রবীন্দ্রনাথ ও অভিজিৎ।
রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পর আচার্যের দায়িত্ব নিয়ে অবনীন্দ্রনাথ তখন শান্তিনিকেতনে। বরাবরই ছোটরা তাঁর খুব প্রিয়। অচিরে গড়ে উঠত অসম বন্ধুত্ব। ছোটদের জন্য তাঁর মনের কোণে ছিল উজাড় করা স্নেহ। অন্তর উৎসারিত ভালোবাসা। ঠাকুরবাড়ির ছোটরা সারাক্ষণই অবনীন্দ্রনাথের কাছে এসে ভিড় করত, শুনতে চাইত গল্প। কথকতার মেজাজে ভারি সুন্দর গল্প বলতেন তিনি। তাঁর গল্প বলার ধরনটি রবীন্দ্রনাথের মনে ধরেছিল। তাই ঠাকুরবাড়ি থেকে ছোটদের কথা ভেবে বই-প্রকাশের পরিকল্পনা গ্ৰহণমাত্র অবনীন্দ্রনাথকে দিয়ে প্রথম বইটি লেখানোর কথা ভেবেছিলেন তিনি।
যেমন ভাবা, তেমন কাজ। অবনীন্দ্রনাথ ‘রবিকাকা’-র অনুরোধ ফেলতে পারেননি। লিখে ফেলেছিলেন ‘শকুন্তলা’। রং-তুলির অবনীন্দ্রনাথ হাতে তুলে নিয়েছিলেন শব্দ-তুলি। লিখেছেন ছোটদের ভালো-লাগা কত বই।
রানি চন্দ ভালো ছবি আঁকতেন, লিখতেন। রবীন্দ্রনাথ তাঁকে স্নেহ করতেন, স্নেহ করতেন অবনীন্দ্রনাথও। অবনীন্দ্রনাথের দুটি বই, ‘ঘরোয়া’ ও ‘জোড়াসাঁকোর ধারে’ শুনে শুনে লিখেছিলেন তিনি। রবীন্দ্রনাথের রোগশয্যায় মুখে মুখে বলে যাওয়া একাধিক কবিতা লিখে রেখেছিলেন রানি চন্দ। রবীন্দ্রনাথ একান্ত সচিব অনিলকুমার চন্দের সঙ্গে বিবাহ হয় রানির। রানি যেমন প্রিয় ছিল রবীন্দ্রনাথের, তেমনই প্রিয় ছিল অবনীন্দ্রনাথের। দু’জনেই অত্যন্ত স্নেহ করতেন।
রানির পুত্র অভিজিৎকে শুধু নয়, সব ছোটদেরই অবনীন্দ্রনাথ ভীষণ ভালোবাসতেন। ছোটরা ভালোবাসা বোঝে। তাই তৈরি হয়ে যেত বন্ধুত্ব। ঠাকুরবাড়ির ছোটরা তো অবনীন্দ্রনাথের কাছে প্রতিদিনই সকালে ভিড় করত! শ্রীরামপুরী কাগজে লিখত আগের রাতে দেখা স্বপ্নের বিবরণ। ছোটদের পাশে বসে অবনীন্দ্রনাথও লিখতেন তিনি কী স্বপ্ন দেখেছেন! অকাল প্রয়াত কন্যার দুই পুত্র, মোহনলাল ও শোভনলাল ছিলেন তাঁর ভীষণ ন্যাওটা, সর্বক্ষণের সঙ্গী।
অবনীন্দ্রনাথকে অভিজিৎ বলত ‘অবুদাদু’। হঠাৎ করে তার গুটিপোকা সংগ্রহের শখ হয়। গুটিপোকা রাখবে কোথায়, কেন, অবনীন্দ্রনাথের নিরাপদ আশ্রয়ে। যেমন ভাবা, তেমন কাজ। অভিজিতের ছোট্ট মাথায় নিত্যনতুন ভাবনার অন্ত ছিল না। অবনীন্দ্রনাথ গুটিপোকাগুলো ছোট্ট একটি কাচের আধারে রেখে দিতেন। কিছুদিন পর সেই গুটিপোকা থেকে প্রজাপতি বের হত। ডানা মেলে উড়ে যেত। সদ্য উড়তে শেখা প্রজাপতি গিয়ে বসত টেবিলে, আলমারিতে, অবুদাদুর গায়ে। অবনীন্দ্রনাথ হয়তো ছবি আঁকছেন, বসত তার হাতে, এমনকী তুলিতেও এসে বসত রংচঙে প্রজাপতি।
