দেশনায়ক নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। ছবি সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে।
শুভ সকাল। আমার সকল স্নেহের ছাত্রছাত্রীরা তোমরা আশা করি ভালো আছো। বর্তমানে আমরা একটি কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, আশা করি ভবিষ্যতে সকল দুঃখ কষ্টের অবসান হবে। পৃথিবী আবারও নতুন করে শ্বাস গ্রহণ করবে, প্রভাতের আলোতে স্নাত হবে সমগ্র মানবপ্রজাতি। আজ ২৩ জানুয়ারি। সেই বিখ্যাত দিন যেদিন জন্ম হয়েছিলেন মহান দেশনায়ক নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। নত মস্তকে আমরা তাঁকে সশ্রদ্ধ প্রণাম জানাই। শুধু এই দিনটি নয়, বছরের প্রত্যেকটা দিন, প্রত্যেকটা মিনিট আমরা এই মহান কর্মঠ, পৌরুষকে স্মরণ করি। তিনি যেন গ্রহান্তরের কক্ষপথ হতে ছিটকে এসে পড়েছিলেন আমাদের এই দেশে। তাঁর জ্যোতির্ময় অগ্নি বলয়ের দিকে আমরা চেয়ে থাকতে পারিনি, তাঁর প্রচণ্ড পৌরুষ এবং প্রশস্ত হৃদয় সবটা অবধারণ করার মতো ক্ষমতা তখন আমাদের ছিল না। এখনও কি আছে? জানি না তার সদুত্তর আমাদের কাছে নেই। তবুও এই মহান দেশনায়ক এর বীরত্ব, তার জীবন সংগ্রাম তার কঠিন লৌহ মিশ্রিত ব্যক্তিত্ব আমাদের আজও উদ্বুদ্ধ করে। তার জীবনকাহিনি শুধু আমাদের অনুপ্রাণিত করে না, আসমুদ্র হিমাচল, সমগ্র বিশ্বকে তিনি মোহিত করে রেখেছেন তার বীরত্ব এবং মহানুভবতার দ্বারা। তিনি হয়তো সুখী জীবন অতিবাহিত করতে পারতেন, কিন্তু তার ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছিল স্বাধীনতার অগ্নিস্ফুলিঙ্গ, সিভিল সার্ভিস এর মতো পরীক্ষায় পাস করা সত্ত্বেও দেশমাতৃকার চরণে তিনি নিজেকে নিয়োজিত করতে পেরেছিলেন। তিনি শুধু আমার বা তোমার নেতাজি নন তিনি সমগ্র ভারতের নেতাজি। প্রত্যক্ষ সংগ্রাম ব্যতীত যে স্বাধীনতা অর্জন করা যাবে না সেই চিন্তাধারা নেতাজি যুব সমাজের মধ্যে সঞ্চারিত করতে পেরেছিলেন। যুব সমাজকে তিনি দীক্ষিত করেছিলেন স্বদেশের অগ্নিমন্ত্রে। স্বামীজি যেমন বুঝেছিলেন আমাদের ছাত্র যুব সমাজ দেশের কান্ডারি, ঠিক তেমনি নেতাজিও ছাত্রদের অনুপ্রাণিত করেছিলেন দেশসেবার মন্ত্রে। নেতাজির উদাত্ত কন্ঠের সেই আহ্বান-‘তোমরা আমায় রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’, যা আসমুদ্রহিমাচলকে জাগিয়ে তুলেছিল। তাই দেশের সকল ছাত্র সমাজের উদ্দেশ্যে আমার বার্তা তোমরা ওঠো, জাগ্রত হও, স্বাধীনতার মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে তোমরা সামনের দিকে এগিয়ে চলো। তোমরাই দেশের ভবিষ্যৎ, দেশ এবং সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবার ক্ষেত্রে তোমাদের অবদান আজ আমাদের একান্ত প্রয়োজনীয়। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে দেশ গঠনের লক্ষ্যে তোমরা অবিচল থাকো। ঠাকুর, শ্রীশ্রী মা এবং স্বামীজির আশীর্বাদ তোমাদের উপরে বর্ষিত হোক। তোমাদের ছত্রছায়ায় ভারত প্রতিষ্ঠিত হোক বিশ্বমানবতার সিংহাসনে। একদা যে ভারত গঠনের স্বপ্ন স্বামীজি এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু দেখতেন, তোমরা তা সফল করবে আমি সেই আশা রাখি, ঈশ্বর তোমাদের সর্বশক্তি প্রদান করুক। সবশেষে আমি আমার সকল স্নেহের ছাত্রছাত্রীকে জানাই অনেক অভিনন্দন, শুভেচ্ছা এবং ভালোবাসা। তোমরা ভালো থেকো সুস্থ থেকো।