গগনেন্দ্রনাথ ও প্রমোদকুমারী। দু' পাশে দু' বোন, সুনয়নী ও বিনয়িনী ।
গুণেন্দ্রনাথ ছিলেন আর্টিস্ট মানুষ। বড় অকালে, মাত্র চৌত্রিশে মারা গিয়েছিলেন তিনি। তাঁর চার পুত্রের সর্বকনিষ্ঠ কুমারেন্দ্রনাথ স্বল্পায়ু, শৈশবেই মৃত্যু হয় তাঁর। সকলের চেয়ে ছোট এই ভাইটির ‘বড়ো মায়াবী মুখখানি’-র স্মৃতি অবনীন্দ্রনাথের মনে জীবনভর জেগেছিল। গুণেন্দ্রনাথের তিন পুত্র গগনেন্দ্রনাথ, সমরেন্দ্রনাথ ও অবনীন্দ্রনাথ অনুসরণ করেছিলেন পিতাকে। মন দিয়েছিলেন ছবি আঁকায়। গগনেন্দ্রনাথ ও অবনীন্দ্রনাথের আর্টিস্ট-খ্যাতি শুধু দেশের মধ্যে নয়, দেশের বাইরেও বিস্তৃত। এই তিন শিল্পীর জীবনসঙ্গিনী যথাক্রমে প্রমোদকুমারী, নিশিবালা ও সুহাসিনী। প্রমোদকুমারী এলাহাবাদের মেয়ে, যদিও তাঁদের আদি বাড়ি ছিল কলকাতার চোরবাগানে। নিশিবালা ছিলেন পাথুরিয়াঘাটার মেয়ে, প্রসন্নকুমার ঠাকুরের দৌহিত্র-কন্যা। নিশিবালার জেঠতুতো বোন সুহাসিনীর সঙ্গে বিবাহ হয় অবনীন্দ্রনাথের। প্রমোদকুমারীরা ছিলেন ছয় বোন, পাঁচজনেরই বিবাহ হয়েছিল ঠাকুরপরিবারে।
গুণেন্দ্রনাথ ও সৌদামিনীর পরিবারে, পাঁচ নম্বর বাড়িতে বধূ হয়ে আসা এই তিন কন্যার মধ্যে প্রমোদকুমারী ছিলেন একেবারে অন্যরকম। এমন সাহসিনী সচরাচর দেখা যায় না।
অভিনয়ে প্রমোদকুমারীর আগ্রহ ছিল। ‘রত্নাবলী’ নাটকে একবার রানি সেজেছিলেন। রন্ধনে পারদর্শিতা ছিল প্রশ্নাতীত। তাঁর কন্যা পূর্ণিমা ‘ঠাকুরবাড়ির গগন ঠাকুর’ নামে একটি বই লিখেছিলেন। সে বইতে ঘুরে ফিরে এসেছে মায়ের কথা। নানাজনের থেকে প্রমোদকুমারী রান্না শিখেছিলেন। করতে পারতেন রকমারি আচার। লেবুর, কুলের আমের, তেতুলের নানারকমের আচার। আত্মীয়কুটুম্বরা বাড়িতে এলে হাতে-কলমে রীতিমতো রান্নার পাঠ নিতেন। ওলের ডালনা, মাংসের কাবাব, কুচো চিংড়ির অম্বল—বিচিত্র সব ব্যঞ্জন। বিচিত্র ব্যঞ্জন রেঁধে, খাইয়ে প্রমোদকুমারী বড় আনন্দ পেতেন। কন্যা পূর্ণিমার লেখায় আছে, ‘একবার খেতে চাইলেই হত। না খাইয়ে আর থাকতে পারতেন না। বয়স হলে ঘোরাঘুরি করতে পারতেন না। তখনও জোগাড় করে দিলে চেয়ারে বসে বসেই রাঁধতেন, কাউকে হাত দিতে দিতেন না।’
কথায় বলে যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে। প্রমোদকুমারী রাঁধতেন, আর সত্যি সত্যি চুলও বাঁধতেন! এ দুটিই ছিল তাঁর প্রিয় শখ। বাড়ির মেয়েবউরা সবাই এসে ভিড় করত। তেতলার খোলা বারান্দায় চলত চুলবাঁধা-পর্ব। মেয়েবউদের পাশে বসিয়ে তাঁদের চুল বেঁধে, দিতেন খোঁপা বেঁধে । মেয়েবউদের সঙ্গে দাসীরাও আসত। দাসীরা নিয়ে আসত চুল বাঁধার সরঞ্জাম। আয়না, চিরুনি, কাঁটা মাথার তেল, আরও কত কী! প্রমোদকুমারী পিঁড়িতে বসে থাকতেন, সামনে আরেকটি পিঁড়ি। সে-পিঁড়িতে একে একে মেয়েবউরা বসত। দাসীরা চিরুনি-তেল-কাঁটা সব এগিয়ে দিত। বড় যত্নে খোঁপা বাঁধতেন প্রমোদকুমারী। রাঁধা ও চুল বাঁধা দু’ক্ষেত্রেই প্রমোদকুমারীর পরিবারে বাড়তি খ্যাতি ছিল।
