রবিবার ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।

ত্রিপুরার রাজকার্যে যেমন বাংলা ব্যবহৃত হতো, তেমনই রাজাগণ নিজেরাও ব্যক্তিগত পর্যায়ে বাংলাতে চিঠিপত্র লিখতেন। এখানে অপেক্ষাকৃত আধুনিক কালের কয়েকজন রাজার চিঠি উল্লেখ করা হচ্ছে। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘ভগ্ন হৃদয়’ কাব্যগ্ৰন্থের জন্য কিশোর কবি রবীন্দ্রনাথকে অভিনন্দন জানাতে বীরচন্দ্র মাণিক্য তাঁর সচিবকে কলকাতায় পাঠিয়েছিলেন।

এই ভাবেই ত্রিপুরার রাজপরিবারের সঙ্গে কবির যোগাযোগের সূচনা ঘটেছিল। তারপর রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘রাজর্ষি’ উপন্যাসকে ত্রিপুরার ঐতিহাসিক উপাদানে পুষ্ট করার উদ্দেশ্যে বীরচন্দ্রের কাছে গোবিন্দ মাণিক্যের রাজত্বকালের ইতিহাস, প্রাচীন রাজধানী উদয়পুরের ফটোগ্রাফ ইত্যাদি চেয়ে পত্র দিয়েছিলেন।
এই পত্রের উত্তরে বীরচন্দ্র ১২৯৬ ত্রিপুরাব্দের ১৮ জ্যৈষ্ঠ (১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে) রবীন্দ্রনাথকে লেখেন—
“…’মুকুট’ ও ‘রাজর্ষি’ নামক দুইটি প্রবন্ধই আমি পাঠ করিয়া দেখিয়াছি। ঐতিহাসিক ঘটনা সম্বন্ধে যে যে স্খলন, তাহা সংশোধন করা আপনার বিশেষ কষ্টসাধ্য হইবেনা। ‘রাজরত্নাকর’ নামে ত্রিপুরা রাজবংশের একখানা ধারাবাহিক সংস্কৃত ইতিহাস আছে।এই গ্রন্থ ধর্ম্ম মাণিক্যের রাজত্ব সময়ে সংকলিত হইতে আরম্ভ হয়।…পার্ব্বতীয় প্রজাগণের মধ্যে এরূপ প্রথা আছে যে, তাহারা নিজ নিজ ভাষায় রচনা করিয়া মহারাজের জীবন চরিতের কোন বিশেষ ঘটনা অবলম্বনে গান করিয়া থাকে। সেই গানগুলি হইতে অনেক বিবরণ সংগৃহীত হইতে পারে। মন্দিরের ফলক ও সনদ পত্রাদি হইতেও যে ইতিহাসের অনেক ঘটনা সংগৃহীত হইবার সুবিধা আছে, তা বলা বাহুল্য।

আপনি যে ত্রিপুর ইতিহাস অবলম্বন করিয়া নবন্যাস লিখিতে যত্ন করিতেছেন, ইহাতে আমি চিরকৃতজ্ঞ রহিলাম। যে যে স্হলে ইতিহাসের সহায়তা প্রয়োজন হয়—আমি আদরের সহিত পূর্ব্বোক্ত নানা মূল হইতে তাহা সঙ্কলন করিয়া দিতে প্রস্তুত আছি। আপনার অপরাপর বিষয়ে প্রশংসিত প্রবন্ধ গুলিতে ইতিহাসের যথাযথ ব্যাখ্যা থাকে, ইহা আমারও একান্ত বাসনা।…আমার পূর্ব্বপুরুষগণের উদয়পুর ব্যতীত ধর্মনগর, কল্যাণপুর, অমরপুর প্রভৃতি স্হানেও রাজধানী ছিল। সেই সেই স্হলেও অনেক কীর্ত্তিকলাপের চিহ্ণ পাওয়া যায়। আপনার প্রয়োজন হইলে সে সকল স্হানেরও ইতিহাস জানাইতে পারিব।

উদয়পুরের যে কয়েকখানা ফটোগ্রাফ আছে, তাহার বিবরণ লিখিয়া ইহার পর, তাহা আপনার নিকট পাঠাইয়া দিব।

