অলঙ্করণ : সৌমি দাসমণ্ডল।
নিজের ঘরে পৌঁছে তৃধা থম মেরে বসেছিল। তার মন বলছে, এবারের এই ট্রিপে তার অন্তর আসা উচিত হয়নি। তার বর এই মুহূর্তে যদি সব কিছু জেনে যায়, তাহলে বড় গণ্ডগোল হয়ে যাবে। কিন্তু এখন তো আর কিছু করারও উপায় নেই। সে যে এই ট্রিপে অরণ্যের সঙ্গে আসছে তার বর জানে না। সে বলেছিল, তাদের মহিলা গ্যাং মিলে কোথাও একটা মিনিট্যুরে যাচ্ছে। কিন্তু এখন যদি সে জানে…! তৃধার মাথা দপদপ করছিল। তার মাইগ্রেন আছে, এক্ষুনি শুরু হয়ে গেলে বিপদ!
কাপাডিয়া সক্কাল সক্কাল সকলকে তুলে খারাপ খবরটা দিয়ে বলেছিলেন, সবাইকে পুলিশ নিচে জমায়েত হতে বলেছে। ইন্টারোগেশন শুরু হবে। সকলে যেন আধ ঘণ্টার মধ্যে নীচে চলে আসেন। এই খবরটা অন্য লোক মারফৎ দিতে পারতেন তিনি, কিন্তু তা না দিয়ে নিজেই ঘরে ঘরে গিয়ে বলে এসেছেন। তৃধা তখন ওয়াশরুমে ছিল। অরণ্যই দরজা খুলেছিল এবং খারাপ খবরটা শুনে সে এত উত্তেজিত হয়ে পড়েছিল যে ওয়াশরুমের দরজায় ধাক্কা দিতে দিতে তৃধাকে বারবার বেরিয়ে আসার জন্য চাপ দিচ্ছিল।
তৃধা প্রথমে ওয়াশরুমের দরজা খোলেনি। অরণ্যের পাতি কোনও টিপস হতে পারে। এর আগেও অজস্রবার সে মিথ্যে বলে দুষ্টুমি-হরকতে করেছে। মাঝেমাঝে সবার সামনে সে এমন করে যে তৃধা এম্বারেশড ফিল করে। আজকেও তেমন কিছুই ভেবেছিল। কিন্তু অরন্য যখন ভয়ার্ত গলায় বলছিল, “তৃধা, প্লিজ ওপেন দ্য ডোর। কাম আউট কুইকলি! অনিল ইজ নো মোর!”
“হোয়াট? হোয়াট রাবিশ আর ইউ সে?” তৃধা কোনওরকমে টাওয়েল জড়িয়ে ভেজা গায়েই বেরিয়ে এসেছিল। অরণ্য তখন থরথর করে কাঁপছিল। দরজার কাছে কাপাডিয়া স্থাণুবৎ দাঁড়িয়ে। তাকে এই অবস্থায় দেখে অবশ্য তিনি বললেন, “আপনারা জলদি রেডি হোকে নীচে আ যাইয়ে। ম্যায় চলা!” বলে দ্রুত সে-স্থান ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন।
কাপাডিয়া সক্কাল সক্কাল সকলকে তুলে খারাপ খবরটা দিয়ে বলেছিলেন, সবাইকে পুলিশ নিচে জমায়েত হতে বলেছে। ইন্টারোগেশন শুরু হবে। সকলে যেন আধ ঘণ্টার মধ্যে নীচে চলে আসেন। এই খবরটা অন্য লোক মারফৎ দিতে পারতেন তিনি, কিন্তু তা না দিয়ে নিজেই ঘরে ঘরে গিয়ে বলে এসেছেন। তৃধা তখন ওয়াশরুমে ছিল। অরণ্যই দরজা খুলেছিল এবং খারাপ খবরটা শুনে সে এত উত্তেজিত হয়ে পড়েছিল যে ওয়াশরুমের দরজায় ধাক্কা দিতে দিতে তৃধাকে বারবার বেরিয়ে আসার জন্য চাপ দিচ্ছিল।
তৃধা প্রথমে ওয়াশরুমের দরজা খোলেনি। অরণ্যের পাতি কোনও টিপস হতে পারে। এর আগেও অজস্রবার সে মিথ্যে বলে দুষ্টুমি-হরকতে করেছে। মাঝেমাঝে সবার সামনে সে এমন করে যে তৃধা এম্বারেশড ফিল করে। আজকেও তেমন কিছুই ভেবেছিল। কিন্তু অরন্য যখন ভয়ার্ত গলায় বলছিল, “তৃধা, প্লিজ ওপেন দ্য ডোর। কাম আউট কুইকলি! অনিল ইজ নো মোর!”
