'আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ'!
আকাশের দিকে তাকিয়ে মন যখন ছুটি ছুটি করে অথচ ছুটি মেলে না আপিস-ইশকুল-কলেজের থোড়-বড়ি-খাড়ার রোজনামচার থেকে, ভেবে দেখি কি কেউ, সেই বেহায়া ঘরছুট মনটাকে ‘চুপ থো’ বলে না ধমকিয়ে একটু তোল্লাই দিলে কেমন হয়?
না না, বেশিরকম কিছু নয়, শনি-রবির সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে মেরেকেটে একটা সিএল?
ব্যস, ‘মন কি বাত’ পুরো খোলা আকাশ!
শুক্রবার কলকাতার রাতের ট্রেনে চেপে পরের ভোরে নিউ জলপাইগুড়ি, সেখান থেকে পকেটের ওজন বুঝে বাসে, গাড়িতে বা কু-ঝিকঝিকে করে শিলিগুড়ি-সেবক-নিউ মাল পেরিয়ে রাত জাগানো স্বপ্নের মতো ছোট্ট একটা ছবিস্টেশন দলগাঁও। এ তো গেল কলকেতাই কেতাদারি, এর বাইরেও জগৎ আছে বইকি! সেই বাকি পশ্চিমবঙ্গ যদি রাতের বাসে উত্তরবঙ্গ ছোটেই, তো তারে থামায় কেডা!
আর উত্তরের বাংলার তো মজাই মজা—উঠল বাই তো ভ্রমণে যাই!
এইখানে বলে রাখি, গড়পড়তা ভ্রামণিকের যদি পাখি ফুল রং—এসবে দেদার ভালোবাসা থাকে, তবে দলগাঁও তাঁকে নিরাশ করবে না মোটেই, কিন্তু এই ছোট্ট মনোরম জনপদের মূল আকর্ষণ, এর রূপকথার মতো বাহারি পাতাদের যখন তখন আহ্লাদী সঙ্গী হওয়ার অভ্যেস! পাতা যে কতরকমের ম্যাজিক রংরূপে মন ভোলাতে জানে, তা দেখতে হলে আসতেই হবে এই মেঘতুরতুরে পাহাড়ি-বসতখানায়।
কালিম্পং জেলার এখনও প্রায় ঘোমটা-না-খোলা লাজুক কিশোরী এ জনপদ। পাহাড়ের খেয়ালিপথে পাক খেতে খেতে ওপরে ওঠার সময়ে তাই মন দিয়ে ঘরকন্না করা জনমানুষের থমকমারা চোখের জিজ্ঞাসা সইতেই হবে। কে যাচ্ছ গো? কেন যাচ্ছ? কী দেখতে যাচ্ছ অমন টঙের মাথায় চড়ে?—এমন কত না-বলা প্রশ্নমালা রোদ্দুরে পাতা আচারের বয়ামে, ঘরের দোরে ঝোলানো ঝুল্লি টবের নিত্য প্রসাধনে ছলকে উঠবে! সবচেয়ে আতুর লাগবে এ পথের প্রথম পথচারীর, যখন অনায়াস আগ্রহে তাঁর গাড়িটি দাঁড় করিয়ে সঙ্গী হতে চাইবে কোনও ইশকুল পড়ুয়া বা বোঝা বওয়া সাধারণ মানুষ। আচমকা উটকো ভ্রমণের নেশাটা একবার জোর ধাক্কা খাবেই খাবে এহেন আবদারে। মনে হবে, এপথে আমি চলেছি নিছক শখ পূরণ করতে আর ওরা চলেছে জীবনের প্রয়োজনে—গাড়িটা কার পক্ষে জরুরি?
তবে, এসব দার্শনিকতা, ঔচিত্যবোধ মুহূর্তে ফুরোবে পথের পাশে পাশে নেচে চলা এই ডাইনে তো ওই বাঁয়ে টুকি খেলা নীল আকাশের দিকে তাকিয়েই। সত্যিই, কী বিচিত্র আমার দেশ!
মনে পড়বেই ফেলু মিত্তিরের প্রায় কবিতাহেন সেই অমোঘ বাণীটি—
‘বাংলাদেশটা ভারতবর্ষের কটিদেশে হওয়াতে এখানে একটা আশ্চর্য ব্যাপার ঘটেছে—বাংলার উত্তরে হিমালয় আর দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। এটা ভারতবর্ষের আর কোনও প্রদেশে নেই। এটা নাকি একটা ‘অ্যাক্সিডেন্ট অফ জিয়োগ্রাফি’। এত বৈচিত্র্য আর কোনও একটা প্রদেশে পাবি না’—
তাই বটে!
