নামে অনেক কিছুই এসে যায়। যদি অরুণ কুমার, অরূপ কুমার বা নিদেনপক্ষে উত্তম চট্টোপাধ্যায় এরকম হতো তাহলেও কোথায় যেন একটা মনভাঙা ইমেজ তৈরি হবে। কারণ, উত্তম কুমার এই নামটাই তো একটা সম্ভাবনার সূচক। সত্তাকে মেহন করার নীরব প্রতিশ্রুতি। আর তা কিনা ছবির প্রচারপত্রে ব্যবহার করা হল না!
‘নায়ক’ ছবির সেই অবিস্মরণীয় সংলাপ অনুস্মৃতি করে বলা যেতে পারে সবাই যা জানে যেমন উত্তম কুমার অনেক কষ্ট করে বড় হয়েছিলেন, কেরিয়ারের প্রথম দিকে একঝাঁক ছবি ফ্লপ, নারীঘটিত জটিলতা, তারকা হওয়ার পর বহু দুর্ব্যবহারকারী তাঁর থেকেই সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন প্রভৃতি আলোচনা এ নিবন্ধের লক্ষ্য নয়। আমরা উত্তম কুমার অভিনীত এবং মুক্তিপ্রাপ্ত প্রতিটি ছবির প্রেক্ষিতভিত্তিক আলোচনা করার চেষ্টা করব, যেখানে অনেক অচেনা আলো, নানা দিক থেকে এসে পড়বে এক এক একটা ছবির নেপথ্য প্রস্তুতির উপর।
সালতামামির নিরিখে উত্তমবাবু প্রথম ক্যামেরার সামনে দাড়ান ‘মায়াডোর’ (১৯৪৭) নামক একটা হিন্দি ছবির প্রস্তুতির সময়। কিন্তু সৌভাগ্য কী দুর্ভাগ্য জানি না, সে ছবি আজও মুক্তি পায়নি। এর পরের ছবি যা, চিত্রা এবং পূর্ণ হলে মুক্তি পেয়েছিল তা হল ‘দৃষ্টিদান’। তারিখ ২৪ এপ্রিল ১৯৪৮। কাহিনী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, পরিচালনা দাদাসাহেব ফালকে জয়ী নীতিন বসু, সংগীত পরিচালনা ফাদার অব ইণ্ডিয়ান সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা তিমিরবরণ। ভূমিকা নায়ক অসিতবরণ-র ছোটবেলা।
অরুণ নামক একজন চিত্রাভিনেতা ডেবিউ করলেন বাংলার দর্শক সমাজে। আপাতনিরীহ উক্ত তথ্যের বিনিসূতোর মালায় আমরা ধাপে ধাপে দেখতে চেষ্টা করব ছবিটির আগে-পিছের চলমান ঘটনাগুলো, কীভাবে উত্তম কুমার নামক একজন ওয়ান ম্যান ইন্ডাস্ট্রির জন্ম দিয়ছিল।
‘নায়ক’ ছবির সেই অবিস্মরণীয় সংলাপ অনুস্মৃতি করে বলা যেতে পারে সবাই যা জানে যেমন উত্তম কুমার অনেক কষ্ট করে বড় হয়েছিলেন, কেরিয়ারের প্রথম দিকে একঝাঁক ছবি ফ্লপ, নারীঘটিত জটিলতা, তারকা হওয়ার পর বহু দুর্ব্যবহারকারী তাঁর থেকেই সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন প্রভৃতি আলোচনা এ নিবন্ধের লক্ষ্য নয়। আমরা উত্তম কুমার অভিনীত এবং মুক্তিপ্রাপ্ত প্রতিটি ছবির প্রেক্ষিতভিত্তিক আলোচনা করার চেষ্টা করব, যেখানে অনেক অচেনা আলো, নানা দিক থেকে এসে পড়বে এক এক একটা ছবির নেপথ্য প্রস্তুতির উপর।
