গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
গগনেন্দ্রনাথের জ্যেষ্ঠ পুত্র গেহেন্দ্রনাথের বিয়েতে মহাধুমধাম, এলাহি আয়োজন হয়েছিল। এত জাঁকজমক ঠাকুরবাড়ির আর কারও বিয়েতে হয়নি। তখন জমিদারিতে আয় যথেষ্ট। আয় যখন বেড়েছে, তখন খরচ করতে অসুবিধা কোথায়! গগনেন্দ্রনাথের মা সৌদামিনী দেবী পৌত্রের বিয়েতে খরচ করার পক্ষে। গগনকে কাছে ডেকে পাশে বসিয়ে বলেছিলেন, ‘তোদের বিয়ে আমি দিয়েছি, তাই খরচ করতে পারিনি। এখন তোর ছেলের তুই বিয়ে দিবি, তোর বড়ো ছেলে— নিশ্চয়ই খরচ করবি।’
গগনেন্দ্রনাথ শুধু দেদার অর্থ খরচ করেছিলেন, সেই অর্থ-বৈভবের রোশনাইয়ে বিয়েবাড়ি আলোকিত হয়েছিল, তা নয়। তিনি শিল্পী মানুষ। তাঁর শিল্পীমনেরও বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল। বিয়েবাড়ির সাজসজ্জা হয়ে উঠেছিল একেবারে অন্যরকম, এমনটি আগে কেউ ভাবতে পারেননি।
গগনেন্দ্রনাথ শুধু দেদার অর্থ খরচ করেছিলেন, সেই অর্থ-বৈভবের রোশনাইয়ে বিয়েবাড়ি আলোকিত হয়েছিল, তা নয়। তিনি শিল্পী মানুষ। তাঁর শিল্পীমনেরও বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল। বিয়েবাড়ির সাজসজ্জা হয়ে উঠেছিল একেবারে অন্যরকম, এমনটি আগে কেউ ভাবতে পারেননি।
সৌদামিনী দেবী।
তখনও বিদ্যুতের আলো আসে না। বিদ্যুতের আলো না থাক, আলো ছিল রকমারি। গ্যাসের আলো, তেলের আলো, মোমবাতির আলো। গ্যাসের আলোয় বাহারি ঝাড়-লণ্ঠন জ্বলেছিল। ঘরদোর শুধু আলোকিত করা হয়নি, প্রবেশপথ, এমনকি বাড়ির বাইরের রাস্তাও আলোকিত করা হয়েছিল। রাস্তার দু’পাশে পঁচিশজন করে পঞ্চাশজন বেহারা সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। তাদের বাঁকের গায়ে ঝুলছিল আলো। সাধারণজনের চলাচল সে-রাস্তায় বন্ধ রাখা হয়েছিল। বর আর বরযাত্রীরাই শুধু গিয়েছিল সেই আলো-পথ দিয়ে।
আলো-পথ, বেহারাদের হাতে হাতে আলো নিয়ে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা গগনেন্দ্রনাথ নিজে করেছিলেন। মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায়, অবনীন্দ্র কন্যা করুণার সন্তান তিনি। শুধু অবনীন্দ্রনাথের নয়, গগনেন্দ্রনাথেরও তিনি পৌত্র। মোহনলাল স্মৃতিমিশিয়ে অবনীন্দ্রনাথকে নিয়ে একটি বই লিখেছিলেন। সে-বইয়ের নাম ‘দক্ষিণের বারান্দা’। তেমনই গগনেন্দ্রনাথকেও নিয়েও স্মৃতি-মেশানো একটি বই লিখেছিলেন তিনি। সে-বইটির নাম ‘গগনেন্দ্রনাথ’। সে-বইতে মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘তিনি (গগনেন্দ্রনাথ) রাশি রাশি অভ্র কিনে মিস্ত্রি ডেকে তাদের দিয়ে নিজের মনের মতো করে কেটে কেটে শিসের পাত দিয়ে জুড়ে জুড়ে অতি সুশোভন খাস-গেলাস করেছিলেন। মিস্ত্রিরা তাই লোহার বাঁকে গেঁথে পঞ্চাশজন বেহারার জন্য একশো বাঁক সাজিয়ে দিয়েছিল।’
