![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/12/samayupdates-5-1.jpg)
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
রবীন্দ্রনাথ শুধু কবিতায় লেখেননি ‘মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক/ আমি তোমাদেরই লোক।’ সত্যিই তিনি ছিলেন আমাদের, একান্তই সাধারণ মানুষের। জমিদারি সামলাতে শিলাইদহে গিয়ে তিনি পেয়েছিলেন ছোটগল্প লেখার রকমারি রসদ। প্রজারা পরম ভরসায় তাদের বাবামশায়ের কাছে সুখ-দুঃখের কথা বলত। তাদের বলে যাওয়া গল্পকথায় রবীন্দ্রনাথ হয়তো-বা খুঁজে পেতেন কোনো গল্প-বীজ। কি জোড়াসাঁকোয়, কি শান্তিনিকেতনে সাধারণ মানুষ কারণে-অকারণে তাঁর সাক্ষাৎ- প্রত্যাশী হয়ে সরাসরি হাজির হতেন। রবীন্দ্রনাথ তাদের নিরাশ করতেন না। দেখা করতেন। এই দেখা করা তাঁর দৈনন্দিন কাজেরই অঙ্গ হয়ে উঠেছিল। শুধু দেখা নয়, পাওয়া চিঠিরও তিনি উত্তর দিতেন। নব্য কবি-লেখকরা বই উপহার পাঠালে প্রায়শই দু-চার কথা লিখেও মতামত জানাতেন রবীন্দ্রনাথ।
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/12/samayupdates-2-2.jpg)
রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়।
কবির কাছে দেশ-বিদেশ থেকে কত মানুষজন আসতেন। গম্ভীর বিষয় নিয়ে আলাপচারিতার ফাঁকফোকরে কখনো-বা চলত আলতো কৌতুক। থাকত সরসতার প্রলেপ। জোড়াসাঁকোর ‘বিচিত্রা’য় জড়ো হওয়া কবি-লেখকদের সঙ্গে তাঁর সাহিত্যালোচনাও পরম উপভোগ্য হয়ে উঠত।আর হবে নাই বা কেন, এমন বিশুদ্ধ তাৎক্ষণিক কৌতুক তো সবাই করতে পারতেন না! আলাপচারিতায়, প্রিয়জনের সঙ্গে আড্ডায় রবীন্দ্রনাথ ছিলেন সত্যিই একমেবাদ্বিতীয়ম। শরৎচন্দ্র চুরি যাওয়ার ভয়ে চুপি চুপি একটা খবরের কাগজে নিজের জুতো জোড়া মুড়ে সেবার বগলে নিয়ে কবির অদূরে বসেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের কাছে গোপন খবর ছিল শরৎচন্দ্রের বগলে কী আছে! হাসতে হাসতে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘ও শরৎ, তোমার বগলে ওটা কী?’ শরৎচন্দ্র পড়লেন মহাফ্যাসাদে। আমতা আমতা করতে লাগলেন।সেই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে রবীন্দ্রনাথ বললেন,’ও পাদুকা পুরাণ বুঝি!’ সঙ্গে সঙ্গে আড্ডাধারীদের মধ্যে যে হাস্যরোল উঠেছিল, তা বলা-ই বাহুল্য!
এই সরসতার কখনো কার্পণ্য ঘটেনি সাক্ষাৎপ্রার্থীদের সঙ্গে কবির আলাপচারিতায়। কবির কাছে যাঁরা আসতেন, তাঁরা সবাই অত্যন্ত বুদ্ধিদীপ্ত, পাণ্ডিত্যপূর্ণ কথাবার্তা বলতেন, তা নয়। মাথায় অল্পবিস্তর, কারও কারও ক্ষেত্রে ব্যাপক ব্যামো লক্ষ করা যেত। রানী চন্দ ছিলেন রবীন্দ্রনাথের অত্যন্ত স্নেহভাজন।গুরুদেবকে নিয়ে তিনি একটি বইও লিখেছিলেন। তাঁর লেখায় আছে, ‘পাগল—পাগলই আসত কত রকমের। এত রকমের পাগল যে আছে সংসারে, গুরুদেবের কাছাকাছি থেকে না জানলে তা ভাবতেই পারতাম না কখনো। ওভার জিনিয়াস, ছিটগ্রস্ত উন্মাদ, বদ্ধ উন্মাদ, অর্ধ উন্মাদ, মতলবের উন্মাদ, সাজা উন্মাদ—সে কত প্রকারের!’