“হোয়াট? হোয়াট রাবিশ আর ইউ সে?” তৃধা কোনওরকমে টাওয়েল জড়িয়ে ভেজা গায়েই বেরিয়ে এসেছিল। অরণ্য তখন থরথর করে কাঁপছিল। দরজার কাছে কাপাডিয়া স্থাণুবৎ দাঁড়িয়ে। তাকে এই অবস্থায় দেখে অবশ্য তিনি বললেন, “আপনারা জলদি রেডি হোকে নীচে আ যাইয়ে। ম্যায় চলা!” বলে দ্রুত সে-স্থান ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন।
অরণ্যের অবস্থা দেখে তৃধা নিজেই এগিয়ে গিয়ে রুমের দরজা বন্ধ করেছিল। তারপর অরণ্যের কাছে এসে তার থরথর করে কাঁপতে থাকা দেহকে নিজের আলিঙ্গনে টেনে কিছুক্ষণ জড়িয়ে থাকার পরে জিজ্ঞাসা করেছিল, “কী বলছিলে? কী হয়েছে অনিলের?”
অরণ্য কোনও রকমে খাবি খেতে খেতে বলল, “অনিলকে না কি নিচের বাগানে মাথা থেঁতলানো অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। কালাদেওর কীর্তি বলে সন্দেহ স্থানীয়দের। পুলিশেরও। কাপাডিয়া তো তেমনটাই বললেন। সেই সঙ্গে এই রিসর্টের আর একজন কর্মচারী কী যেন নাম বললেন ভুলে গিয়েছি, তা সে-ও না কি মারা গিয়েছে!”
তৃধা বলল, “কী বলছ তুমি? অনিল…আমাদের অনিল আর নেই? সে-ই তো আমাদের এখানে আসার ব্যাপারে সব উদ্যোগ, সব ঝামেলা কাঁধে পেতে নিয়েছিল। এখন সে আর নেই? কী ভাবে আমি মুখ দেখাবো কলকাতায় ফিরে?”
“কেবল তুমি? আমরা সকলেই কী ভাবে মুখ দেখাবো। প্রথমে আর্য, এখন অনিল—এ তো কালাদেও দেখছি আমাদের উপর উঠেপড়ে লেগেছে!”
তৃধা ধপ্ করে বসে পড়েছিল বিছানায়। খেয়াল ছিল না যে তার গা দিয়ে ঝল ঝরছে, সব জল টাওয়েলের আলিঙ্গনে ধরা দেয় না। অরণ্যেরও খেয়াল নেই সেদিকে, থাকলে বলত। এই ব্যাপারে সে আবার খুব পিটপিটে। কিন্তু এখন ও দিকে খেয়াল রাখার মতো অবস্থা নয়। অনিলের মৃত্যুর খবর শুনে সে বিহ্বল।
তৃধা বলল, হয়তো স্বগতোক্তিই করেছিল, কিন্তু শোনালো প্রশ্নের মতো, “আচ্ছা, কাল রাতে পার্টিতে অনিল ছিল তো? প্রথম থেকেই ছিল তাই না?”