যেমন ভাবা, তেমন কাজ। অবনীন্দ্রনাথ ‘রবিকাকা’-র অনুরোধ ফেলতে পারেননি। লিখে ফেলেছিলেন ‘শকুন্তলা’। রং-তুলির অবনীন্দ্রনাথ হাতে তুলে নিয়েছিলেন শব্দ-তুলি। লিখেছেন ছোটদের ভালো-লাগা কত বই।
রানি চন্দ ভালো ছবি আঁকতেন, লিখতেন। রবীন্দ্রনাথ তাঁকে স্নেহ করতেন, স্নেহ করতেন অবনীন্দ্রনাথও। অবনীন্দ্রনাথের দুটি বই, ‘ঘরোয়া’ ও ‘জোড়াসাঁকোর ধারে’ শুনে শুনে লিখেছিলেন তিনি। রবীন্দ্রনাথের রোগশয্যায় মুখে মুখে বলে যাওয়া একাধিক কবিতা লিখে রেখেছিলেন রানি চন্দ। রবীন্দ্রনাথ একান্ত সচিব অনিলকুমার চন্দের সঙ্গে বিবাহ হয় রানির। রানি যেমন প্রিয় ছিল রবীন্দ্রনাথের, তেমনই প্রিয় ছিল অবনীন্দ্রনাথের। দু’জনেই অত্যন্ত স্নেহ করতেন।
রানির পুত্র অভিজিৎকে শুধু নয়, সব ছোটদেরই অবনীন্দ্রনাথ ভীষণ ভালোবাসতেন। ছোটরা ভালোবাসা বোঝে। তাই তৈরি হয়ে যেত বন্ধুত্ব। ঠাকুরবাড়ির ছোটরা তো অবনীন্দ্রনাথের কাছে প্রতিদিনই সকালে ভিড় করত! শ্রীরামপুরী কাগজে লিখত আগের রাতে দেখা স্বপ্নের বিবরণ। ছোটদের পাশে বসে অবনীন্দ্রনাথও লিখতেন তিনি কী স্বপ্ন দেখেছেন! অকাল প্রয়াত কন্যার দুই পুত্র, মোহনলাল ও শোভনলাল ছিলেন তাঁর ভীষণ ন্যাওটা, সর্বক্ষণের সঙ্গী।
অবনীন্দ্রনাথকে অভিজিৎ বলত ‘অবুদাদু’। হঠাৎ করে তার গুটিপোকা সংগ্রহের শখ হয়। গুটিপোকা রাখবে কোথায়, কেন, অবনীন্দ্রনাথের নিরাপদ আশ্রয়ে। যেমন ভাবা, তেমন কাজ। অভিজিতের ছোট্ট মাথায় নিত্যনতুন ভাবনার অন্ত ছিল না। অবনীন্দ্রনাথ গুটিপোকাগুলো ছোট্ট একটি কাচের আধারে রেখে দিতেন। কিছুদিন পর সেই গুটিপোকা থেকে প্রজাপতি বের হত। ডানা মেলে উড়ে যেত। সদ্য উড়তে শেখা প্রজাপতি গিয়ে বসত টেবিলে, আলমারিতে, অবুদাদুর গায়ে। অবনীন্দ্রনাথ হয়তো ছবি আঁকছেন, বসত তার হাতে, এমনকী তুলিতেও এসে বসত রংচঙে প্রজাপতি।
রানি চন্দ।
অভিজিতের সঙ্গে ছিল ভারি ভাবসাব, চলত কত গল্পগাছা। অবনীন্দ্রনাথ অভিজিৎকে পাশে বসিয়ে ছবি আঁকতেন, কুটুম-কাটাম গড়তেন। অভিজিৎ কখনও স্কুল ফিরতি পথে কুড়িয়ে এনেছে তালের আঁটি, শুকনো আমের ডাল বা পাথরের নুড়ি। অবুদাদুকে জিজ্ঞাসা করত, ‘তালের আঁঠিটা, ঠিক তোমার ওই চরকাবুড়ির মুখ না?’
