপায় হলে কমোডের পরিবর্তে আজকাল পোর্টেবেল কমোড বা কমোডের মতন চেয়ার পাওয়া যায়। কমোডের দুপাশে ধরার জন্য রড রাখা ভীষণভাবে জরুরি। বিশেষভাবে যে সমস্ত বয়স্ক মানুষ কোষ্ঠকাঠিন্যতে ভোগেন তাঁদের ক্ষেত্রে অনেকক্ষণ বসে থাকার পর উঠতে গেলে হঠাৎ কোমরে বা হাঁটুতে ব্যথার দরুন অসুবিধা হয় আবার অনেক সময় মাথা ঘুরে যায়, সেই সব ক্ষেত্রে দুপাশে ধরার জন্য হাতল ভীষণভাবে সাহায্য করে শুধু নয় অনেক বিপদের হাত থেকে রক্ষা করে।
৭. বাথরুমে স্নান করার সময় যাঁরা বেশিক্ষণ দাঁড়াতে পারেন না তাঁদের জন্য বসতে পারার ব্যবস্থা থাকা জরুরি। শাওয়ার যাঁরা ব্যবহার করেন না তাঁদের জন্য স্নানের সময় জলের বালতি কোমর উঁচু জায়গায় রাখার ব্যবস্থা যেমন টুল বা ওই জাতীয় জিনিস অবশ্যই রাখতে হবে। কোনও অবস্থাতেই যেন মাটিতে ঝুঁকে জল নিতে না হয়। নতুবা তার থেকে কোমরে চাপ পড়ে কুঁজো হয়ে যাওয়া বা কাইফোসিস এমনকী মেরুদণ্ডের হাড় পর্যন্ত সরে যেতে পারে। তার থেকে স্পাইনাল কর্ডে প্রেশার এবং পরবর্তীতে পায়ের স্নায়ুবিক দুর্বলতা দেখা দিতে পারে।
৮. প্রবীণদের নিজস্ব কামরা বা ঘরের দরজা এবং সম্ভব হলে জানলার ছিটকিনিগুলো যেন কখনওই উঁচুতে হওয়া উচিত নয়। কারণ সেগুলো লাগানোর সময় বা হঠাৎ প্রয়োজনে খুলতে যাতে অসুবিধায় পড়তে না হয়। মাঝামাঝি লাগানোই শ্রেয়।
৯. হঠাৎ করে গৃহসজ্জার পরিবর্তন আমরা অনেক সময়ই করে থাকি। বাড়িতে আগত অতিথিদের থেকে অনেক প্রশংসা পাওয়া গেলেও এই পরিবর্তন বয়স্ক মানুষদের জন্য উপযোগী নয়। কারণ অনেক দিন ধরে বাড়ির যে সজ্জাতে তাঁরা অভ্যস্ত হয়ে যান তাতে হঠাৎ এই পরিবর্তন তাঁরা ধাতস্থ হতে পারেন না ফলে চলাফেরার পথে ধাক্কা লাগার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
১০. বাড়ির চারপাশে হাঁটার খোলা জায়গা প্রবীণদের জন্য খুবই উপযোগী, সঙ্গে বাগান থাকলে তো সোনায় সোহাগা। বাগানের বিভিন্ন গাছ এবং রঙিন ফুল যেমন মনকে ভালো রাখতে সহায়তা করে সেরকমই বাগান পরিচর্যার কাজে নিযুক্ত থাকলে নিজেদের কর্মক্ষম রাখা যায়।
১১. উঁচু খাট প্রবীণদের জন্য একেবারেই অনুপযুক্ত। যাঁদের পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাঁদের ক্ষেত্রে খাটের দুপাশে রেলিং-এর ব্যবস্থা করতে পারলে খুব ভালো হয়। পড়ে যাওয়া ও তৎসংক্রান্ত দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হয়।
১২. বাড়ির প্রবেশদ্বার ও প্রস্থানদ্বার (যদি আলাদা হয়) চওড়া বা প্রসারিত হওয়া ভীষণভাবে জরুরি। অভিজ্ঞতায় দেখেছি অনেক ক্ষেত্রেই শুধুমাত্র অত্যন্ত সংকীর্ণ পথে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে রোগীকে বার করার সময় প্রচুর সময় লাগার কারণে এবং ধকলের কারণে রোগীর শারীরিক পরিস্থিতি আরও সংকটজনক হয়ে যায় এমনকী এর থেকে রোগীর চোট এবং অনাকাঙ্ক্ষিত আরও ঘটনা ঘটে যায়।
১৩. প্রবীণদের কথা বিবেচনা করে সম্ভব হলে তাঁদেরকে একতলায় রাখতে পারলে খুব ভালো হয়। নতুবা অবশ্যই চওড়া লিফটের ব্যবস্থা ও চওড়া সিঁড়ির ব্যবস্থা করা অতি আবশ্যিক। সিঁড়িতে অবশ্যই যেন দুই পাশে ধরার হাতল থাকে।