অরণ্য কোনও রকমে খাবি খেতে খেতে বলল, “অনিলকে না কি নিচের বাগানে মাথা থেঁতলানো অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। কালাদেওর কীর্তি বলে সন্দেহ স্থানীয়দের। পুলিশেরও। কাপাডিয়া তো তেমনটাই বললেন। সেই সঙ্গে এই রিসর্টের আর একজন কর্মচারী কী যেন নাম বললেন ভুলে গিয়েছি, তা সে-ও না কি মারা গিয়েছে!”
তৃধা বলল, “কী বলছ তুমি? অনিল…আমাদের অনিল আর নেই? সে-ই তো আমাদের এখানে আসার ব্যাপারে সব উদ্যোগ, সব ঝামেলা কাঁধে পেতে নিয়েছিল। এখন সে আর নেই? কী ভাবে আমি মুখ দেখাবো কলকাতায় ফিরে?”
“কেবল তুমি? আমরা সকলেই কী ভাবে মুখ দেখাবো। প্রথমে আর্য, এখন অনিল—এ তো কালাদেও দেখছি আমাদের উপর উঠেপড়ে লেগেছে!”
তৃধা ধপ্ করে বসে পড়েছিল বিছানায়। খেয়াল ছিল না যে তার গা দিয়ে ঝল ঝরছে, সব জল টাওয়েলের আলিঙ্গনে ধরা দেয় না। অরণ্যেরও খেয়াল নেই সেদিকে, থাকলে বলত। এই ব্যাপারে সে আবার খুব পিটপিটে। কিন্তু এখন ও দিকে খেয়াল রাখার মতো অবস্থা নয়। অনিলের মৃত্যুর খবর শুনে সে বিহ্বল।
তৃধা বলল, হয়তো স্বগতোক্তিই করেছিল, কিন্তু শোনালো প্রশ্নের মতো, “আচ্ছা, কাল রাতে পার্টিতে অনিল ছিল তো? প্রথম থেকেই ছিল তাই না?”
আরও পড়ুন:
রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৪২: আন্তোনিয়োর মুখোমুখি
অসমের আলো-অন্ধকার, পর্ব-১: প্রকৃতি অসমকে সাজাতে কোনও কার্পণ্যই করেনি
অরণ্য ভাবল তাকেই প্রশ্নটা করা হচ্ছে, সে বলল, “হ্যাঁ, আমাদের আগে থেকেই ছিল। সেই হোস্ট সে থাকবে না শুরু থেকে এটা হয়? ওরই তো গার্ডেন পার্টিতে সবচেয়ে ইন্টারেস্ট ছিল!”
“হ্যাঁ”, আনমনেই বলল তৃধা, “তখন আমরা ওকে খেয়াল করেছিলাম কি?”
“মনে হয় না। আমি অন্তত করিনি। একবার, কেবল একবার আমার কাছে এসে ও কাবাব আর নিচ্ছি না কেন, সে কথা জিগ্যেস করছিল। আমি জবাব দেওয়ার আগেই একটা ফোন এল আর ও ফোনে কথা বলতে বলতে দ্রুত চলে গেল। তারপর আর জানি না!”
“অফিসিয়াল কল?”
“আই ডোন্ট নো! আমার জানার কথাও নয়, কেন না তার পরে অনিলের সঙ্গে আমার দেখাও হয় নি, সে কিছু বলেওনি!”
“অনিল যখন তোমার কাছে আসে, তখন সে ড্রাঙ্ক ছিল কি?”
“অনিলের স্বভাব তুমি জানো। অনেক না পেটে গেলে তাকে টলানো যায় না। তার উপর কালকের সেই বিচ্ছিরি ঘটনা। সেই পুলিশের আসা। ও খুব ডিসটার্বড্ ছিল দেখে মনে হচ্ছিল। যেভাবে পার্টি সকলে এনজয় করবে ভেবেছিল, আর্যর আনন্যাচারাল ডেথ হতে পারে—এই খবরে সকলের সঙ্গে সে-ও আপসেট হয়ে পড়েছিল। একবার যেন শুনলাম নিজের মনে বলছে, ‘এরকম তো হওয়ার কথা ছিল না!’ তারপর মাথা নাড়তে নাড়তে সরে গিয়েছিল।”
“খুব নরমাল ব্যাপার! এরকম তো হওয়ার কথা ছিল না ট্রিপটায়। কিন্তু হয়ে গেল কোথা দিয়ে যেন। উই কান্ট রেসিস্ট অ্যাট অল!”