পঁচাত্তর বছরের অবনীন্দ্রনাথ আর ছ’বছরের অভিজিৎ পরস্পরের মধ্যে এমন কথাবার্তা লেগেই থাকত! অবনীন্দ্রনাথ হয়তো তখন ছবি আঁকছেন, ছবি-আঁকা শেষ হলেই বসতেন পুতুল গড়তে। বালক অভিজিৎ নিবিষ্ট হয়ে দেখত। গড়া-দেখার সে এক আশ্চর্য খেলা!
শান্তিনিকেতনে অবনীন্দ্রনাথ এলে সব ছোটরাই আহ্লাদে আটখানা হত। খুশির অন্ত থাকত না তাদের। সবাই এসে তাঁর কাছে ভিড় করত। হয়তো তখনই বানিয়েছেন ইঁদুরে গাড়ি টানছে, ছোট্ট একটি খেলনা। সেটি দেখিয়ে অবনীন্দ্রনাথ বলতেন, ‘বাঁশের গুঁড়ি থেকে বানিয়েছি।’ একটি খেলনা দেখিয়েই থেমে থাকতেন না তিনি, আরও একটি দেখিয়ে হয়তো বলতেন, ‘এটি হল সাহেব-খেলোয়াড়, পা দিয়ে ফুটবল খেলছে; আচ্ছা আমি দেখাই’ বলে পুতুলের মাথার উপরে বাঁধা সুতোটা ধরে নাড়া দিতেন। নাড়া দিতে দিতে বলতেন, ‘কেমন ঘুরে ঘুরে বল ছোঁড়ে দেখ।’ এরপরই হয়তো সকৌতুক জিজ্ঞাসা, ‘পায়ের কাছে একটা সুপারি দিলে কেমন হয়?’
সাহেবের বল খেলা দেখে সবাই তো হেসেই কুটিকুটি!
এমনতরো কত মজা, সবই সরসতায় উজ্জ্বল। ছোটদের কাছে পেলে অবনীন্দ্রনাথের সময় কোথা দিয়ে যে কেটে যেত, তা তিনি নিজেও বুঝতে পারতেন না !
অবনীন্দ্রনাথ জোড়াসাঁকোয়, আর অভিজিৎ শান্তিনিকেতনে। অভিজিৎ চিঠি লিখত তার অবুদাদুকে। একবার জানাল, লালবাঁধে সাঁতার শিখছে সে। চিঠি পেয়েই অবনীন্দ্রনাথ ছবি এঁকে ফেললেন। সে ছবি পাঠালেন তাঁর আদরের অভিজিৎকে। কী ছিল ছবিতে, জলে হাঁসদের সঙ্গে সাঁতার কাটছে অভিজিৎ। নাকটা বেরিয়ে আছে। বক জলের পোকা ভেবে খেতে আসছে। শুধু ছবি নয় লিখেও দিলেন দু’কথা। লিখলেন, ‘ভাই অভিজিৎ লালবাঁধের হাঁটুজলে তুমি সাঁতার দাও শুনে আমার ভারি ভয় হল। হাঁসগুলো জলের পোকা ভেবে টপ করে না ধরে ফেলে…।’
অবনীন্দ্রনাথ জোড়াসাঁকোয় থাকলেও অভিজিতের সঙ্গে মজা-তামাশার বিরাম ঘটত না। দাঁতের বেদনায় খুব কষ্ট পাচ্ছিলেন অবনীন্দ্রনাথ। চিকিৎসাও চলছিল। নিজের ছবি এঁকে পাঠিয়েছিলেন অভিজিৎকে। মুখ হাঁ করে আছেন, চলছে ডাক্তারের খোঁচাখুঁচি। সেই ছবির নীচে, যা লিখলেন, তা ভারি মজার, সরসতায় ভরপুর। একেই নাকি বলে ‘আসুরিক চিকিৎসা’!
