রিসর্টের দামি কামরা: ছবি: প্রতীকী।
উইকএন্ড এসকর্ট
সে আজ প্রায় ৮-১০ বছর আগেকার কথা। কলকাতার একজন নামী ব্যবসায়ী দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুদূর দক্ষিণে প্রায় গঙ্গা নদী ছুঁয়ে থাকা একটি রিসর্টে সঙ্গিনী সহ আচমকা পুলিশ রেডের সময় আরও কিছু বারবনিতা ও তাদের পুরুষ খরিদ্দারের সঙ্গে ধরা পড়েন। থানায় নিয়ে যাবার পর যথারীতি নিয়মমাফিক আইনের প্যাঁচে কেস লিখতে শুরু করেন থানার সেকেন্ড অফিসার।এই নিয়ে পিটা-সিটা অনেক আইন। প্রিভেনশন অফ ইম্মরাল ট্রাফিক অ্যাক্ট ( ১৯৫৬) বা পিটা, সাপ্রেশন অফ ইম্মরাল ট্রাফিক ইন ওম্যান অ্যান্ড গার্ল অ্যাক্ট (১৯৫৬) বা সিটা, মস্করা করে অনেকে আবার পিতা-সীতাও বলেন। যাইহোক থানার সেকেন্ড অফিসের বুদ্ধিমান তাই এই ব্যবসায়ীর চেহারা হাবভাব এবং সঙ্গের মেয়েটিকে দেখার পর একটু সময় নিচ্ছিলেন।
ওরা দুজন নিজেদের মধ্যে ইংরিজি বলছিলেন, যা এখনও তৃতীয় বিশ্বে আমজনতার সম্ভ্রম আদায় করে। এরমধ্যে হাতে দামি ঘড়ি ও একটা সোনার ব্যান্ড পরা লোকটি তার আই ফোন থেকে তিনবার ফোন করেছেন। এবার তার উত্তর এল। জেলার বেশ ওপরতলা থেকে। লোকটি এবং মেয়েটিকে ওসির ঘরে বসানো হল। গুড-ডে বিস্কুট সহযোগে আদাকুঁচি ছোট এলাচ দিয়ে বড়বাবুর ঘরের দামিকাপে মশলা চা এলো। তারপর থানার পিছনের দরজা দিয়ে তাদের বের করা হল। তখনও থানার সামনের ঘরটায় ধরে আনা সাধারণ গণিকা ও খরিদ্দারেরা কাকুতিমিনতি করছে। পুলিশের জিপ এই দু’জন বিশিষ্টকে সেই রিসর্টে পোঁছে দিল। সেখানেই তাঁদের বিলাসবহুল দামি গাড়িটা পার্ক করা ছিল।
খুব স্বাভাবিকভাবে ড্রাইভার ছিল না লোকটি নিজেই ড্রাইভ করছিলেন। কলকাতা পর্যন্ত অনেকটা রাস্তা শুধু থানার ওই মেজ বাবুর ফোন নম্বরের ভরসা করে রাস্তায় বের হননি এই ব্যবসায়ী। যাঁর ভরসায় বেরিয়েছেন প্রথম দুবারের চেষ্টা পর তৃতীয় বার তিনি তাঁকে ফোনে যোগাযোগ করতে পেরেছিলেন। তিনি পুলিশের কোন বড় কর্তা নন।কোনও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা বা মন্ত্রী নন। আন্ডারওয়ার্ল্ডের কোনও ডন নন। খুব উচ্চপদস্থ সরকারি অফিসারও নন তিনি। তিনি দেশের প্রথম সারির একজন ক্রিমিনাল ল’ ইয়ার। অত্যন্ত ক্ষমতাশালী একজন মানুষ। তাঁর নাম নিখিল সেন।
রহস্য উপন্যাস: হ্যালো বাবু!, পর্ব-১০: সুষমা খুনে বিউটিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ আদালতের
রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৪৬: প্রচ্ছন্ন হুমকি
সেকালের কলকাতায় জুড়ি গাড়ি চড়ে কানে আতর মেখে একহাতে ধুতির কোঁচার ফুল আর অন্য হাতে বেল ফুলের মালা জড়িয়ে বাবু সুখের খোঁজে ঘর ছেড়ে বারমুখো হতেন। এখনও হন অফিস ট্যুর কনফারেন্সের অছিলায় একজন অপরজনকে ধোঁকা দিয়ে নতুন সঙ্গীর ঘনিষ্ঠতা খুঁজে ফেরেন। তবে সমাজ আধুনিক হয়েছে তাই শতকরা হিসেবে একটু বেশি থাকলেও নারীরাও এখন পুরুষদের সঙ্গে এই অজানার খোঁজে সমান পারদর্শী। আজকাল আবার একটা নতুন টার্মিনোলজি খুব চালু। ওপেন ম্যারেজ। বিবাহিত সম্পর্ক কিন্তু সেটা মুক্ত।
আলোকের ঝর্ণাধারায়, আলোকের ঝর্ণাধারায়
মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৪৪: রামচন্দ্রকে ঘিরে যুগান্তরেও কেন উন্মাদনা? একজন কথকঠাকুরানির সাধারণ সমীক্ষা
পুরো ব্যবসাটাই গোপনে মোবাইলে চলে। কোন নথি নেই, প্রমাণ নেই। এসকর্ট এবং ক্লায়েন্টদের যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া আর চূড়ান্ত গোপনীয়তা রক্ষা করা এসকর্ট এজেন্সির দায়িত্ব দুটো। এই কাজের আবার দুটো ভাগ আছে। আউট কল আর ইনকল। এসকর্ট বা ক্লায়েন্ট – যে কেউ নিজের ফ্ল্যাটে সময় কাটালে সেটা ইন কল হোটেল রিসর্ট বা আউট স্টেশন হলে আউট কল। অনেক সময় অনেক এসকর্ট নিরাপত্তার কারণে এজেন্সিকে ইন আউট টাইম রিপোর্ট করে। জমি বাড়ি ফ্ল্যাট বিক্রির মতো দু’ পক্ষকেই একটা নির্দিষ্ট এজেন্সি কমিশন দিতে হয়। বাকি পারিশ্রমিক নিয়ে এজেন্সি কোন মাথা ঘামায় না। ঠিক তেমনি কোন কারণে হুজ্জুতি হলে পুলিশ কেস হয়ে গেলে এজেন্সি কোনওভাবেই জড়াতে চায় না। যার যার হ্যাপা তাকে সামলাতে হবে।
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৫৮: কোন অজানায় ‘পথে হল দেরী’
সেদিন ‘খণ্ডরে’র পুনঃপ্রদর্শন আনন্দ দিয়েছিল বিশ্বের তাবড় সিনেমাপ্রেমী থেকে বরেণ্য সেই পরিচালককে
এই ঝাঁ চকচকে বিলাসবহুল জীবনযাপনে অভ্যস্ত নিখিল সেনকে কলকাতার অনতি দূরে একটি রিসর্টে ভাড়া করা দামিঘরে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেল। ভোরবেলা এই খবর পেয়ে সারা শহর চমকে উঠলো। ধৃতিমান চৌধুরীর মোবাইল সোনার কেল্লার ক্যামেল রাইডের সুরে বেজে উঠলো। ফোন করেছেন গোয়েন্দা বিভাগের কর্তা ভূপতি চক্রবর্তী। —চলবে।