আলো-পথ, বেহারাদের হাতে হাতে আলো নিয়ে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা গগনেন্দ্রনাথ নিজে করেছিলেন। মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায়, অবনীন্দ্র কন্যা করুণার সন্তান তিনি। শুধু অবনীন্দ্রনাথের নয়, গগনেন্দ্রনাথেরও তিনি পৌত্র। মোহনলাল স্মৃতিমিশিয়ে অবনীন্দ্রনাথকে নিয়ে একটি বই লিখেছিলেন। সে-বইয়ের নাম ‘দক্ষিণের বারান্দা’। তেমনই গগনেন্দ্রনাথকেও নিয়েও স্মৃতি-মেশানো একটি বই লিখেছিলেন তিনি। সে-বইটির নাম ‘গগনেন্দ্রনাথ’। সে-বইতে মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘তিনি (গগনেন্দ্রনাথ) রাশি রাশি অভ্র কিনে মিস্ত্রি ডেকে তাদের দিয়ে নিজের মনের মতো করে কেটে কেটে শিসের পাত দিয়ে জুড়ে জুড়ে অতি সুশোভন খাস-গেলাস করেছিলেন। মিস্ত্রিরা তাই লোহার বাঁকে গেঁথে পঞ্চাশজন বেহারার জন্য একশো বাঁক সাজিয়ে দিয়েছিল।’
বিয়ের ‘সন্দেশ’, মানে বিয়ের খবর। সে খবর পৌঁছনোর জন্য চাই সত্যিকারের থালা ভরা সন্দেশ। যেখানে যত আত্মীয়-স্বজন আছেন, তাঁদের কাছে বার্তা পৌঁছনোর জন্য আনা হয়েছিল মোরাদাবাদি পিতলের ওপর মিনের কাজ করা থালা। থালা কেনার জন্য লোক পাঠানো হয়েছিল মোরদাবাদে। গগনেন্দ্রনাথ দাঁড়িয়ে থেকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, প্রত্যেক বাড়ির জন্য তিনটি করে থালা সাজাতে হবে। প্রথম থালায় কাপড়, দ্বিতীয় থানায় সন্দেশ, সে সন্দেশ এমনভাবে সাজাতে হবে, যাতে পেতল দেখা না যায়, ঢাকা পড়ে যাবে সন্দেশে। তৃতীয় থানায় নোনতা খাবার। দাসদাসীরা সে সব থালা আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছিল। বরের বাড়ি থেকে কনের বাড়ি খুব দূরে ছিল না।
দ্বারকানাথ ঠাকুর লেন থেকে বারাণসী ঘোষ স্ট্রিট আর কত দূরে! কন্যাপক্ষ অবশ্য ওই ঠিকানায় থাকতেন না। যশোর থেকে সেখানে এসে, বাড়ি ভাড়া নিয়ে বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন। হোক না কাছে, বর এসেছিল রীতিমতো শোভাযাত্রা করে। কত রকমের বাজনা। ঢাক-ঢোল-ড্রাম থেকে খরতাল কী ছিল না সেই শোভাযাত্রায়! তখনকার দিনে লোবো সাহেবের ব্যান্ড পার্টির খুব নামডাক ছিল। লোবো সাহেবের বাজনার দল বিয়ে বাড়িতে এলে বাড়তি সম্ভ্রম যুক্ত হতো। গগনেন্দ্রনাথ লোবো সাহেবের দলটিকেও ডাকলেন। হাজির হয়েছিলেন সেই সাহেবের ডেরায়। জানতে চাইলেন রবি ঠাকুরের গান তাদের বাজনায় তুলতে পারবে কিনা!
দ্বারকানাথ ঠাকুর লেন থেকে বারাণসী ঘোষ স্ট্রিট আর কত দূরে! কন্যাপক্ষ অবশ্য ওই ঠিকানায় থাকতেন না। যশোর থেকে সেখানে এসে, বাড়ি ভাড়া নিয়ে বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন। হোক না কাছে, বর এসেছিল রীতিমতো শোভাযাত্রা করে। কত রকমের বাজনা। ঢাক-ঢোল-ড্রাম থেকে খরতাল কী ছিল না সেই শোভাযাত্রায়! তখনকার দিনে লোবো সাহেবের ব্যান্ড পার্টির খুব নামডাক ছিল। লোবো সাহেবের বাজনার দল বিয়ে বাড়িতে এলে বাড়তি সম্ভ্রম যুক্ত হতো। গগনেন্দ্রনাথ লোবো সাহেবের দলটিকেও ডাকলেন। হাজির হয়েছিলেন সেই সাহেবের ডেরায়। জানতে চাইলেন রবি ঠাকুরের গান তাদের বাজনায় তুলতে পারবে কিনা!