আপাতত মন চলো দলগাঁও। একমুখী হও দিকি, জানো না যে কোনও সাধনায় সিদ্ধিলাভে একাগ্রতা অত্যাবশ্যক? আরে, এ তো মনসাধনা গো, টুকুস মন দাও কেনে!
অতঃপর—
পাতার সাথে, ফুলের সাথে, ঘেসোঝুড়িওয়ালা মানুষের সাথে, পাথুরে পথের নাচনী ঝোরার সাথে, ঝোরার ওপর দিয়ে ওড়ানো রঙ্গীবিরঙ্গী পতাকার সাথে ভাব করতে করতেই একসময় হুস করে খুলে যাবে ‘মাথার পরে আকাশের ঐ সুনীল ঢাকনা’। আপনমনেই জানা হবে—মঞ্জিল ছুঁয়েই ফেলেছি এবারের মতো।
না না, বেশিরকম কিছু নয়, শনি-রবির সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে মেরেকেটে একটা সিএল?
ব্যস, ‘মন কি বাত’ পুরো খোলা আকাশ!
শুক্রবার কলকাতার রাতের ট্রেনে চেপে পরের ভোরে নিউ জলপাইগুড়ি, সেখান থেকে পকেটের ওজন বুঝে বাসে, গাড়িতে বা কু-ঝিকঝিকে করে শিলিগুড়ি-সেবক-নিউ মাল পেরিয়ে রাত জাগানো স্বপ্নের মতো ছোট্ট একটা ছবিস্টেশন দলগাঁও। এ তো গেল কলকেতাই কেতাদারি, এর বাইরেও জগৎ আছে বইকি! সেই বাকি পশ্চিমবঙ্গ যদি রাতের বাসে উত্তরবঙ্গ ছোটেই, তো তারে থামায় কেডা!
আর উত্তরের বাংলার তো মজাই মজা—উঠল বাই তো ভ্রমণে যাই!
এইখানে বলে রাখি, গড়পড়তা ভ্রামণিকের যদি পাখি ফুল রং—এসবে দেদার ভালোবাসা থাকে, তবে দলগাঁও তাঁকে নিরাশ করবে না মোটেই, কিন্তু এই ছোট্ট মনোরম জনপদের মূল আকর্ষণ, এর রূপকথার মতো বাহারি পাতাদের যখন তখন আহ্লাদী সঙ্গী হওয়ার অভ্যেস! পাতা যে কতরকমের ম্যাজিক রংরূপে মন ভোলাতে জানে, তা দেখতে হলে আসতেই হবে এই মেঘতুরতুরে পাহাড়ি-বসতখানায়।
কালিম্পং জেলার এখনও প্রায় ঘোমটা-না-খোলা লাজুক কিশোরী এ জনপদ। পাহাড়ের খেয়ালিপথে পাক খেতে খেতে ওপরে ওঠার সময়ে তাই মন দিয়ে ঘরকন্না করা জনমানুষের থমকমারা চোখের জিজ্ঞাসা সইতেই হবে। কে যাচ্ছ গো? কেন যাচ্ছ? কী দেখতে যাচ্ছ অমন টঙের মাথায় চড়ে?—এমন কত না-বলা প্রশ্নমালা রোদ্দুরে পাতা আচারের বয়ামে, ঘরের দোরে ঝোলানো ঝুল্লি টবের নিত্য প্রসাধনে ছলকে উঠবে! সবচেয়ে আতুর লাগবে এ পথের প্রথম পথচারীর, যখন অনায়াস আগ্রহে তাঁর গাড়িটি দাঁড় করিয়ে সঙ্গী হতে চাইবে কোনও ইশকুল পড়ুয়া বা বোঝা বওয়া সাধারণ মানুষ। আচমকা উটকো ভ্রমণের নেশাটা একবার জোর ধাক্কা খাবেই খাবে এহেন আবদারে। মনে হবে, এপথে আমি চলেছি নিছক শখ পূরণ করতে আর ওরা চলেছে জীবনের প্রয়োজনে—গাড়িটা কার পক্ষে জরুরি?
তবে, এসব দার্শনিকতা, ঔচিত্যবোধ মুহূর্তে ফুরোবে পথের পাশে পাশে নেচে চলা এই ডাইনে তো ওই বাঁয়ে টুকি খেলা নীল আকাশের দিকে তাকিয়েই। সত্যিই, কী বিচিত্র আমার দেশ!