বাড়ির কেউ অসুস্থ হলে, বলতে হত না তাঁকে। অসুস্থজনের সেবা-শুশ্রূষা করার কাজে প্রমোদকুমারী সবার আগে এগিয়ে যেতেন। শুধু নিজের পরিবারের নয়, চেনাজানা কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি উতলা হতেন। কপালে জলপটি, ওষুধ খাওয়ানো, পথ্য খাওয়ানো, এমনকী রাত জেগে রোগীর শিয়রে বসে থাকতেন। অসুস্থ মানুষ সুস্থ হয়ে উঠলে প্রমোদকুমারীর মুখ খুশিতে ঝলমলিয়ে উঠত। সেবা-শুশ্রূষা করেই তাঁর ছিল যত আনন্দ!
গগনেন্দ্রনাথ শেষ জীবন সুখে কাটেনি। কেটেছে দুর্বিষহ যন্ত্রণায়। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ। বাকরুদ্ধ হয়ে শয্যাশায়ী অবস্থায় আট বছর বেঁচে ছিলেন। তাঁর এই যন্ত্রণাময় দিনগুলিতে সারাক্ষণ পাশে থেকেছেন, সেবা-শুশ্রূষায় ভরিয়ে তুলেছেন প্রমোদকুমারী। মোহনলাল লিখেছেন, ‘গগনেন্দ্র যখন পরিণত বয়সে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন, তখন তাঁর সেবা প্রমোদকুমারী দিবারাত্র করে গেছেন। কেউ কখনও তাঁকে অবসন্ন হতে দেখেনি।’
অবনীন্দ্রনাথের দৌহিত্র মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায় গগনেন্দ্রনাথকে নিয়ে একটি বই লিখেছিলেন। সে বইতে আছে, ‘প্রমোদকুমারী যখন ঠাকুরবাড়িতে প্রবেশ করেছেন, ছিলেন প্রায় ‘রাজরানি’র মতো, কিন্তু নিজের হাতে অনেক কিছুই করতেন। রান্না আর সেবার কথা বলছি। এছাড়াও নিজের কাপড় নিজে কেচেছেন সব সময়। আর নিজের কাজ প্রায় সব কিছু। কোনো ক্লান্তি ছিল না। এ অভ্যেস আজীবন ছিল। বৃদ্ধ, অশক্ত, রোগাপন্ন হয়েছেন, তবুও এ অভ্যেস ছাড়েননি।’
প্রমোদকুমারীর সাহস ছিল ভীষণ রকমের। পরিবারজীবনে কত বিপর্যয় এসেছে, কখনওই ভেঙে পড়েননি। মোহনলালের তো মনেই হয়েছে, ‘শুধু মেয়েদেরই বা কেন, পুরুষদের অনেকের চেয়ে তিনি বেশি সাহসী ছিলেন।… যাঁরা ভীরু, তাঁরা প্রমোদকুমারীর কাছে এসে আশ্বাস, সাহস, আত্মনির্ভরতা সঞ্চয় করে যেতেন।’ তিনি কতখানি সাহসিনী ছিলেন প্রতিদিনের নানা ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে উঠত। সেবার কলকাতায় ভূমিকম্প হয়। উৎপত্তিস্থল ছিল সুদূর জাপান। কলকাতাতেও বেশ ভালো রকমের রেশ লক্ষ করা গিয়েছিল। মধ্যরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায় সকলের। দরজা-জানলায় শব্দ, দুলছে এটা-সেটা, এমনকী দুলছে সিঁড়িও। ভয় পেয়ে সবাই তড়বড় করে সেই দুলন্ত সিঁড়ি দিয়েই নামতে থাকেন! দ্রুত-পায়ে সিঁড়ি দিয়ে কোনওরকমে নেমে সোজা বাগানে। বাগানের আমগাছও হঠাৎ কেঁপে ওঠে। পাখিদের ডাকাডাকি, কাকদের তারস্বরে কা-কা, অন্ধকার আকাশে দিশেহারা হয়ে তারা উড়তে থাকে। ভয়ে সবাই জড়ো হয়েছিল বাড়ির বাগানে। সেই ভয়-ভিড়ে প্রমোদকুমারীকে কেউ দেখেননি। মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘পরে শুনেছিলুম একমাত্র প্রমোদকুমারী নামেননি। একফোঁটা ভয় পাননি।’
