স্কেচ: লেখক।
চোখে আঙুল দাদার বেলা বারোটায় ঘুম ভাঙে। তারপর বুড়ি মা’র দেওয়া বেড-টি খেয়ে আরেকটু গড়িয়ে নিয়ে লাঞ্চের আগে আগে শয্যা ত্যাগ করে একটু এদিক ওদিক। তারপর লাঞ্চ করে আবার একটু গড়িয়ে নিয়ে… এই নির্ভরযোগ্য বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানটির নাম “বাপের হোটেল”…।
অনেকেই একে কিঞ্চিৎ ভদ্র করে “বাবার হোটেল” বলেন। আটের-নয়ের দশকের বাংলা ছবির হিরোরা রিল লাইফে বাবার হোটেলে থাকতেন। রাস্তায় পা রাখলেই পার্কস্ট্রিট থেকে পার্কসার্কাস কী সাগর টু শিলিগুড়ি… পুরো পথটাই যেন রান্নাঘর। বাঙালির হোটেল অতোটুকুই। এই হোটেল কত রকমের। ভাতের হোটেল তাদের মধ্যে তরকারিতে নুনের মতো। কেউ ডেকে আদর করে বসিয়ে খাওয়ায় তো, কোথাও জায়গা করে নিতে হয়। কোথাও নেতাজি অথবা স্বামীজি খেতেন অথবা গান্ধীজি তার পাশ দিয়েই ডান্ডি গিয়েছিলেন কিংবা রবীন্দ্রনাথ সেখানে কখনও খেতে আসেননি। এ ভাবেই তারা বিখ্যাত হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন:
হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-২: রথ দেখো কলা বেচো
এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-২: চলমান সুন্দরবন
কোথাও ধার চাইলে ভারি লজ্জা পায় তো, কোথাও ঘরের স্বাদ পরিবেশিত হয়। কোথাও বা বসে আঁকো প্রতিযোগিতার মতো বসে খাওয়ার মতো ব্যবস্থা রাখা থাকে। কোথাও কোথাও দাঁড়িয়ে খাওয়ার সুবন্দোবস্ত থাকে। মোটকথা, সুকুমার রায় যতোরকম খাইখাই-এর কথা বলেছিলেন সেগুলো বাদ দিলেও আসল যে ডান হাতের কাজটা, সেটার জন্যই এতো কিছু! ফুটপাথ থেকে পাঁচতারা সকলেই সাধ্যমতো “কমফর্ট” দিতে চাইছে। সেই কমফর্ট কম কম ঠেকলে এখন বিভিন্ন ডট কম থেকে আনানোর ব্যবস্থা আছে।
পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-১৭: লতা-কিশোর-পঞ্চম-গুলজারের অনবদ্য সৃষ্টি ‘তেরে বিনা জিন্দেগি সে কই শিকওয়া নেহি’
বিচিত্রের বৈচিত্র, মাই নেম ইজ গওহর জান—ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতে অঘোষিত বিপ্লব এনেছিলেন এই শিল্পী
তবে ফেলো কড়ি মাখো তেল এই পদ্ধতিতেই সবটা চলছে। সবার থেকে খেতে ভালো পাউরুটি আর ঝোলাগুড়ের মতো আদি অকৃত্রিম “বাবার হোটেল”-এর নির্ভরযোগ্য পরিষেবা ও “বসে” খাওয়ার ব্যবস্থা এসবের বাইরে। অনেকটা “এসো বসো আহারে”-এর মন্ত্রে চলা এই সব শতাব্দী প্রাচীন প্রতিষ্ঠান পাড়ার গলিতে গলিতে, বহুতলের তলায় তলায়… শহর থেকে মফস্বলে পরবর্তী প্রজন্মকে লালন করছে! হ্যাটস্ অফ!!
* ক্যাবলাদের ছোটবেলা (kyablader-chotobela): লেখক: ড. অভিষেক ঘোষ (Abhishek Ghosh) সহকারী অধ্যাপক, বাগনান কলেজ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগ থেকে স্নাতকস্তরে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত। স্নাতকোত্তরের পর ইউজিসি নেট জুনিয়র এবং সিনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ পেয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগে সাড়ে তিন বছর পূর্ণসময়ের গবেষক হিসাবে যুক্ত ছিলেন। সাম্বপুরাণের সূর্য-সৌরধর্ম নিয়ে গবেষণা করে পিএইচ. ডি ডিগ্রি লাভ করেন। আগ্রহের বিষয় ভারতবিদ্যা, পুরাণসাহিত্য, সৌরধর্ম, অভিলেখ, লিপিবিদ্যা, প্রাচ্যদর্শন, সাহিত্যতত্ত্ব, চিত্রকলা, বাংলার ধ্রুপদী ও আধুনিক সাহিত্যসম্ভার। মৌলিক রসসিক্ত লেখালেখি মূলত: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। গবেষণামূলক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়ে চলেছে বিভিন্ন জার্নাল ও সম্পাদিত গ্রন্থে। সাম্প্রতিক অতীতে ডিজিটাল আর্ট প্রদর্শিত হয়েছে আর্ট গ্যালারিতে, বিদেশেও নির্বাচিত হয়েছেন অনলাইন চিত্রপ্রদর্শনীতে। ফেসবুক পেজ, ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমে নিয়মিত দর্শকের কাছে পৌঁছে দেন নিজের চিত্রকলা। এখানে একসঙ্গে হাতে তুলে নিয়েছেন কলম ও তুলি। লিখছেন রম্যরচনা, অলংকরণ করছেন একইসঙ্গে।