সালতামামির নিরিখে উত্তমবাবু প্রথম ক্যামেরার সামনে দাড়ান ‘মায়াডোর’ (১৯৪৭) নামক একটা হিন্দি ছবির প্রস্তুতির সময়। কিন্তু সৌভাগ্য কী দুর্ভাগ্য জানি না, সে ছবি আজও মুক্তি পায়নি। এর পরের ছবি যা, চিত্রা এবং পূর্ণ হলে মুক্তি পেয়েছিল তা হল ‘দৃষ্টিদান’। তারিখ ২৪ এপ্রিল ১৯৪৮। কাহিনী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, পরিচালনা দাদাসাহেব ফালকে জয়ী নীতিন বসু, সংগীত পরিচালনা ফাদার অব ইণ্ডিয়ান সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা তিমিরবরণ। ভূমিকা নায়ক অসিতবরণ-র ছোটবেলা।
অরুণ নামক একজন চিত্রাভিনেতা ডেবিউ করলেন বাংলার দর্শক সমাজে। আপাতনিরীহ উক্ত তথ্যের বিনিসূতোর মালায় আমরা ধাপে ধাপে দেখতে চেষ্টা করব ছবিটির আগে-পিছের চলমান ঘটনাগুলো, কীভাবে উত্তম কুমার নামক একজন ওয়ান ম্যান ইন্ডাস্ট্রির জন্ম দিয়ছিল।
অরুণ কুমার এবং ‘দৃষ্টিদান’ ছবি নিয়ে কথা বলতে হলে সবার আগে স্বীকার করে নেওয়া ভালো যে, অন্যান্য হতভাগ্য দর্শক-শ্রোতার মতো বর্তমান প্রতিবেদকও এ ছবি, হলে বা দূরদর্শনে কোনও মাধ্যমেই দেখেননি। ভিডিয়ো রিলিজের কথা তো বাদই দিলাম। এ ছবির প্রিন্ট কোথায় আছে, কীভাবে আছে, আদৌ আর পাওয়া সম্ভব কিনা কেউ সঠিকভাবে বলতে পারবেন না। আমাদের দেশের যা সাংস্কৃতিক শৃঙ্খলা তাতে অতীতের সংরক্ষণ খুব কম গুরুত্ব পায়। যাইহোক, সেদিনের হলে দেখা ‘দৃষ্টিদান’ ছবির কোনও দর্শক আজ আর বেঁচে আছেন বলে মনে হয় না। সম্ভবও না।
একমাত্র দূরদর্শনের আর্কাইভে যদি থেকে থাকে, না থাকারই কথা, সে কে আর সেসব উদ্যোগ নিয়ে বের করবে…। সবচেয়ে বড় কথা আমরা ব্যবসায়িক ভাবে সফল (উত্তমবাবুর) ছবিগুলো নিয়ে মাতামাতি করি। অভিনেতা উত্তম কুমারের সঠিক মূল্যায়ন আজও আমাদের দেশে হয়নি, হবেও না। সেদিক দিয়ে ‘দৃষ্টিদান’ ছবির কালচারাল ইভ্যালুয়েশন (উত্তম কুমার অভিনীত এবং মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম ছবি ছাড়া) কোথায়! নীতিন বসু, তিমির বরণদের এ প্রজন্মের চেনার দরকার পড়ে না। কাজেই ছবিটির প্রদর্শনযোগ্য অবস্থা ফেরানো কতটা কঠিন তা বলাই বাহুল্য।
এবার আসি ‘দৃষ্টিদান’ ছবিকেন্দ্রিক উত্তম আলোচনা। ছবিটির নির্মাণপর্বের উত্তমবাবু, নেহাতই একজন সখদার অভিনেতা। এতদিন পাড়ার যাত্রা, নাটকের নিষ্ঠাবান এক কর্মী স্বপ্ন দেখছিলেন রূপোলি পর্দার অভিনেতা হওয়ার। মনে রাখতে হবে, ফিল্মি কেরিয়ার শুরুর সময়ের উত্তম কুমার নিজের রুটি-রুজি, ফুলটাইম মঞ্চাভিনয়ের মাধ্যমে করতেন না। তিনি ছিলেন পোর্ট কমিশনার্সের ক্যাশ ডিপার্টমেন্টের আর পাঁচজনের মতো দশটা -পাঁচটার সামান্য কেরানি।
