ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।
গবেষণা ও সমীক্ষা পদ্ধতি
গবেষণাপত্রে স্নায়ু বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন, মস্তিষ্ক মৃত্যুর পরেও সক্রিয় ও সমন্বিত থাকতে পারে। ৮৭ বছর বয়সী একজন ব্যক্তি মৃগী রোগে আক্রান্ত হন। তাঁর চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন যে, খুব শীঘ্রই তিনি মৃত্যুর সম্মুখীন হতে চলছেন। এইরকম অবস্থায় এস্তোনিয়ার তারতু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ডাঃ রাউল ভিসেন্টে এবং তার সহকর্মীরা মৃগী আক্রান্ত রোগীর অবিচ্ছিন্ন ইলেক্ট্রোএনসেফেলোগ্রাফি (ইইজি) করেন। এই রেকর্ডিংয়ের সময় রোগীর হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল এবং তিনি তাতে মারা যান। এই অপ্রত্যাশিত ঘটনাটিতে বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো মৃত মানুষের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ রেকর্ডিং করতে পারেন। ঠিক কোন মুহূর্তে জীবন শেষ হয়, তা বোঝার জন্য গবেষণা লব্ধ তথ্যগুলি আমাদের চ্যালেঞ্জ জানায়।
আমেরিকার লুইসভিল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরো সার্জেন্ট ডাঃ আজমল জেম্মার, যিনি এই গবেষণার একজন অন্যতম সদস্য ছিলেন, তিনি জানান মৃত্যুর সময় ৯০০ সেকেন্ডের মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ তাঁরা পরিমাপ করেছেন। হৃদস্পন্দন বন্ধ হওয়ার আগে এবং পরে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে কী কী ঘটেছিল তা পর্যবেক্ষণ করার জন্য একটি নির্দিষ্ট তরঙ্গ মাত্রায় রেকর্ডিংয়ের ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। হৃদপিণ্ড কাজ করা বন্ধ করার ঠিক আগে এবং পরে স্নায়ুর কম্পন একটি নির্দিষ্ট ‘ওয়েভ লেন্থ’—গামা ওয়েভ লেন্থের পরিবর্তণ লক্ষ করেন। ডেল্টা, থিটা, আলফা এবং বিটা কম্পনও কিছু কিছু ক্ষেত্রে লক্ষ করা যায়।
পর্দার আড়ালে: ‘অপরাজিত’র সম্পাদনার সময় সত্যজিতের মনে হয়েছিল মিলি চরিত্রটির প্রয়োজন নেই, অগত্যা বাদ পড়লেন তন্দ্রা
প্রসঙ্গ স্বাস্থ্য বিজ্ঞান: ভ্যাকসিনে আটকানো যাবে ক্যানসার, হার্ট আ্যটাক বা অটোইমিউন ডিজিজের মতো মারণ ব্যাধি
, হাত বাড়ালেই বনৌষধি: মর্ত্যের অমৃত রসুন
ভৌতিক উপন্যাস: মিস মোহিনীর মায়া, পর্ব-৩: এরকম ভুল হল কী করে? তবে কি আমাকে কিছুতে বশ করেছে?
এই গবেষণা থেকে ডাঃ জেমার সিদ্ধান্তে আসেন, স্মৃতি পুনরুদ্ধারের সঙ্গে জড়িত মস্তিষ্কের কম্পনগুলির মতো মস্তিষ্ক ঠিক মৃত্যুর আগে জীবনের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলির যেন একটি শেষ ক্ল্যাশব্যাক চালিয়ে নিয়ে যায়, যা এই মৃত্যু পথযাত্রী মৃগী রোগীর মস্তিষ্কের তরঙ্গ রেকর্ডিংয়ের থেকে পাওয়া যায়। তাই ডাঃ জেমার জানান, এই সব ফলাফল আমাদের বোঝাকে চ্যালেঞ্জ করে যে, জীবন ঠিক কোন মুহূর্তে শেষ হচ্ছে এবং পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলি যেমন অঙ্গদানের সঠিক সময় সম্পর্কে নানান প্রশ্ন তুলে দেয়। কারণ স্বাভাবিক ভাবে মৃত্যুর বেশ কিছুক্ষণ পরও মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকে, যা এই গবেষণার বিভিন্ন রেকর্ডিং থেকে বোঝা যায়।
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-২০: শোওয়ার বালিশ বিছানা কেমন হবে? শক্ত না নরম?
বৈষম্যের বিরোধ-জবানি, পর্ব-২০: দুর্নীতির দুর্বিপাকে পিতৃতান্ত্রিক দ্বন্দ্ব
দেখব এবার জগৎটাকে, পর্ব-১২: বেশিক্ষণ থাকলে আরও কী কী হতো কে জানে, মুহূর্তে নৌকা ঘোরাল বনি
আশার আলো
যদিও এই গবেষণাটি মানুষের মৃত্যুর প্রক্রিয়া চলাকালীন প্রথম লাইভ মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ পরিমাপ করার একটি পরীক্ষা। কিন্তু একই রকম গামা তরঙ্গের পরিবর্তন পূর্বে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে রাখা ইঁদুরের ওপরেও লক্ষ্য করা গিয়েছে। এর থেকে বলা যেতে পারে, মৃত্যুর সময় মস্তিষ্কে নানা রকম ‘বায়োলজিক্যাল রেসপন্স’ ঘটতে থাকে, যা বিভিন্ন প্রজাতির জীবের ক্ষেত্রে খুব নির্দিষ্ট। যদিও এই গবেষণায় পাওয়া মস্তিষ্কের বিভিন্ন তরঙ্গের রেকর্ডিংগুলি খুব নির্দিষ্ট একটি একক ঘটনার ফল। রোগী বিভিন্ন আঘাত ও খিচুনির সম্মুখীন হওয়ার ফলে পর্যবেক্ষণগুলির ব্যাখ্যা একটু জটিল। তবুও ডাঃ জেমার এই ফলাফলকে আশার উৎস হিসেবেই দেখছেন। পরবর্তীকালে তিনি এই ধরনের পরীক্ষা আরও বেশি সংখ্যক রোগীর ওপর চালিয়ে যেতে চান বলে জানিয়েছেন।