একটি জৈন মন্দিরের সন্ধান পাওয়া যায়। সেই জৈন মন্দিরের মধ্যে আদিনাথের ব্রোঞ্জ নির্মিত মূর্তি, তার ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যাচ্ছে। মহানদী তীরে এই মন্দিরটি অবস্থিত। মহানদীর তীরে একটি বিশাল প্রান্তর জুড়ে রয়েছে একটি প্রাচীন বাজারের ধ্বংসাবশেষ। সেই ধ্বংসাবশেষ দেখলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন সেই সময় কী করে নির্মিত হয়েছিল ওই অঞ্চল।
নদীর সঙ্গে সংযোগ রেখে নৌকা, ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্যবসায়ীদের থাকার জায়গা, জিনিসপত্র সংরক্ষণ করার জন্য গোডাউন, এমনকি নদীর থেকে জল এনে কীভাবে তাকে প্রতিদিনের কাজে ব্যবহার করা যায় অর্থাৎ ড্রেনেজ সিস্টেমের চমৎকার ধ্বংসাবশেষ। যতটুকু পাওয়া যায় তা থেকে আপনি অনেক কিছুর সাক্ষ্য পাবেন। এবং এখানেও আদি জৈন মন্দিরের নিদর্শন রয়েছে। শিরপুর শান্তিতে কাটানোর জন্য একটি রাত কিংবা দুটি রাত যথেষ্ট।
নদীর সঙ্গে সংযোগ রেখে নৌকা, ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্যবসায়ীদের থাকার জায়গা, জিনিসপত্র সংরক্ষণ করার জন্য গোডাউন, এমনকি নদীর থেকে জল এনে কীভাবে তাকে প্রতিদিনের কাজে ব্যবহার করা যায় অর্থাৎ ড্রেনেজ সিস্টেমের চমৎকার ধ্বংসাবশেষ। যতটুকু পাওয়া যায় তা থেকে আপনি অনেক কিছুর সাক্ষ্য পাবেন। এবং এখানেও আদি জৈন মন্দিরের নিদর্শন রয়েছে। শিরপুর শান্তিতে কাটানোর জন্য একটি রাত কিংবা দুটি রাত যথেষ্ট।
কিন্তু আপনি যখন শিরপুরে পর্যটক হিসেবে যাচ্ছেন, আপনার সঙ্গে যদি বয়স্ক মানুষ, অসুস্থ মানুষ কিংবা যেকোনও সমস্যায় পরতে পারেন এমন কোনও মানুষ থাকেন তাহলে সঙ্গে ওষুধ ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখবেন। কারণ শিরপুর থেকে মোটামুটি ৬০ কিলোমিটার না গেলে কোন চিকিৎসালয় পাবেন না। একটি প্রাইমারি হেলথ সেন্টার আছে। সপ্তাহে তিন দিন খোলে, বেলা দুটোর সময় বন্ধ হয়ে যায়। একটি ওষুধের দোকান আছে। ওষুধের দোকানটি প্রথমে চালাতেন একজন বাঙালি ডাক্তার, তিনি মারা গিয়েছেন, এখন তার ছেলেরা সেই দোকানটি চালায়। তাদের চিকিৎসাশাস্ত্রে সে রকম কোনও জ্ঞান নেই। কিন্তু অভ্যাসবশত ওষুধ দিয়ে থাকেন লোকজনকে। যে গাইড আমাকে সব জায়গা গুলো ঘুরিয়ে দেখাচ্ছিলো কৌতূহল বশত তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম ‘রাতবিরেতে কিছু হলে?’ বলল, ‘ভগবান ভরসায় থাকতে হয়। পরদিন সকাল না হলে তো মহাসমুন্দ বা রায়পুরে নিয়ে যাওয়া যাবে না, আপনাদের মতো বাঙালি বাবুর ছেলেরা যারা কম্পাউন্ডার তাদের ওষুধ খেয়ে জীবন কাটাতে হয়।’
আরও পড়ুন:
চেনা দেশ অচেনা পথ, পর্ব-৯: মন্দির হয়ে বৌদ্ধবিহার
ড. অর্ঘ্যকুসুম দাস, অধ্যাপক ও গবেষক, আলাস্কা, পর্ব-৯: আগে তো প্রাণে বাঁচি, তার পরে না হয় বিমার নিয়ম কানুনের কথা ভাবা যাবে
জ্যোতির্লিঙ্গ যাত্রাপথে, পর্ব-৪: কাশীর পথে-ঘাটে
জিজ্ঞাসা করলাম ‘কোভিডের সময় ?’