এবার আসি ‘দৃষ্টিদান’ ছবিকেন্দ্রিক উত্তম আলোচনা। ছবিটির নির্মাণপর্বের উত্তমবাবু, নেহাতই একজন সখদার অভিনেতা। এতদিন পাড়ার যাত্রা, নাটকের নিষ্ঠাবান এক কর্মী স্বপ্ন দেখছিলেন রূপোলি পর্দার অভিনেতা হওয়ার। মনে রাখতে হবে, ফিল্মি কেরিয়ার শুরুর সময়ের উত্তম কুমার নিজের রুটি-রুজি, ফুলটাইম মঞ্চাভিনয়ের মাধ্যমে করতেন না। তিনি ছিলেন পোর্ট কমিশনার্সের ক্যাশ ডিপার্টমেন্টের আর পাঁচজনের মতো দশটা -পাঁচটার সামান্য কেরানি।
বিয়েতে।
একান্নবর্তী পরিবারের বড় ছেলে। বাড়িতে চলমান অভিনয়প্রেমীদের দলে তিনি একজন সংযোজন মাত্র। এর বেশি কিছু নয়। কিছু দিনের মধ্যেই বৈবাহিক সূত্রে আবদ্ধ হবেন। সকলেই আর্থিকভাবে প্রতিষ্ঠিত ছেলের নিরাপদ সচ্ছলতায় গা-ভাসানোয় কোমর বাঁধছিলেন। সেখানে অরুণের আগামী দিনে উত্তম সম্ভাবনার কথা ঘূণাক্ষরেও কারও ভেবে দেখতে বয়ে গিয়েছে।
এত কথা বলার উদ্দেশ্য হল, রূপোলি পর্দার যে উজ্জ্বল উপস্থিতিকে আমরা মহানায়ক তকমা দিয়েছি তিনি শুরুর দিন থেকেই ছিলেন নিঃসঙ্গ। ছবিতে অরুণ তথা উত্তম বাবুর প্রস্তুতি খুব একটা উল্লেখযোগ্য ছিল বলে মনে হয় না। কারণ ফিল্ম লাইনে পাকপাকি জায়গা পাওয়া যাবে এ গ্যারেন্টি নেই। কিশোরী গৌরীকে নানা প্রতিকূলতায় ঘরে আনা যাবে কিনা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। দেশভাগের পর বঙ্গদেশের কালচারাল প্যাটার্ন বদলে যাচ্ছে। দুর্গাদাস, প্রমথেশের পর অসিতবরণ, বিকাশ রায়, ধীরাজ ভট্টাচার্যের যুগ শুরু হয়েছে বটে কিন্তু সবাই কেমন যেন গড্ডলিকায় ভাসতে বেশি পছন্দ করছেন। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক যেসব ছবি তৈরি হচ্ছিল যেমন: নিউ থিয়েটার্স, অরোরা ফিল্মস তাদের সময়ও শেষের পথে।
এত কথা বলার উদ্দেশ্য হল, রূপোলি পর্দার যে উজ্জ্বল উপস্থিতিকে আমরা মহানায়ক তকমা দিয়েছি তিনি শুরুর দিন থেকেই ছিলেন নিঃসঙ্গ। ছবিতে অরুণ তথা উত্তম বাবুর প্রস্তুতি খুব একটা উল্লেখযোগ্য ছিল বলে মনে হয় না। কারণ ফিল্ম লাইনে পাকপাকি জায়গা পাওয়া যাবে এ গ্যারেন্টি নেই। কিশোরী গৌরীকে নানা প্রতিকূলতায় ঘরে আনা যাবে কিনা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। দেশভাগের পর বঙ্গদেশের কালচারাল প্যাটার্ন বদলে যাচ্ছে। দুর্গাদাস, প্রমথেশের পর অসিতবরণ, বিকাশ রায়, ধীরাজ ভট্টাচার্যের যুগ শুরু হয়েছে বটে কিন্তু সবাই কেমন যেন গড্ডলিকায় ভাসতে বেশি পছন্দ করছেন। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক যেসব ছবি তৈরি হচ্ছিল যেমন: নিউ থিয়েটার্স, অরোরা ফিল্মস তাদের সময়ও শেষের পথে।
আরও পড়ুন:
পর্ব-১৮: গিরিশচন্দ্র রচিত সামাজিক নাটক ‘বলিদান’
হাতের নখ, ওয়াক্সিং থেকে চুলের যত্ন, কী ভাবে রূপচর্চা করবেন? রইল খুঁটিনাটি
যোগা-প্রাণায়াম: প্রসাধনী নয়, স্রেফ যোগাভ্যাসে বাড়ান ত্বকের জেল্লা!
