শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


শ্রীরামকৃষ্ণ।

“ম্যাক্স মুলার ভারতবর্ষকে যে পরিমাণ ভালবাসেন আমি আমার মাতৃভূমিকে তাহার শতাংশ ভাগ ভালবাসিতে পারিলে নিজেকে কৃতার্থ বলিয়া মনে করিতাম”।— স্বামী বিবেকানন্দ

স্বামীজির কাছে যিনি ছিলেন বৈদান্তিকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বৈদান্তিক, তিনি বার্লিনে যাওয়ার পর(১৮৪৪) দার্শনিক শিলিং এর মাধ্যমে ভারতীয় দর্শন বিশেষতঃ বেদান্ত দর্শনের সঙ্গে পরিচিত হন। উপলব্ধ এই দর্শনকে বাস্তব জীবনে রূপায়িত করতে পারলে কি পরিমাণ পবিত্রতা, সারল্য ও নিঃস্বার্থপরতা অর্জন করা যায় তার উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের জীবনের কথা বলতেন। ভারতবর্ষের মানুষদের ধর্মান্তরিত করা বিবেচনা সাপেক্ষ কারণ সেখানে শ্রীরামকৃষ্ণ প্রচারিত উচ্চ ভাবধারা জনচিত্তে প্রবাহিত হয় বলে তিনি ঠাকুরের বাণী ও জীবনী (Ramkrishna- His Life and Sayings, 1898) নামে একটি বইয়ে এই মত প্রকাশ করেন। কেশবচন্দ্র সেনের কাছে তিনি প্রথম ঠাকুর সম্পর্কে জানতে পারেন এবং কৌতুহলী হন।
এরপর ১৮৯৬ এ স্বামী বিবেকানন্দ অক্সফোর্ডে ম্যাক্স মুলারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তার ঠিক একবছর পর ১৮৯৭ সালে বাগবাজারে বলরাম বসুর বাড়িতে থাকাকালীন সেই সাক্ষাৎ সম্পর্কে স্বামীজি তাঁর এক শিষ্যকে বলেছিলেন, ”মনে হল কি জানিস—সায়ণই নিজের ভাষ্য নিজে উদ্ধার করতে ম্যাক্স মুলার- রূপে পুনরায় জন্মেছেন। আমার অনেকদিন হতেই ঐ ধারণা। ম্যাক্স মুলারকে দেখে সে ধারণা আরও যেন বদ্ধমূল হয়ে গেছে। এমন অধ্যবসায়ী, এমন বেদবেদান্তসিদ্ধ পণ্ডিত এদেশে দেখা যায় না! তার উপর আবার ঠাকুরের (শ্রীরামকৃষ্ণদেবের) প্রতি কি অগাধ ভক্তি! তাঁকে অবতার বলে বিশ্বাস করে যে! ….আমায় বিদায় দেওয়ার কালে বুড়োর চোখে জল পড়ছিল।” যে রাতে স্বামীজি অক্সফোর্ড ত্যাগ করেন, সেই প্রবল ঝড় বৃষ্টির রাতে বৃদ্ধ মুলার তাঁকে বিদায় জানাতে স্টেশনে উপস্থিত হয়েছিলেন। বিবেকানন্দ সেই সময় দুঃখপ্রকাশ ও অনুযোগ করলে সেই বেদবেদান্তসিদ্ধ পণ্ডিত তাঁকে বলেন যে, শ্রীরামকৃষ্ণের প্রিয় শিষ্যের দর্শন তো রোজ পাওয়া যাবে না তাই তিনি এই কষ্টটুকু স্বীকার করেছেন।
আরও পড়ুন:

তাঁর পঁয়তাল্লিশ বছরের নিরলস পরিশ্রম ও গভীর অধ্যবসায়ে উপকৃত হয়েছিল সমগ্র মানবসভ্যতা/১