গুণেন্দ্রনাথ ও সৌদামিনীর পরিবারে, পাঁচ নম্বর বাড়িতে বধূ হয়ে আসা এই তিন কন্যার মধ্যে প্রমোদকুমারী ছিলেন একেবারে অন্যরকম। এমন সাহসিনী সচরাচর দেখা যায় না।
অভিনয়ে প্রমোদকুমারীর আগ্রহ ছিল। ‘রত্নাবলী’ নাটকে একবার রানি সেজেছিলেন। রন্ধনে পারদর্শিতা ছিল প্রশ্নাতীত। তাঁর কন্যা পূর্ণিমা ‘ঠাকুরবাড়ির গগন ঠাকুর’ নামে একটি বই লিখেছিলেন। সে বইতে ঘুরে ফিরে এসেছে মায়ের কথা। নানাজনের থেকে প্রমোদকুমারী রান্না শিখেছিলেন। করতে পারতেন রকমারি আচার। লেবুর, কুলের আমের, তেতুলের নানারকমের আচার। আত্মীয়কুটুম্বরা বাড়িতে এলে হাতে-কলমে রীতিমতো রান্নার পাঠ নিতেন। ওলের ডালনা, মাংসের কাবাব, কুচো চিংড়ির অম্বল—বিচিত্র সব ব্যঞ্জন। বিচিত্র ব্যঞ্জন রেঁধে, খাইয়ে প্রমোদকুমারী বড় আনন্দ পেতেন। কন্যা পূর্ণিমার লেখায় আছে, ‘একবার খেতে চাইলেই হত। না খাইয়ে আর থাকতে পারতেন না। বয়স হলে ঘোরাঘুরি করতে পারতেন না। তখনও জোগাড় করে দিলে চেয়ারে বসে বসেই রাঁধতেন, কাউকে হাত দিতে দিতেন না।’
কথায় বলে যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে। প্রমোদকুমারী রাঁধতেন, আর সত্যি সত্যি চুলও বাঁধতেন! এ দুটিই ছিল তাঁর প্রিয় শখ। বাড়ির মেয়েবউরা সবাই এসে ভিড় করত। তেতলার খোলা বারান্দায় চলত চুলবাঁধা-পর্ব। মেয়েবউদের পাশে বসিয়ে তাঁদের চুল বেঁধে, দিতেন খোঁপা বেঁধে । মেয়েবউদের সঙ্গে দাসীরাও আসত। দাসীরা নিয়ে আসত চুল বাঁধার সরঞ্জাম। আয়না, চিরুনি, কাঁটা মাথার তেল, আরও কত কী! প্রমোদকুমারী পিঁড়িতে বসে থাকতেন, সামনে আরেকটি পিঁড়ি। সে-পিঁড়িতে একে একে মেয়েবউরা বসত। দাসীরা চিরুনি-তেল-কাঁটা সব এগিয়ে দিত। বড় যত্নে খোঁপা বাঁধতেন প্রমোদকুমারী। রাঁধা ও চুল বাঁধা দু’ক্ষেত্রেই প্রমোদকুমারীর পরিবারে বাড়তি খ্যাতি ছিল।
বাড়ির কেউ অসুস্থ হলে, বলতে হত না তাঁকে। অসুস্থজনের সেবা-শুশ্রূষা করার কাজে প্রমোদকুমারী সবার আগে এগিয়ে যেতেন। শুধু নিজের পরিবারের নয়, চেনাজানা কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি উতলা হতেন। কপালে জলপটি, ওষুধ খাওয়ানো, পথ্য খাওয়ানো, এমনকী রাত জেগে রোগীর শিয়রে বসে থাকতেন। অসুস্থ মানুষ সুস্থ হয়ে উঠলে প্রমোদকুমারীর মুখ খুশিতে ঝলমলিয়ে উঠত। সেবা-শুশ্রূষা করেই তাঁর ছিল যত আনন্দ!