এমনই সব কত মজা! সারাক্ষণই হাসিতে খুশিতে, দিন কাটত কী আনন্দে! অবনীন্দ্রনাথের ছবি আঁকার সরঞ্জামে কখনও হাত দিত না অভিজিৎ। একদিন তাঁর ফ্ল্যাটব্রাশে হাত দিয়ে অভিজিৎ মায়ের কাছে খুব বকা খেল। শুধু বকা নয়, চলে চড়চাপড়ও। অবুদাদুর কাছে গিয়ে অভিজিৎ কান্নায় ভেঙে পড়ে। বলে, ‘আমি দোষ করে ফেলেছি, অবুদাদু।’ না, অবনীন্দ্রনাথ বকেননি তাকে। বরং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেছেন।
পঁচাত্তর বছরের অবনীন্দ্রনাথ আর ছ’বছরের অভিজিৎ পরস্পরের মধ্যে এমন কথাবার্তা লেগেই থাকত! অবনীন্দ্রনাথ হয়তো তখন ছবি আঁকছেন, ছবি-আঁকা শেষ হলেই বসতেন পুতুল গড়তে। বালক অভিজিৎ নিবিষ্ট হয়ে দেখত। গড়া-দেখার সে এক আশ্চর্য খেলা!
শান্তিনিকেতনে অবনীন্দ্রনাথ এলে সব ছোটরাই আহ্লাদে আটখানা হত। খুশির অন্ত থাকত না তাদের। সবাই এসে তাঁর কাছে ভিড় করত। হয়তো তখনই বানিয়েছেন ইঁদুরে গাড়ি টানছে, ছোট্ট একটি খেলনা। সেটি দেখিয়ে অবনীন্দ্রনাথ বলতেন, ‘বাঁশের গুঁড়ি থেকে বানিয়েছি।’ একটি খেলনা দেখিয়েই থেমে থাকতেন না তিনি, আরও একটি দেখিয়ে হয়তো বলতেন, ‘এটি হল সাহেব-খেলোয়াড়, পা দিয়ে ফুটবল খেলছে; আচ্ছা আমি দেখাই’ বলে পুতুলের মাথার উপরে বাঁধা সুতোটা ধরে নাড়া দিতেন। নাড়া দিতে দিতে বলতেন, ‘কেমন ঘুরে ঘুরে বল ছোঁড়ে দেখ।’ এরপরই হয়তো সকৌতুক জিজ্ঞাসা, ‘পায়ের কাছে একটা সুপারি দিলে কেমন হয়?’
সাহেবের বল খেলা দেখে সবাই তো হেসেই কুটিকুটি!
এমনতরো কত মজা, সবই সরসতায় উজ্জ্বল। ছোটদের কাছে পেলে অবনীন্দ্রনাথের সময় কোথা দিয়ে যে কেটে যেত, তা তিনি নিজেও বুঝতে পারতেন না !