অরণ্য একটু বিহ্বল। কাল শেষ রাতের কথা মনে পড়ল তার। উদোম শরীরে বারান্দায় বেরিয়ে এসেছিল সে। পিছন দিকে টিমিটিম করে সীমানা-প্রাচীরের আলো জ্বলছিল। এমন সময় ধপ্ করে ভারি কিছু পড়ার আওয়াজ পেয়েছিল সে। তাহলে কী সেটা ছিল অনিলের বডি? মনে পড়ল তার নীচের ফ্লোরের সেই ডকুফিচার বানানো ভদ্রলোককে যেন মুহূর্তকালের জন্য দেখতে পেয়েছিল সে। আচ্ছা সত্যিই কি তিনিই ছিলেন? এই কথাটা পুলিশের গোয়েন্দাকে জানানো বুদ্ধিমানের কাজ হবে? ফালতু ঝুটঝামেলায় জড়িয়ে কী লাভ? বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা, পুলিশ ছুঁলে?…না থাক, সে বলবে না আগ বাড়িয়ে। সত্যিটা কী, তা অন্বেষণের ভার পুলিশের, তার নয়। তবে অনিলের জন্য তার খারাপ লাগছিল।
তৃধা বলল, “আচ্ছা, এখানে আসার কথাটা প্রথম অনিলই বলেছিল তাই না?”
অরণ্য আনমনা ছিল, শুনতে পেল না প্রথমে।
“হ্যাঁ”, আনমনেই বলল তৃধা, “তখন আমরা ওকে খেয়াল করেছিলাম কি?”
“মনে হয় না। আমি অন্তত করিনি। একবার, কেবল একবার আমার কাছে এসে ও কাবাব আর নিচ্ছি না কেন, সে কথা জিগ্যেস করছিল। আমি জবাব দেওয়ার আগেই একটা ফোন এল আর ও ফোনে কথা বলতে বলতে দ্রুত চলে গেল। তারপর আর জানি না!”
“অফিসিয়াল কল?”
“আই ডোন্ট নো! আমার জানার কথাও নয়, কেন না তার পরে অনিলের সঙ্গে আমার দেখাও হয় নি, সে কিছু বলেওনি!”
“অনিল যখন তোমার কাছে আসে, তখন সে ড্রাঙ্ক ছিল কি?”
“অনিলের স্বভাব তুমি জানো। অনেক না পেটে গেলে তাকে টলানো যায় না। তার উপর কালকের সেই বিচ্ছিরি ঘটনা। সেই পুলিশের আসা। ও খুব ডিসটার্বড্ ছিল দেখে মনে হচ্ছিল। যেভাবে পার্টি সকলে এনজয় করবে ভেবেছিল, আর্যর আনন্যাচারাল ডেথ হতে পারে—এই খবরে সকলের সঙ্গে সে-ও আপসেট হয়ে পড়েছিল। একবার যেন শুনলাম নিজের মনে বলছে, ‘এরকম তো হওয়ার কথা ছিল না!’ তারপর মাথা নাড়তে নাড়তে সরে গিয়েছিল।”
“খুব নরমাল ব্যাপার! এরকম তো হওয়ার কথা ছিল না ট্রিপটায়। কিন্তু হয়ে গেল কোথা দিয়ে যেন। উই কান্ট রেসিস্ট অ্যাট অল!”
