বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।

স্বাস্থ্য ও মনের ওপর রঙের অনেক প্রভাব। আকর্ষক রঙের পরিবেশে আমাদের মনও আনন্দে পরিপূর্ণ থাকে। কেটে যায় একঘেয়ে ভাব। দূর হয়ে যায় নিরাশা। নানা ধর্মীয় কর্মে সিঁদুরের লাল, হলুদের পীত, পাতার সবুজ, আটার সাদা রং ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। এগুলি সবই স্বাস্থ্য, স্ফূর্তি ও কল্যাণের জন্য।
 

সবুজ রং

সবুজ রং সমগ্র প্রকৃতির মধ্যে ব্যক্ত রয়েছে। আমাদের জীবনে এই সবুজ রংটি অর্থাৎ আধাত্ম প্রেরণাদায়ী পরিবেশের প্রতীক। এটি গাছপালা, শস্য সুশোভিতো খেত, পার্বত্য অঞ্চল আচ্ছাদনকারী মধুর রং।

সবুজ রং মনকে শান্তি দেয় এবং হৃদয়কে করে তোলে শীতল। মানুষকে সুখ-শান্তি, ফূর্তি দেয় এই প্রিয় সবুজ রং। মুনিই ঋষিরা নিজেদের আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য উঁচু সবুজ পর্বত শীর্ষে, লম্বা ঘাসের সবুজ মাঠের মধ্যে শান্ত, সুখী পরিবেশকে আপন করে নিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন:

বাস্তুবিজ্ঞান, পর্ব-২২: বাস্তুশাস্ত্র মতে, লাল রং শৌর্য ও বিজয়, আর গেরুয়া হল ত্যাগ ও বৈরাগ্যের প্রতীক

হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-৯: তা বলে কি প্রেম দেব না!

 

হলুদ রং

জ্ঞান-বিদ্যা ও বিবেকের প্রতীক হল হলুদ রং। এই রং সুখ-শান্তি, অধ্যয়ন, জ্ঞান, যোগ্যতা, একাগ্রতা এবং মানসিক ও বৌদ্ধিক উন্নতিরও প্রতীক। হলুদ বা বাসন্তী রং মস্তিষ্ককে প্রফুল্ল ও উত্তেজিত করে। জ্ঞানের প্রতি আগ্রহ আনে। এই বাসন্তী মানুষের মনে নতুন নতুন সুস্থ চিন্তাধারা তৈরি করে এই রং। বসন্ত ঋতু মনে আনন্দদানকারী জ্ঞানবর্ধক ঋতু। শ্রীবিষ্ণুর পোশাকের রং হলুদ, তাঁর পীতবস্ত্র অসীম জ্ঞানের দ্যোতক। ভগবান শ্রীগণেশের ধুতিও হলুদ রঙের। সকল মঙ্গলকার্যে হলুদ ধুতি পরা গণেশ বিঘ্ননাশকারী বলে গণ্য হন।

আরও পড়ুন:

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৭০: অন্য বাইশে শ্রাবণ

মন্দিরময় উত্তরবঙ্গ, পর্ব-১: ভিতরকুঠি টেরাকোটা শিবমন্দির এক অনন্যসাধারণ কোচ স্থাপত্যশৈলীর উদাহরণ

 

নীল রং

মনোবিজ্ঞান অনুসারে, নীল রং শক্তি, পৌরুষ ও বীর মনোভাবের প্রতীক। আর শক্তি-পৌরুষের বার্তা আছে নীল রঙে। পুরুষোত্তম ভগবান রামচন্দ্র ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণ উভয়ের জীবনী মানবতার রক্ষা এবং দানবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেই কেটে গিয়েছে।

আরও পড়ুন:

অমর শিল্পী তুমি, পর্ব-১: একটু শুরুর কথা হলে ক্ষতি কী…

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৮: সুন্দরবনের নিশ্চিহ্ন প্রাণী

এ দের উভয়েরই শরীরের বর্ণ ছিল নীল। যেরকম নীল রং আকাশ ও পৃথিবীতে সর্বব্যপ্ত, তেমনিই নীল বর্ণের বীর শ্রীরাম এবং মহাযোদ্ধা শ্রীকৃষ্ণ ও সর্ব ব্যাপক এবং সর্বশক্তিমান। নীল রং ক্ষত্রিয় স্বভাব প্রকট করে। উদ্যোগী পুরুষের রং নীল। এই রঙের পোশাকধারী ইন্দ্রিয়কে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে সমর্থ হন। নীল রংকে সমুদ্র গভীর বলে মনে করা হয়। —চলবে।
* বাস্তুবিজ্ঞান (Vastu Shastra): সুরেন্দ্র কাপুর (Surendra Kapoor), বিশিষ্ট বাস্তুবিদ।

আপনার রায়

ইসরোর চন্দ্রযান-৩ কি তৃতীয় বারের এই অভিযানে সাফল্যের স্বাদ পাবে?

Skip to content