নগেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়।
রবীন্দ্রনাথ নিজের জগতে যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন, পারিবারিক দায়দায়িত্ব পালনে কখনও পিছপা হননি। বরং বরাবরই অগ্ৰণী ভূমিকা নিয়েছেন। পরিবারের সকলের জন্যই তাঁর ভাবনা-দুর্ভাবনার অন্ত ছিল না। ছিল কাতরতা। কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা তিনি। তিন-তিনটি কন্যা। তাঁদের পাত্রস্থ করার জন্য রবীন্দ্রনাথের যে উদ্বেগ, তা অন্য যে কোনও পিতার সঙ্গে তুলনীয়। তিনি সমাজজীবনে প্রতিষ্ঠিত, রয়েছে পারিবারিক ঐতিহ্য, তা সত্ত্বেও কন্যাদায়গ্রস্ত কবিকে নানা সংকটের মুখে পড়তে হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের কন্যা—এই পরিচয়ে আপ্লুত হয়ে কোনও যুবক এগিয়ে আসেননি পাণিগ্রহণে। যৌতুক-গ্রহণে মনের কোণে একটুও দ্বিধা জাগেনি।
রবীন্দ্রনাথকেও জোগাড় করতে হয়েছে পণের টাকা। কবির অসহায়তা ও বিপন্নতা গোপন থাকেনি। বিবাহোত্তর জীবনেও কন্যাদের সমস্যা-সংকটে এগিয়ে এসেছেন কবি। বিচলিত হয়েছেন তিনি। মানসিক চাপ তৈরি হয়েছে। জামাতাদের ব্যবহার, তাঁদের মানসিকতা অনেক সময়ই মানসিক উৎপীড়নের কারণ হয়ে উঠেছে। মাধুরীলতার স্বামী শরৎকুমার কবির সঙ্গে যে রকম ব্যবহার করেছিলেন, তা অকল্পনীয়। কবি বিহারীলাল চক্রবর্তী শরৎকুমারের পিতা। ফলে পরিবারটি অন্যরকম হবে, তাঁদের মধ্যে সংবেদনশীলতা থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। বাস্তবে ছিল একেবারে অন্যরকম। তাঁদের অর্থলোভ, যৌতুকস্পৃহা রবীন্দ্রনাথকে কতখানি বিপন্ন করেছিল, তা আমাদের অজানা নয়। অনেক কষ্ট করে কবি তাদের অর্থতৃষ্ণা মিটিয়েছিলেন।
রবীন্দ্রনাথকেও জোগাড় করতে হয়েছে পণের টাকা। কবির অসহায়তা ও বিপন্নতা গোপন থাকেনি। বিবাহোত্তর জীবনেও কন্যাদের সমস্যা-সংকটে এগিয়ে এসেছেন কবি। বিচলিত হয়েছেন তিনি। মানসিক চাপ তৈরি হয়েছে। জামাতাদের ব্যবহার, তাঁদের মানসিকতা অনেক সময়ই মানসিক উৎপীড়নের কারণ হয়ে উঠেছে। মাধুরীলতার স্বামী শরৎকুমার কবির সঙ্গে যে রকম ব্যবহার করেছিলেন, তা অকল্পনীয়। কবি বিহারীলাল চক্রবর্তী শরৎকুমারের পিতা। ফলে পরিবারটি অন্যরকম হবে, তাঁদের মধ্যে সংবেদনশীলতা থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। বাস্তবে ছিল একেবারে অন্যরকম। তাঁদের অর্থলোভ, যৌতুকস্পৃহা রবীন্দ্রনাথকে কতখানি বিপন্ন করেছিল, তা আমাদের অজানা নয়। অনেক কষ্ট করে কবি তাদের অর্থতৃষ্ণা মিটিয়েছিলেন।
বিবাহের পর শরৎকুমার রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে চূড়ান্ত দুর্ব্যবহার করেছিলেন। মাধুরীলতার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করা নিয়েও বিধিনিষেধ চালু করেছিলেন। টেবিলের উপর পা তুলে কবির উপস্থিতিতে সিগারেট খেতেন তিনি। কতখানি ঔদ্ধত্য থাকলে, এমন কাজ করতে পারেন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এ তথ্য আছে ঠাকুরবাড়ির বধূ হেমলতা দেবীর লেখায়। এমন কুৎসিত আচরণ করলেও ভাবতে অবাক লাগে রবীন্দ্রনাথের অর্থেই কিন্তু ব্যারিস্টারি পড়তে শরৎকুমার লন্ডনে গিয়েছিলেন।