মনে পড়বেই ফেলু মিত্তিরের প্রায় কবিতাহেন সেই অমোঘ বাণীটি—
‘বাংলাদেশটা ভারতবর্ষের কটিদেশে হওয়াতে এখানে একটা আশ্চর্য ব্যাপার ঘটেছে—বাংলার উত্তরে হিমালয় আর দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। এটা ভারতবর্ষের আর কোনও প্রদেশে নেই। এটা নাকি একটা ‘অ্যাক্সিডেন্ট অফ জিয়োগ্রাফি’। এত বৈচিত্র্য আর কোনও একটা প্রদেশে পাবি না’—
তাই বটে!
আপাতত মন চলো দলগাঁও। একমুখী হও দিকি, জানো না যে কোনও সাধনায় সিদ্ধিলাভে একাগ্রতা অত্যাবশ্যক? আরে, এ তো মনসাধনা গো, টুকুস মন দাও কেনে!
অতঃপর—
পাতার সাথে, ফুলের সাথে, ঘেসোঝুড়িওয়ালা মানুষের সাথে, পাথুরে পথের নাচনী ঝোরার সাথে, ঝোরার ওপর দিয়ে ওড়ানো রঙ্গীবিরঙ্গী পতাকার সাথে ভাব করতে করতেই একসময় হুস করে খুলে যাবে ‘মাথার পরে আকাশের ঐ সুনীল ঢাকনা’। আপনমনেই জানা হবে—মঞ্জিল ছুঁয়েই ফেলেছি এবারের মতো।
'ওগো পথের সাথী,নমি বারম্বার'।
কিন্তু এইবারে চিন্তা, ‘বল মা তারা দাঁড়াই কোথা’?
ছেলেবেলায় দুলে দুলে মুখস্থ করা কুইনিনের উৎস সিঙ্কোনা চাষের স্বর্গপুর এ জায়গা, সরকারের পক্ষ থেকে এখানে ওই সিঙ্কোনা খেতের পাশাপাশিই অপূর্ব কয়েকটি ভ্রমণভবন বানানো আছে, যাদের দেখলেই মন নেচে উঠে বলতে থাকে, ‘হোথায় হব বনবাসী, কেউ কোত্থাও নেই’।
কিন্তু, চাইলেই কি আর সব পাওয়া যায় রে ভাই!
ওসব কটেজ এখনও চালুই হয়নি যে। অতএব মনের দুঃখে বনে যাওয়া ছাড়া আর কী বা করার আছে—যখন এই ভাবনা আসবে, ঠিক সেই আতান্তরে মুশকিল আসান হয়ে দাঁড়াবে মিচিলিংমা হোমস্টে। ছবির মতো সুন্দর ছিমছাম এক ছোট্ট বসতবাড়ি। সকাল-দুপুর-বিকেল-রাতে এক্কেবারে বাড়ির মতোই আরাম মাখিয়ে কাঁসার বাসনে করে গরমাগরম যত্ন পরিবেশিত হয় এখানে। বাগানে দোলনা আছে, ঝিঙে-স্কোয়াশ আছে, প্যাঁকপেঁকে হাঁসের দল আছে, আর আছে মনকেমন করা পাহাড়ের ডাক, পা বাড়ালেই।
দলগাঁও ভ্রমণে এইসব ছোট্ট ছোট্ট হোমস্টেই ভরসা আপাতত, তাই হুট বলতে ছুট দেওয়ার আগে এদের সঙ্গে একটু যোগাযোগ করে গেলে আরাম-আয়েসের দুশ্চিন্তাটা ব্যাগের সঙ্গে বইতে হয় না!
শনিবারের বারবেলায় শীতের শিরশিরানি মেখে দলগাঁও পৌঁছে ইতিউতি হাঁটাহাঁটি আর ঝুপ করে নেমে আসা সন্ধ্যাযাপন (পারলে একবার ভিউ পয়েন্ট পায়ে হেঁটে ঘুরে আসাই যায়, ফেরার পথটা জোনাকিদের বিরলসঙ্গ মন দোলাবেই, পাক্কা!)।
পরদিন ভোররোদ্দুর বাজি রেখে পায়ে পায়ে ভিউপয়েন্ট। সে এক অবর্ণনীয় ছবি, আহা! সিঙ্কোনা খেতের পাশটি ঘেঁষা পাথুরে পিরিতিপথ পৌঁছে দেবে এমন এক চিলতে পাহাড়িরোয়াকে, যেখান থেকে একশো আশি ডিগ্রি কোণ জুড়ে দেখা মিলবে বহু নীচে বয়ে চলা সাদা সফেদ ফিতের মতো জলঢাকা নদীটির। ভিউ পয়েন্টের বাঁ দিক থেকে আঁকাবাঁকা খাঁজ এঁকে সে স্বচ্ছতোয়া ঝিরিঝিরি বইছে ঝালং হয়ে বিন্দু ছুঁয়ে ভুটান সীমানায়। কেবল পাখি আর নদীজলের হালকা শব্দ রাজি ছাড়া এ চরাচর যেন মৌন হয়ে দাঁড়িয়েছে এখানে নবীন ভঙ্গিল হিমালয়ের সবুজ ঢেউ দেখতে।
দাঁড়ানো যাক তার পাশে। চারদিকে সমুদ্রসফেন জীবনের আঁচ জুড়িয়ে আসবে এই ভোরাই শান্তিনীড়ে। এবার চলো মুসাফির— ফের হোম স্টে, স্নান-খাওয়া-গোছগাছ।
সময় ফুরোয়।
মন ফুরোয় কই!
