হোলিহিল গির্জা, মিলওয়াকি।
‘যাব না আজ ঘরে রে ভাই যাব না আজ ঘরে,
আকাশ ভেঙে বাহিরকে আজ নেব রে লুট করে।’
শরৎকাল পড়লে যাদের এমন বাহিরকে লুট করে নেওয়ার ইচ্ছা হয় সেই তালিকায় নিঃসন্দেহে আমার নাম যোগ করে নেওয়া যায়। তা সে আমার সোনার বাংলায় শারদ প্রাতে নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলায় ভেসেই হোক, অথবা পৃথিবীর এই প্রান্তে উজ্জ্বল লাল হলুদে মোড়া গাছগাছালির মধ্যে দিয়ে গাড়িতে চেপেই হোক; শরৎ মানেই বাইরে বেরোনোর পালা। আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপশ্চিমের এই অঞ্চলে এরপরেই যাতায়াত, বাইরে বেরোনো, ঘুরতে যাওয়া, সবই কমে যায় তুষারপাত এবং ঠান্ডার কারণে। কাজেই শীতঘুম দেওয়ার আগে এই একমাত্র সুযোগ বাহিরকে লুট করে নেওয়ার। আর সেই সূত্রে, এই লেখাটিকে বলা যেতে পারে আমার আগের ‘তুষারপাতের দৈনন্দিন’-শীর্ষক পোস্টগুলির পরিপূরক।
আকাশ ভেঙে বাহিরকে আজ নেব রে লুট করে।’
শরৎকাল পড়লে যাদের এমন বাহিরকে লুট করে নেওয়ার ইচ্ছা হয় সেই তালিকায় নিঃসন্দেহে আমার নাম যোগ করে নেওয়া যায়। তা সে আমার সোনার বাংলায় শারদ প্রাতে নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলায় ভেসেই হোক, অথবা পৃথিবীর এই প্রান্তে উজ্জ্বল লাল হলুদে মোড়া গাছগাছালির মধ্যে দিয়ে গাড়িতে চেপেই হোক; শরৎ মানেই বাইরে বেরোনোর পালা। আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপশ্চিমের এই অঞ্চলে এরপরেই যাতায়াত, বাইরে বেরোনো, ঘুরতে যাওয়া, সবই কমে যায় তুষারপাত এবং ঠান্ডার কারণে। কাজেই শীতঘুম দেওয়ার আগে এই একমাত্র সুযোগ বাহিরকে লুট করে নেওয়ার। আর সেই সূত্রে, এই লেখাটিকে বলা যেতে পারে আমার আগের ‘তুষারপাতের দৈনন্দিন’-শীর্ষক পোস্টগুলির পরিপূরক।
হোয়াইট ওয়াটার লেক।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য পশ্চিম প্রান্তে উইসকনসিনে ফল কালারের রূপ মাধুরীর কথা শুনেছিলাম আগেই। তাই এই অঞ্চলে যখন প্রথম চাকরি নিয়ে এলাম তখন থেকেই মনের মধ্যে তা দেখার ইচ্ছা ছিল। আর সত্যি কথা বলতে, ইউনিভার্সিটি অফ উইসকনসিনে অধ্যাপনার এই চাকরিটি গ্রহণ করার পেছনে কিছুটা হলেও এই অনুপ্রেরণাটিও কাজ করেছিল। এখানে প্রতি বছর ফল কালার এলেই আমি বেরিয়ে পড়ি গাড়ি নিয়ে। সারা রাজ্য এদিক থেকে ওদিক ঘুরে বেড়াই রঙের খোঁজে। আর যখন গাড়ি চালাতে চালাতে সামনে দেখি হঠাৎ একটা পাহাড় পুরো হলুদ রঙে ঢাকা, অথবা রাস্তার ধারে বয়ে চলা নদীর দুপ্রান্ত ঢেকে গেছে লাল হলুদ রঙে, বা হয়তো হঠাৎ একটা হ্রদে দেখি সেই রঙের প্রতিফলন; তখন মনের মধ্যে যে প্রসন্নতা আসে তার সঙ্গে পার্থিব কোনও কিছুরই তুলনা করা যায় না।
প্রথমেই এই অঞ্চলের ফল কালার সম্পর্কে একটু বলে নিই। ফল কালারের অর্থ বোঝানোর সবচেয়ে সহজ রাস্তা কবিগুরুর শরণাপন্ন হওয়া: ‘আমলকী বন কাঁপে যেন তার বুক করে দুরু দুরু, পেয়েছে খবর পাতা খসানোর সময় হয়েছে শুরু৷’ শীতের আগে সমস্ত সবুজ পাতা শুকিয়ে গিয়ে লাল হলুদ রঙে রেঙে ওঠে। বলা যেতে পারে ঝরে যাওয়ার আগে যেন জীবনের সমস্ত রংকে উপভোগ করে নেওয়ার এক অপূর্ব প্রয়াস। এখানে গাছে রং ধরা শুরু হয় অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে। রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণে সেই রং ধীরে ধীরে অভিপ্রয়াণ (মাইগ্রেট) করে। অর্থাৎ উত্তরের অঞ্চলগুলিতে প্রথম রং ধরে। তারপর সেখান থেকে ধীরে ধীরে আসতে থাকে দক্ষিণের দিকে।
হোলিহিল গির্জা, মিলওয়াকি
এক একটি অঞ্চলে এই রং থাকে এক কি বড়জোর দুই সপ্তাহ। তারপরেই ঝরে যায় সমস্ত পাতা। পর্ণমোচী যেসব গাছে রং আসে তাদের মধ্যে অন্যতম হল বার্চ, এস্পেন, সাইপ্রেস এবং ম্যাপেল। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য-পশ্চিমের এই অঞ্চলে প্রথম তিন ধরনের গাছের বিপুল সমারোহ। আর সেই সূত্রে অক্টোবর পড়তে না পড়তেই প্রকৃতি সেজে ওঠে লালহলুদ রঙে।—চলবে
* ভ্রমণ: ফল কালারের রূপ-মাধুরী (Wisconsin Fall Color Travel) : ড. অর্ঘ্যকুসুম দাস (Arghya Kusum Das) অধ্যাপক ও গবেষক, কম্পিউটার সায়েন্স, ইউনিভার্সিটি অব আলাস্কা ফেয়ারব্যাঙ্কস।
* ভ্রমণ: ফল কালারের রূপ-মাধুরী (Wisconsin Fall Color Travel) : ড. অর্ঘ্যকুসুম দাস (Arghya Kusum Das) অধ্যাপক ও গবেষক, কম্পিউটার সায়েন্স, ইউনিভার্সিটি অব আলাস্কা ফেয়ারব্যাঙ্কস।
বাইরে দূরে
লেখা পাঠানোর নিয়ম: এই বিভাগে পাঠকদের সঙ্গে আপনার সেরা ভ্রমণ অভিজ্ঞতার কাহিনি ভাগ করে নিতে পারেন। ভ্রমণ কাহিনি লিখতে হবে ১০০০ শব্দের মধ্যে ইউনিকোড ফরম্যাটে। লেখার সঙ্গে বেশ কিছু ছবি পাঠাতে হবে। চাইলে ভিডিও ক্লিপও পাঠাতে পারেন। ছবি ও ভিডিও ক্লিপ লেখকেরই তোলা হতে হবে। ওয়াটারমার্ক থাকা চলবে না। ইমেল: samayupdatesin.writeus@gmail.com