রবীন্দ্রনাথের মেজোমেয়ে রেণুকার বিয়ে হয়েছিল প্রায় বালিকা-বয়েসে। তখন তাঁর বয়েস এগারোও হয়নি। রেণুকার স্বামী সত্যেন্দ্রনাথ বিবাহের বিনিময়ে শ্বশুরমশায়ের অর্থে আমেরিকা যেতে আগ্রহী হয়েছিলেন। নিজের উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত করার তাগিদে কবিকন্যাকে তিনি বিবাহ করেছিলেন। বিবাহের পর আমেরিকায় গিয়ে হোমিওপ্যাথির পাঠ নিয়েছিলেন। বিলিতি ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরবেন, এমন ইচ্ছে থাকলেও বাস্তবে তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। পাঠান্তে ফিরে এসেছেন ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে। ততদিনে রেণুকার অসুস্থতা তীব্র আকার নিয়েছে। সত্যেন্দ্রনাথের সঙ্গে রেণুকার সম্পর্ক কখনোই মাধুর্যময় হয়ে ওঠেনি। তৈরি হয়নি মানসিক বন্ধন। রবীন্দ্রনাথ অবশ্য তাঁকে পছন্দ করতেন। আশ্রমের অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সত্যেন্দ্রনাথ সে দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করলেও রবীন্দ্রনাথ তাঁকে স্নেহবঞ্চিত করে রাখেননি। অকালে কন্যা মারা যাবার পরও সত্যেন্দ্রনাথের সঙ্গে কবির আগের মতোই প্রীতিময় সম্পর্ক বজায় ছিল। বিপত্নীক সত্যেন্দ্রনাথের বিবাহেরও আয়োজন করেছিলেন কবি।
রবীন্দ্রনাথের মেজোমেয়ে রেণুকার বিয়ে হয়েছিল প্রায় বালিকা-বয়েসে। তখন তাঁর বয়েস এগারোও হয়নি। রেণুকার স্বামী সত্যেন্দ্রনাথ বিবাহের বিনিময়ে শ্বশুরমশায়ের অর্থে আমেরিকা যেতে আগ্রহী হয়েছিলেন। নিজের উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত করার তাগিদে কবিকন্যাকে তিনি বিবাহ করেছিলেন। বিবাহের পর আমেরিকায় গিয়ে হোমিওপ্যাথির পাঠ নিয়েছিলেন। বিলিতি ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরবেন, এমন ইচ্ছে থাকলেও বাস্তবে তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। পাঠান্তে ফিরে এসেছেন ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে। ততদিনে রেণুকার অসুস্থতা তীব্র আকার নিয়েছে। সত্যেন্দ্রনাথের সঙ্গে রেণুকার সম্পর্ক কখনোই মাধুর্যময় হয়ে ওঠেনি। তৈরি হয়নি মানসিক বন্ধন। রবীন্দ্রনাথ অবশ্য তাঁকে পছন্দ করতেন। আশ্রমের অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সত্যেন্দ্রনাথ সে দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করলেও রবীন্দ্রনাথ তাঁকে স্নেহবঞ্চিত করে রাখেননি। অকালে কন্যা মারা যাবার পরও সত্যেন্দ্রনাথের সঙ্গে কবির আগের মতোই প্রীতিময় সম্পর্ক বজায় ছিল। বিপত্নীক সত্যেন্দ্রনাথের বিবাহেরও আয়োজন করেছিলেন কবি।