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৫৫: সুর হারানো হারানো সুর

অন্যান্য ইউরোপীয় ভারতবিদ পণ্ডিতদের সঙ্গে তাঁর পার্থক্য ছিল। তিনি শুধু ভারতবিদ্যা বিশারদ ছিলেন না, ছিলেন ভারত প্রেমিকও। রাজনৈতিক কারণে ১৮৮৫ সালে ম্যাক্স মুলারের ভারত ভ্রমণ বাতিল হয়ে গেলে তিনি বিশেষ ব্যথিত হন নি এই কারণে যে, ভারতের যে চিন্ময় রূপ তাঁর মনে আঁকা ছিল তার সঙ্গে বাস্তব ভারতের কোনোরূপ বৈষম্য দেখলে খুব দুঃখ পেতেন। প্রাচীন ভারতীয় ভাষাগুলির প্রতি ভালোবাসা আর বসন্তের পর বসন্ত চলে যাওয়া সেই পক্বকেশী সাধুর জীবনে তাঁর অক্সফোর্ডের বাড়ির গ্রন্থাগার তাঁকে বারাণসীবাসের আনন্দ দিত। ইংল্যান্ডে পড়তে আসা ভারতীয় ছাত্রদের সব সময় স্নেহ করতেন। নিছক সংস্কৃতের অধ্যাপক না হয়েও তিনি সবসময় ছাত্রদের সংস্কৃত শিক্ষায় উৎসাহ দিতেন এবং সাহায্যও করতেন।

ম্যাক্স মুলার।

তাঁর বিখ্যাত তিনজন জাপানি ছাত্র ছিলেন বুনিও নানজিও (Bunyiu Nanjio, 1849-1927), কেনজু কাসাহারা (Kenju Kasahara, 1852-1853) এবং তাকাকুসু (Junjiro Takakus)। প্রথম দুজন কাজ করেছিলেন সংস্কৃত বৌদ্ধশাস্ত্র গ্রন্থগুলির তালিকা প্রস্তুতি এবং পরিভাষা সংকলন নিয়ে। তৃতীয় জন ইৎসিং এর ভারতভ্রমণ বৃত্তান্ত ইংরেজিতে অনুবাদ করেছিলেন। ম্যাক্সমুলার তাঁর আর এক ছাত্রের সহায়তায় খ্রিষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীরও পূর্বে তালপত্রে দুইখণ্ডে লিখিত ‘প্রজ্ঞাপারমিতাহৃদয় সূত্র’ নামে এক সংস্কৃত পুঁথি জাপানের একটি মন্দির থেকে সংগ্রহ করেছিলেন, যা পরে ‘সেক্রেড বুকস অফ দি ইস্ট’ গ্রন্থমালার উনপঞ্চাশতম খণ্ডে প্রকাশিত হয় (১৮৮০)। সমসাময়িক ভারতে পুঁথি বিশারদ ও ভারতবিদ্যা চর্চার অন্যতম পথিকৃৎ রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাজ ‘দ্য স্যান্সক্রিট বুদ্ধিস্ট লিটারেচার অফ নেপাল’, মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর সহায়তায় প্রকাশ করেন(১৮৮২)।মহাকবি কালিদাসের মেঘদূত থেকে দার্শনিক কান্টের প্রসিদ্ধ গ্রন্থ “ক্রিটিক অফ পিওর রিজন”, ম্যাক্স মুলার অনূদিত (ইংরেজিতে) গ্রন্থের সংখ্যা অগণিত।
আরও পড়ুন:

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-২৬: সুন্দরবনের গবাদি-পশুরক্ষক মানিক পীর

