শুক্রবার ৫ জুলাই, ২০২৪


রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

‘লক্ষ্য করিলাম, অজিতবাবুর চলাফেরা প্রায় নৃত্যের তালে তালে পরিণত হইয়াছে।… তার‌ পর ক্ষিতিমোহনবাবু প্রবেশ করিলেন। স্বভাবতই তিনি গম্ভীর প্রকৃতির লোক, চলাফেরায় সংযত, কিন্তু তাহাকেও চঞ্চল দেখলাম।’ বিশিষ্ট অধ্যাপক-লেখক প্রমথনাথ বিশী সেসময় শান্তিনিকেতন-বিদ্যালয়ের ছাত্র। তাঁর এই রচনাংশ থেকে আন্দাজ করা যায়, কবির বিশ্বজয়ের, নোবেল-লাভের সংবাদে আশ্রম-বিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরা আনন্দে কতখানি আত্মহারা হয়ে পড়েছিলেন! শিক্ষক অজিতকুমার চক্রবর্তী নৃত্যের তালে তালে হাঁটা-চলা করছেন বা ক্ষিতিমোহন সেনের মতো পণ্ডিতজনও আনন্দে চঞ্চল হয়ে উঠেছেন। প্রমথ বিশীর শরণাপন্ন হয়ে সে দৃশ্যকল্প কল্পনা করলে আমাদের মুখে আজও হাসির আভা ফুটে উঠবে। পাচ্ছে হাসি হাসছি তাই, হয়তো এমনই মনে হবে।
রবীন্দ্রনাথের নোবেল পুরস্কার পাওয়ার সংবাদে শান্তিনিকেতনে শুধু আনন্দের জোয়ার বয়ে যায়নি, সেই আনন্দ-জোয়ার ছড়িয়ে পড়েছিল সারা বাংলায়, ভারতময়। পরাধীন ভারতবর্ষের এক বাঙালি কবির এই আন্তর্জাতিক সম্মান গোটা জাতিকে উদ্বেলিত করেছিল। দু-চার জন ছিদ্রান্বেষীকে বাদ দিলে বৃহত্তম মানুষ এত আনন্দ আগে কখনও পাননি। রবীন্দ্রনাথকে অভিনন্দন জানিয়ে দেশ-বিদেশ থেকে অজস্র টেলিগ্ৰাম এসেছে। চিঠিও এসেছে অসংখ্য। অপাঙক্তেয় চিঠির উত্তর লিখতেও রবীন্দ্রনাথ কখনও দ্বিধা করতেন না। সযত্নে চিঠির উত্তর লিখতেন। রাশি রাশি অভিনন্দনপত্রের সহস্তে উত্তর লেখা তো আর সম্ভব নয়। তাই সাইক্লোস্টাইল করা হয় রবীন্দ্র-বক্তব্য। কবি লিখলেন, ‘আমার সম্মানলাভে যাঁহারা আনন্দ প্রকাশ করিতেছেন তাঁহাদের প্রতি আমার অন্তরের কৃতজ্ঞতা নিবেদন করিতেছি। ইতি ১লা অগ্রহায়ণ ১৩২০।’ কবিকে যাঁরা অভিনন্দন জানিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকের কাছেই এই সাইক্লোস্টাইল-কপির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছিল। অচেনা বা সামান্য পরিচিত ব্যক্তিদের কাছে সাইক্লোস্টাইল পাঠানো হলেও বন্ধুদের পাঠানো চিঠির উত্তর অবশ্য কবি নিজে দিয়েছিলেন। সেসব চিঠিতে ফুটে উঠেছে অভিনন্দনে অভিনন্দনে কবির বিপর্যস্ত অবস্থার কথা। জেরবার‌ তিনি। রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদীকে অভিনন্দনপত্রের উত্তরে রবীন্দ্রনাথ সহস্তে সেকথাই লিখেছিলেন‌, ‘সম্মানের ভূতে আমাকে পাইয়াছে, আমি মনে মনে ওঝা ডাকিতেছি — আপনাদের আনন্দে আমি সম্পূর্ণ যোগ দিতে পারিতেছি না। আপনি হয়তো ভাবিবেন এটা আমার অত্যুক্তি হইল কিন্তু অন্তর্যামী জানেন আমার জীবন কী রূপ ভারাতুর হইয়া উঠিয়াছে।’

আনন্দের আতিশয্য রবীন্দ্রনাথকে বিড়ম্বিত করেছে। সৃষ্টিশীল মানুষ তিনি। সাহিত্যসাধকের নতুনতর সাহিত্য-সৃষ্টি আনন্দের এই বাহুল্যে বিঘ্নিত হয়েছে। তা মেনে নিতে পারেননি রবীন্দ্রনাথ। ‌‌মনোবেদনা বেড়েছে। বিষণ্ণতা-বিপন্নতা জাঁকিয়ে বসেছে।
আরও পড়ুন:

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৪২: নিজেকে যিনি আড়ালে রেখেছিলেন

সাজকাহন: স্টাইলিশ শাড়ি পরার হরেক কায়দা আছে, কিন্তু এ ভাবে শাড়ি পরা যায়, জানতেন?

