লতা মঙ্গেশকর। ছবি সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে।
মুম্বইতে একবার লতাজির সঙ্গে আমার কথা হচ্ছিল। একটু দুঃখ করে বলেছিলেন, ‘যে বয়সে সকলে পড়াশোনা করে, আনন্দ করে, সেই বয়সেই আমাকে পাহাড়প্রমাণ সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। বাবা নেই ভাবলেই বুক ঠেলে কান্না আসত যেন। মায়ের মুখের দিকে তাকানো যেত না। ভাইবোনরা সব ছোট ছোট। গোটা সংসার তখন আমার মাথার ওপর। তবে আমার মা ছিলেন সর্বংসহা। তিনি একাই আমাদের মা ও বাবার জায়গা পূরণ করেছেন। মা আমার সংগীতজীবনের সবটা দেখে যেতে পেরেছিলেন। এ যে আমার কত বড় সান্ত্বনার জায়গা তা বলে বোঝাতে পারব না।’ মাস্টার দীননাথ মঙ্গেশকর মৃত্যুশয্যায় জ্যেষ্ঠ কন্যাকে আশীর্বাদ করে বলেছিলেন, ‘তানপুরা, গানের খাতা আর ঈশ্বরের আশীর্বাদ ছাড়া কিছুই রেখে যেতে পারলাম না তোমার জন্য।’
লতার গানের শিক্ষা শুরু হয়েছিল বাবার কাছেই, চার বছর বয়সে। বাবার আগ্রহেই ছোটবেলায় কয়েকটি মারাঠি ছবিতে অভিনয়ও করেন। ন’বছর বয়সে বাবার সঙ্গে উচ্চাঙ্গসংগীত গেয়েছিলেন লতা। ১৯৪১ সালে ১৬ ডিসেম্বর প্রথম রেডিওতে গাইলেন। সবই ঠিকঠাক চলছিল, কিন্তু আচমকাই নেমে এল বিপর্যয়। ১৯৪২ সালে চলে গেলেন মাস্টার দীননাথ মঙ্গেশকর। লতার বয়স তখন মাত্র তেরো। পুরো সংসারের দায়িত্ব লতার কাঁধে। খানিকটা বাধ্য হয়েই পারিবারিক সূত্রে পরিচিত, মারাঠি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বিখ্যাত পরিচালক, একসময়ের খ্যাতনামা নায়িকা নন্দার বাবা বিনায়ক রাওয়ের সূত্রে ফিল্ম জগতে পা রাখেন। সেই বয়সে প্রয়োজনের তাগিদেই অভিনয়জীবনে আসতে হয় লতাকে। বিনায়ক রাওয়ের সঙ্গেই কাজ করছিলেন বেশ কিছুটা সময় ধরেই। কিন্তু আবার বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হল তাঁকে। লতার মা মাঈ মঙ্গেশকর মেয়েকে বলেছিলেন, ‘এই তো শুরু, তোকে আরও লড়াই করতে হবে, লড়াই করেই এগোতে হবে।’ মায়ের এই কথাগুলো আজীবন মনে রেখেছেন লতা। এই কথাগুলোই যে তিনি বেদবাক্যের মতো মেনে চলতেন সেকথা বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেওছিলেন। ১৯৪৭ সালে মারা গেলেন বিনায়ক রাও। লতা যতবার একটু স্বস্তির আশ্বাস খোঁজার চেষ্টা করেছেন ততবারই যেন সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। বিনায়ক রাওয়ের মৃত্যুর পর মাস্টার দীননাথের অত্যন্ত কাছের বন্ধু সংগীত পরিচালক গুলাম হায়দারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন লতা। গুলাম হায়দার নিরাশ করেননি তাঁকে। বাড়িয়ে দিয়েছেন সহানুভূতির হাত। একের পর এক প্রযোজকের কাছে এবং বিভিন্ন স্টুডিওতে লতাকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরেছেন। গুলাম হায়দারই তাঁকে নিয়ে যান ফিল্মিস্তান স্টুডিওর কর্ণধার বিখ্যাত প্রযোজক শশধর মুখোপাধ্যায়ের কাছে। শশধরবাবু প্রথম দিনই ফিরিয়ে দিয়েছিলেন লতাকে। বলেছিলেন, পাতলা কণ্ঠস্বরের দরুন তাঁকে দিয়ে ছবিতে এই মুহূর্ত কোনও গান গাওয়াতে পারছেন না। কিন্তু ভাগ্যের কী অদ্ভুত পরিহাস! শশধর মুখোপাধ্যায়ই পরবর্তীকালে অকুণ্ঠচিত্তে স্বীকার করেন যে, লতাজির মতো নিখুঁত শিল্পী সত্যিই মেলা ভার। লতাজিকে সংগীতের সাধিকা বলে উল্লেখ করেছিলেন তিনি।
১৯৪৭ সালে ‘আপ কি সেবামে’ ছবিতে গান গাইবার সূত্রে পাকাপাকিভাবে সংগীত জগতে পা রাখেন লতা। পরের বছর বসন্ত যোগেলকরের ছবি ‘মজবুর’-এ গুলাম হায়দারের সুরে লতা কয়েকটি গান গাইলেন। সেই ছবির রেকর্ডিং-এ উপস্থিত ছিলেন তিন দিকপাল সংগীত পরিচালক অনিল বিশ্বাস, নৌশাদ এবং খেমচাঁদ প্রকাশ। তাঁরা তিনজনেই লতার কণ্ঠমাধুর্যে মুগ্ধ হন। নৌশাদ প্রথম লতাকে ডেকে নেন তাঁর ‘চাঁদনী রাত’ ছবিতে গাইবার জন্য। এরপর লতা নৌশাদের সুরেই গাইলেন মেহবুব খানের বিখ্যাত ছবি ‘আন্দাজ’-এ। অনিল বিশ্বাসের সুরে ‘আনোখা পেয়ার’ ছবিতে গাইলেন লতা। তবে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল কামাল আমরোহি পরিচালিত ‘মহল’ ছবিটি। এই ছবিতে লতাজির কণ্ঠে অন্যতম একটি জনপ্রিয় গান হল ‘আয়েগা আনেওয়ালা’। এরপর লতাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
বিগত আট দশক ধরে সংগীতের দুনিয়া দ্য ইন্ডিয়ান নাইটিঙ্গেলের কণ্ঠের জাদুতে নিমজ্জিত থেকেছে।
১৯৯৫ সালে ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে’ মুক্তি পেয়েছিল। ২০০৪ সালে মুক্তি পায় ‘বীরজারা’। এই দুটো ছবিতে যথাক্রমে লতা ৬৬ এবং ৭৫ বছর বয়সে যেভাবে গেয়েছেন তাতে বোঝাই যায় যে তাঁর কণ্ঠে বয়স কোনও প্রভাব ফেলতে পারেনি। নিজের কণ্ঠ নিয়ে খুবই যত্নশীল ছিলেন লতাজি। কখনও রেকর্ডিং-এর আগে ভুল করে বা লোভে পড়েও টক খেতেন না। রেকর্ডিং-এ সবসময় মধু আর জল রাখতেন। মধু মেশানো জল খেলে গলা ঠিক থাকত তাঁর, নিয়মিত ব্রিদিং এক্সারসাইজও করতেন। চমৎকার রান্নার হাত ছিল লতার। একবার হেমন্তদার (হেমন্ত মুখোপাধ্যায়) মুখে শুনেছিলাম, কলকাতায় তাঁর বাড়িতে থাকাকালীন লতাজি নিজে রান্না করে সবাইকে খাইয়েছিলেন। লতাজি আমাকে বলেছিলেন, ‘কোলাপুরি মাটন আর সবজি আমি ভালোই রান্না করতে পারি। চিকেনকারিও মন্দ করি না।’ তিনি নিজে ভালোবাসতেন সি-ফুড খেতে। বলতেন, ‘আমার বাবা সি-ফুড খুব ভালোবাসতেন, আমি বাবার ধাতটাই পেয়েছি।’