একবার এক পাগল সাক্ষাৎপ্রার্থী হয়ে এসেছিল রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে দেখা করতে। রানী চন্দ জানিয়েছেন, ‘কিছুতেই সে আর গুরুদেবকে ছাড়ে না। অথচ কী যে তার বলবার কথা তা সে জানে না।’ রবীন্দ্রনাথ কী ফ্যাসাদে পড়েছিলেন, তা সহজেই অনুমেয়! আরেক পাগল কবির কাছে আসত প্রায়শই। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে দেখা করার ছুতোয় গাঁজা খাওয়ার পয়সা চাইত। সেদিন সে পাগলটিই এসেছিল। রবীন্দ্রনাথ তাকে দেখে ‘কী ব্যাপার’ জানতে চেয়েছিলেন। পাগলটি জানায়, একটা সুখবর দিতে এসেছে সে। স্বভাবতই রবীন্দ্রনাথ কৌতূহলী। পাগলটি জানিয়েছিল, ‘আপনার ছেলেরা আজ আমাকে একটা বেশ বড় খুশির ডিগ্রি দিয়েছে। হ্যাঁ, আপনার চেয়েও বড়!’ রবীন্দ্রনাথ কৌতুকে কৌতূহলে জানতে চেয়েছিলেন ডিগ্রিটা কী। পাগল আনন্দ উচ্ছ্বাসে মনের কথা খোলসা করে জানিয়েছিল। বলেছিল, ‘M.A.D.।’
একবার এক পাগল সাক্ষাৎপ্রার্থী হয়ে এসেছিল রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে দেখা করতে। রানী চন্দ জানিয়েছেন, ‘কিছুতেই সে আর গুরুদেবকে ছাড়ে না। অথচ কী যে তার বলবার কথা তা সে জানে না।’ রবীন্দ্রনাথ কী ফ্যাসাদে পড়েছিলেন, তা সহজেই অনুমেয়! আরেক পাগল কবির কাছে আসত প্রায়শই। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে দেখা করার ছুতোয় গাঁজা খাওয়ার পয়সা চাইত। সেদিন সে পাগলটিই এসেছিল। রবীন্দ্রনাথ তাকে দেখে ‘কী ব্যাপার’ জানতে চেয়েছিলেন। পাগলটি জানায়, একটা সুখবর দিতে এসেছে সে। স্বভাবতই রবীন্দ্রনাথ কৌতূহলী। পাগলটি জানিয়েছিল, ‘আপনার ছেলেরা আজ আমাকে একটা বেশ বড় খুশির ডিগ্রি দিয়েছে। হ্যাঁ, আপনার চেয়েও বড়!’ রবীন্দ্রনাথ কৌতুকে কৌতূহলে জানতে চেয়েছিলেন ডিগ্রিটা কী। পাগল আনন্দ উচ্ছ্বাসে মনের কথা খোলসা করে জানিয়েছিল। বলেছিল, ‘M.A.D.।’
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/12/samayupdates_9.jpeg)
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৪৩: নোবেল-প্রাপ্তির সংবর্ধনা-সভায় রবীন্দ্রনাথ ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/06/Basundhara-Ebong_cover-pic-.jpg)
পর্ব-৪৮: বসুন্ধরা এবং…
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/12/COVER.jpg)
কিম্ভূতকাণ্ড, পর্ব-৩: হঠাৎ মেয়েলি খোঁনা গলায় কে যেন খিলখিল করে হেসে বলল—ভঁয় পেঁলে নাঁকি ঠাঁকুর!