অরণ্য একটু বিহ্বল। কাল শেষ রাতের কথা মনে পড়ল তার। উদোম শরীরে বারান্দায় বেরিয়ে এসেছিল সে। পিছন দিকে টিমিটিম করে সীমানা-প্রাচীরের আলো জ্বলছিল। এমন সময় ধপ্ করে ভারি কিছু পড়ার আওয়াজ পেয়েছিল সে। তাহলে কী সেটা ছিল অনিলের বডি? মনে পড়ল তার নীচের ফ্লোরের সেই ডকুফিচার বানানো ভদ্রলোককে যেন মুহূর্তকালের জন্য দেখতে পেয়েছিল সে। আচ্ছা সত্যিই কি তিনিই ছিলেন? এই কথাটা পুলিশের গোয়েন্দাকে জানানো বুদ্ধিমানের কাজ হবে? ফালতু ঝুটঝামেলায় জড়িয়ে কী লাভ? বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা, পুলিশ ছুঁলে?…না থাক, সে বলবে না আগ বাড়িয়ে। সত্যিটা কী, তা অন্বেষণের ভার পুলিশের, তার নয়। তবে অনিলের জন্য তার খারাপ লাগছিল।
তৃধা বলল, “আচ্ছা, এখানে আসার কথাটা প্রথম অনিলই বলেছিল তাই না?”
অরণ্য আনমনা ছিল, শুনতে পেল না প্রথমে।
আরও পড়ুন:
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়,পর্ব-৪৯: বেশি ঘুম শরীরের পক্ষে ভালো?
আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-২৩: ঠাকুর সন্নিধানে সারদার কল্যাণব্রতে দীক্ষা
তৃধা অবশ্য তার উত্তরের জন্য অপেক্ষা করল না, কারণ, প্রশ্নটা আসলে সে নিজেকেই করেছিল। সে নিজের মনেই বলল, “না না, ভুল বললাম, সে কেবল বলেছিল, কোথাও একটা শর্ট ট্যুরে গেলে হয়। সকলে তার কথায় সায় দিয়েছিল। তারপরেই যেন উন্মেষা বলল, হ্যাঁ উন্মেষাই তো যে, সোশ্যাল মিডিয়ার একটা গ্রুপে পিশাচ পাহাড় বলে একটা ডেস্টিনেশন স্পটের খবর পেয়েছে সে, সেখানে গেলে কেমন হয়? সে একটা লিংকও খুঁজে পেতে শেয়ার করেছিল। তারপরেই সকলে সেটি দেখে এবং ব্যাপারটা ফাইনাল হয়ে যায়। ইস্, তখন যদি কেউ আপত্তি করত। এখানে না এলে কালাদেওর হাতে এভাবে বেঘোরে অনিলের প্রাণ তো যেত না। বেচারা! সারা জীবন ব্যর্থ প্রেমের স্মৃতি বুকে বয়ে একলা থেকে গেল। একটু আনন্দ ফূর্তিই তো করতে চেয়েছিল, তা-ও বন্ধুদের সঙ্গে, তাকেও এ ভাবে চলে যেতে হল! আচ্ছা অরণ্য, অনিলকে কেন কালাদেও মারতে যাবে? সে কী ক্ষতি করেছে কালাদেওর?”
এ বারের প্রশ্নটা শুনতে পেল অরণ্য। বলল, “আমিও সে কথাই ভাবছি। কী ক্ষতি করেছিল ও কালাদেওর? ওর মতো বন্ধুবৎসল, পরোপকারী, কুল গাই…! একটা প্রেমে ব্যর্থ হয়ে সারাজীবন কোন মেয়েকে চাইলই না আর! আজকের দিনে এমনটা দেখা যায় না সচরাচর!”
তৃধা বাধা দিল তাকে, “একটা ভুল করলে তুমি অরণ্য। অনিল সারাজীবন আর কোন মেয়ের সঙ্গে কী করেছে না করেছে তা তুমিও ঠিক জানি না, আমিও না। মাঝখানে বেশ কিছুদিন আমরা কেউ কারুর তাচে ছিলাম না। তখনকার কথা কে বলতে পারে? যাক্ গে, সে কথা ছাড়। কিন্তু হালে আমার যেন মনে হচ্ছিল, অনিল উন্মেষার প্রতি একটু বেশি কেয়ারিং, ইন্টারেস্টেড হলেও হতে পারে!”