অবনীন্দ্রনাথ জোড়াসাঁকোয়, আর অভিজিৎ শান্তিনিকেতনে। অভিজিৎ চিঠি লিখত তার অবুদাদুকে। একবার জানাল, লালবাঁধে সাঁতার শিখছে সে। চিঠি পেয়েই অবনীন্দ্রনাথ ছবি এঁকে ফেললেন। সে ছবি পাঠালেন তাঁর আদরের অভিজিৎকে। কী ছিল ছবিতে, জলে হাঁসদের সঙ্গে সাঁতার কাটছে অভিজিৎ। নাকটা বেরিয়ে আছে। বক জলের পোকা ভেবে খেতে আসছে। শুধু ছবি নয় লিখেও দিলেন দু’কথা। লিখলেন, ‘ভাই অভিজিৎ লালবাঁধের হাঁটুজলে তুমি সাঁতার দাও শুনে আমার ভারি ভয় হল। হাঁসগুলো জলের পোকা ভেবে টপ করে না ধরে ফেলে…।’
অবনীন্দ্রনাথ জোড়াসাঁকোয় থাকলেও অভিজিতের সঙ্গে মজা-তামাশার বিরাম ঘটত না। দাঁতের বেদনায় খুব কষ্ট পাচ্ছিলেন অবনীন্দ্রনাথ। চিকিৎসাও চলছিল। নিজের ছবি এঁকে পাঠিয়েছিলেন অভিজিৎকে। মুখ হাঁ করে আছেন, চলছে ডাক্তারের খোঁচাখুঁচি। সেই ছবির নীচে, যা লিখলেন, তা ভারি মজার, সরসতায় ভরপুর। একেই নাকি বলে ‘আসুরিক চিকিৎসা’!
এমনই সব কত মজা! সারাক্ষণই হাসিতে খুশিতে, দিন কাটত কী আনন্দে! অবনীন্দ্রনাথের ছবি আঁকার সরঞ্জামে কখনও হাত দিত না অভিজিৎ। একদিন তাঁর ফ্ল্যাটব্রাশে হাত দিয়ে অভিজিৎ মায়ের কাছে খুব বকা খেল। শুধু বকা নয়, চলে চড়চাপড়ও। অবুদাদুর কাছে গিয়ে অভিজিৎ কান্নায় ভেঙে পড়ে। বলে, ‘আমি দোষ করে ফেলেছি, অবুদাদু।’ না, অবনীন্দ্রনাথ বকেননি তাকে। বরং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেছেন।
অবনীন্দ্রনাথ।
অবনীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে এলে সাড়া পড়ে যেত। তিনি যখন আশ্রমে ঘুরে বেড়াতেন, তখন ছোট ছেলেমেয়েরা তাঁকে একবার দেখতে পেলে আর কথা নেই! কোথা থেকে তারা ছুটে ছুটে আসত। শিশু বিভাগের ঝোলা দোলনায় অভিজিৎ সমবয়সিদের সঙ্গে সেদিন দুলছিল। রোদের তেজ কমে আসছিল, বিকেল গড়াচ্ছিল সন্ধের দিকে। হঠাৎ নজরে পড়ে অবুদাদা কোথাও চলেছেন! দেখামাত্র দোলনা থেকে নেমেই ছুট। তখুনি অবুদার কাছে পৌঁছোতে হবে। সামনে ছিল কাঁটাতারের বেড়া। ছোটার তোড়ে হঠাৎই কখন মাথা গলিয়েছে কাঁটাতারের বেড়ার ফাঁকে! লোহার তীক্ষ্ণ কাঁটা নিমেষে মাথায় বিঁধে যায়। গলগলিয়ে রক্ত পড়ে। কপালের কাছ থেকে মাথা বরাবর ক্ষতচিহ্ন। সে এক হুলুস্থুল কাণ্ড! অভিজিৎকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে সেলাই করা হয়, ব্যান্ডেজ বাঁধা হয়। মা রানি চন্দের মুখে দুশ্চিন্তার কালো মেঘ। অবুদাদুও বিচলিত। চিন্তার ভাঁজ কপালে। বিস্ময়কর হলেও সত্য, কয়েক ঘণ্টা পরেই ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থাতে অভিজিৎ হাসতে হাসতে আসে তার অবুদাদুর কাছে। কাটা ঘা শুকোতে বেশ সময় লাগে। শুকোনোর পর দেখা যায় অভিজিতের মাথায় একটা স্থায়ী সিঁথি হয়ে গেছে!
অমোঘ ছিল ছোটদের কাছে অবুদাদুর আকর্ষণ! তাঁকে দেখে এক ছুট্টে পৌঁছতে গিয়ে কী কাণ্ডই না ঘটিয়েছিল অভিজিৎ!