আরও পড়ুন:
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৩৮: মেয়ের জন্য হেমন্তবালা কবির পরা জোব্বা নিয়েছিলেন
Appropriate Prepositions কাকে বলে জানো কি?
ছোটদের যত্নে: হঠাৎই জ্বর, মুখে-হাতে ঘা হচ্ছে শিশুদের! কষ্টকর হলেও ভয়ের কিছু নেই, জেনে নিন কোন রোগের উপসর্গ এগুলি
সোনার বাংলার চিঠি, পর্ব-৩: বাংলাদেশ শিশু একাডেমি— শিশুদের আনন্দ ভুবন
শুনে লোবো সাহেব তো থ। কালবিলম্ব না করেই বলে দিল, তা সম্ভব নয়। কেন সম্ভব নয় জানতে চাইলেন গগনেন্দ্রনাথ। লোবো সাহেব জানালেন, তোমরা মুখস্ত করে শুধু গলায় গান গাও। আমাদের চাই নোটেশান। নোটেশন না থাকলে বেহালা-বাদক, খরতাল-বাদক বা ড্রাম-বাদক তাদের যন্ত্রে গান তুলবে কী করে! নোটেশন সামনে রেখে গান তুলতে হয়।
কী সমস্যা তা বুঝলেন গগনেন্দ্রনাথ। ঠিক হল রবীন্দ্রনাথের গানের নোটেশান তৈরি করে দেবেন তিনি। পরে জানা গেল শুধু নোটেশানে হবে না, সেই গান হারমোনাইজ করে দিতে হবে। হারমোনাইজ করার ভার পড়েছিল ভ্রাতুষ্পুত্রী ইন্দিরার উপর।
কী সমস্যা তা বুঝলেন গগনেন্দ্রনাথ। ঠিক হল রবীন্দ্রনাথের গানের নোটেশান তৈরি করে দেবেন তিনি। পরে জানা গেল শুধু নোটেশানে হবে না, সেই গান হারমোনাইজ করে দিতে হবে। হারমোনাইজ করার ভার পড়েছিল ভ্রাতুষ্পুত্রী ইন্দিরার উপর।
মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায়।
রবীন্দ্রনাথ নিজেই তাঁর গানের নোটেশন লিখে দিয়েছিলেন। ইন্দিরা দেবী সেই নোটেশনের হারমোনাইজ করে দিয়েছিলেন। সাহেব তার দলবল নিয়ে শুরু করে দিয়েছিল মহড়া। মহড়া হয়েছিল ঠাকুরবাড়ির বাগানে। বিয়ের দিন সে-বাজনা শুনে সকলে অভিভূত হয়েছিল। বিলিতি যন্ত্রে রবীন্দ্রনাথের গান বাজছে শুনে সে কী আনন্দ! সে আনন্দ চেপে রাখতে পারেননি প্রদ্যোৎকুমার ঠাকুরও।
সব বাজনদারদের পেট পুরে খাওয়ানোরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। খাওয়াদাওয়ার এলাহি ছিল আয়োজন। বাড়িতে ভিয়েন বসেছিল।
সে সময়ও বরের গাড়ি ফুল দিয়ে সাজানো হতো। এখনও হয়। এ ভাবে চিরাচরিত প্রথায় ফুল দিয়ে গাড়ি সাজাতে চাননি গগনেন্দ্রনাথ। কালো কুচকুচে ফিটন গাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন এক সাহেব-কোম্পানিতে, বলেছিলেন, ‘যা খরচা লাগে দেব। রুপোলি পাত দিয়ে মুড়ে দাও।’ রুপো-পাতে মুড়ে দেওয়ার ফরমাশ করেই গগনেন্দ্রনাথ ছুটেছিলেন ঘোড়া কিনতে। একজোড়া ঘোড়া অস্ট্রেলিয়া থেকে সবে শহরে এসে পৌঁছেছে, সেই ঘোড়াই পছন্দ হয়েছিল তাঁর। তৎক্ষণাৎ কিনেও ফেলেছিলেন।