আরও পড়ুন:
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৬৬: কবির অসুখ-বিসুখ
ক্যাবলাদের ছোটবেলা, পর্ব-৫: আমার পায়ে ঝিঁ ঝিঁ, আমি জ্ঞান হারিয়েছি
তিন জামাইয়ের মধ্যে মীরার স্বামী নরেন্দ্রনাথকে রবীন্দ্রনাথ সবচেয়ে বেশি স্নেহ করতেন। তাঁর প্রতি কবির আনুগত্য ও দুর্বলতা দুই-ই ছিল। বারবার, কত ঘটনার মধ্য দিয়ে কবির স্নেহময়তার পরিচয় পাওয়া গিয়েছে। মীরার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কোনও কালেই ভালো ছিল না। এই দাম্পত্য-দূরত্বে কবির মনে বেদনা জেগেছে সত্য, কিন্তু কখনো নগেন্দ্রনাথকে দূরে ঠেলে দেননি। অভিযুক্ত করেননি। নগেন্দ্রনাথও অন্য জামাইদের মতো নিজের উচ্চাকাঙ্ক্ষা চরিতার্থ করার তাগিদে কবিকন্যাকে বিবাহ করেছিলেন। অন্তরের টানে, ভালো-লাগায় এ বিবাহ সম্পন্ন হয়নি। উচ্চাভিলাসী নগেন্দ্রনাথ মীরাকে বিবাহ করে রবীন্দ্রনাথের অর্থে কৃষিবিজ্ঞানের উচ্চতর পাঠ নিতে আমেরিকায় গিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ পুত্র রথীন্দ্রনাথকেও আমেরিকায় পাঠিয়েছিলেন। চেয়েছিলেন পুত্র ও জামাতা দু-জনেই কৃষিবিজ্ঞানের উচ্চতর পাঠ নিয়ে ফিরে এসে নতুনতর জ্ঞানের বাস্তবায়ন ঘটাবেন এদেশে। শান্তিনিকেতনের অদূরে শ্রীনিকেতনকে ঘিরে কৃষিবিপ্লব শুরু হবে।
নগেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় প্রকাশিত 'পার্বণী।
রবীন্দ্রনাথের সে আশা-প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। নগেন্দ্রনাথ ফিরে এসে কৃষি-গবেষণায়, পল্লি-উন্নয়নে নিয়োজিত হননি। এ কাজে তাঁর সামান্যও আগ্রহ দেখা যায়নি। রবীন্দ্রনাথ তাই তাঁকে দিয়েছিলেন বিকল্প কাজ। ঠিক হয় নগেন্দ্রনাথ জমিদারির কাজকর্ম দেখাশোনা করবেন, পতিসর ব্যাঙ্কের দায়দায়িত্ব সামলাবেন। দায়িত্ব পেলেন বটে, কিন্তু সে কাজে তাঁর নিষ্ঠার পরিচয় মেলেনি, বরং ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন তিনি। সেই অপব্যবহার নিয়ে ক্রমেই সকলের মনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। শেষে রবীন্দ্রনাথ তাঁকে আশ্রম-বিদ্যালয়ের কাজ দিয়েছিলেন। সেকাজেও তাঁর মন বসেনি। নগেন্দ্রনাথের মধ্যে অস্থিরতা থাকলেও ছিল শিল্পীমন ও শিল্পবোধ। সাহিত্যের প্রতি তাঁর আগ্ৰহ রবীন্দ্রনাথকে মুগ্ধ করেছিল। সেই মুগ্ধতা থেকেই কবি নগেন্দ্রনাথের বইয়ের ভূমিকা লিখে দিয়েছিলেন। সে বইয়ের নাম ‘জাতীয় ভিত্তি’। বইয়ের নিবেদন-অংশে নগেন্দ্রনাথ জানিয়েছিলেন ‘পরম পূজনীয় বিশ্ববরেণ্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’ তাঁকে কীভাবে, কতখানি উৎসাহিত করেছেন।
আরও পড়ুন:
পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-১৮: মনে পড়ে পঞ্চমের কণ্ঠে শোলে ছবির সেই বিখ্যাত ‘মেহবুবা মেহবুবা…’ গানটি?
রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-২১: আবার কালাদেও?
নগেন্দ্রনাথকে প্রথম দেখেই রবীন্দ্রনাথ ‘প্রীত’ হয়েছিলেন। মীরার সঙ্গে বিবাহপর্ব সম্পন্ন হওয়ার পর তাঁর সাহিত্যমনস্কতার পরিচয় পেয়ে কবির মনে যে ভালোবাসা জাগে, সে ভালোবাসা কখনও ফিকে হয়ে যায়নি। মীরার সঙ্গে নগেন্দ্রনাথের সম্পর্কে অচিরেই ফাটল ধরে। সম্পর্কের সেই অবনমন ও মানসিক দূরত্ব রবীন্দ্রনাথকে পীড়িত করেছে। ভাঙা সম্পর্ক জোড়ার জন্য কম চেষ্টা করেননি কবি। আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য আসুক, নগেন্দ্রনাথের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর আনন্দ কাজ করুক—এই ভেবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর অধ্যাপনার চাকরির ব্যবস্থাও করে দিয়েছিলেন। উপাচার্য আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সৌহার্দ্যময় সম্পর্ক ছিল। ফলে নগেন্দ্রনাথের চাকরির ব্যবস্থা করতে তেমন বেগ পেতে হয়নি। এসব করেও মীরার সঙ্গে নগেন্দ্রনাথের যে দূরত্ব ঘুচেছে, তা নয়। আইনানুগ বিচ্ছেদ না হলেও পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব দিনে দিনে বেড়েই চলেছিল। রবীন্দ্রনাথ তাঁর জামাতার উদ্দেশে লিখেছিলেন, ‘তোমাদের পরস্পরের সম্বন্ধ বিচ্ছিন্ন হয়ে যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে, সেটা আমার পক্ষে অত্যন্ত কষ্টকর।’
রবীন্দ্র- কন্যা মীরা দেবীর লেখা একমাত্র বই।
নগেন্দ্রনাথের সাহিত্য-প্রীতি রবীন্দ্রনাথের মধ্যে দুর্বলতা তৈরি করেছিল। জামাতার এই সাহিত্য-প্রীতিতে কোনও খাদ ছিল না। তাই শ্বশুরমশায়ের লেখার প্রতি তিনি ছিলেন গভীর শ্রদ্ধাশীল। নগেন্দ্রনাথ নিজেও লিখতেন। প্রবন্ধের পাশাপাশি শিশুসাহিত্য। শ্বশুরমশায়ের কাজের প্রতি তাঁর যে আনুগত্য-ভালোবাসা, তাতে কখনও চিড় ধরেনি। কীভাবে রবীন্দ্রনাথের পাণ্ডুলিপি, চিঠিপত্র সংগ্রহ করা যায়, সংরক্ষণ করা যায়, সেসব নিয়ে শুধু ভাবেননি, সক্রিয় ভূমিকাও নিয়েছিলেন। এ কাজে রথীন্দ্রনাথকে বরাবরই পাশে পেয়েছেন। আবার ঘুরিয়ে বলা যেতে পারে, রথীন্দ্রনাথের পাশে বরাবর থেকেছেন নগেন্দ্রনাথ।
আরও পড়ুন:
এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৩: সুন্দরবনে মানুষের আদি বসতি
দশভুজা: মাই নেম ইজ গওহর জান—ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতে অঘোষিত বিপ্লব এনেছিলেন এই শিল্পী