এ বার সলমন খানের ডাকে ‘বিগ বস’-এ নুসরত?
এহেন পরিস্থিতিতে কোন কোম্পানিই ঝুঁকি নিয়ে নতুন হিরোকে সুযোগ দিতে চাইবেন না এটাই স্বাভাবিক। কাজেই এক নাগাড়ে ২৫ বছর হিট ছবি উপহার দেওয়া উত্তমকে দেখে সেদিনের অরুণকে কল্পনা করলে ভুল হবে। তাছাড়া ১৯৪৮ সালে বসে কেউ অনুমান করতে পারেননি আগামী সাত আট বছরের মধ্যে উত্তম-সুচিত্রা নামক কালজয়ী জুটি রাজত্ব করতে আসছেন। অরুণ-রমা নিজেরাও ভাবেননি। খুব কম শিল্পী ভারতবর্ষের বুকে আছেন, যাঁরা প্রথম ছবিতে ‘এক্সট্রার’ ভূমিকায় অভিনয় করে পরবর্তীকালে ইন্ডাস্ট্রিতে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। এরকম একজন শিল্পীর উত্থান মধ্যবিত্ত ঘরানা থেকে হয়েছিল বলেই জীবদ্দশাতেও ওঁকে প্রাপ্য সম্মান দেওয়া হয়নি।
অভিনয় ছাড়া উত্তমবাবুর জীবনবেদ আলোচনা করলে দেখতে পাব যখন উনি পাকাপাকিভাবে সেলুলয়েডে আসেননি তখনও স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রভাতফেরিতে গান করছেন। ৪৩-এর মন্বন্তরে অসহায় আর্তের মুখে খিচুড়ি রান্না করে তুলে দিচ্ছেন। কুস্তির আখড়ায় তালিম নিচ্ছেন, সাঁতার শিখছেন, গান তো আছেই।
সুতরাং উত্তমবাবু যদি অভিনয় কোনওদিন না করে অন্য পেশাতে প্রতিষ্ঠিত হতেন তা হলেও ওই শিক্ষাগুলো ব্যর্থ হয়ে যেত না।
ফিল্ম লাইনে পাকাপাকিভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর (‘বউ ঠাকুরাণীর হাট’ ছবির জন্য) ঘোড়ায় চড়া শিখেছেন, (‘বিচারক’ ছবির জন্য), ব্যাডমিন্টন প্র্যাকটিশ করেছেন (‘ঝিন্দের বন্দী’ ছবির জন্য), তলোয়ার চালানো শিখেছেন (‘ছোটি সি মূলাকাৎ’ ছবির জন্য) বব দাসের কাছে নাচের তালিম নিয়েছেন। অতএব শুরু থেকেই পেশার প্রতি একজন ‘ডেডিকেটেড পার্সন’ ছিলেন উত্তমবাবু।
সুতরাং উত্তমবাবু যদি অভিনয় কোনওদিন না করে অন্য পেশাতে প্রতিষ্ঠিত হতেন তা হলেও ওই শিক্ষাগুলো ব্যর্থ হয়ে যেত না।
ফিল্ম লাইনে পাকাপাকিভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর (‘বউ ঠাকুরাণীর হাট’ ছবির জন্য) ঘোড়ায় চড়া শিখেছেন, (‘বিচারক’ ছবির জন্য), ব্যাডমিন্টন প্র্যাকটিশ করেছেন (‘ঝিন্দের বন্দী’ ছবির জন্য), তলোয়ার চালানো শিখেছেন (‘ছোটি সি মূলাকাৎ’ ছবির জন্য) বব দাসের কাছে নাচের তালিম নিয়েছেন। অতএব শুরু থেকেই পেশার প্রতি একজন ‘ডেডিকেটেড পার্সন’ ছিলেন উত্তমবাবু।
উত্তম ও গৌরী দেবী।