সব বাজনদারদের পেট পুরে খাওয়ানোরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। খাওয়াদাওয়ার এলাহি ছিল আয়োজন। বাড়িতে ভিয়েন বসেছিল।
সে সময়ও বরের গাড়ি ফুল দিয়ে সাজানো হতো। এখনও হয়। এ ভাবে চিরাচরিত প্রথায় ফুল দিয়ে গাড়ি সাজাতে চাননি গগনেন্দ্রনাথ। কালো কুচকুচে ফিটন গাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন এক সাহেব-কোম্পানিতে, বলেছিলেন, ‘যা খরচা লাগে দেব। রুপোলি পাত দিয়ে মুড়ে দাও।’ রুপো-পাতে মুড়ে দেওয়ার ফরমাশ করেই গগনেন্দ্রনাথ ছুটেছিলেন ঘোড়া কিনতে। একজোড়া ঘোড়া অস্ট্রেলিয়া থেকে সবে শহরে এসে পৌঁছেছে, সেই ঘোড়াই পছন্দ হয়েছিল তাঁর। তৎক্ষণাৎ কিনেও ফেলেছিলেন।
আরও পড়ুন:
খাই খাই: চিতল মাছের তো খেয়েছেন, এবার চিংড়ির মুইঠ্যার স্বাদ নিন, রইল সহজ রেসিপি
বাইরে দূরেঃ অযোধ্যা: প্রাচীন ভারতীয় ধর্ম-সংস্কৃতি সমন্বয়ের প্রাণকেন্দ্র/১
শাশ্বতী রামায়ণী, পর্ব ২১: মন্থরার মন্ত্রণাবিষ—নয় রাজসিংহাসন, হোক নির্বাসন
গল্প: পরশ
রুপোর পাতে মোড়া ফিটন গাড়িকে ঘোড়ার গাড়ি বানিয়ে বর গিয়েছিল বিয়ে করতে। কনের বাড়িতেও ছিল এলাহি আয়োজন। বর যেখানে বসেছিল, সেখানে চারদিক ঘেরা হয়েছিল কাচের বাতি দিয়ে। বাতি কোথায় লাগানো হবে, কেমন হবে তার ডিজাইন, সেসব গগনেন্দ্রনাথ নিজের হাতে করেছিলেন। বর বসার জায়গাটি আলোয় আলোয় এত মনোরম হয়ে উঠেছিল যে নিমন্ত্রিতরা সকলেই বাহবা দিয়েছিল।
আয়োজনের কি শেষ ছিল! বাঈনাচেরও ব্যবস্থা করেছিলেন গগনেন্দ্রনাথ। মোহনলাল লিখেছেন, ‘তখনকার রীতি অনুযায়ী বাঈজির নাচ হয়েছিল। এরও ব্যবস্থা করেছিলেন গগনেন্দ্রনাথ। কারণ যশোর থেকে আগত কন্যাপক্ষ কলকাতার ভালো নৃত্য-পটীয়সীদের কোথা থেকে বা খুঁজে বার করবেন? কলকাতা-জীবনের এদিকটা বিয়ের ব্যাপার থেকে বাদ দেওয়া যায় না, তাই নাচ-গান উচ্চাঙ্গের হয়, তার সব দায়িত্ব নিয়েছিলেন গগনেন্দ্রনাথ।’
আয়োজনের কি শেষ ছিল! বাঈনাচেরও ব্যবস্থা করেছিলেন গগনেন্দ্রনাথ। মোহনলাল লিখেছেন, ‘তখনকার রীতি অনুযায়ী বাঈজির নাচ হয়েছিল। এরও ব্যবস্থা করেছিলেন গগনেন্দ্রনাথ। কারণ যশোর থেকে আগত কন্যাপক্ষ কলকাতার ভালো নৃত্য-পটীয়সীদের কোথা থেকে বা খুঁজে বার করবেন? কলকাতা-জীবনের এদিকটা বিয়ের ব্যাপার থেকে বাদ দেওয়া যায় না, তাই নাচ-গান উচ্চাঙ্গের হয়, তার সব দায়িত্ব নিয়েছিলেন গগনেন্দ্রনাথ।’
গগনেন্দ্রনাথের আঁকা একটি ছবি।