এ বারের প্রশ্নটা শুনতে পেল অরণ্য। বলল, “আমিও সে কথাই ভাবছি। কী ক্ষতি করেছিল ও কালাদেওর? ওর মতো বন্ধুবৎসল, পরোপকারী, কুল গাই…! একটা প্রেমে ব্যর্থ হয়ে সারাজীবন কোন মেয়েকে চাইলই না আর! আজকের দিনে এমনটা দেখা যায় না সচরাচর!”
তৃধা বাধা দিল তাকে, “একটা ভুল করলে তুমি অরণ্য। অনিল সারাজীবন আর কোন মেয়ের সঙ্গে কী করেছে না করেছে তা তুমিও ঠিক জানি না, আমিও না। মাঝখানে বেশ কিছুদিন আমরা কেউ কারুর তাচে ছিলাম না। তখনকার কথা কে বলতে পারে? যাক্ গে, সে কথা ছাড়। কিন্তু হালে আমার যেন মনে হচ্ছিল, অনিল উন্মেষার প্রতি একটু বেশি কেয়ারিং, ইন্টারেস্টেড হলেও হতে পারে!”
আরও পড়ুন:
শক্তিরূপেন সংস্থিতা, পর্ব-১: তিনকন্যা
হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-২৪: মাটি তোদের ডাক দিয়েছে…
অরণ্য বিশ্বাস করল না তৃণার কথায়, বল, “তোমার সব কিছুতেই সন্দেহ তৃধা। অনিল কেয়ারিং তো আমাদের প্রতিও। তা না হলে কাল পার্টিতে সে ওই অবস্থাতেও আমরা খাচ্ছি কি না নজর রাখে? আর উন্মেষার কথা ছাড়। অনিলের চেয়ে অঞ্জন অনেক বড় শাঁসালো কাস্টমার। সে ঠিক জায়গাতেই নোঙর বেঁধেছে। অন্য কাউকে এখন ও পাত্তা দেবে কেন?”
তৃধা বলল, “তাতে কি তোমার আফসোস হচ্ছে?”
“নাহ্। উন্মেষা সুন্দরী, কিন্তু তোমার মতো সেক্স অ্যাপিল তার নেই। আমি তোমার বুকের দিকে তাকিয়েই পাগল হয়ে যাই। তোমার হাজবেন্ড যে কীভাবে মাসের পর মাস ওই বুকের অ্যাট্রাকশন ছেড়ে ওই ভাবে ভাসমান থাকতে পারে, আমার মাথায় আসে না!”
“থাক্, আর আনতে হবে না মাথায়। এ নিয়ে বেশি মাথা ঘামালে তোমার নিজেরই বিপদ। ভাগ্যিস সে এই বুকের প্রতি টান অনুভব করে না, করলে তুমি আর চান্স পেতে না!” হাসল তৃধা।
“হুম!” অরণ্য অন্যমনস্ক, “তৃধা, এখানে এসে আমরা জোর ফেঁসে গেলাম। আমাকে কলকাতায় ফিরতেই হবে, তুমি জানো, ক্লায়েন্টসরা বেশিদিন আমাকে অনুপস্থিত দেখলে অন্য ট্রেনারদের কাছে না-ও করতে পারে। অন্য জিমে চলে গেলে আমারই লোকসান!”
“কিন্তু আমাদের কিছু কি করার আছে এই মুহূর্তে? অনিলের কেস আমাদের গাড্ডায় ফেলে দিলো। উই আর ইন বিগ ট্রাবল! আমার তো মনে হয় না, এত সহজে পুলিশ আমাদের এখান থেকে যেতে দেবে!”
“তৃধা,” ইতস্তত করে বলল অরণ্য, “আমার কেন জানি না মনে হচ্ছে, ওই নীচের ফ্লোরে থাকা ডকুফিচার বানানো ভদ্রলোক সুবিধার নয়। আমি ওই মালটাকে কাল শেষ রাতে নীচের বাগানে দেখেছি!”