রাজরত্নাকরে গোবিন্দ মাণিক্যের ও তাঁহার ভ্রাতা ছত্র মাণিক্যের চরিত যে রূপ বর্ণিত আছে, তাহা নকল করান হইয়াছে। সত্বর ছাপান যাইতে পারে কিনা,উদ্যোগ করিতেছি। মুদ্রাঙ্কন শেষ হইলে আপনার নিকট পাঠান যাইবে। ‘রাজর্ষি’র কোন কোন স্হলে ইতিহাস রক্ষিত হয় নাই, তাহা রাজরত্নাকরের উক্ত উদ্ধৃত ভাগ দেখিলেই বুঝিতে পারিবেন।

‘রাজরত্নাকর’ ছাপাইবার উদ্যোগে আছি,সমুদয় আয়োজন হইয়া উঠে নাই। যদি ঈশ্বর ইচ্ছায় ছাপা হইতে পারে তবে আপনাকে এক খণ্ড পাঠাইয়া দিব।…”
আরও পড়ুন:

সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৬৬: সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ও লৌকিক চিকিৎসা—ছাগল ক্ষুরি ও ধানি ঘাস

ত্রিপুরা: আজ কাল পরশুর গল্প, পর্ব-২৯: রাজ আমলের বাংলা গদ্য

প্রায় ১৪০ বছর আগের এই চিঠির ভাষা থেকে ত্রিপুরার সেযুগের রাজদরবারের বাংলা পত্র সাহিত্যের উচ্চমান সম্পর্কে এক স্পষ্ট ধারণা করা যায়। বীরচন্দ্রের ইতিহাস সচেতনতা তথা রাজ্যের অতীত ইতিহাস পুনরুদ্ধারে তিনি কতটা উৎসাহী ছিলেন তাও বোঝা যাচ্ছে রবীন্দ্রনাথকে দেয়া তাঁর এই চিঠি থেকে। বিভিন্ন মন্দিরের ফলক, তাম্রলিপি-সহ সনদপত্রাদি, রাজাদের কীর্তিচিহ্ণ ইত্যাদি থেকে ঐতিহাসিক উপাদান সংগ্রহের উপর রাজা গুরুত্ব দিয়েছিলেন। পার্বত্য অঞ্চলের প্রজাদের মধ্যে প্রচলিত রাজাদের জীবন চরিত ভিত্তিক লোকগানের ধারা থেকেও ঐতিহাসিক তথ্য সংগ্রহের কথা বলেছিলেন রাজা।

বীরচন্দ্রের পর রাজা হলেন পুত্র রাধাকিশোর। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে ছিল তাঁর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। রবীন্দ্রনাথ নানা সময়ে ত্রিপুরার রাজাকে নানা বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। ত্রিপুরার বাজেট নির্ধারণে রাজার কাছে নোট পাঠিয়েছেন তিনি। এমনকি রাজকুমারের জন্য গৃহশিক্ষক-সহ রাজ্যের জন্য মন্ত্রীও ঠিক করে দিয়েছেন কবি। রাজা ও কবির মধ্যে নিয়মিত পত্র বিনিময় হতো।
আরও পড়ুন:

পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৫৯: শাসক বেকায়দায় পড়লেই প্রতিপক্ষকে সন্ধির প্রতিশ্রুতি দেয়, যদিও রাজনীতিতে সে সব মানা হয় না

পর্দার আড়ালে, পর্ব-৬২: সত্যজিৎ রায় রুপটান শিল্পীকে বলেছিলেন, উত্তমকুমারের কোনও মেকআপ করার