মিছিল করে পাড়া মাতিয়ে বাজনা বাজিয়ে বরযাত্রী গিয়েছিল। বিয়ে, বাসিবিয়ে, বউভাত, ফুলশয্যা, ক’দিন ধরে ঠাকুরবাড়ি একেবারে মুখরিত। বাদ্যি বাজে, বাইজি নাচে, নাটক-যাত্রাভিনয়—আয়োজনের সত্যি শেষ ছিল না! আত্মীয়-স্বজন সবাইকেই উপহার দেওয়া হয়েছিল। বাড়ির কাজেরলোকরাও উপহার পেয়েছিল। গরম শাল, এমনকি গরম কোটও দেওয়া হয়েছিল। গরিব মানুষ, তাদেরও তো এসব পরতে ইচ্ছা হয় ! গগনেন্দ্রনাথকে দু’হাত তুলে আশীর্বাদ করেছিল তারা। কোচম্যানকে আড়ালে ডেকে হাজার টাকারও বেশি দামের শাল হাতে দিয়ে গগনেন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘কাউকে দেখাস না।’
এ বিয়েতে এত জাঁকজমক হয়েছিল, তেমন আর কখনও হয়নি। ঠাকুরবাড়ির সকলেই বিস্মিত হয়েছিলেন। পরে বিয়েশাদি নিয়ে গল্পগুজব করতে বসলে গেহেন্দ্রনাথের বিয়ের কথা এসে পড়ত। এই আনন্দস্মৃতির সঙ্গে সঙ্গে গেহেন্দ্রনাথকে ঘিরে বেদনাবিধুর স্মৃতিও ঠাকুরবাড়ির মানুষজনকে ভারাক্রান্ত করে রেখেছিল। বিবাহের বছরখানেক পরে গেহেন্দ্রনাথ মেনিনজাইটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে গগনেন্দ্রনাথ তাঁর পত্নী মৃণালিনীর পুনর্বিবাহের আয়োজন করতে চেয়েছিলেন। তিনি প্রবলভাবে আপত্তি জানিয়েছিলেন। ওই পরিবারের একজন হয়ে সকলের সঙ্গে মিলেমিশেই থাকতেন তিনি। মৃণালিনীও দীর্ঘজীবী হননি। বিবাহের বছরে আটেক পর মামসে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল।
ছবি সৌজন্যে: লেখক
এ বিয়েতে এত জাঁকজমক হয়েছিল, তেমন আর কখনও হয়নি। ঠাকুরবাড়ির সকলেই বিস্মিত হয়েছিলেন। পরে বিয়েশাদি নিয়ে গল্পগুজব করতে বসলে গেহেন্দ্রনাথের বিয়ের কথা এসে পড়ত। এই আনন্দস্মৃতির সঙ্গে সঙ্গে গেহেন্দ্রনাথকে ঘিরে বেদনাবিধুর স্মৃতিও ঠাকুরবাড়ির মানুষজনকে ভারাক্রান্ত করে রেখেছিল। বিবাহের বছরখানেক পরে গেহেন্দ্রনাথ মেনিনজাইটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে গগনেন্দ্রনাথ তাঁর পত্নী মৃণালিনীর পুনর্বিবাহের আয়োজন করতে চেয়েছিলেন। তিনি প্রবলভাবে আপত্তি জানিয়েছিলেন। ওই পরিবারের একজন হয়ে সকলের সঙ্গে মিলেমিশেই থাকতেন তিনি। মৃণালিনীও দীর্ঘজীবী হননি। বিবাহের বছরে আটেক পর মামসে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল।
ছবি সৌজন্যে: লেখক
* গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি (tagore-stories – Rabindranath Tagore) : পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Parthajit Gangopadhyay) অবনীন্দ্রনাথের শিশুসাহিত্যে ডক্টরেট। বাংলা ছড়ার বিবর্তন নিয়ে গবেষণা, ডি-লিট অর্জন। শিশুসাহিত্য নিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে গবেষণা করে চলেছেন। বাংলা সাহিত্যের বহু হারানো সম্পদ পুনরুদ্ধার করেছেন। ছোটদের জন্য পঞ্চাশটিরও বেশি বই লিখেছেন। সম্পাদিত বই একশোরও বেশি।