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/12/Uttam-Kumar-2-2.jpg)
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-১৫: যখন ‘ওরা থাকে ওধারে’
কবির কাছে সাক্ষাৎপ্রার্থী হয়ে মান্যজনের আনাগোনা কম ছিল না। কত দূর-দেশের মানুষ আসতেন। আমেরিকা, জার্মান, ইতালি, চেকোশ্লোভেকিয়া,জাপান, ফ্রান্স, চিন—এশিয়া, ইউরোপের কত দেশ থেকে কতজন এসেছেন কবির কাছে, নানা সময়ে। একবার তো চীনের উপরাষ্ট্রপতি তাই- চি-তাও এসে উপস্থিত হয়েছিলেন শান্তিনিকেতনে। সাংবাদে জেনেছিলেন, কবি খুবই অসুস্থ। তাই তাঁর শান্তিনিকেতনে আগমন। কুশল কামনায় তিনি সাক্ষাৎপ্রার্থী কবির। উদয়নের একতলার দক্ষিণকক্ষে অসুস্থ রবীন্দ্রনাথ তখন শয্যাগত। শুয়ে শুয়ে আগত অতিথির সঙ্গে কত কথা, দোভাষীর সাহায্য নিয়ে। বিদায়বেলায় বিশ্বভারতীর উন্নতিকল্পে তাই-চি-তাও দশ হাজার টাকা দান করেছিলেন।
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/12/samayupdates-3-1.jpg)
রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী।
কবির কাছে রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী বা রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় আসা, গল্পগাছা করা — এর মধ্যে অভিনবত্ব কিছু নেই। এ দৃশ্য দেখতে দেখতে আশপাশের মানুষজনের চোখ অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল। রবীন্দ্রনাথের কাছে সাধারণ মানুষজন প্রতিদিনই আসত। গ্রামের চাষি, বোষ্টম, ভিখিরি —আসত অনেকেই। আসত তারা পোঁটলা-পুঁটলি নিয়ে। সুধীরচন্দ্র কর ‘কবিকথা’ নামে একটি বই লিখেছিলেন। সে বই থেকে জানা যায়, কবি তাদের জিজ্ঞাসা করতেন, ফসল কেমন হয়েছে, চাষের অবস্থা কীরকম, আশ্রম দেখা হয়েছে কিনা—চলত ইত্যকার নানা প্রশ্ন। কোনো সমস্যা দেখা দিয়ে থাকলে সমস্যা সমাধানেরও চেষ্টা করতেন তিনি। সুধীরচন্দ্রের বই থেকে জানা যায়, ‘কেউ কেউ ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে চেয়ে চেয়ে দেখত তাঁকে একদৃষ্টিতে, তখনই কবি হতেন উত্ত্যক্ত , চলে যেতেন কক্ষান্তরে।’ কবির কাছে সাহায্যপ্রার্থী গরিব মানুষের জন্য চাল রাখা থাকত ভৃত্যদের কাছে। সেই চাল শুধু দুঃস্থ মানুষজনকে দেওয়া হত, তা নয়। পেত পাখিরাও। সুধীরচন্দ্র লিখেছেন, ‘সকালের রোদটি আঙনায় পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাখিরাও ভোজ পেত তা থেকে।’
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/12/english-Tinglish-1.jpg)
ইংলিশ টিংলিশ: জানেন কি ‘night owl’ বা ‘early bird’ কাকে বলে? কিংবা তিনতলাকে কেন ‘second floor’ বলে?
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/12/tulsi-tea.jpg)
বুকে কফ জমে খুব কষ্ট পাচ্ছেন! রেহাই পেতে চুমুক দিন এই পানীয়তে?