বলল, ‘মালুম নেহি পায়া ম্যাডাম! লেকিন বুখার তো বহত লোগো কো আয়া ওর মর ভি গায়া। এইসা তো হর রোজ হোতা হে করোনা ইয়া না করোনা।’
এত সুন্দর একটি আর্কিওলজিক্যাল সাইট, পুরাতত্ত্ব বিভাগ সাইটগুলোরও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ করে না। প্রশিক্ষিত গাইড দু’ চারজন আছে। কেবলমাত্র লক্ষ্মণ মন্দিরে আপনি পুরাতত্ত্ব বিভাগের কাজ দেখতে পাবেন। সবচেয়ে বড় মুশকিল শিরপুরকে কেন্দ্র করে আপনাকে ঘুরতে হলে খুব সামান্য সাধনকে সঙ্গে নিয়ে থাকতে হবে।
এত সমস্ত পুরাতত্ত্বিক নিদর্শন এর পাশাপাশি চারদিকে অরণ্য দিয়ে ঘেরা ঠাকুর ক্ষত্রিয় সমাজ মন্দির শিরপুরের উল্লেখযোগ্য মন্দির। এটি একটি মন্দির চত্বর, মূল মন্দিরটি ভগবান পরশুরামের, যে মন্দিরটি এখনো রক্ষিত। যেহেতু এটি ক্ষত্রিয় জাতের লোকেদের দ্বারা নির্মিত সেই জন্য এই মন্দিরটিকে ঠাকুর ক্ষত্রিয় মন্দির বলা হয় এবং মহানদীর পাড়ে অবস্থিত। শীতলা মন্দির এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। বাঙালিরা শীতলা দেবীকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা ভক্তি করেন, এখানে শীতলা দেবী মা দুর্গার একটি রূপ রূপে পূজিত হন।
বলল, ‘মালুম নেহি পায়া ম্যাডাম! লেকিন বুখার তো বহত লোগো কো আয়া ওর মর ভি গায়া। এইসা তো হর রোজ হোতা হে করোনা ইয়া না করোনা।’
এত সুন্দর একটি আর্কিওলজিক্যাল সাইট, পুরাতত্ত্ব বিভাগ সাইটগুলোরও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ করে না। প্রশিক্ষিত গাইড দু’ চারজন আছে। কেবলমাত্র লক্ষ্মণ মন্দিরে আপনি পুরাতত্ত্ব বিভাগের কাজ দেখতে পাবেন। সবচেয়ে বড় মুশকিল শিরপুরকে কেন্দ্র করে আপনাকে ঘুরতে হলে খুব সামান্য সাধনকে সঙ্গে নিয়ে থাকতে হবে।
এত সমস্ত পুরাতত্ত্বিক নিদর্শন এর পাশাপাশি চারদিকে অরণ্য দিয়ে ঘেরা ঠাকুর ক্ষত্রিয় সমাজ মন্দির শিরপুরের উল্লেখযোগ্য মন্দির। এটি একটি মন্দির চত্বর, মূল মন্দিরটি ভগবান পরশুরামের, যে মন্দিরটি এখনো রক্ষিত। যেহেতু এটি ক্ষত্রিয় জাতের লোকেদের দ্বারা নির্মিত সেই জন্য এই মন্দিরটিকে ঠাকুর ক্ষত্রিয় মন্দির বলা হয় এবং মহানদীর পাড়ে অবস্থিত। শীতলা মন্দির এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। বাঙালিরা শীতলা দেবীকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা ভক্তি করেন, এখানে শীতলা দেবী মা দুর্গার একটি রূপ রূপে পূজিত হন।
আরও পড়ুন:
ডায়েট টিপস, হেলদি ডায়েট: রোজ টক দই খাচ্ছেন? খাওয়ার আগে কোন বিষয়গুলি অবশ্যই মাথায় রাখবেন
অমিতাভের সঙ্গে কাজ করতে রাজি হওয়ায় অনেকেই জয়াকে ‘উন্মাদ’ বলেছিলেন!
পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-১: শচীন ও মীরা দেব বর্মনের ঘর আলো করে এল এক ‘দেব শিশু’
আপনি শিরপুরে এসেছেন আর বারনোয়াপাড়া সংরক্ষিত অভয়ারণ্যে যাবেন না তাতো আর হয় না। ‘জঙ্গল বুক’ আবার লেখা হলে নিশ্চয়ই বারনোয়ায়পাড়ার কথা রুইয়ার্ড কিপলিং লিখতেন। এই বনাঞ্চল এখনো আনএক্সপ্লোরড। বারনোয়াপাড়া জঙ্গলের কোর এলাকায় প্রবেশ করলে প্রকৃতির সৌন্দর্যের ম্যাজিকে আপনি মুগ্ধ হয়ে যাবেন। জঙ্গলের মাঝখান দিয়ে সূর্যের আলো কখনও স্পষ্ট কখনও অস্পষ্ট, ফ্যাসিনেটিং পৃষ্ঠভূমি। এবং আপনি দেখা পান বা না পান বন্যরক্ষকেরা বলতে থাকবে ম্যাজেস্টিক অ্যানিমেল-এর কথা এবং অপূর্ব চিত্রগ্রহণের জন্য অসাধারণ একটি জায়গা হচ্ছে বারনোয়াপাড়া। আপনাকে মন্ত্রমুগ্ধ করবেই। বারনোয়াপাড়া মূলত নানা ধরনের উদ্ভিদ, উদ্ভিদ বলা ভুল নানা ধরনের গাছ এবং নানা ধরনের পশু পাখির জন্য বিখ্যাত।
