![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/05/fish-104.jpg)
ছবি: প্রতীকী।
মাছের নানা রোগবালাই হতে পারে। এই সব রোগ সারানোও দরকার। কারণ রোগমুক্তি না করতে পারলে মাছের ফলন কম হবে। এর ফলশ্রুতি হল রোজগারে টান। মাছের রোগ নানা কারণেই হতে পারে। যেমন পুকুরের জল দূষিত হলে, জলে রোগজীবাণুর মাত্রা বেড়ে গেলে, ক্রমাগত মাছের পুষ্টির অভাবে মাছ রোগাক্রান্ত হতে পারে।
রোগজীবাণু বলতে ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, ভাইরাস পরজীবি প্রভৃতি। এদের খালিচোখে দেখা যায় না। জলে মিশে থাকে। মাছের রোগাক্রান্ত হয়েছে কিনা এটি বোঝার উপায় হল তাদের কয়েকটি অস্বাভাবিক আচরণ। মাছের চলাচলে, গতি অস্বাভাবিকভাবে কম যাওয়া, খাদ্যগ্রহণে অনীহা, জলের উপরিভাগে ভাসমান অবস্থায় থাকা, মাথা ওপরে রেখে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকা। এ ছাড়াও পুকুরপাড়ে এসে দেহ ঘষার চেষ্টাও এই সব রোগের উপসর্গের মধ্যে পড়ে।
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/01/Samay-Updates_Fish-1-2.jpg)
বাঙালির মৎস্যপুরাণ, পর্ব-১০৩: বেশি উৎপাদনের জন্য মাছের খাবার তৈরি করতে হবে বৈজ্ঞানিক উপায়ে
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/05/mahakavya-62AB.jpg)
মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৬২: ক্রৌঞ্চবধের বিষাদ কী ছেয়ে আছে রামায়ণের প্রেক্ষাপট?
এগুলির থেকে মাছকে মুক্ত রাখার উপায় হল, আগাম কিছ ব্যবস্থা নেওয়া। যেমন পুকুরের জলের পিএইচ নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখা এবং তা কমে গেলে সঠিক পরিমাণে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে চুন প্রয়োগ। পুকুরের তলদেশের মাটিতে গ্যাস জমতে না দেওয়া। সেই কারণে মাসে একবার রেকিং করে নেওয়া। বিশ্বস্ত হ্যাচারি থেকেই চারাপোনা কেনা দরকার। পুকুরে জাল ফেলার আগে তা পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দ্রবনে শোধন করে নিতে হবে।
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/04/Uttam-Kumar-1.jpg)
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৬৩: বাবু ডাক্তার ও ‘ডাক্তারবাবু’
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/05/Sarala-Devi-Chaudhurani.jpg)
দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-২২: সরলাদেবী, এক পণ্ডিত মানুষ
এ ছাড়াও প্রয়োজনের অতিরিক্ত সার প্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে হবে। এমনকি খাবারের গুণমান বজায় রেখে সঠিক পদ্ধতিতে পুকুরে প্রয়োগ ইত্যাদি কিছু ব্যবস্থা আগাম নিতে পারলে রোগ সংক্রমণের সম্ভাবনাকে কমিয়ে আনা যেতে পারে। এই রোগনিবারণ মাছচাষে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, রোগজীবাণুর সংক্রমণ একবার জাঁকিয়ে বসলে মাছকে ধরে ধরে ওষুধপ্রয়োগ এক দুরূহ কাজ। জলাশয়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখা তাই বিশেষ জরুরি।
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/05/sarada-maa.jpg)
আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৪৫: কথার কথা মা নয়—সত্য জননী
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/05/Rabindranah-Tagore-with-Lady-Ranu-Mookerjee.jpg)
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৮৭: কবির জন্মদিনে প্রিয়জনের উপহার
পরজীবির আক্রমণ, বিশেষ করে উকুন, জোঁক, কৃমি প্রভৃতির উৎপাত প্রায়শই হয়ে থাকে যদি জলে অক্সিজেনের ঘাটতি থাকে। এর ফলে দ্রবীভূত অ্যামোনিয়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। যার ফলে রোগবালাইয়ের সমস্যা বাড়তে পারে। যথাসম্ভব দেশীয় প্রথাগত পদ্ধতিতে যেমন কাঁচা হলুদ, কচি নিমপাতা, তুলসীপাতা ইত্যাদির নিয়মিত ব্যবহারে প্রতিকারের উপায় সম্ভব। অনিয়ন্ত্রিতভাবে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োগ এবং কড়া রাসায়নিকের ব্যবহার যারা করে থাকেন তারা প্রকৃতপক্ষে সদূরপ্রসারী বিপদ ডেকে আনেন। জৈবিক পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করা এবং জল ও মাটির গুণমান নষ্ট হতে না দিলে রোগজনিত কারণে মাছচাষে ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই এড়ানো সম্ভব।—চলবে।
* বাঙালির মৎস্যপুরাণ (Bangalir Matsya Purana – Fish) : ড. প্রতাপ মুখোপাধ্যায় (Pratap Mukhopadhyay) অবসরপ্রাপ্ত প্রধান মৎস্যবিজ্ঞানী, ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদ, ভারত সরকার।