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/06/night-walk.jpg)
কাজের ব্যস্ততায় দিনে হাঁটার সময় পাচ্ছেন না? নৈশভোজের পরে একপ্রস্থ হাঁটার উপকার জানুন
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/11/Travel-1.jpg)
বাইরে দূরে: মোহনার দিকে…
চেনা অচেনা কত মানুষের আনাগোনা। বিচিত্র রকমের অতিথি আসত। রবীন্দ্রনাথের কাছে একবার এক ভদ্রলোক এলেন তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে। ভদ্রলোক রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করলেন। কথার পিঠে কথা, কথা এগোচ্ছিল আপন ছন্দে। তাঁর স্ত্রী হয়তো ভাবলেন, গুরুদেব শুধুই তাঁর পতি-দেবতার সঙ্গে কথা বলছেন। তাঁরও তো কিছু জিজ্ঞাসা করা প্রয়োজন। নিজেকে বড় তুচ্ছ, বড় অপাঙক্তেয় মনে হতে থাকে। এই ভাবনার বশবর্তী হয়ে তাঁদের কথার মধ্যেই হঠাৎ তিনি বলে উঠলেন, ‘আচ্ছা রবিবাবু, আপনি এখনো কবিতাটবিতা লেখেন?’ রবীন্দ্রনাথ এমনতরো প্রশ্নের জন্য তৈরি ছিলেন না।কবি হিসেবে যাঁর পৃথিবীব্যাপী পরিচিতি,খ্যাতি, তাঁকে এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে, এ বোধহয় স্বপ্নেও ভাবা যায় না। রবীন্দ্রনাথ হকচকিয়ে গিয়েছিলেন। পরমুহূর্তে নিজেকে সামলে গম্ভীর মুখে বলেছিলেন, ‘ তা হ্যাঁ— এখনো একটুআধটু লিখি বৈকি!
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/12/samayupdates-4-1.jpg)
রানী চন্দ।
রবীন্দ্রনাথ সাধারণ মানুষকে কখনো অবহেলা করেননি। কৃত্রিম দূরত্ব তৈরি করেননি। সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তাঁকে অনেক সময়ই উটকো উৎপাতের মুখোমুখি হতে হত। কষ্ট পেতেন কবি। এরপরও সাধারণজনের সঙ্গে নিয়ম করে দেখা করতেন। লেখার চাপ হয়ত ঊর্ধ্বমুখী, তবু মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে, সময়-ব্যয় করতে তিনি কুণ্ঠা বোধ করেননি। এক নিদারুণ অভিজ্ঞতার পর রবীন্দ্রনাথ দুঃখ করে বলেছিলেন, ‘সবারই সময়-অসময় আছে। নেই কেবল আমারই। আমার নিজের বলে দিনের একটুখানি সময়ও আমি পাইনি কখনো।’
কবির মনোবেদনা সবাইকেই ছুঁয়ে গিয়েছিল। কবিকে না জানিয়েই সেক্রেটারি নির্দেশ দিয়েছিলেন, সে নির্দেশ কার্যকরও হয়। গুরুদেবের কাছে আর যখন-তখন যাওয়া যাবে না, আশ্রমের লোকেদের ক্ষেত্রে অবশ্য এ নিয়ম খাটবে না। বাইরে থেকে যারা আসবে, তাদের জন্যই এই কড়াকড়ি, নিয়মকানুন।
কবির মনোবেদনা সবাইকেই ছুঁয়ে গিয়েছিল। কবিকে না জানিয়েই সেক্রেটারি নির্দেশ দিয়েছিলেন, সে নির্দেশ কার্যকরও হয়। গুরুদেবের কাছে আর যখন-তখন যাওয়া যাবে না, আশ্রমের লোকেদের ক্ষেত্রে অবশ্য এ নিয়ম খাটবে না। বাইরে থেকে যারা আসবে, তাদের জন্যই এই কড়াকড়ি, নিয়মকানুন।
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/04/Samayupdates_recipe-22.jpg)
স্বাদ-বাহারে: গরমে খাবারে নতুনত্ব চাই? তাহলে করে দেখতে পারেন ‘লেবু পাতা দিয়ে ঝিঙে ও পটলের খোসা বাটা’
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/12/Ramayana2022.jpg)
শাশ্বতী রামায়ণী, পর্ব ২৭: পিতৃসত্য রক্ষা, নাকি পিতার অনুনয়ে রাজ্যভার গ্রহণ?
