শনিবার ২৩ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী।

দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে আজ বুধবার থেকেই ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্ত বুধবার শক্তি বৃদ্ধি করে নিম্নচাপে পরিণত হতে চলেছে। এমনটাই জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। তার পর সেটি ধীরে ধীরে উত্তর-পূর্ব দিকে সরবে। পরে আরও শক্তি বৃদ্ধি করে আগামী শুক্রবার সকাল নাগাদ গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। সেক্ষেত্রে আগামী শনিবার থেকে বৃষ্টি আরও বাড়তে পারে। বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়াও বইতে পারে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর তাদের পূর্বাভাসে এমনটাই জানিয়েছে।
বুধবার দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। বৃষ্টির পাশাপাশি ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে জেলাগুলিতে। ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার। বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমবে। তবে আগামী শনিবার থেকে সব ক’টি জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। শুধু তাই নয়, মৌসম ভবন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার জন্য উপকূলের জেলাগুলিতে সতর্কতা জারি করেছে। সমুদ্র উত্তাল থাকতে পারে। তাই আগামী ২৩ তারিখের মধ্যে মৎস্যজীবীদের সমুদ্র থেকে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মৎস্যজীবীদের শুক্রবার থেকে সমুদ্রে যেতে নিষেধও করা হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় ৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার বৃষ্টি হতে পারে। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ থাকতে পারে ৩০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
আরও পড়ুন:

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৮৯: বাইনাচ-গানেরও কদর ছিল ঠাকুরবাড়িতে

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৬৩: বাবু ডাক্তার ও ‘ডাক্তারবাবু’

আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, পূর্ব বাংলাদেশের উপর থাকা একটি ঘূর্ণাবর্ত এবং উত্তরপ্রদেশ, বিহার হয়ে গাঙ্গেয় বঙ্গের উপর দিয়ে বাংলাদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত থাকা অক্ষরেখার জেরে ঝড়বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, হাওয়া দফতর আগেই জানিয়েছিল, বঙ্গোসাগরে তৈরি হচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ের অনুকূল পরিস্থিতি! এই মুহূর্তে সাগরের উপরে একটি ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করছে। যদি এই ক্রমশ ঘূর্ণাবর্ত শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয় এবং সেই নিম্নচাপ আরও শক্তি বৃদ্ধি করে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেয়, তা হলে তার নাম হবে ‘রেমাল’। ভবিষ্যতের এই ঘূর্ণিঝড়ের নামটি দিয়েছে ওমান। আরবি ভাষায় ‘রেমাল’ এর অর্থ বালি।

আন্তর্জাতিক আবহাওয়া দফতর (ওয়ার্ল্ড মেটিয়োরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট) আরব সাগর এবং বঙ্গোপসাগর, অর্থাৎ উত্তর ভারত মহাসাগরে তৈরি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের জন্য একটি তালিকা তৈরি করে। মৌসম ভবনের পক্ষ থেকে ২০২০ সালে ১৬৯টি ঘূর্ণিঝড়ের তালিকা দেওয়া হয়েছিল। এই মুহূর্তে বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণাবর্ত যদি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়, তা হলে সেই তালিকা অনুযায়ী এর নাম দেওয়া হবে‘রেমাল’। যদিও হাওয়া দফতর সরকারিভাবে ‘রেমাল’ নামটিকে ঘোষণা করেনি। যদি ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি তৈরি হলে, তবেই আবহাওয়া দফতর এই ‘রেমাল’ নামটি ঘোষণা করবে।
আরও পড়ুন:

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৬৩: মহাভারতে উল্লিখিত মিথ্যাশ্রয়ের প্রাসঙ্গিকতা কী আজও আছে?

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৪৬: শ্রীমায়ের দুই ভ্রাতৃবধূর কথা

বুধবার উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। সপ্তাহ জুড়ে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি বৃষ্টি হতে পারে। হালকা থেকে মাঝারি পরিমাণ ব্রিস্তিব হবে। বুধবার আকাশ আংশিক মেঘলা থাকবে। কলকাতায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়াও বইতে পারে। বুধবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পারদ ছিল ২৮.৭ ডিগ্রি, অর্থাৎ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। বুধবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে থাকতে পারে। মঙ্গলবার শহরের সর্বোচ্চ পারদ ছিল ৩৪.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, অর্থাৎ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ১.৩ ডিগ্রি কম।
আরও পড়ুন:

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৪৯: ম্যানগ্রোভ ও লৌকিক চিকিৎসা—ওড়া, কেওড়া, চাক কেওড়া ও কৃপাল

দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-২৩: তরু দত্ত— এক আনন্দ বিষাদের তরুলতা

ঘূর্ণিঝড় রেমাল তৈরি হলে তা বাংলার দিকেই ধেয়ে আসবে কি না, আবহাওয়া দফতর এ নিয়ে কিছুই জানাননি। এদিকে আগামী ২৫ মে ষষ্ঠ দফার ভোট। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস নিয়ে চিন্তিত নির্বাচন কমিশন। বিপর্যয় মোকাবিলায় কী কী পদক্ষেপ করা উচিত, তা নিয়ে বুধবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) আরিজ আফতাব বৈঠকে বসছেন। বুধবারই বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সচিবের সঙ্গে বৈঠক করবেন আরিজ আফতাব।

Skip to content