গগনেন্দ্রনাথ শেষ জীবন সুখে কাটেনি। কেটেছে দুর্বিষহ যন্ত্রণায়। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ। বাকরুদ্ধ হয়ে শয্যাশায়ী অবস্থায় আট বছর বেঁচে ছিলেন। তাঁর এই যন্ত্রণাময় দিনগুলিতে সারাক্ষণ পাশে থেকেছেন, সেবা-শুশ্রূষায় ভরিয়ে তুলেছেন প্রমোদকুমারী। মোহনলাল লিখেছেন, ‘গগনেন্দ্র যখন পরিণত বয়সে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন, তখন তাঁর সেবা প্রমোদকুমারী দিবারাত্র করে গেছেন। কেউ কখনও তাঁকে অবসন্ন হতে দেখেনি।’
অবনীন্দ্রনাথের দৌহিত্র মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায় গগনেন্দ্রনাথকে নিয়ে একটি বই লিখেছিলেন। সে বইতে আছে, ‘প্রমোদকুমারী যখন ঠাকুরবাড়িতে প্রবেশ করেছেন, ছিলেন প্রায় ‘রাজরানি’র মতো, কিন্তু নিজের হাতে অনেক কিছুই করতেন। রান্না আর সেবার কথা বলছি। এছাড়াও নিজের কাপড় নিজে কেচেছেন সব সময়। আর নিজের কাজ প্রায় সব কিছু। কোনো ক্লান্তি ছিল না। এ অভ্যেস আজীবন ছিল। বৃদ্ধ, অশক্ত, রোগাপন্ন হয়েছেন, তবুও এ অভ্যেস ছাড়েননি।’
প্রমোদকুমারীর সাহস ছিল ভীষণ রকমের। পরিবারজীবনে কত বিপর্যয় এসেছে, কখনওই ভেঙে পড়েননি। মোহনলালের তো মনেই হয়েছে, ‘শুধু মেয়েদেরই বা কেন, পুরুষদের অনেকের চেয়ে তিনি বেশি সাহসী ছিলেন।… যাঁরা ভীরু, তাঁরা প্রমোদকুমারীর কাছে এসে আশ্বাস, সাহস, আত্মনির্ভরতা সঞ্চয় করে যেতেন।’ তিনি কতখানি সাহসিনী ছিলেন প্রতিদিনের নানা ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে উঠত। সেবার কলকাতায় ভূমিকম্প হয়। উৎপত্তিস্থল ছিল সুদূর জাপান। কলকাতাতেও বেশ ভালো রকমের রেশ লক্ষ করা গিয়েছিল। মধ্যরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায় সকলের। দরজা-জানলায় শব্দ, দুলছে এটা-সেটা, এমনকী দুলছে সিঁড়িও। ভয় পেয়ে সবাই তড়বড় করে সেই দুলন্ত সিঁড়ি দিয়েই নামতে থাকেন! দ্রুত-পায়ে সিঁড়ি দিয়ে কোনওরকমে নেমে সোজা বাগানে। বাগানের আমগাছও হঠাৎ কেঁপে ওঠে। পাখিদের ডাকাডাকি, কাকদের তারস্বরে কা-কা, অন্ধকার আকাশে দিশেহারা হয়ে তারা উড়তে থাকে। ভয়ে সবাই জড়ো হয়েছিল বাড়ির বাগানে। সেই ভয়-ভিড়ে প্রমোদকুমারীকে কেউ দেখেননি। মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘পরে শুনেছিলুম একমাত্র প্রমোদকুমারী নামেননি। একফোঁটা ভয় পাননি।’
মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায়।
অসীম সাহসিনী। বারবার সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। নিজে ভয় পাননি কখনও, অথচ অন্যকে ভয় পাইয়ে দিয়ে প্রমোদকুমারী খুব আনন্দ পেতেন। একবার মোহনলালকেই বেজায় রকমের ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন। কী রকম, একটু খুলে বলা যাক্। সন্ধে হয়ে গেছে। আলো জ্বেলে মোহনলাল পড়তে বসেছেন। পড়ার ঘরে বসে পড়ছেন, লিখছেন। হঠাৎই তাঁর মনে হল সিঁড়িতে কার