তাই ফেরার পথে ঝাঁ ঝাঁ রোদ্দুরের তোয়াক্কা না করেও আরও একবার ভিউ পয়েন্ট!
নীচে নামতে নামতে রবার বাগানে ফিসফিসানি চলে—‘আবার আসিব ফিরে’।
রবিবারের রাত পুইয়ে ফিরতি ট্রেন বা বাস কেজো সোমের ভোর পৌঁছে দেয় যার যার বাসায়।
পাখি আবার ডানা ঝটপটায়।
উড়ান যে তার ভবিতব্য!
কীভাবে যাবেন
শিয়ালদহ থেকে কাঞ্চনকন্যা, দার্জিলিঙ মেইল, পদাতিক, উত্তরবঙ্গ ইত্যাদি যেকোনও ট্রেনে নিউ জলপাইগুড়ি/ শিলিগুড়ি। সেখান থেকে সড়কপথে ঘণ্টা তিনেক। মালবাজার চালসা পেরিয়ে খুনিয়া মোড়ের বাঁহাতি পথ ধরে চাপড়ামারির বনকে রাস্তার দু’পাশে রেখে সোজা চলতে হবে। গৈরিবাসের মোড় এলে ধরতে হবে বাঁহাতি পথ, যে পথ রঙ্গোগামী, সে পথ পেরিয়েই আমাদের গন্তব্য দলগাঁও।
কোথায় থাকবেন
মিচিলিংমা হোম স্টে, ফোন : +৯১ ৯১৩৪২৩২৮৮৬
দলগাঁও গভর্নমেন্ট ইপিক্যাক প্ল্যানটেশন, থানা-ঝালদা, কালিম্পং৷
যোগাযোগ: ৯৪৭৪১০২০৬৮
হোয়াটস অ্যাপ: ৮১৪৫৫৬১৬৬৫
ছেলেবেলায় দুলে দুলে মুখস্থ করা কুইনিনের উৎস সিঙ্কোনা চাষের স্বর্গপুর এ জায়গা, সরকারের পক্ষ থেকে এখানে ওই সিঙ্কোনা খেতের পাশাপাশিই অপূর্ব কয়েকটি ভ্রমণভবন বানানো আছে, যাদের দেখলেই মন নেচে উঠে বলতে থাকে, ‘হোথায় হব বনবাসী, কেউ কোত্থাও নেই’।
কিন্তু, চাইলেই কি আর সব পাওয়া যায় রে ভাই!
ওসব কটেজ এখনও চালুই হয়নি যে। অতএব মনের দুঃখে বনে যাওয়া ছাড়া আর কী বা করার আছে—যখন এই ভাবনা আসবে, ঠিক সেই আতান্তরে মুশকিল আসান হয়ে দাঁড়াবে মিচিলিংমা হোমস্টে। ছবির মতো সুন্দর ছিমছাম এক ছোট্ট বসতবাড়ি। সকাল-দুপুর-বিকেল-রাতে এক্কেবারে বাড়ির মতোই আরাম মাখিয়ে কাঁসার বাসনে করে গরমাগরম যত্ন পরিবেশিত হয় এখানে। বাগানে দোলনা আছে, ঝিঙে-স্কোয়াশ আছে, প্যাঁকপেঁকে হাঁসের দল আছে, আর আছে মনকেমন করা পাহাড়ের ডাক, পা বাড়ালেই।
দলগাঁও ভ্রমণে এইসব ছোট্ট ছোট্ট হোমস্টেই ভরসা আপাতত, তাই হুট বলতে ছুট দেওয়ার আগে এদের সঙ্গে একটু যোগাযোগ করে গেলে আরাম-আয়েসের দুশ্চিন্তাটা ব্যাগের সঙ্গে বইতে হয় না!