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/12/Khokababur-Pratyabortan22.jpg)
পর্দার আড়ালে, পর্ব-২২: রাইচরণ চরিত্রটা আমি করতে চাই, আমাকে এই চরিত্রটা করার সুযোগ দিন: উত্তমকুমার
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/12/Haraprasad-Shastri-4-2.jpg)
ভারতীয় সাহিত্যের এই সাধক যখনই কলম ধরেছেন বাংলাভাষা ততই পদ্ধতিগতভাবে এগিয়েছে/২
নিয়ম তো কার্যকর হল। দু’দিন পেরিয়ে তিন দিনের দিন বাড়ির সামনে একজনকে ঘোরাফেরা করতে দেখে রবীন্দ্রনাথ বুঝেছিলেন, কিছু একটা হয়েছে, তাঁর কাছে মানুষজনের আসার পথ নিশ্চিত বন্ধ হয়েছে। সেক্রেটারিকে তখুনই ডাকলেন তিনি। বেশ রাগ দেখিয়ে বলেছিলেন, ‘তোরা কি ভাবিস, আমি একটা কেউকেটা নবাববাদশা? আমার কাছে আসতে হলে সেপাইশান্ত্রী পেরিয়ে তবে আসতে হবে? আহা বেচারারা—দূর দূর হ’তে আসে, কিনা আমায় একটু দেখে যাবে, কি প্রণাম করবে; না হয় দুটো কথা বলবে। তার জন্য এত কী কড়াকড়ি?’
তখনই নির্দেশ দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ, ‘দোর আমার খোলা থাকবে। যার যখন মন চায় আসবে আমার কাছে। কাউকে বাধা দিসনে যেন তোরা আর কখনো।’
কবির সেক্রেটারি মৃদু গলায় বলেছিলেন, ‘আপনার লেখার সময় বিরক্ত করলে আপনার অসুবিধা হতে পারে।’ রবীন্দ্রনাথ অবিচল। তাঁর দেখা না পেয়ে রোজ মানুষজন ফিরে যাবে, এ হতে পারে না। হোক ক্ষতি। সে ক্ষতি না হয় মেনে নেবেন তিনি। তবু কেউ এসে দূরে বসে অপেক্ষা করবে, এ ভারি অন্যায়।
কবির কথা কে অমান্য করে, কার সাধ্য! পরের দিনই আবার দরজা খুলে গেল সাধারণ মানুষের জন্য। উন্মুক্ত সে দরজা আর কখনো বন্ধ হয়নি।
ছবি সৌজন্যে: লেখক
তখনই নির্দেশ দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ, ‘দোর আমার খোলা থাকবে। যার যখন মন চায় আসবে আমার কাছে। কাউকে বাধা দিসনে যেন তোরা আর কখনো।’
কবির সেক্রেটারি মৃদু গলায় বলেছিলেন, ‘আপনার লেখার সময় বিরক্ত করলে আপনার অসুবিধা হতে পারে।’ রবীন্দ্রনাথ অবিচল। তাঁর দেখা না পেয়ে রোজ মানুষজন ফিরে যাবে, এ হতে পারে না। হোক ক্ষতি। সে ক্ষতি না হয় মেনে নেবেন তিনি। তবু কেউ এসে দূরে বসে অপেক্ষা করবে, এ ভারি অন্যায়।
কবির কথা কে অমান্য করে, কার সাধ্য! পরের দিনই আবার দরজা খুলে গেল সাধারণ মানুষের জন্য। উন্মুক্ত সে দরজা আর কখনো বন্ধ হয়নি।
ছবি সৌজন্যে: লেখক
* গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি (Tagore Stories – Rabindranath Tagore) : পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Parthajit Gangopadhyay) অবনীন্দ্রনাথের শিশুসাহিত্যে ডক্টরেট। বাংলা ছড়ার বিবর্তন নিয়ে গবেষণা, ডি-লিট অর্জন। শিশুসাহিত্য নিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে গবেষণা করে চলেছেন। বাংলা সাহিত্যের বহু হারানো সম্পদ পুনরুদ্ধার করেছেন। ছোটদের জন্য পঞ্চাশটিরও বেশি বই লিখেছেন। সম্পাদিত বই একশোরও বেশি।