ছোটদের যত্নে: কোন সময় গর্ভধারণ করলে সুসন্তান লাভ সম্ভব? নব দম্পতির মা হওয়ার আগের প্রস্তুতির পরামর্শে ডাক্তারবাবু

এত বড় দেশ, বিবিধ ভাষার বৈচিত্র্যময় সাহিত্য-সৃষ্টি। তারপরও আমাদের একটিই নোবেল-প্রাপ্তি! শতবর্ষেরও বেশি আগে জগৎ জিনে রবীন্দ্রনাথ বিজয়মাল্য এনেছিলেন। অন্তত সাহিত্যে তেমন কৃতিত্বের অধিকারী আর কেউ হতে পারেননি। সেই শুরু, সেই শেষ। অমন বড় সম্মানে সাহিত্যের অঙ্গনে দ্বিতীয় কেউ সম্মানিত হননি। দুঃখের বিষয়, সেই মহামূল্যবান স্বীকৃতির স্মারকটুকু আমরা রক্ষা করতে পারিনি। নোবেল-স্মারক কবির স্বপ্নের শান্তিনিকেতন থেকেই চুরি গিয়েছে। বিশ্ববাসীর কাছে লজ্জায় আমাদের মাথা হেঁট হয়েছে। তদন্তের মহড়া হয়তো চলেছে, তবু প্রশ্ন রয়ে যায়, সত্যিই কি তদন্ত হয়েছে?

প্রাণকৃষ্ণ আচার্য।

যে নোবেল কঠোর নিরাপত্তার বেষ্টনির মধ্যেও চুরি গেল, তা পাওয়ার পর রবীন্দ্রনাথকে ঘিরে সমাজজীবনে, সমসাময়িক লেখককুলের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা দেখা দিয়েছিল। সেই উদ্দীপনা কতদূর বিস্তৃত ছিল, সে সব ঘিরে আমাদের আগ্রহ-কৌতূহলের অন্ত ছিল না। কলকাতা থেকে স্পেশাল ট্রেন ভাড়া করে ২৩ নভেম্বর রবীন্দ্রানুরাগী কবি-লেখকরা শান্তিনিকেতন গিয়েছিলেন। সংবর্ধনা জ্ঞাপনের‌ উদ্দেশে শান্তিনিকেতন যাওয়ার সেই স্পেশাল ট্রেন ছাড়ার কথা ছিল সকাল দশটা এগারো মিনিটে। ছাড়ে অবশ্য ৪৪ মিনিট পরে, চিরাচরিত ধারা মেনে অকারণে বিলম্ব নয়, আসলে বিজ্ঞানাচার্য জগদীশচন্দ্র বসুর স্টেশনে পৌঁছতে বেজায় রকম দেরি হয়ে গিয়েছিল। সেদিন বিনা নোটিশে হাওড়ার পল্টুন ব্রিজ খোলা হয়েছিল। হয়তো প্রয়োজনেই এই ব্যবস্থা। এর ফলে ট্রেনযাত্রীদের ভীষণ অসুবিধা হয়। লঞ্চে গঙ্গা পেরিয়ে পড়িমরি করে কোনও রকমে স্টেশনে পৌঁছতে হয়েছিল রবীন্দ্রনাথের প্রিয় বন্ধু জগদীশচন্দ্রকে।
আরও পড়ুন:

শরীরচর্চার আগে নিয়মিত চা-কফি খান? এর ফলে শরীরে কি হচ্ছে জানেন?