১৪. আপৎকালীন পরিস্থিতিতে আমরা প্রায় সকলেই বিভ্রান্ত হয়ে পড়ি ফলে তৎক্ষণাৎ প্রয়োজনীয় জিনিস যেমন প্রয়োজনীয় ফোন নম্বর ইত্যাদি খুঁজে পাই না। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষেরা। তাই সহজেই চোখে পড়ার মতন জায়গায় স্থানীয় চিকিৎসক, অ্যাম্বুলেন্স, নিকটবর্তী হাসপাতাল, থানা, ওষুধের দোকান এবং বাড়ির ২/৩ জন নিকটজনের নম্বর টাঙিয়ে রাখা উচিত। সম্ভব হলে প্রবেশদ্বারে CCTV রাখতে পারলে সুরক্ষার দিক থেকে অনেক নিশ্চিত থাকা যায়।
লেখক: কর্ণধার ‘বাঁচবো’, সহ সম্পাদক জেরিয়াট্রিক সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া, পশ্চিমবঙ্গ শাখা৷ উপদেষ্টা, প্রোটেক্ট দ্যা ওয়ারিয়ার্স। যোগাযোগ : ‘বাঁচবো’ – ৯৯০৩৩৮৮৫৫৬
৯. হঠাৎ করে গৃহসজ্জার পরিবর্তন আমরা অনেক সময়ই করে থাকি। বাড়িতে আগত অতিথিদের থেকে অনেক প্রশংসা পাওয়া গেলেও এই পরিবর্তন বয়স্ক মানুষদের জন্য উপযোগী নয়। কারণ অনেক দিন ধরে বাড়ির যে সজ্জাতে তাঁরা অভ্যস্ত হয়ে যান তাতে হঠাৎ এই পরিবর্তন তাঁরা ধাতস্থ হতে পারেন না ফলে চলাফেরার পথে ধাক্কা লাগার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
১০. বাড়ির চারপাশে হাঁটার খোলা জায়গা প্রবীণদের জন্য খুবই উপযোগী, সঙ্গে বাগান থাকলে তো সোনায় সোহাগা। বাগানের বিভিন্ন গাছ এবং রঙিন ফুল যেমন মনকে ভালো রাখতে সহায়তা করে সেরকমই বাগান পরিচর্যার কাজে নিযুক্ত থাকলে নিজেদের কর্মক্ষম রাখা যায়।
১১. উঁচু খাট প্রবীণদের জন্য একেবারেই অনুপযুক্ত। যাঁদের পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাঁদের ক্ষেত্রে খাটের দুপাশে রেলিং-এর ব্যবস্থা করতে পারলে খুব ভালো হয়। পড়ে যাওয়া ও তৎসংক্রান্ত দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হয়।
১২. বাড়ির প্রবেশদ্বার ও প্রস্থানদ্বার (যদি আলাদা হয়) চওড়া বা প্রসারিত হওয়া ভীষণভাবে জরুরি। অভিজ্ঞতায় দেখেছি অনেক ক্ষেত্রেই শুধুমাত্র অত্যন্ত সংকীর্ণ পথে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে রোগীকে বার করার সময় প্রচুর সময় লাগার কারণে এবং ধকলের কারণে রোগীর শারীরিক পরিস্থিতি আরও সংকটজনক হয়ে যায় এমনকী এর থেকে রোগীর চোট এবং অনাকাঙ্ক্ষিত আরও ঘটনা ঘটে যায়।
১৩. প্রবীণদের কথা বিবেচনা করে সম্ভব হলে তাঁদেরকে একতলায় রাখতে পারলে খুব ভালো হয়। নতুবা অবশ্যই চওড়া লিফটের ব্যবস্থা ও চওড়া সিঁড়ির ব্যবস্থা করা অতি আবশ্যিক। সিঁড়িতে অবশ্যই যেন দুই পাশে ধরার হাতল থাকে।
১৪. আপৎকালীন পরিস্থিতিতে আমরা প্রায় সকলেই বিভ্রান্ত হয়ে পড়ি ফলে তৎক্ষণাৎ প্রয়োজনীয় জিনিস যেমন প্রয়োজনীয় ফোন নম্বর ইত্যাদি খুঁজে পাই না। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষেরা। তাই সহজেই চোখে পড়ার মতন জায়গায় স্থানীয় চিকিৎসক, অ্যাম্বুলেন্স, নিকটবর্তী হাসপাতাল, থানা, ওষুধের দোকান এবং বাড়ির ২/৩ জন নিকটজনের নম্বর টাঙিয়ে রাখা উচিত। সম্ভব হলে প্রবেশদ্বারে CCTV রাখতে পারলে সুরক্ষার দিক থেকে অনেক নিশ্চিত থাকা যায়।
লেখক: কর্ণধার ‘বাঁচবো’, সহ সম্পাদক জেরিয়াট্রিক সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া, পশ্চিমবঙ্গ শাখা৷ উপদেষ্টা, প্রোটেক্ট দ্যা ওয়ারিয়ার্স। যোগাযোগ : ‘বাঁচবো’ – ৯৯০৩৩৮৮৫৫৬