শনিবারের বারবেলায় শীতের শিরশিরানি মেখে দলগাঁও পৌঁছে ইতিউতি হাঁটাহাঁটি আর ঝুপ করে নেমে আসা সন্ধ্যাযাপন (পারলে একবার ভিউ পয়েন্ট পায়ে হেঁটে ঘুরে আসাই যায়, ফেরার পথটা জোনাকিদের বিরলসঙ্গ মন দোলাবেই, পাক্কা!)।
পরদিন ভোররোদ্দুর বাজি রেখে পায়ে পায়ে ভিউপয়েন্ট। সে এক অবর্ণনীয় ছবি, আহা! সিঙ্কোনা খেতের পাশটি ঘেঁষা পাথুরে পিরিতিপথ পৌঁছে দেবে এমন এক চিলতে পাহাড়িরোয়াকে, যেখান থেকে একশো আশি ডিগ্রি কোণ জুড়ে দেখা মিলবে বহু নীচে বয়ে চলা সাদা সফেদ ফিতের মতো জলঢাকা নদীটির। ভিউ পয়েন্টের বাঁ দিক থেকে আঁকাবাঁকা খাঁজ এঁকে সে স্বচ্ছতোয়া ঝিরিঝিরি বইছে ঝালং হয়ে বিন্দু ছুঁয়ে ভুটান সীমানায়। কেবল পাখি আর নদীজলের হালকা শব্দ রাজি ছাড়া এ চরাচর যেন মৌন হয়ে দাঁড়িয়েছে এখানে নবীন ভঙ্গিল হিমালয়ের সবুজ ঢেউ দেখতে।
দাঁড়ানো যাক তার পাশে। চারদিকে সমুদ্রসফেন জীবনের আঁচ জুড়িয়ে আসবে এই ভোরাই শান্তিনীড়ে। এবার চলো মুসাফির— ফের হোম স্টে, স্নান-খাওয়া-গোছগাছ।
সময় ফুরোয়।
মন ফুরোয় কই!
তাই ফেরার পথে ঝাঁ ঝাঁ রোদ্দুরের তোয়াক্কা না করেও আরও একবার ভিউ পয়েন্ট!
নীচে নামতে নামতে রবার বাগানে ফিসফিসানি চলে—‘আবার আসিব ফিরে’।
রবিবারের রাত পুইয়ে ফিরতি ট্রেন বা বাস কেজো সোমের ভোর পৌঁছে দেয় যার যার বাসায়।
পাখি আবার ডানা ঝটপটায়।
উড়ান যে তার ভবিতব্য!
শিয়ালদহ থেকে কাঞ্চনকন্যা, দার্জিলিঙ মেইল, পদাতিক, উত্তরবঙ্গ ইত্যাদি যেকোনও ট্রেনে নিউ জলপাইগুড়ি/ শিলিগুড়ি। সেখান থেকে সড়কপথে ঘণ্টা তিনেক। মালবাজার চালসা পেরিয়ে খুনিয়া মোড়ের বাঁহাতি পথ ধরে চাপড়ামারির বনকে রাস্তার দু’পাশে রেখে সোজা চলতে হবে। গৈরিবাসের মোড় এলে ধরতে হবে বাঁহাতি পথ, যে পথ রঙ্গোগামী, সে পথ পেরিয়েই আমাদের গন্তব্য দলগাঁও।
মিচিলিংমা হোম স্টে, ফোন : +৯১ ৯১৩৪২৩২৮৮৬
দলগাঁও গভর্নমেন্ট ইপিক্যাক প্ল্যানটেশন, থানা-ঝালদা, কালিম্পং৷
যোগাযোগ: ৯৪৭৪১০২০৬৮
হোয়াটস অ্যাপ: ৮১৪৫৫৬১৬৬৫
বাইরে দূরে
লেখা পাঠানোর নিয়ম : এই বিভাগে পাঠকদের সঙ্গে আপনার সেরা ভ্রমণ অভিজ্ঞতার কাহিনি ভাগ করে নিতে পারেন। ভ্রমণ কাহিনি লিখতে হবে ১০০০ শব্দের মধ্যে ইউনিকোড ফরম্যাটে। সঙ্গে বেশ কিছু ছবি ও ছোট ছোট ভিডিও ক্লিপ পাঠাতে হবে। ছবি ও ভিডিও ক্লিপ লেখকেরই তোলা হতে হবে। ওয়াটারমার্ক থাকা চলবে না। ইমেল : samayupdatesin.writeus@gmail.com