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-১৫: যখন ‘ওরা থাকে ওধারে’

ইংলিশ টিংলিশ: আজকে এসো দেখি Prefix আর Suffix কাকে বলে

আচার্ষ জগদীশচন্দ্রকে বাদ দিয়ে তো আর ট্রেন ছাড়তে পারে না! তাই এই বিলম্ব নিয়ে কেউ কথা বাড়াননি। মেনে নিয়েছিলেন। সেদিন যাবার পথে অঘটন ঘটেছে আরও। ট্রেন সবে তখন বর্ধমানে পৌঁছেছে। সবাই সীতাভোগ-মিহিদানা ভক্ষণ-আনন্দে মেতেছেন। ঠিক তখনই ঘটেছে অঘটন। ট্রেনের চাকা থেকে বের হতে থাকে আগুন, লক্ষ করেন অনেকে। সকলেই কমবেশি ভয় পেয়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে রেল-কর্তৃপক্ষ আগুন নেভানোর দ্রুত ব্যবস্থা করেছিলেন। পরিস্থিতি এতই বেগতিক, আগুন-ভয়ে সকলে আতঙ্কিত, এসব দেখে সেকালের সুপ্রসিদ্ধ চিকিৎসক, বহু জনহিতকর কর্মের সঙ্গে যুক্ত প্রাণকৃষ্ণ আচার্যের মনে হয়েছিল, ‘এই স্পেশাল ট্রেনটি পুড়ে গেলে ব্রাহ্মসমাজ সমূলে ধ্বংস হত।’ আসলে এই ট্রেনের অনেকেই ছিলেন ব্রাহ্ম। তাঁর এই মন্তব্যের কথা আছে সীতা দেবীর লেখায়।
আরও পড়ুন:

বাইরে দূরে: অমরনাথের পথে, পর্ব-৩: চন্দনবাড়ি থেকে শুরু হল যাত্রা

খাই খাই: বাড়িতেই চিকেন ভর্তা বানাতে চান? জেনে নিন সহজ রেসিপি

বাস্তুবিজ্ঞান, পর্ব-১৮: সাধের বাড়ির জন্য কেমন জমি ভালো? জেনে নিন বাস্তুশাস্ত্র মতে আদর্শ জমির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

সকলে ভয় পেলেও আগুন তেমন ব্যাপক ছিল না। নিভিয়ে ফেলতে সময় লাগেনি। খানিক পরেই নিরাপদে বর্ধমান পেরিয়ে ট্রেন ছুটতে শুরু করে খানা জংশনের দিকে।

শ’খানেক যাত্রী নিয়ে আড়াইটা নাগাদ ট্রেনটি বোলপুরে পৌঁছেছিল। আশ্রমের ছাত্র-অধ্যাপকরা অনেকেই এসেছিলেন স্টেশনে। কলকাতা থেকে আগত কবি লেখকদের অভ্যর্থনা জানাতে ধুতি-চাদর পড়ে রীতিমত বাঙালি সেজে এসেছিলেন অ্যাড্রুজ।

কলকাতা থেকে আসা অধিকাংশ মানুষজন চললেন পায়ে হেঁটে, আশ্রম-অভিমুখে। কয়েকজন অবশ্য চড়লেন গোরুর গাড়িতে। ‘প্রবাসী’ পত্রিকার সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের দুই কন্যা সীতা দেবী ও শান্তা দেবীও হাঁটছিলেন। পায়ে পায়ে এত মানুষ ভুবনডাঙার পথে কখনও দেখা যায়নি। পথের দু’পাশে ভিড় হয়ে গিয়েছিল। হেঁটে চলা মানুষের এই প্রায়-মিছিলের পুরোভাগে ছিল আশ্রমের ছাত্ররা। তারা গাইছিল সেই গানটি, ‘আমাদের শান্তিনিকেতন / সব হতে আপন।’

নোবেল-পদক।

সীতা দেবী রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে একটি বই লিখেছিলেন। সে-বইয়ের নাম ‘পুণ্যস্মৃতি’। ‘পুণ্যস্মৃতি’তে আছে সেদিনের শান্তিনিকেতন যাওয়ার, স্টেশন-অভ্যর্থিত হওয়ার ও কবি-সংবর্ধনার বর্ণনা। সীতা দেবী আম্রকুঞ্জে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী। তিনি তাঁর অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন এ ভাবে, ‘মেয়েদের জন্য আলাদা বসিবার জায়গা করা হইয়াছিল, কিন্তু ভালো করিয়া দেখিবার শুনিবার আশায় অনেকে সেখানে না বসিয়া প্রকাশ্য সভাস্থলে বসিলেন।… তাহার পর সভাস্থ ব্যক্তিদের ভিতর পাঁচজন প্রতিনিধি মনোনীত হইলেন, কয়েক মিনিট পরে কবি তাঁহাদের সঙ্গে আসিয়া সভাস্থলে প্রবেশ করিলেন। বহুদিন পরে তাঁহাকে দেখিলাম, প্রবাসে স্বাস্থ্যকর স্থানে থাকার জন্য তাঁহার স্বাস্থ্যের অনেক উন্নতি হইয়াছে বলিয়া বোধ হইল। তাঁহার বসিবার স্থান হইয়াছিল একটি মাটির বেদিতে, তাহার উপর পদ্মপাতা বিছানো। চারিদিক অতি সুন্দর আলপনায় চিত্রিত। কবিবরকে মালা চন্দনে ভূষিত করা হইল, তাহার পর জগদীশচন্দ্র অভিনন্দন লিপি পাঠ করিলেন এবং ছোট মাটির টবে বসানো একটি লজ্জাবতী লতা তাহাকে উপহার দিলেন।’ দেওয়া হয় আরও উপহার সামগ্রী, সীতা দেবীর লেখা থেকে তা জানা যায়। অতিথিরা অনেকেই ক্যামেরা নিয়ে গিয়েছিলেন। ছবি তোলার ‘মহোৎসাহ’, প্রচুর ছবি তোলেন তাঁরা। এই অনুষ্ঠানে একজন মুসলমান ভদ্রলোক ও দু’জন ইংরেজ বক্তৃতা করেছিলেন, এ-তথ্যও জানিয়েছেন সীতা দেবী।
আরও পড়ুন:

দশভুজা: দু’শো বছর আগে হলে তিনি ইঞ্জিনিয়ারের বদলে সতী হতেন

শাশ্বতী রামায়ণী, পর্ব ২৬: ‘সত্যেরে লও সহজে’—রাজসুখ ছেড়ে কি তবে বনবাসী মন?

বাঙালির মৎস্যপুরাণ, পর্ব-২৫: রসনা তৃপ্তি হোক বা মুনাফা, সবেতেই এগিয়ে ক্যাট ফিশ

সংবর্ধিত রবীন্দ্রনাথ কী বলেন, তা নিয়ে কৌতূহলের অন্ত ছিল না। অনেকেই ভেবেছিলেন রবীন্দ্রনাথ স্বকণ্ঠে তাঁরই লেখা গান গাইবেন, ‘এ মণিহার আমা‍য় নাহি সাজে।’ না, সে-গান তিনি না গেয়ে ভেতরে জমে থাকা অনেক ক্ষোভ-অভিমান উগরে দিয়েছিলেন। সীতা দেবীর লেখায় আছে, কবি বলেছিলেন, ‘দেশের বহু লোকেরই আমার প্রতি যথার্থ কোনও ভালোবাসা নেই, সেটা আমি জানি। আজ একটা আকস্মিক আনন্দের জোয়ারে অনেকে ভেসে চলেছেন, কিন্তু এ স্রোত চলে গেলেই আবার ধাপে ধাপে পাঁক বেরিয়ে পড়বে। … যাঁরা আজ আমাকে অভিনন্দিত করতে এসেছেন, তাঁদের সম্মানার্থে তাঁদের প্রদত্ত অভিনন্দন আমি গ্রহণ করলুম, কিন্তু অন্তরের সঙ্গে নয়।’

শান্তিনিকেতনের আম্রকুঞ্জে রবীন্দ্রনাথকে সংবর্ধনা জ্ঞাপন।

এত আনন্দ, সেই আনন্দের মাঝে কবির মনে কত ক্ষোভ জমেছিল, অভিমান ছিল, চরম সত্যের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সেসব ভাবলে মন বেদনায় সিক্ত হয়। মানুষ কবির সেই অকপট-উক্তি সহজভাবে নেননি। বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়েছিল। প্রমথনাথ বিশীর লেখায় আছে, ‘কবির এই অভিভাষণের বিরুদ্ধে দেশময় দারুণ বিক্ষোভ উপস্থিত হইল। সকলে বলিল, দেশে তাঁহার যেমন নিন্দুক আছে, তেমন ভক্তও তো আছে। তিনি নিন্দুকদের স্মৃতিটাই কেন বড় করিয়া দেখিলেন!’

নোবেল পাওয়া নিয়ে যে আনন্দ, সে আনন্দের আড়ালে কবির মনে এত বিষাদ ছিল, সে কথা কে জানতো!

ছবি সৌজন্যে: লেখক
* গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি (tagore-stories – Rabindranath Tagore) : পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Parthajit Gangopadhyay) অবনীন্দ্রনাথের শিশুসাহিত্যে ডক্টরেট। বাংলা ছড়ার বিবর্তন নিয়ে গবেষণা, ডি-লিট অর্জন। শিশুসাহিত্য নিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে গবেষণা করে চলেছেন। বাংলা সাহিত্যের বহু হারানো সম্পদ পুনরুদ্ধার করেছেন। ছোটদের জন্য পঞ্চাশটিরও বেশি বই লিখেছেন। সম্পাদিত বই একশোরও বেশি।

Skip to content