রবিবার ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪


কলকাতার ‘হারকাটা গলি’র শ্যামলাল গঙ্গোপাধ্যায়ের কন্যা কাদম্বরী বধূ হয়ে এসেছিলেন ঠাকুরবাড়িতে। জ্যোতিরিন্দ্রনাথের সঙ্গে বিবাহ হয় তাঁর। প্রায়শই তেমন উচ্চবিত্ত পরিবার থেকে ঠাকুরবাড়িতে বধূমাতারা আসেননি।‌ এসেছেন নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে। পিরালি-কন্যা খুঁজতে গিয়ে বিত্তশালী-সম্ভ্রান্ত পরিবারের কন্যাকে বধূ করে আনা সম্ভব হয়নি। কাদম্বরীর ঠাকুরদা জগন্মোহন ঠাকুরবাড়ির ‘দ্বারপাল’ ছিলেন। হঠাৎ করে মহর্ষিদেব শ্যামলাল-কন্যাকে বধূ করে আনেননি, পরিবারটির সঙ্গে ছিল সুদীর্ঘকালের যোগাযোগ, আত্মীয়তার বন্ধন। দ্বারকানাথের মামাতো বোন শিরোমণি দেবীর সঙ্গে জগন্মোহনের বিবাহ হয়েছিল।

কাদম্বরীর পিতা শ্যামলাল ছিলেন জগন্মোহনের চতুর্থ পুত্র। শ্যামলালও ছিলেন ঠাকুরবাড়ির অনুগ্রহধন্য। ঠাকুরবাড়ি থেকেই হতো তাঁর রুজিরোজগার। ছিল রকমারি দায়িত্ব। এটা-সেটা করে, সকলের ফাই-ফরমাশ খেটে কোনওরকমে তাঁর দিন গুজরান হত। বাগানে পাঁচিল দেওয়া হবে, গাছগাছালির মাঝ-বরাবর পদচারণের পথ তৈরি হবে, কে দেখভাল করবেন, কেন শ্যামলাল! মহর্ষিপত্নী সারদাসুন্দরী তখন অসুস্থ, মরণাপন্ন। দীর্ঘ অসুস্থতায় শয্যাশায়ী সারদাসুন্দরীর বেডসোর হয়ে গিয়েছিল। তাঁর জন্য বাতাস-বিছানা প্রয়োজন। কে নিয়ে আসবেন? দায়িত্ব অর্পিত হল শ্যামলালের উপর। অতীব দায়িত্ব পরায়ণ, বিচক্ষণ তিনি। মুশকিল আসানে তাঁর জুড়ি ছিল না। ঠাকুরবাড়ির এই অধঃস্তন কর্মীটি মাসোহারা পেতেন কুড়ি টাকা।

Skip to content