শান্তিনিকেতনে অবনীন্দ্রনাথ থাকতেন অন্য মেজাজে। প্রতিমা দেবীর মনে হয়েছিল, এটা তাঁর এক আলাদা রূপ, আশ্রমের কাজে নিজেকে ঢেলে দিয়েছিলেন অবনীন্দ্রনাথ। যার কাছে যেতে বড়রা ভয় পেত, সেই অবনীন্দ্রনাথকে খোলামেলা ও খোশমেজাজে দেখে আশ্রমের সকলেই খুশি হয়েছিলেন। অবনীন্দ্রনাথ বলতেন, ‘রবিকা চলে গেলেন, আর কেন? মুখোশটাও খুলে ফেলে দিলুম।’
মানুষ অবনীন্দ্রনাথ নিজেকে একটু লুকিয়েই রাখতেন মুখোশের আড়ালে। জীবনের শেষ বেলায় আচার্যের দায়িত্ব নিয়ে শান্তিনিকেতনে এসে সেই মুখোশ কোথায় হারিয়ে গিয়েছিল ! মানুষ অবনীন্দ্রনাথ, আসল অবনীন্দ্রনাথ ধরা দিয়েছিলেন ছোটদের কাছে তো বটেই, সকলের কাছে!
ছবি সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে
* গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি (tagore-stories – Rabindranath Tagore) : পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Parthajit Gangopadhyay) অবনীন্দ্রনাথের শিশুসাহিত্যে ডক্টরেট। বাংলা ছড়ার বিবর্তন নিয়ে গবেষণা, ডি-লিট অর্জন। শিশুসাহিত্য নিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে গবেষণা করে চলেছেন। বাংলা সাহিত্যের বহু হারানো সম্পদ পুনরুদ্ধার করেছেন। ছোটদের জন্য পঞ্চাশটিরও বেশি বই লিখেছেন। সম্পাদিত বই একশোরও বেশি।
অমোঘ ছিল ছোটদের কাছে অবুদাদুর আকর্ষণ! তাঁকে দেখে এক ছুট্টে পৌঁছতে গিয়ে কী কাণ্ডই না ঘটিয়েছিল অভিজিৎ!
শান্তিনিকেতনে অবনীন্দ্রনাথ থাকতেন অন্য মেজাজে। প্রতিমা দেবীর মনে হয়েছিল, এটা তাঁর এক আলাদা রূপ, আশ্রমের কাজে নিজেকে ঢেলে দিয়েছিলেন অবনীন্দ্রনাথ। যার কাছে যেতে বড়রা ভয় পেত, সেই অবনীন্দ্রনাথকে খোলামেলা ও খোশমেজাজে দেখে আশ্রমের সকলেই খুশি হয়েছিলেন। অবনীন্দ্রনাথ বলতেন, ‘রবিকা চলে গেলেন, আর কেন? মুখোশটাও খুলে ফেলে দিলুম।’
মানুষ অবনীন্দ্রনাথ নিজেকে একটু লুকিয়েই রাখতেন মুখোশের আড়ালে। জীবনের শেষ বেলায় আচার্যের দায়িত্ব নিয়ে শান্তিনিকেতনে এসে সেই মুখোশ কোথায় হারিয়ে গিয়েছিল ! মানুষ অবনীন্দ্রনাথ, আসল অবনীন্দ্রনাথ ধরা দিয়েছিলেন ছোটদের কাছে তো বটেই, সকলের কাছে!
ছবি সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে
* গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি (tagore-stories – Rabindranath Tagore) : পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Parthajit Gangopadhyay) অবনীন্দ্রনাথের শিশুসাহিত্যে ডক্টরেট। বাংলা ছড়ার বিবর্তন নিয়ে গবেষণা, ডি-লিট অর্জন। শিশুসাহিত্য নিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে গবেষণা করে চলেছেন। বাংলা সাহিত্যের বহু হারানো সম্পদ পুনরুদ্ধার করেছেন। ছোটদের জন্য পঞ্চাশটিরও বেশি বই লিখেছেন। সম্পাদিত বই একশোরও বেশি।