লতার গানের শিক্ষা শুরু হয়েছিল বাবার কাছেই, চার বছর বয়সে। বাবার আগ্রহেই ছোটবেলায় কয়েকটি মারাঠি ছবিতে অভিনয়ও করেন। ন’বছর বয়সে বাবার সঙ্গে উচ্চাঙ্গসংগীত গেয়েছিলেন লতা। ১৯৪১ সালে ১৬ ডিসেম্বর প্রথম রেডিওতে গাইলেন। সবই ঠিকঠাক চলছিল, কিন্তু আচমকাই নেমে এল বিপর্যয়। ১৯৪২ সালে চলে গেলেন মাস্টার দীননাথ মঙ্গেশকর। লতার বয়স তখন মাত্র তেরো। পুরো সংসারের দায়িত্ব লতার কাঁধে। খানিকটা বাধ্য হয়েই পারিবারিক সূত্রে পরিচিত, মারাঠি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বিখ্যাত পরিচালক, একসময়ের খ্যাতনামা নায়িকা নন্দার বাবা বিনায়ক রাওয়ের সূত্রে ফিল্ম জগতে পা রাখেন। সেই বয়সে প্রয়োজনের তাগিদেই অভিনয়জীবনে আসতে হয় লতাকে। বিনায়ক রাওয়ের সঙ্গেই কাজ করছিলেন বেশ কিছুটা সময় ধরেই। কিন্তু আবার বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হল তাঁকে। লতার মা মাঈ মঙ্গেশকর মেয়েকে বলেছিলেন, ‘এই তো শুরু, তোকে আরও লড়াই করতে হবে, লড়াই করেই এগোতে হবে।’ মায়ের এই কথাগুলো আজীবন মনে রেখেছেন লতা। এই কথাগুলোই যে তিনি বেদবাক্যের মতো মেনে চলতেন সেকথা বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেওছিলেন। ১৯৪৭ সালে মারা গেলেন বিনায়ক রাও। লতা যতবার একটু স্বস্তির আশ্বাস খোঁজার চেষ্টা করেছেন ততবারই যেন সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। বিনায়ক রাওয়ের মৃত্যুর পর মাস্টার দীননাথের অত্যন্ত কাছের বন্ধু সংগীত পরিচালক গুলাম হায়দারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন লতা। গুলাম হায়দার নিরাশ করেননি তাঁকে। বাড়িয়ে দিয়েছেন সহানুভূতির হাত। একের পর এক প্রযোজকের কাছে এবং বিভিন্ন স্টুডিওতে লতাকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরেছেন। গুলাম হায়দারই তাঁকে নিয়ে যান ফিল্মিস্তান স্টুডিওর কর্ণধার বিখ্যাত প্রযোজক শশধর মুখোপাধ্যায়ের কাছে। শশধরবাবু প্রথম দিনই ফিরিয়ে দিয়েছিলেন লতাকে। বলেছিলেন, পাতলা কণ্ঠস্বরের দরুন তাঁকে দিয়ে ছবিতে এই মুহূর্ত কোনও গান গাওয়াতে পারছেন না। কিন্তু ভাগ্যের কী অদ্ভুত পরিহাস! শশধর মুখোপাধ্যায়ই পরবর্তীকালে অকুণ্ঠচিত্তে স্বীকার করেন যে, লতাজির মতো নিখুঁত শিল্পী সত্যিই মেলা ভার। লতাজিকে সংগীতের সাধিকা বলে উল্লেখ করেছিলেন তিনি।
১৯৪৭ সালে ‘আপ কি সেবামে’ ছবিতে গান গাইবার সূত্রে পাকাপাকিভাবে সংগীত জগতে পা রাখেন লতা। পরের বছর বসন্ত যোগেলকরের ছবি ‘মজবুর’-এ গুলাম হায়দারের সুরে লতা কয়েকটি গান গাইলেন। সেই ছবির রেকর্ডিং-এ উপস্থিত ছিলেন তিন দিকপাল সংগীত পরিচালক অনিল বিশ্বাস, নৌশাদ এবং খেমচাঁদ প্রকাশ। তাঁরা তিনজনেই লতার কণ্ঠমাধুর্যে মুগ্ধ হন। নৌশাদ প্রথম লতাকে ডেকে নেন তাঁর ‘চাঁদনী রাত’ ছবিতে গাইবার জন্য। এরপর লতা নৌশাদের সুরেই গাইলেন মেহবুব খানের বিখ্যাত ছবি ‘আন্দাজ’-এ। অনিল বিশ্বাসের সুরে ‘আনোখা পেয়ার’ ছবিতে গাইলেন লতা। তবে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল কামাল আমরোহি পরিচালিত ‘মহল’ ছবিটি। এই ছবিতে লতাজির কণ্ঠে অন্যতম একটি জনপ্রিয় গান হল ‘আয়েগা আনেওয়ালা’। এরপর লতাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