আরও পড়ুন:
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-২৬: যিনি নিরূপমা তিনিই ‘অনুপমা’
পর্দার আড়ালে, পর্ব-২৮: সপ্তপদী: মূল কাহিনিতে দুই ভিন্ন ধর্মাবলম্বী পুরুষ ও নারীর ভালোবাসার মধ্যে মিলন রাখেননি তারাশঙ্কর
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৫৪: ঠাকুরবাড়িতে দোলে আসত নাচিয়ে, নাচের তালে তালে হত আবিরের আলপনা
এ অঞ্চলের সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় বাঁশ গাছ। তাছাড়া শাল, সেগুন, মহুয়া, বেত, শিমুল, অজস্র কুল গাছ। আর যে ধরনের বন্যপ্রাণী পাওয়া যায় তার মধ্যে রয়েছে বাঘ, ভাল্লুক, শেয়াল, চিতা, চিংকারা, জংলি বিড়াল, বার্কিং ডিয়ার, অজস্র বাদর, বাইসন, চিতল হরিণ, সম্বর, নীল গাই, নানা ধরনের হরিণ, পাইথন কোবরা আর অজস্র পাখির সমাবেশ। আপনারা যারা পাখি দেখতে ভালোবাসেন বা ছবি তুলতে ভালোবাসেন তাদের জীবনে একবার অন্তত বারনোয়াপাড়া আসা অবশ্যই দরকার। বারনোয়াপাড়ায় একটা রাত কাটাতে পারলে মন্দ হয় কী? একেবারেই মন্দ নয়। বারনোয়াপাড়ায় থাকার জন্য ছত্তিশগড় ট্যুরিজমের নিজস্ব ব্যবস্থাপনা আছে।
এছাড়াও চাইলে আপনি মহাসমুন্দ ডিস্ট্রিক্টে কোনও হোটেল বা রেস্টুরেন্টে থাকতে পারেন। ছত্রিশগড় ট্যুরিজমের মোহদা ইকো রিসোর্ট অপূর্ব তার অবস্থান। জঙ্গলের মধ্যে, পাশ দিয়ে তির তির করে বইছে ঝোরা। হয়তো যখন আপনি সেই অতিথি নিবাসের অতিথি, আর কেউ নেই দু-একজন কর্মী, শুধু আপনি এবং অরণ্যের স্তব্ধতা। অসম্ভব সুন্দর। নভেম্বর থেকে জুন এই সময়টাই খোলা থাকে, মূলত ১৬ অক্টোবরের পর থেকে খুলে যায়। বারনোয়াপাড়া ছত্রিশগড় সরকারের আরেকটি প্রচেষ্টা, যেখানে আমরা দেখতে পাই ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারিকে যথার্থভাবে কীভাবে বজায় রাখা যায়। ইকো ট্যুরিজমের অনবদ্য উদাহরণ। ট্যুরিস্ট যাচ্ছে ট্যুরিস্ট আসছ্ কিন্তু অন্যান্য স্যাংচুয়ারি গুলিতে যে ধরনের ব্যবস্থাপনা তার থেকে একটু কম ব্যবস্থাপনা থাকায় ট্যুরিস্টের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। এবং সেজন্য একদিকে শাপে বর কারণ তার জন্যই এই স্যাংচুয়ারি ইকো ট্যুরিজমের সর্বোত্তম উদাহরণ হতে পেরেছে।—চলবে
ছবি: লেখিকা
ছবি: লেখিকা
* চেনা দেশ অচেনা পথ (Travel Offbeat): লেখক— অর্পিতা ভট্টাচার্য (Arpita Bhattacharya), অধ্যাপিকা, বাংলা বিভাগ, লেডি ব্রেবোর্ন কলেজ। শৈলীবিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছেন। বর্তমান আগ্রহ ও কাজ ভ্রমণ-সাহিত্য, ইকো-ট্যুরিজম, কালচার ট্যুরিজম, স্মৃতিকথা নিয়ে। এছাড়াও মুক্তগদ্য চর্চা ভালো লাগার জায়গা। এখন পর্যন্ত প্রকাশিত ৫টি গ্রন্থ এবং ৫০ টিরও বেশি প্রবন্ধ। সম্পাদনা করেছেন একটি বই এবং ধারাবাহিক সম্পাদনা করেন রবীন্দ্রনাথ টেগোর অ্যাডভান্সড রিসার্চ সেন্টারের জার্নাল।
বাইরে দূরে
লেখা পাঠানোর নিয়ম: এই বিভাগে পাঠকদের সঙ্গে আপনার সেরা ভ্রমণ অভিজ্ঞতার কাহিনি ভাগ করে নিতে পারেন। ভ্রমণ কাহিনি লিখতে হবে ১০০০ শব্দের মধ্যে ইউনিকোড ফরম্যাটে। লেখার সঙ্গে বেশ কিছু ছবি পাঠাতে হবে। চাইলে ভিডিও ক্লিপও পাঠাতে পারেন। ছবি ও ভিডিও ক্লিপ লেখকেরই তোলা হতে হবে। ওয়াটারমার্ক থাকা চলবে না। ইমেল: samayupdatesin.writeus@gmail.com