শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪


মৎস্য পুরাণ অনুসারে বাস্তুপুরুষকে যখন দেবতারা পৃথিবীর বুকে ফেলে দিয়েছিলেন তখন তাঁর মাথা ছিল উত্তর-পূর্ব দিক বা ঈশানে৷ আর পা ছিল দক্ষিণ-পশ্চিম বা নৈর্ঋতে৷

‘অবাঙমুখো নিপতিত ঈশান্যাং দিশি সংস্থিতঃ’


বাস্তুপুরুষের তিনটি অবস্থার কথা জানা যায়৷ ক. নিত্যবাস্তু, খ. চরবাস্তু এবং গ. স্থিরবাস্তু৷
নিত্যবাস্তু : বাস্তুপুরুষের প্রতি তিন ঘণ্টা অন্তর পরিবর্তিত হয়৷ নিত্যবাস্তুর ভিত্তিতে বাড়ি তৈরির কাজকর্ম সম্পন্ন হয়৷
চরবাস্তু : চরবাস্তুর অবস্থান প্রতি চান্দ্র মাসে বদলে যায়৷ বাড়ি তৈরির কাজ শুরু, প্রধান দরজার ফ্রেম স্থাপন, কূপখনন এবং গৃহপ্রবেশ ইত্যাদি বাড়ি নির্মাণের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি এই চরবাস্তুর ওপর নির্ভর করে৷
স্থিরবাস্তু : বাস্তুপুরুষ পেটের ভারে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকেন৷ মাথা থাকে উত্তর-পূর্ব দিকে. দুটি পা ও নিতম্ব দক্ষিণ-পশ্চিমে, হাঁটু ও কনুই দক্ষিণ-পূর্বে এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে৷ বাড়ির দরজা, জানালা বসানো ও বিচ্ছিন্ন ঘর তৈরির প্রকৃত কাজই হল স্থিরবাস্তু৷ ইঞ্জিনিয়ারিং ও স্থাপত্যের পরিপ্রেক্ষিতে এটা উল্লেখযোগ্য যে, বাস্তুপুরুষ (স্থির) তুলনামূলকভাবে বাড়ির নকশা ডিজাইনের মধ্যেই বেশি করে অবস্থিত ( ওপরের চিত্র দেখুন)৷
প্রতি তিন মাসে বাস্তুপুরুষ তাঁর অবস্থান পরিবর্তন করেন৷ সে কারণে তাঁর দৃষ্টি চারদিকে অর্থাৎ উত্তর (ফাল্গুন-চৈত্র-বৈশাখ), পূর্ব (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ়-শ্রাবণ), দক্ষিণ (ভাদ্র-আশ্বিন-কার্তিক) এবং পশ্চিম (অগ্রহায়ণ-পৌষ-মাঘ) ক্রমানুসারে থাকে৷ এটা বিশেষ লক্ষণীয় যে, বাস্তুপুরুষের দৃষ্টি ঋতুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত৷ নীচে চিত্রে সেই পরিবর্তন দেখানো হয়েছে৷
বাস্তুপুরুষের ধ্যান করাকালীন এ কথা স্মরণ রাখতে হবে, বাস্তুদেবতার শরীর নীল বর্ণের৷ তিনি শুভ ও উপযুক্ত স্থানে ঘুমিয়ে আছেন৷ এঁকে প্রণাম করার মন্ত্র হল ‘ওঁ বাস্তোয়পতয়ে নমঃ’৷ বাস্তুদেবকে প্রণাম করলে বাস্তু সম্পর্কিত ভয় দূর হয়ে যায়৷
* বাস্তুবিজ্ঞান (Vastu Shastra): সুরেন্দ্র কাপুর (Surendra Kapoor), বিশিষ্ট বাস্তুবিদ।

Skip to content