অসমের আলো-অন্ধকার, পর্ব-১: প্রকৃতি অসমকে সাজাতে কোনও কার্পণ্যই করেনি

পণ্ডিত প্রবর সেই ভারত প্রেমিকের কথা বলতে গিয়ে আচার্য রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী অন্যান্য ইউরোপীয় পণ্ডিতদের শবদেহ ব্যবচ্ছেদকের সঙ্গে তুলনা করে লিখেছিলেন, “তাঁহারা এই মৃত জাতির শবদেহ ব্যবচ্ছেদ করিয়া তাহা হইতে নানা তত্ত্বের আবিষ্কার করিয়া আনন্দ বা কৌতুক-বোধ করিয়া থাকেন; কিন্তু এই শবদেহের স্পর্শ তাঁহাদের পক্ষে কতটা প্রীতিপ্রদ হয় তাহা বলিতে পারি না। আচার্য মোক্ষমূলর কিন্তু ইহাকে ঠিক শবদেহ ভাবিতেন না। অন্ততঃ এই দেহের ধমনীগুলির মধ্যে এককালে রক্ত প্রবাহ সঞ্চালিত হইত এবং ইহার হৃৎপিণ্ড এককালে প্রাণের শক্তিযোগে স্পন্দিত হইত, ইহা তিনি বুঝিতেন এবং বাক্যের ও কার্যের দ্বারা তাঁহার সেই মনোভাবের পরিচয় দিতেন। সুতরাং আমরা সেই স্বর্গগত আচার্যের নিকট চিরঋণী ও চিরকৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ” (চরিত-কথা, রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী)।
বন্ধুবৎসল এই মানুষটির ভারতীয় বন্ধুর সংখ্যা কিছু কম ছিল না। ঠাকুর বাড়ির অনেকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ছিল। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের সঙ্গে তাঁর প্যারীতে ( ১৮৪৫) এবং অনেক পরে তাঁরই পৌত্র সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে তাঁর লণ্ডনে পরিচয় হয়েছিল। ম্যাক্স মুলার সাহেব এবং মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মধ্যে শ্রদ্ধার সম্পর্ক ছিল। চিঠিপত্রের আদান প্রদানও ছিল তাঁদের মধ্যে। এছাড়াও রাধাকান্ত দেব, নীলকণ্ঠ গোরে, কেশবচন্দ্র সেন, রামতনু লাহিড়ী, দয়ানন্দ সরস্বতী প্রমুখ বিশিষ্ট ভারতীয়দের সঙ্গে তাঁর বিশেষ পরিচয় ছিল। রাজা রামমোহন রায় সম্পর্কে এতই শ্রদ্ধাশীল ছিলেন যে নিজেকে রাজার একজন অকপট অনুগামী বলে বর্ণনা করতেন। তবে ভারতীয় সাহিত্য ও শাস্ত্রের প্রতি নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির প্রচার প্রসার করায় মুলার সাহেব সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের বিরাগভাজন হয়েছিলেন।

বিরুদ্ধ সমালোচনার আঁচ যে তিনি পেতেন না তা নয়। অনেক পরে (১৮৮২) বন্ধু কোওয়েলকে (Cowell) লিখেছিলেন, “No, if friendship can claim any voice in the courts of science and literature, let me assure you that I shall consider your outspoken criticism of my Lectures as the very best proof of your true and honest friendship. I have through life considered it the greatest honour if real scholars, I mean not only of learning but of judgement and character, have considered my writings worthy of a severe and searching criticism and I have cared far more for the production of one single new fact, though it spoke against me, than for any amount of empty price or empty abuse.”
আরও পড়ুন:

ক্যাবলাদের ছোটবেলা, পর্ব-২৬: স্বপ্নে আমার মনে হল

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৭৬: রবীন্দ্রনাথ চা নয়, প্রতিদিন সকালে কফি খেতেন

শুধু সমালোচনা কখনই তাঁর দীর্ঘ জীবনের সম্বল ছিল না। সারা জীবন যিনি অক্লান্ত পরিশ্রমে ভারত মহিমা প্রচার করে গেছেন, পুঁথির পর পুঁথি ঘেঁটে, গ্রন্থের পর গ্রন্থ সম্পাদনা ও অনুবাদ করেছেন, তাঁর ভারত প্রেমের প্রতিদান দিতে ভারতবাসী কার্পণ্য করেননি। হয়ে উঠেছিলেন “ভট্ট মোক্ষমূলর”। এমনকি ঋগ্বেদের আখ্যা পত্রে (Title Page ) ভট্ট মোক্ষমূলর নামটিই ম্যাক্স মুলার ব্যবহার করেছিলেন। ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাঁকে শ্রাদ্ধের বিদায় পাঠানো হতো আর তিনি সেসব গর্ব ও শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করতেন। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন, তা সে ১৮৯৮ সালে লোকমান্য তিলকের কারামুক্তি হোক কিংবা ইলবার্ট বিলের সমর্থনে সুপ্রসিদ্ধ “টাইমস” পত্রিকায় পত্র প্রেরণ হোক, বরাবর সত্যের সমর্থনে থেকে তিনি ভারত-বিদ্বেষীদের চক্ষুশূল হয়েছিলেন। এই সত্যনিষ্ঠার কারণে রাজা রাধাকান্ত দেবের ‘কলিযুগের বেদব্যাস’কে রমেশ চন্দ্র দত্ত তাঁর অনূদিত ইংরেজি রামায়ণ উৎসর্গ করেছিলেন।