১৯০২ খ্রিষ্টাব্দে রবীন্দ্রনাথকে লেখা মহারাজা রাধাকিশোরের একটি চিঠি এখানে উল্লেখ করা হচ্ছে—
“…বন্ধুত্বের খাতিরেই যে একটা অযথা প্রশংসা করিতে হইবে ইহার অর্থ কী? বাস্তবিক কবিতার গাম্ভীর্য রক্ষা বিষয়ে আপনি সিদ্ধহস্ত। অথবা ইহা আপনার স্বাভাবিক শক্তির নৈপুণ্য। এই গাম্ভীর্য্যের সহিত মধুরভাব হৃদয়ঙ্গম করিয়া পুলকিত হইয়াছি। নায়ক নায়িকার পদোচিত সম্মান ও ভাষা অতি পরিপাটি হইয়াছে। পৌরাণিক প্রস্তাব প্রসঙ্গাদি অবলম্বন করিয়া আধুনিক সময়ে যে কয়খানি কাব্যাদি রচিত হইয়াছে সেগুলিতে প্রায় উক্ত পদোচিত সম্মান ও গাম্ভীর্য্য রক্ষার্থে ভাষা ও ভাবের বিশেষ কোন নৈপুণ্য দেখিতে পাই না।আপনার গ্রন্হ সকল সে দোষ বর্জ্জিত।আমার বিশ্বাস ঐ সকল যথাযথ রক্ষিত হইলেই গ্রন্হের জীবন্যাস করা হইল।
মহিম শীঘ্রই আপনার হুকুম তামিল করিবে। এখানে কিছুদিন শান্তি দিয়া সে আপনাদের সজাগ সঞ্চালন করিতে প্রস্তুত হইয়াছে।সঙ্গে ক্যামেরা, বন্দুক ইত্যাদি আরো কি কি আছে।ইংরেজ গোরা সিপাইদের ন্যায় মানুষ না শিকার করে এই ভয়। তাহাকে বন্দুক ব্যবহার করিতে না দেওয়াই ভাল নয় কি? আর এক কথা শুনিতে পাই। মহিম নাকি গান টান এমনি কিছু রচনা করে।তাহার ঐ সকল রচনা একবার মাত্র দেখিতে চেষ্টা করিয়াছিলাম। শ্রীমান মহিমচন্দ্র নানা আপত্তি উত্থাপন করিয়া সেগুলি দেখিতে দিতেছে না। সেগুলি আপনি উশুল করিতে পারেন না কি? আরও শুনিতে পাই যক্ষে ভর না করিলে তাহার রচনা ভাল আসে না।বেচারি সঙ্গ দোষে মাঠে মারা যাইবার পথে দাঁড়াইয়াছে!
এখানে যথারীতি ঝড়বৃষ্টি আরম্ভ হইয়াছে।এবার বোধ হয় বর্ষার ঘোটকে আগমন।ফল কি হয় বলিতে পারি না।কিন্তু ছোট ছোট আম্রগুলির দফা রফা হইয়াছে।চাটনী বা টক্ খাইবারও রহিল না! বড় আপশোষ্! আমরা ভালো আছি।
আপনি সপরিবারে কেমন আছেন?প্লেগ নাকি চারিদিকে ছিটিয়া পড়িতেছে। তজ্জন্য চিন্তিত আছি।…”
আরও পড়ুন:

বিখ্যাতদের বিবাহ-বিচিত্রা, পর্ব-৮: জোসেফ কনরাড ও জেসি কনরাড—আমি রূপে তোমায় ভোলাব না…/৩

দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৩৯: ভারতের বিপ্লবী মেয়েরা এবং অন্তরে রবীন্দ্রনাথ

প্রায় সোয়াশো বছর আগে মহারাজা রাধাকিশোরের লেখা এই চিঠির ভাষা আগের তুলনায় বেশ প্রাঞ্জল।বিংশ শতাব্দীর সূচনা লগ্নে ত্রিপুরার রাজদরবারে বাংলা কি রূপ পরিগ্রহ করেছিল তার সাক্ষ্য বহন করছে রাধাকিশোরের এই চিঠিটি।

পিতা বীরেন্দ্র কিশোরের মৃত্যুর পর ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে রাজ্যভার গ্রহণ করেন বীরবিক্রম। রাজকুমার অবস্থায় বীরবিক্রমের গৃহ শিক্ষক ছিলেন অনুকূল চন্দ্র মুখোপাধ্যায়। পরবর্তী সময়ে তিনি দেওয়ান, নিজ তহবিল সচিব পদে কর্মরত ছিলেন। বীরবিক্রম রাজ্যান্তরে বা বিদেশ সফরে গেলে নিয়মিত আগরতলায় তাঁর কাছে চিঠি লিখতেন। ১৯৩২ সালের ২৯ ডিসেম্বর কলকাতা থেকে রাজা অনুকূলবাবুকে লিখছেন —” আপনার পত্র পাইয়া সমস্ত অবগত হইয়াছি। পুকুর সম্বন্ধে সুপার ভাইসর ও এন্জিনিয়ার প্রভৃতির মত লইয়া কার্য্য করিবেন।দুমদুমীয়ার রাস্তার কাজ বন্ধ করিবেন না।…”
আরও পড়ুন:

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৮২: খটকা

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৯৭: কী করে গল্প লিখতে হয়, ছোটদের শিখিয়েছিলেন অবনীন্দ্রনাথ