পায়ের শব্দ! অকারণেই হিজিবিজি যত চিন্তা ভিড় করে মনের কোণে। সিঁড়ির পরে যে ঘরটি, সে ঘরটিকে সকলে বলে, ‘ঘড়ির ঘর’! সেই ঘরেই বছরের পর বছর ধরে রয়েছে দ্বারকানাথের সেই অদ্ভুতুড়ে ঘড়ি। কেউ মারা গেলেই সে-ঘড়ি বন্ধ হয়ে যায়। সেসব মনে পড়তে থাকে মোহনলালের। ফলে মনঃসংযোগ বিঘ্নিত হয়। তবু পড়ছেন, লিখছেন, আর মাঝেমধ্যেই হেঁচকি তুলছেন। হঠাৎ দেখা গেল প্রমোদাকুমারী সেই ঘড়িঘর পেরিয়ে সিঁড়ি দিয়ে উঠে আসছেন, এসে মোহনলালের পড়ার ঘরের দিকে তাকালেন। শুধু তাকালেন না, একটু দাঁড়ালেনও। বাজারে গিয়েছিলেন, ফিরলেন। ফেরার কথা জানিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘পড়ছিস বুঝি?’
মোহনলাল তখনও উত্তর দেননি। তার আগেই মুখ চোখ পাকিয়ে বইয়ের সেলফের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে উঠলেন, ‘ওটা কীরে?’ মোহনলাল শুনেই সঙ্গে সঙ্গে ভয় পেয়ে দিলেন এক লাফ! লাফিয়ে, শেষে তাকিয়ে দেখলেন। কোথাও কিচ্ছু নেই। প্রমোদকুমারীর মুখে হাসি, ফিক ফিক করে হেসে বললেন, ‘এত সহজে ভয় পেয়ে গেলি? যাক্, তোর হেঁচকি থামিয়ে দিয়েছি। এইটুকু পেরেছি!’
সত্যিই মোহনলালের হেঁচকি উত্তেজনায় ভয়ে থেমে গিয়েছিল।
ছবি : লেখক
* গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি (tagore-stories – Rabindranath Tagore) : পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Parthajit Gangopadhyay) অবনীন্দ্রনাথের শিশুসাহিত্যে ডক্টরেট। বাংলা ছড়ার বিবর্তন নিয়ে গবেষণা, ডি-লিট অর্জন। শিশুসাহিত্য নিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে গবেষণা করে চলেছেন। বাংলা সাহিত্যের বহু হারানো সম্পদ পুনরুদ্ধার করেছেন। ছোটদের জন্য পঞ্চাশটিরও বেশি বই লিখেছেন। সম্পাদিত বই একশোরও বেশি।
মোহনলাল তখনও উত্তর দেননি। তার আগেই মুখ চোখ পাকিয়ে বইয়ের সেলফের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে উঠলেন, ‘ওটা কীরে?’ মোহনলাল শুনেই সঙ্গে সঙ্গে ভয় পেয়ে দিলেন এক লাফ! লাফিয়ে, শেষে তাকিয়ে দেখলেন। কোথাও কিচ্ছু নেই। প্রমোদকুমারীর মুখে হাসি, ফিক ফিক করে হেসে বললেন, ‘এত সহজে ভয় পেয়ে গেলি? যাক্, তোর হেঁচকি থামিয়ে দিয়েছি। এইটুকু পেরেছি!’
সত্যিই মোহনলালের হেঁচকি উত্তেজনায় ভয়ে থেমে গিয়েছিল।
ছবি : লেখক
* গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি (tagore-stories – Rabindranath Tagore) : পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Parthajit Gangopadhyay) অবনীন্দ্রনাথের শিশুসাহিত্যে ডক্টরেট। বাংলা ছড়ার বিবর্তন নিয়ে গবেষণা, ডি-লিট অর্জন। শিশুসাহিত্য নিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে গবেষণা করে চলেছেন। বাংলা সাহিত্যের বহু হারানো সম্পদ পুনরুদ্ধার করেছেন। ছোটদের জন্য পঞ্চাশটিরও বেশি বই লিখেছেন। সম্পাদিত বই একশোরও বেশি।