স্বামী বিবেকানন্দ।

ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত উদার-হৃদয়, বন্ধু ও স্বজন বৎসল মানুষটিকে পৃথিবীর নানা বিশ্ববিদ্যালয় নানাভাবে সম্মানিত করেছিল। প্রুশিয়া ও ইতালির সরকার তাঁকে ‘নাইট’ উপাধি দেন। মহারানি ভিক্টোরিয়া তাঁকে ‘প্রিভি কাউন্সিলর’ নিযুক্ত করেন(১৮৯৬)। সুইডেন, ফ্রান্স, ব্যাভেরিয়া ও তুরস্কের সরকারও তাঁকে সম্মানসূচক উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৮৯২ সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রাচ্যবিদ্যা মহাসম্মেলনের (International Congress of Orientalists) নবম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করা এই মানুষটি ঠিক আট বছর পরের জানুয়ারি মাসে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর রোগমুক্তির জন্য অনুরাগীরা মাদ্রাজের এক মন্দিরে পুজো দিলে আশ্চর্যভাবে তিনি সে যাত্রায় রোগমুক্ত হন। সেই বছরের (১৯০০) অক্টোবর মাসে আর শেষরক্ষা হয় নি। অশেষ শাস্ত্রবিৎ পণ্ডিত তিনি চলে যান না ফেরার দেশে। সেই সময় বিশিষ্ট ভারতীয় পণ্ডিত বেরহামজী মালাবারী মুলার সাহেবের স্ত্রীকে পাঠানো এক শোকবার্তায় বলেছিলেন, “আপনার শোকে সমগ্র ভারতবর্ষও শোকমগ্ন।” টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় কিনে নেয় ম্যাক্স মূলারের বিপুল গ্রন্থসংগ্রহ। কালের নিয়মে তিনি চলে গেলেও প্রবাহিত হতে থাকে সেই শিক্ষক-ছাত্র পরম্পরা, যা ভারততত্ত্ববিদ্যাকে পৃথিবী জুড়ে মৌল শিক্ষা ও গবেষণার অন্তর্বর্তী করেছে। — শেষ।

তথ্যসূত্র:
স্কলার এক্সট্রাঅর্ডিনারি: লাইফ অফ ফ্রিডরিক ম্যাক্সমুলার—নীরদচন্দ্র চৌধুরী
বিদেশীয় ভারতবিদ্যা পথিক—গৌরাঙ্গ গোপাল সেনগুপ্ত
ইন্ডিয়া হোয়াট ক্যান ইট টিচ আস- ফ্রিডরিখ ম্যাক্স মুলার
* লেখিকা পরিচিতি: ড. বিদিশা মিশ্র বিগত চৌদ্দ বছর ধরে সরকারি কলেজে, বর্তমানে কলকাতার লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত। তাঁর বিষয়— সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্য। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্রী বিদিশা স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উভয় পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে তৃতীয় হন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল —বাঙালি নৈয়ায়িক চিরঞ্জীব ভট্টাচার্যের গ্রন্থ ‘কাব্যবিলাস’। তাঁর এই গবেষণা ২০২১ সালে কর্ণাটকের আইএনএসসি পাবলিশিং হাউস থেকে ‘দ্য কাব্যবিলাস অফ চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য — এ ক্রিটিক্যাল স্টাডি’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়। দেশের বিভিন্ন প্রদেশের পত্রিকায় তাঁর শোধপত্রগুলি প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে তাঁর তত্ত্বাবধানে একাধিক স্কলার গবেষণারত। বিভিন্ন সরকারি কাজকর্ম ও অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি গুরুজি বিপ্লব মুখোপাধ্যায়ের কাছে হিন্দুস্থানি ক্লাসিক্যাল ও রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী জয়শ্রী দাসের কাছে রবীন্দ্রসংগীত শিক্ষারতা। ভ্রমণপিপাসু বিদিশা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান ঘুরেছেন, সেইসব অভিজ্ঞতা তাঁকে সমৃদ্ধ করেছে বলে তিনি মনে করেন।

Skip to content