এবার আসি দৃষ্টিদান ছবির মূল কেন্দ্রবিন্দুতে। বাংলা ছবির কালিক মানচিত্রে সত্যজিৎ-মৃণাল-ঋত্বিকের আবির্ভাব ও সমাপনকে যদি যুগসন্ধিক্ষণ হিসাবে চিহ্নিত করি তাহলে স্বাভাবিকভাবে সবাক চলচ্চিত্রের শুরু (১৯৩১) থেকে ‘পথের পাঁচালী’ (১৯৫৫)- এর মুক্তির আগে পর্যন্ত প্রাক সত্যজিৎ সময়ে খুব খারাপ মানের পরিচালকরা ছিলেন না। যে মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে আমরা সত্যজিৎ-মৃণাল পরবর্তী ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘চোখের বালি’ দেখি, সে মানসিক অবস্থান নিয়ে যদি ১৯৪৮ সালে রিলিজ হওয়া ‘দৃষ্টিদান’ দেখি, তবে এ উক্তির সারবত্তা বোঝা যাবে।
মোদ্দাকথা হল নীতিন বসুর ফিল্মোগ্রাফ কোনও অংশে ‘এলিট ক্লাস’-এর থেকে কম নয়। বাংলা হিন্দি ভাষায় হেভিওয়েটদের নিয়ে সবসময় কাজ করেছেন। দৃষ্টিদানের প্লেয়ার কাস্টিং-এর সময় তৎকালীন সুপারহিট জুটি অসিতবরণ ও সুনন্দা দেবীকে সাইন করিয়েছিলেন। যদিও প্রোডিউসার ছিলেন সুনন্দা দেবী নিজে।
ফিল্ম নামক শিল্প মাধ্যমে যেহেতু হলে দর্শকদের রিপিটেডলি টেনে এনে একটা ব্যবসায়িক সাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রাখতে হয় তাই পথচলতি স্টারডমকে ব্যবহারের মাধ্যমে প্রযোজকের নিরাপত্তা সবার আগে জায়গা পায়।
কয়েকবছর আগেই অসিতবরণ সুনন্দা দেবীর বিগ হিট ‘কাশীনাথ’ দর্শকদের সিটের সঙ্গে বেঁধে রেখেছিল। বাংলা ছবিতে যদি উত্তম কুমার নামক একটা যুগ না শুরু হতো কিংবা সত্যজিৎ রায়-র পথের পাঁচালী বিদেশী স্বীকৃতি লাভ করত, তাহলে ম্যানারিজম-যুক্ত, মঞ্চাভিনয় ঘেঁষা কাহিনীচিত্রের বাড়াবাড়ি আর কতদিন চলত তার ইয়ত্তা নেই। সত্যজিৎ উত্তর বাংলা ছবির ইতিহাসে দক্ষিণী তামিল তেলেগু কাহিনীচিত্রের দাপট বাংলা ছবির মান কোথায় দাঁড় করিয়েছে তা বলাই বাহুল্য।
মোদ্দাকথা হল নীতিন বসুর ফিল্মোগ্রাফ কোনও অংশে ‘এলিট ক্লাস’-এর থেকে কম নয়। বাংলা হিন্দি ভাষায় হেভিওয়েটদের নিয়ে সবসময় কাজ করেছেন। দৃষ্টিদানের প্লেয়ার কাস্টিং-এর সময় তৎকালীন সুপারহিট জুটি অসিতবরণ ও সুনন্দা দেবীকে সাইন করিয়েছিলেন। যদিও প্রোডিউসার ছিলেন সুনন্দা দেবী নিজে।
ফিল্ম নামক শিল্প মাধ্যমে যেহেতু হলে দর্শকদের রিপিটেডলি টেনে এনে একটা ব্যবসায়িক সাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রাখতে হয় তাই পথচলতি স্টারডমকে ব্যবহারের মাধ্যমে প্রযোজকের নিরাপত্তা সবার আগে জায়গা পায়।