“তুমি কী করছিলে ভোর রাতে? ঘুমাওনি?”
“আমার ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। এ জন্য একটু হাওয়া খেতে বেরিয়েছিলাম আর কী! মিথ্যে বলবো না শরীরে সুতো পর্যন্ত ছিল না তখন। তুমি তো জানো আমার ঠান্ডা লাগার ধাত নেই। ওই অবস্থায় না থাকলে আমি তক্ষুনি নীচে গিয়ে চেজ করতে পারতাম!”
তৃধা ভাবছিল। কিছু একটা সে-ও দেখেছিল কাল পার্টিতে, অস্বাভাবিক কিছু, কিন্তু সেটা কী তার মনে পড়ছিল না। ভাবার চেষ্টা করছিল সে, যদি মনে পড়ে।—চলবে।
তৃধা বলল, “তাতে কি তোমার আফসোস হচ্ছে?”
“নাহ্। উন্মেষা সুন্দরী, কিন্তু তোমার মতো সেক্স অ্যাপিল তার নেই। আমি তোমার বুকের দিকে তাকিয়েই পাগল হয়ে যাই। তোমার হাজবেন্ড যে কীভাবে মাসের পর মাস ওই বুকের অ্যাট্রাকশন ছেড়ে ওই ভাবে ভাসমান থাকতে পারে, আমার মাথায় আসে না!”
“থাক্, আর আনতে হবে না মাথায়। এ নিয়ে বেশি মাথা ঘামালে তোমার নিজেরই বিপদ। ভাগ্যিস সে এই বুকের প্রতি টান অনুভব করে না, করলে তুমি আর চান্স পেতে না!” হাসল তৃধা।
“হুম!” অরণ্য অন্যমনস্ক, “তৃধা, এখানে এসে আমরা জোর ফেঁসে গেলাম। আমাকে কলকাতায় ফিরতেই হবে, তুমি জানো, ক্লায়েন্টসরা বেশিদিন আমাকে অনুপস্থিত দেখলে অন্য ট্রেনারদের কাছে না-ও করতে পারে। অন্য জিমে চলে গেলে আমারই লোকসান!”
“কিন্তু আমাদের কিছু কি করার আছে এই মুহূর্তে? অনিলের কেস আমাদের গাড্ডায় ফেলে দিলো। উই আর ইন বিগ ট্রাবল! আমার তো মনে হয় না, এত সহজে পুলিশ আমাদের এখান থেকে যেতে দেবে!”
“তৃধা,” ইতস্তত করে বলল অরণ্য, “আমার কেন জানি না মনে হচ্ছে, ওই নীচের ফ্লোরে থাকা ডকুফিচার বানানো ভদ্রলোক সুবিধার নয়। আমি ওই মালটাকে কাল শেষ রাতে নীচের বাগানে দেখেছি!”
“তুমি কী করছিলে ভোর রাতে? ঘুমাওনি?”
“আমার ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। এ জন্য একটু হাওয়া খেতে বেরিয়েছিলাম আর কী! মিথ্যে বলবো না শরীরে সুতো পর্যন্ত ছিল না তখন। তুমি তো জানো আমার ঠান্ডা লাগার ধাত নেই। ওই অবস্থায় না থাকলে আমি তক্ষুনি নীচে গিয়ে চেজ করতে পারতাম!”
তৃধা ভাবছিল। কিছু একটা সে-ও দেখেছিল কাল পার্টিতে, অস্বাভাবিক কিছু, কিন্তু সেটা কী তার মনে পড়ছিল না। ভাবার চেষ্টা করছিল সে, যদি মনে পড়ে।—চলবে।
* ধারাবাহিক উপন্যাস (novel): পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক (Pishach paharer atanka) : কিশলয় জানা (Kisalaya Jana) বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক, বারাসত গভর্নমেন্ট কলেজ।