বিগত আট দশক ধরে সংগীতের দুনিয়া দ্য ইন্ডিয়ান নাইটিঙ্গেলের কণ্ঠের জাদুতে নিমজ্জিত থেকেছে।
১৯৯৫ সালে ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে’ মুক্তি পেয়েছিল। ২০০৪ সালে মুক্তি পায় ‘বীরজারা’। এই দুটো ছবিতে যথাক্রমে লতা ৬৬ এবং ৭৫ বছর বয়সে যেভাবে গেয়েছেন তাতে বোঝাই যায় যে তাঁর কণ্ঠে বয়স কোনও প্রভাব ফেলতে পারেনি। নিজের কণ্ঠ নিয়ে খুবই যত্নশীল ছিলেন লতাজি। কখনও রেকর্ডিং-এর আগে ভুল করে বা লোভে পড়েও টক খেতেন না। রেকর্ডিং-এ সবসময় মধু আর জল রাখতেন। মধু মেশানো জল খেলে গলা ঠিক থাকত তাঁর, নিয়মিত ব্রিদিং এক্সারসাইজও করতেন। চমৎকার রান্নার হাত ছিল লতার। একবার হেমন্তদার (হেমন্ত মুখোপাধ্যায়) মুখে শুনেছিলাম, কলকাতায় তাঁর বাড়িতে থাকাকালীন লতাজি নিজে রান্না করে সবাইকে খাইয়েছিলেন। লতাজি আমাকে বলেছিলেন, ‘কোলাপুরি মাটন আর সবজি আমি ভালোই রান্না করতে পারি। চিকেনকারিও মন্দ করি না।’ তিনি নিজে ভালোবাসতেন সি-ফুড খেতে। বলতেন, ‘আমার বাবা সি-ফুড খুব ভালোবাসতেন, আমি বাবার ধাতটাই পেয়েছি।’
দিল্লির অশোকা হোটেলে খাওয়ার টেবিলে লতার সঙ্গে হেমা মালিনী ও ঊষা মঙ্গেশকর। পিছনে দাঁড়িয়ে লেখক।
এছাড়াও জীবনের প্রথমদিকে একটু ঝাল মশলাদার খাবার খেতে পছন্দ করতেন লতা। যদিও বয়সের সঙ্গে সঙ্গে খাবার নিয়ে সচেতন হয়েছেন তিনি। সাধারণত ভোর ৬টায় ঘুম থেকে উঠে পড়তেন তিনি। তাঁর সারাদিনের খাবার তালিকা ছিল এরকম— সকালে ঘুম থেকে উঠে ঈষদুষ্ণ জল খেতেন। তারপর খেতেন চা-বিস্কুট অথবা কফি-বিস্কুট। দুপুরে খেতেন সামান্য ভাত, দুটো ফুলকো আটার রুটি, ডাল এবং নানারকমের সবজি। আমিষও খেতেন। রাতে খেতেন ডাল, ভাত, ডেজার্টে থাকত কেশর দেওয়া গাজরের হালুয়া। রাতে প্রতিদিন ঘুমোতে যাওয়ার আগে একগ্লাস দুধ খেতেন, কখনও কখনও দুধে বাদাম এবং কেশর মিশিয়ে খেতেন। এছাড়াও ভালোবাসতেন পানিপুরি, জিলিপি। কলকাতায় এলে ময়দানে ফুচকা খেতেন বলেও শোনা যায়। এই প্রসঙ্গে একটা কথা মনে পড়ছে। একবার কলকাতায় লতাজি বিখ্যাত ব্যবসায়ী গোয়েঙ্কাদের বাড়িতে থাকাকালীন লাঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আমার শ্রদ্ধেয় এক বিখ্যাত সাংবাদিক। তিনি বেশ অবাক হয়ে দেখেছিলেন যে লতার খাবার তালিকায় রয়েছে টকদই। তিনি লতাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘আপনি টকদই খাচ্ছেন! শুনেছি টকদই গলার জন্য ক্ষতিকারক?’ প্রত্যুত্তরে লতা অল্প হেসে বলেছিলেন, ‘অল্প টকদইয়ে কোনও ক্ষতি হয় না গলার।’ যদিও বয়সের সঙ্গে সঙ্গে টকদই খাওয়ার পরিমাণ তিনি কমিয়ে দিয়েছিলেন।