১৯৩৩ সালের ২২ ডিসেম্বর রাজা কলকাতা থেকে এক দীর্ঘ চিঠিতে ‘নিজ তহবিল’ সচিব অনুকূলবাবুকে লিখেছেন—”আজকাল একটু ব্যস্ত আছি-একদিকেGovt.House functions অপরদিকে family functions…
…যেখান থেকে হউক টাকার জোগার করিয়া ইট কাটাইয়া ফেলুন কাজে লাগিবে। ট্রলি লাইনও বসাইয়া কাজ আরম্ভ করিয়া দেন।
…চিনির কল সম্বন্ধে কি করিতে বলেন।আপনার যখন ইচ্ছা হইয়াছে একটি কলের order দিতে পারি-কোথায় পাওয়া যাইবে জানিয়া অনুসন্ধান করিয়া দেখিব।
এতদিনে আমার ইপ্সীত conter map পাইয়া কৃতার্থ হইলাম। বড়লাট আসিয়াছে গতকাল Dinnerএ গিয়েছিলাম। লাটসাহেবের জন্য কিছু আনারস এখানে পাঠাইতে পারেন-আমার ঠিকানায়।
আমার পূর্বের পত্রে জানাইয়াছি Bank হইতে নিজের প্রয়োজনে মং ২০০০ হাজার টাকা চেক কাটিয়াছি।আরও চেক কাটার দরকার হইতে পারে-কাজেই কিছু টাকা Bank-য়ে পাঠাইবার দরকার হইবে বলিয়া মনে হয়।…”

মহারাজা বীরবিক্রমের চিঠিতে অবশ্য মাঝে মাঝে ইংরেজি শব্দের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। পূর্ববর্তী রাজাদের চিঠিতে তেমনটা পাওয়া যায়নি। রাজন্য যুগের শেষ পর্যায়ে রাজকার্যে যেমন ইংরেজির বেগবান প্রবাহ ঠেকানো যায়নি, তেমনই হয়তো ব্যতিক্রম নয় বীরবিক্রমের চিঠিও। তাই বাংলায় চিঠির মধ্যে বারংবার ইংরেজি শব্দের অনুপ্রবেশ ঘটেছে।তবে বাংলাতে বীরবিক্রম যে সাবলীল ছিলেন তা তাঁর চিঠি থেকে বুঝতে অসুবিধা হয় না। ইংরেজি ভাবধারায় ইংরেজ প্রশাসকের অধীনে শিক্ষা নিলেও বীরবিক্রম ব্যক্তিগত পর্যায়ে বাংলা ভাষাতেই চিঠিপত্র লিখতেন।

সুপ্রাচীন কাল থেকেই ত্রিপুরার রাজাগণ রাজকার্যে বাংলা ব্যবহার করে আসছিলেন। ত্রিপুরার রাজসভার পৃষ্ঠপোষকতায় নানা সময়ে রচিত হয়েছে বাংলা কাব্য। রাজা এবং রাজপরিবারের সদস্যগণ নিজেরাও বাংলাতে কাব্য রচনা করেছেন,সাহিত্য চর্চা করেছেন।এমনকি,ইংরেজ আধিপত্যের যুগেও ব্যক্তিগত পর্যায়ে রাজাদের চিঠিপত্রের ভাষা ছিল বাংলা।সব মিলিয়ে সুদূর ঐতিহাসিক কাল থেকে আধুনিক যুগেও ত্রিপুরার রাজাদের বাংলার পৃষ্ঠপোষকতা অব্যাহত ছিল।—চলবে।
* ত্রিপুরা তথা উত্তর পূর্বাঞ্চলের বাংলা ভাষার পাঠকদের কাছে পান্নালাল রায় এক সুপরিচিত নাম। ১৯৫৪ সালে ত্রিপুরার কৈলাসহরে জন্ম। প্রায় চার দশক যাবত তিনি নিয়মিত লেখালেখি করছেন। আগরতলা ও কলকাতার বিভিন্ন প্রকাশনা থেকে ইতিমধ্যে তার ৪০টিরও বেশি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ত্রিপুরা-সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের ইতিহাস ভিত্তিক তার বিভিন্ন গ্রন্থ মননশীল পাঠকদের সপ্রশংস দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। দেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়ও সে-সব উচ্চ প্রশংসিত হয়েছে। রাজন্য ত্রিপুরার ইতিহাস, রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে ত্রিপুরার রাজ পরিবারের সম্পর্ক, লোকসংস্কৃতি বিষয়ক রচনা, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা সঞ্জাত ব্যতিক্রমী রচনা আবার কখনও স্থানীয় রাজনৈতিক ইতিহাস ইত্যাদি তাঁর গ্রন্থ সমূহের বিষয়বস্তু। সহজ সরল গদ্যে জটিল বিষয়ের উপস্থাপনই তাঁর কলমের বৈশিষ্ট্য।

Skip to content