অন্যান্য সময়ের তুলনায় শীতকালে আমরা খানিক জল খাওয়া কমিয়ে দিই। এই ভুল কেউ জেনে করেন, আবার কেউ কেউ নিজের অজান্তেই কম জলপান করে থাকেন। মনে রাখতে হবে, আমাদের দেহে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে জল না যায়, তাহলে ডিহাইড্রেশনের আশঙ্কা থেকে যায়। একটানা কম পরিমাণ জলপান করলে এর প্রভাব আমাদের শরীরের উপর পড়া শুরু করে। যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা সে সব বুঝতে উঠতে পারি না। কিন্তু আমরা জল কম পরিমাণে খেলে আমাদের শরীর কিন্তু বেশ কিছু উপসর্গের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়। এই যেমন: এমনিতেই শীতকালে আমাদের ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। তার উপর জল কম খাওয়ার জন্য শরীরে জলের ঘাটতির জেরে এই সমস্যা অনেক বেড়ে যায়। তখন আমাদের ত্বক বেশ শুকিয়েই যায়। ফাটতে শুরু করে গোড়ালি, ঠোঁট। তবে শুধু ত্বকে নয়, ডিহাইড্রেশনের উপসর্গ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে দেখা দেয়।
কোন কোন উপায়ে বুঝবেন শরীরে জলের ঘাটতি হচ্ছে?
মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা
● একটানা শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দিলে লিভার তার কাজ ঠিক মতো করতে পারে না। লিভার জলের সাহায্য নিয়ে গ্লাইকোজেন তৈরি করে। এই গ্লাইকোজেন আমাদের শক্তি জোগায়। কিন্তু তা সঠিক ভাবে না হলে দেহে আরও বেশি খাবারের দরকার হবে। সে কারণেই আমাদের স্ন্যাকস, নোনতা, মিষ্টি, চকোলেট প্রভৃতি খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।
মুখে দুর্গন্ধ
● আমাদের মুখের লালায় থাকে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল গুণ। কিন্তু দেহে জলের পরিমাণ কমে গেলে সেই লালা পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি হয় না, ফলে মুখে ব্যাক্টেরিয়া বেড়ে যায়। আর সেই কারণেই আমাদের মুখে দুর্গন্ধ তৈরি হয়।
মাথা যন্ত্রণা
● অনেকেই হয়তো জানেন না, অনেক সময় মাইগ্রেনের ব্যথা ডিহাইড্রেশন থেকেই শুরু হয়। তাই ঘন ঘন মাথা ধরে থাকলে পর্যাপ্ত পরিমাণ জলপান করুন।
হাত-পায়ে টান ধরা
● অনেকেরই মাঝে মধ্যে হাত-পায়ে টান ধরে। এর পিছনেও শরীরে জলের ঘাটতির ভূমিকা রয়েছে। আসলে ডিহাইড্রেশন হলে আমাদের দেহের মাংসপেশিগুলিতেও জল পৌঁছয় না। তাই হাত-পায়ে টান লেগে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। দৌড়তে গেলে, হাঁটতে গেলে অথবা ওঠা-বসার সময়ও টান লাগছে? এমনটা হলে জল খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে।
গাঢ় রঙের প্রস্রাব
● শরীরে জলের ঘাটতির আর একটা লক্ষণ ফুটে ওঠে প্রস্রাবের রঙে। প্রস্রাবের রং দেখে শরীরে জলের ঘাটতির কথা টের পাওয়া যায়। শীতকালে প্রস্রাবের রং গাঢ় হলে সতর্ক হতে হবে। এটি আসলে দেহে জলের ঘাটতির লক্ষণ হতে পারে।