প্রতিদিন রেকর্ডিং-এ বেরোনোর আগে ঠাকুরঘরে বসে পুজো করতেন লতাজি। পুজো না করে কখনও রেকর্ডিং-এ যেতেন না। লতার ঠাকুরঘরে রয়েছে শ্রীরামকৃষ্ণদেব, মা সারদামণি, স্বামী বিবেকানন্দের ছবি। লতা নিজে স্বামী বিবেকানন্দের খুব ভক্ত ছিলেন। তাঁর গলার লকেটে সবসময় বিবেকানন্দের ছবি থাকত।
প্রতিদিন রেকর্ডিং-এ বেরোনোর আগে ঠাকুরঘরে বসে পুজো করতেন লতাজি। পুজো না করে কখনও রেকর্ডিং-এ যেতেন না। লতার ঠাকুরঘরে রয়েছে শ্রীরামকৃষ্ণদেব, মা সারদামণি, স্বামী বিবেকানন্দের ছবি। লতা নিজে স্বামী বিবেকানন্দের খুব ভক্ত ছিলেন। তাঁর গলার লকেটে সবসময় বিবেকানন্দের ছবি থাকত।
কিংবদন্তি গায়ক কে এল সায়গল। ছবি সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে
লতাজির ভীষণ ইচ্ছা ছিল কিংবদন্তি গায়ক কে এল সায়গল (কুন্দনলাল সায়গল)-এর সঙ্গে ডুয়েট গাইবার। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কে এল সায়গলের জীবদ্দশায় তা সম্ভব হয়নি। হৃদয়নাথ মঙ্গেশকরের ছেলে বৈজু মঙ্গেশকর গায়ক ও সুরকার হিসেবে বেশ নাম করেছেন। পিসির ৯২ বছরের জন্মদিনে তাঁর হাতে একটি উপহার তুলে দেন। কী সেই উপহার? বৈজু মঙ্গেশকর তাঁর বন্ধু এবং সহযোগী যতীন শর্মার সাহায্যে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে লতা এবং কে এল সায়গলের কণ্ঠ একসঙ্গে ব্যবহার করে একটি যুগল গান তৈরি করে লতাজিকে উপহার দেন। ‘ম্যায় কেয়া জানু, কেয়া জাদু হ্যায় / জাদু হ্যায়, জাদু হ্যায়….’ গানটি উপহার পেয়ে লতা বলেছিলেন, ‘এটি আমার জীবনের সেরা উপহার।’
এই নশ্বরদেহ ত্যাগ করে মাটির ভুবন থেকে মানুষকে একদিন না একদিন যেতেই হয়। কিন্তু তাঁর কর্ম তাঁকে মানুষের মাঝে অমর করে রাখে। লতাজি সারা জীবন এই কর্ম করে গিয়েছেন। তিনি বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিয়েছেন ভারতীয় সংগীতকে। যতদিন গান থাকবে ততদিন লতাজি থাকবেন। তাঁর গানই তাঁকে মানুষের মাঝে অমর করে রাখবে চিরকাল।
এই নশ্বরদেহ ত্যাগ করে মাটির ভুবন থেকে মানুষকে একদিন না একদিন যেতেই হয়। কিন্তু তাঁর কর্ম তাঁকে মানুষের মাঝে অমর করে রাখে। লতাজি সারা জীবন এই কর্ম করে গিয়েছেন। তিনি বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিয়েছেন ভারতীয় সংগীতকে। যতদিন গান থাকবে ততদিন লতাজি থাকবেন। তাঁর গানই তাঁকে মানুষের মাঝে অমর করে রাখবে চিরকাল।