কয়েকবছর আগেই অসিতবরণ সুনন্দা দেবীর বিগ হিট ‘কাশীনাথ’ দর্শকদের সিটের সঙ্গে বেঁধে রেখেছিল। বাংলা ছবিতে যদি উত্তম কুমার নামক একটা যুগ না শুরু হতো কিংবা সত্যজিৎ রায়-র পথের পাঁচালী বিদেশী স্বীকৃতি লাভ করত, তাহলে ম্যানারিজম-যুক্ত, মঞ্চাভিনয় ঘেঁষা কাহিনীচিত্রের বাড়াবাড়ি আর কতদিন চলত তার ইয়ত্তা নেই। সত্যজিৎ উত্তর বাংলা ছবির ইতিহাসে দক্ষিণী তামিল তেলেগু কাহিনীচিত্রের দাপট বাংলা ছবির মান কোথায় দাঁড় করিয়েছে তা বলাই বাহুল্য।
পরিবারের সঙ্গে।
সুতরাং ১৯৪৮ সালে তামাম দর্শক কূল যখন উত্তম -সুচিত্রা রসায়নে মজেননি, অযান্ত্রিক-পথের পাঁচালী দেখেননি তখন তাদের সাংস্কৃতিক অবলম্বন ছিল দেবকী বসু, নীতিন বসু, বিমল রায় প্রভৃতিরা। এক ডাকে লোকে চিনতেন ছবি বিশ্বাস, জহর গঙ্গোপাধ্যায়, অসিতবরণদের। কাজেই নবাগত অরুণ! ওরকম কত এল গেল।
ছবির আগে পিছে প্রেক্ষাপটটি উত্তম কুমার নামক আগামী স্টারের জন্য কতটা মজবুত ছিল তা, ভাবীকাল সাক্ষী হয়েছিল।
ছবির কাহিনী রাবীন্দ্রিকঘরানার চেনা ছক। সম্পর্কের জোয়ার ভাটায় সত্যের প্রকাশ। ছবির নির্মাণপর্বে সেসময়ের হেভিওয়েটদের ভিড়, মনে করিয়ে দেয় নীতিন বসুর দাপটের কথা।
আরও একটা অনালোচিত দিক হল নায়কের ছোটবেলার চরিত্রে অভিনয় করা আর্টিস্টের দিকে উত্তমবাবুর হাইটাইমেও কখনও তাকানও হয়নি।
দৃষ্টিদানের প্রচারপত্রে অরুণ-র নাম পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়নি…যা, কখনওই শিল্পিত ত্রুটি ছিল না। —চলবে
ছবির আগে পিছে প্রেক্ষাপটটি উত্তম কুমার নামক আগামী স্টারের জন্য কতটা মজবুত ছিল তা, ভাবীকাল সাক্ষী হয়েছিল।
ছবির কাহিনী রাবীন্দ্রিকঘরানার চেনা ছক। সম্পর্কের জোয়ার ভাটায় সত্যের প্রকাশ। ছবির নির্মাণপর্বে সেসময়ের হেভিওয়েটদের ভিড়, মনে করিয়ে দেয় নীতিন বসুর দাপটের কথা।
আরও একটা অনালোচিত দিক হল নায়কের ছোটবেলার চরিত্রে অভিনয় করা আর্টিস্টের দিকে উত্তমবাবুর হাইটাইমেও কখনও তাকানও হয়নি।
দৃষ্টিদানের প্রচারপত্রে অরুণ-র নাম পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়নি…যা, কখনওই শিল্পিত ত্রুটি ছিল না। —চলবে
* উত্তম কথাচিত্র (Uttam Kumar – Mahanayak – Actor) : ড. সুশান্তকুমার বাগ (Sushanta Kumar Bag), অধ্যাপক, সংস্কৃত বিভাগ, মহারানি কাশীশ্বরী কলেজ, কলকাতা।