বিলেতে বড়োদিনের সময় ছোটদের কথা ভেবে বিভিন্ন সংকলন-গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। ও দেশ থেকে সেই ধারণা বহন করে এনে নগেন্দ্রনাথ বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসবের সময় ছোটোদের জন্য বার্ষিকী প্রকাশের কথা ভেবেছেন। রবীন্দ্রনাথের সক্রিয় সহযোগিতায় তাঁরই সম্পাদনায় পুজোর মুখে প্রকাশিত হয়েছিল ‘পার্বণী’। ‘পার্বণী’তে ঠাকুরবাড়ির লেখকদের লেখা যেমন ছিল, তেমনই ছিল ঠাকুরবাড়ির বাইরের লেখকদের লেখাও। ‘পার্বণী’ দু-বার প্রকাশিত হয়েছিল। সংকলনটি হাতে নিয়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। বুঝেছিলেন, ‘পার্বণী’ হারানোর নয়, রয়ে যাবে।
মীরার চিঠি, কবিকে।
‘পার্বণী’র পাতায় নগেন্দ্রনাথ সাঁওতালজীবনের কথা লিখেছিলেন। একজন ব্রাহ্মণ-সন্তানের পক্ষে সাঁওতালদের সঙ্গে মিশে গিয়ে তাদের জীবনধারা সম্পর্কে জানার চেষ্টা সেকালে সহজ ছিল না। নগেন্দ্রনাথ এই কাজ করেছিলেন পরম নিষ্ঠায়। সাঁওতালপল্লিতে ঘুরে ঘুরে তাদের সমাজে প্রচলিত লোককথাগুলিও তিনি সংগ্রহ করেছিলেন। সাঁওতাল-সামাজে প্রচলিত লোককথা সংগ্রহ করে ‘উদোলবুড়োর সাঁওতালি গল্প’ বইতে সংকলন করেছিলেন। কাজটি অনায়াসসাধ্য ছিল না। যথেষ্ট সাহসিকতারও পরিচয় দিতে হয়েছিল। ‘উদোলবুড়োর সাঁওতালি গল্প’ হাতে নিয়ে আজও অভিভূত হতে হয়। গোটা বইটি ঝরঝরে চলিতগদ্যে লেখা। সহজ-সরল ভঙ্গিতে কথকতার মেজাজে লেখা এ বইটির সাহিত্যমূল্য অপরিসীম। ছোটোদের কথা ভেবে নগেন্দ্রনাথ আরও কয়েকটি বই লিখেছিলেন।
রবীন্দ্রনাথ নগেন্দ্রনাথের সাহিত্য-প্রতিভা সম্পর্কে অবগত ছিলেন, তাঁকে যে জামাতা বাবাজীবন অপরিসীম শ্রদ্ধা করেন, তাও তিনি জানতেন। তাই মীরার সঙ্গে নগেন্দ্রনাথের সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছে গেলেও রবীন্দ্রনাথ তাঁকে কখনও দূরে সরিয়ে দেননি।
রবীন্দ্রনাথ নগেন্দ্রনাথের সাহিত্য-প্রতিভা সম্পর্কে অবগত ছিলেন, তাঁকে যে জামাতা বাবাজীবন অপরিসীম শ্রদ্ধা করেন, তাও তিনি জানতেন। তাই মীরার সঙ্গে নগেন্দ্রনাথের সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছে গেলেও রবীন্দ্রনাথ তাঁকে কখনও দূরে সরিয়ে দেননি।
* গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি (Tagore Stories – Rabindranath Tagore) : পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Parthajit Gangopadhyay) অবনীন্দ্রনাথের শিশুসাহিত্যে ডক্টরেট। বাংলা ছড়ার বিবর্তন নিয়ে গবেষণা, ডি-লিট অর্জন। শিশুসাহিত্য নিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে গবেষণা করে চলেছেন। বাংলা সাহিত্যের বহু হারানো সম্পদ পুনরুদ্ধার করেছেন। ছোটদের জন্য পঞ্চাশটিরও বেশি বই লিখেছেন। সম্পাদিত বই একশোরও বেশি।